বিদেশীদের কাছে ধরনা দিয়ে লাভ হবে না -১৪ দল
ক্ষমতাসীন
১৪ দলের নেতারা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে
হত্যা করছে, জনগণ তাদের সঙ্গে না থাকায় জোটটি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে
বিদেশীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। কিন্তু কোনো ধরনায় কাজ হবে না। কোনো বিদেশী
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। বিএনপি-জামায়াত
পরাজিত হবে। এ সময় বিএনপির বিচ্ছিন্ন নাশকতা প্রচারণার দায়ে গণমাধ্যম মালিক
ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম
সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা অবরোধ-হরতাল, নাশকতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে শুক্রবার রাজধানীতে ১৪ দলের গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানেও গণমিছিল করে দলের নেতাকর্মীরা। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জোড়া ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা অবস্থান গ্রহণ করেন। ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি ইউনিট থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে এসে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে জড়ো হন। গণমিছিলটি নূর হোসেন স্কয়ারের সামনে থেকে মুক্তাঙ্গন হয়ে প্রেস ক্লাব, হাইকোর্ট মোড়, মৎস্য ভবনের সামনে দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট হয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনীতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে জোটের নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতা মোহাম্মদ নাসিম স্বাধীনতাবিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করার শপথ বাক্য পাঠ করান।
এর আগে গণমিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, মাহবুবউল আলম হানিফ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, এমএ আজিজ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, জেপির শেখ শহীদুল ইসলাম, ন্যাপের এনামুল হক, সাম্যবাদী দলের এমএ গনি প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম কিছু গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম বিশেষ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভাইয়েরা, আমরা যখন সন্ত্রাসীদের দমন করছি তখন আপনারা দু-একজন নাশকতাকারীর ছবি তোলেন। এগুলো টেলিভিশনে প্রচার করেন, রেডিওতে শোনান, পত্রিকায় ছাপান। সন্ত্রাসীরা যখন বোমা মারে, আপনারা (সাংবাদিক) জানেন কীভাবে? তাদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ আছে। আপনারা পুলিশকে না জানিয়ে গোপনে ছবি তুলে প্রচার করেন। মালিক (গণমাধ্যম), সম্পাদক ও সাংবাদিকসহ এসব জঘন্য অপরাধীরও বিচার হবে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সন্ত্রাসী দলের লোক আখ্যা দিয়ে সেলিম বলেন, সুশীল সমাজের কিছু লোক ও কিছু বুদ্ধিজীবী সন্ত্রাসের পক্ষ নিয়ে সংলাপের কথা বলছেন। তারা মূলত সন্ত্রাসী দলের লোক। এত রক্তের ওপর দিয়ে শেখ হাসিনা কোনো খুনির সঙ্গে সংলাপ করতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া কূটনীতিকদের কাছে কাঁদেন। আর বলেন, আমার কী হবে, আমার কী হবে। কোনো বিদেশী দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না।’ প্রত্যেকটা খুনের দায়ে খালেদা জিয়াকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলেও উল্লেখ করেন সেলিম। এ সময় তিনি ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনেও অবরোধ দেয়ায় খালেদা জিয়াকে নাস্তিক বলে অভিহিত করেন।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, এতিমের টাকা মেরে খাওয়া খালেদা জিয়ার বাঁচার উপায় নেই। তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবেই হবে। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান অমিত শাহের ‘মিথ্যা’ ফোনকল ও মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করায় বিএনপিকে তিনি ফোর টুয়ান্টি (পেনাল কোডের প্রতারণার ধারা) দল বলে মন্তব্য করেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি বিদেশীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে তাতে কোনো লাভ হবে না। তারা পরাজিত হবেই হবে।
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, কঠিন এক সময়ে আমাদের সামনে কঠিন এক শত্রু আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খালেদা জিয়া। সুশীল সমাজের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য কান্নাকাটি করছেন, সংলাপের তদবির না করে খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে আগুনে মানুষ পোড়ানো বন্ধের তদবির করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করলেই বাংলাদেশ শান্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে আত্মহত্যা করেছে। তিনি এখন জঙ্গিবাদের নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আজ জনগণ ফুঁসে উঠেছে।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বিএনপি জোটের নাশকতার বিরুদ্ধে আাগমী ৮, ৯ ও ১০ মার্চ সারা দেশে শান্তির সপক্ষে ও নাশকতার বিরুদ্ধে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও রংপুরে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে।
