বান কি মুনের চিঠি
দেশের
চলমান সংকট নিরসনে সংলাপের তাগিদ দিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন দুই
নেত্রীকে যে চিঠি দিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সেই চিঠি মূল্যায়িত হয়নি।
জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠির আনুষ্ঠানিক জবাব সরকার এই সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত
প্রকাশ করেনি, তবে সেই চিঠির মর্মবস্তু কী হবে, তা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শাহরিয়ার আলমের বক্তব্য থেকে অনুমান করা যায়। বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিবের
চিঠির প্রসঙ্গ তোলায় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, খুনিদের সঙ্গে কোনো সংলাপ
নয়। তার এ কথা থেকে ধরে নেয়া যায়, জাতিসংঘ মহাসচিবের অন্তত একটি চিঠি
(প্রধানমন্ত্রীকে লেখা) মাঠে মারা যাবে। আমরা একটা বিষয় বুঝতে অক্ষম, দেশের
অন্যতম বড় দল বিএনপির সঙ্গে সংলাপ ছাড়া দেশে স্থায়ী শান্তি আসবে কীভাবে।
ধরা যাক, বর্তমানে যে নাশকতা চলছে, সরকার কঠোর ভূমিকা পালন করে তা দমন করতে
পারল। কিন্তু এতে কি দেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে? বিএনপি শুধু একটি
রাজনৈতিক দলই নয়, এটি একটি বড় সামাজিক শক্তিও বটে। দেশবাসীর একটি
উল্লেখযোগ্য অংশ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এই শক্তিকে
আন্ডারএস্টিমেট করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সুতরাং আজ হোক, কাল হোক এ দলটির
সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতেই হবে। আর সমঝোতায় পৌঁছার পূর্বশর্তই হচ্ছে
সংলাপে বসা। অবশ্য বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার অর্থ এই নয় যে, তাদের সব
প্রস্তাবই নিঃশর্তে মেনে নিতে হবে। সমঝোতাটা এমন হওয়া বাঞ্ছনীয়, যেখানে দুই
পক্ষই একটা সম্মানজনক অবস্থায় থাকতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, সংলাপের ফলাফল
যা-ই হোক, এটা শুরু করতে আপত্তি কোথায়? সরকারপক্ষ হয়তো ভাবছে, সংলাপে রাজি
হয়ে গেলে তা বিএনপির জন্য এক বড় বিজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে, যা প্রকারান্তরে
সরকারের ক্ষতি করবে। আমাদের কথা হল, সংলাপ শুরুর আগে বিএনপিকেও হরতাল-অবরোধ
প্রত্যাহার করে নিতে হবে। হরতাল-অবরোধ জারি রেখে তো আর সংলাপ হবে না।
সুতরাং সেক্ষেত্রে উভয়পক্ষই বিজয়ী হবে। সরকার এই প্রস্তাবও দিতে পারে,
হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের পর সংলাপের জন্য তিন মাস অপেক্ষা করা হবে, দেশে
শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে কি-না, তা দেখার জন্য। কথা হচ্ছে, সংলাপের
পূর্বশর্ত কী হতে পারে, তা দুই দলই ঠিক করুক, আমরা দেখতে চাই সংকটের
শান্তিপূর্ণ সমাধান।
বান কি মুন বর্তমান বিশ্বের এক নম্বর অভিভাবক। তার কথা নিশ্চয়ই গুরুত্ব বহন করে। অবশ্য কেউ যদি তার অভিভাবকত্ব মানতে না চান, তাহলে করার কিছু নেই। তবে জাতিসংঘ তথা বান কি মুন যেহেতু বিশ্বের যে কোনো প্রান্তেই শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্র“তিবদ্ধ, সেহেতু তার কথা আমলে নেয়া উচিত সবারই। তিনি তো কোনো পরাশক্তি নন যে, তার কথা মানলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হবে। তাছাড়া শুধু তিনিই নন, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের অন্যান্য বিদেশী বন্ধুও তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। সর্বোপরি জোর তাগিদ রয়েছে এ দেশবাসীর। তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তারা শান্তি চায়, নির্বিঘ্নে পথ চলতে চায়, কাজকর্ম করে খেয়ে বাঁচতে চায়। তাদের এই আকুতির কি কোনোই মূল্য নেই? যদি থাকে তাহলে অচিরেই একটা পথ বের করতে হবে।
বান কি মুন বর্তমান বিশ্বের এক নম্বর অভিভাবক। তার কথা নিশ্চয়ই গুরুত্ব বহন করে। অবশ্য কেউ যদি তার অভিভাবকত্ব মানতে না চান, তাহলে করার কিছু নেই। তবে জাতিসংঘ তথা বান কি মুন যেহেতু বিশ্বের যে কোনো প্রান্তেই শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্র“তিবদ্ধ, সেহেতু তার কথা আমলে নেয়া উচিত সবারই। তিনি তো কোনো পরাশক্তি নন যে, তার কথা মানলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হবে। তাছাড়া শুধু তিনিই নন, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের অন্যান্য বিদেশী বন্ধুও তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। সর্বোপরি জোর তাগিদ রয়েছে এ দেশবাসীর। তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তারা শান্তি চায়, নির্বিঘ্নে পথ চলতে চায়, কাজকর্ম করে খেয়ে বাঁচতে চায়। তাদের এই আকুতির কি কোনোই মূল্য নেই? যদি থাকে তাহলে অচিরেই একটা পথ বের করতে হবে।
No comments