সৌদি আরবে গৃহকর্মী নিয়োগ-জনশক্তি রফতানি খাতে শুভবার্তা

বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার গৃহকর্মী নেবে সৌদি আরব_ জনশক্তি রফতানি খাত নিয়ে নানা ধরনের শঙ্কার মুখে এর চেয়ে ভালো খবর আর কিছুই হতে পারে না। বুধবার সমকালে এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে : 'গৃহকর্মী প্রেরণে বিমান ভাড়া, মেডিকেল চেকআপ ও প্রশিক্ষণ ব্যয় এবং বাংলাদেশের রিত্রুক্রটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ


বহন করবে একটি সৌদি স্পন্সর কোম্পানি। তাদের প্রতি মাসে বাংলাদেশি ১২ হাজার টাকা বেতন প্রদান করা হবে।' মজুরি হিসাবে এই পরিমাণ অর্থ যুক্তিযুক্ত কি-না, সে প্রশ্ন করা যেতেই পারে। তবে সৌদি আরবের কর্মস্থলে যাওয়ার ভাড়া, থাকা-খাওয়ার ব্যয় এবং রিত্রুক্রটিং এজেন্সিকে কোনো অর্থ প্রদান করতে হবে না বিধায় কর্মীরা প্রতি মাসে ভালো পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করতে পারবেন বলে ধারণা করা যায়। কোনো রিত্রুক্রটিং এজেন্সি গৃহকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে কারও কাছ থেকে কোনো অর্থ গ্রহণ করতে পারবে না এবং তা দণ্ডনীয় করা হয়েছে। এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি বাঞ্ছনীয়। কর্মী রিত্রুক্রট করা হবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে এবং সংখ্যাটি বড় হওয়ায় প্রতারক চক্র তৎপর হবে, এমন শঙ্কা রয়েছে। কর্মীদের যেতে হবে বৈধভাবে এবং এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে_ সৌদি আরবের তরফে এমনই প্রত্যাশা। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে : কর্মীদের প্রত্যেকের যাবতীয় তথ্যসহ স্মার্ট কার্ড থাকবে। দৈনন্দিন কাজ চালানোর মতো আরবি ভাষা তাদের শেখানো হবে। এছাড়া আরবীয় রীতিনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ে ধারণা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই একদল কর্মীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে। কর্মী প্রেরণের কাজে কোনো গাফিলতি কাম্য নয়। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জনশক্তি রফতানির বাজার হুমকির মুখে। ইতিমধ্যে লিবিয়া থেকে বিপুলসংখ্যক কর্মী ফেরত এসেছে। আরও কয়েকটি দেশে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, এমন শঙ্কাও রয়েছে। মালয়েশিয়ার বাজারও এখন পর্যন্ত উন্মুক্ত হয়নি। এ অবস্থায় যে সুযোগ এসেছে, তা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে হবে। কিছু কিছু রিত্রুক্রটিং এজেন্সির অসাধুতা এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একশ্রেণীর কর্মীর দুর্নীতি ও সার্বিক অদক্ষতার নজির আমাদের সামনে রয়েছে। এদের কারণে জনশক্তি রফতানি বাজার বিভিন্ন সময়ে হুমকির মুখে পড়েছে। বলা যায়, এখন আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এ অবস্থায় সৌদি আরবে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা যেন আমাদের ভুল-ভ্রান্তি কিংবা অতিলোভের কারণে বিপন্ন না হয়। সৌদি আরব হাউস ড্রাইভার, মালি ও দারোয়ান পদেও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করায় উৎসাহ দেখিয়েছে। গৃহকর্মী প্রেরণের প্রস্তুতির পাশাপাশি এ জন্যও প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালাতে হবে।
সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ নিয়ে যারা সে দেশে যাবেন, তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখার জন্য সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি বিশেষ সেল গঠনের বিষয়টি সরকারের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। এত বিপুলসংখ্যক নারীকর্মী সেখানে কিংবা অন্য কোনো দেশে এর আগে যায়নি। তারা যাতে সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বিভিন্ন পরিবারে কাজ করতে পারেন, সে বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং তা নিশ্চিত করায় সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের সর্বাত্মক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
 

No comments

Powered by Blogger.