পরে মিছিল শেষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করা এবং বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ করে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট।
গণমিছিলে সিটি নির্বাচনী আমেজ : এদিকে গণমিছিলে আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ নিজ নেতাকর্মীদের নিয়ে বড় ধরনের শোডাউন করেছে। তার মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন, স্বতন্ত্র এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম, আসলামুল হক আসলাম এমপির শোডাউন ছিল দেখার মতো। এছাড়া ঢাকা এমপি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সংরক্ষিত নারী আসনের সানজিদা খানম, সাবিনা আক্তার তুহিনের নেতৃত্বে মিছিল ছিল দৃষ্টিনন্দন। পিছিয়ে ছিলেন না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় যুবলীগ, মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসারের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, নাজমা আক্তার ও অপু উকিলের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ মিছিলে অংশ নেয়। এছাড়া ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলুর নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল ছিল চোখে পড়ার মতো। জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, এছাড়া ১৪ দলের জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, তরিকত ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এতে অংশ নেয়।
সারা দেশ : বিভিন্ন স্থান থেকে যুগান্তর ব্যুরো, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বরিশাল : বিকালে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সমাবেশ করে ১৪ দল। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস এমপির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ১৪ দল নেতা টিপু সুলতান এমপি, জাহিদ ফারুক শামিম, আফজালুল করিম, আবদুল হাই মাহাবুব, শান্তি দাস, দাসগুপ্ত আশীষ কুমার প্রমুখ। পরে একটি গণমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কিশোরগঞ্জ : বিকাল ৫টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিল শেষে কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
খুলনা : বিকালে খুলনায় সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে ১৪ দলীয় জোট। রূপসা ট্রাফিক স্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক। পরিচালনা করেন ১৪ দলের সমন্বয়ক এমপি মিজানুর রহমান মিজান। বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা, জাসদের রফিকুল হক খোকন, মো. খালিদ হোসেন, ন্যাপের ফজলুর রহমান প্রমুখ।
সিলেট : বিকালে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা জাসদের সভাপতি কলমদর আলী প্রমুখ।
বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা অবরোধ-হরতাল, নাশকতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে শুক্রবার রাজধানীতে ১৪ দলের গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানেও গণমিছিল করে দলের নেতাকর্মীরা। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জোড়া ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা অবস্থান গ্রহণ করেন। ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি ইউনিট থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে এসে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে জড়ো হন। গণমিছিলটি নূর হোসেন স্কয়ারের সামনে থেকে মুক্তাঙ্গন হয়ে প্রেস ক্লাব, হাইকোর্ট মোড়, মৎস্য ভবনের সামনে দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট হয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনীতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে জোটের নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতা মোহাম্মদ নাসিম স্বাধীনতাবিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করার শপথ বাক্য পাঠ করান।
এর আগে গণমিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, মাহবুবউল আলম হানিফ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, এমএ আজিজ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, জেপির শেখ শহীদুল ইসলাম, ন্যাপের এনামুল হক, সাম্যবাদী দলের এমএ গনি প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম কিছু গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম বিশেষ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভাইয়েরা, আমরা যখন সন্ত্রাসীদের দমন করছি তখন আপনারা দু-একজন নাশকতাকারীর ছবি তোলেন। এগুলো টেলিভিশনে প্রচার করেন, রেডিওতে শোনান, পত্রিকায় ছাপান। সন্ত্রাসীরা যখন বোমা মারে, আপনারা (সাংবাদিক) জানেন কীভাবে? তাদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ আছে। আপনারা পুলিশকে না জানিয়ে গোপনে ছবি তুলে প্রচার করেন। মালিক (গণমাধ্যম), সম্পাদক ও সাংবাদিকসহ এসব জঘন্য অপরাধীরও বিচার হবে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সন্ত্রাসী দলের লোক আখ্যা দিয়ে সেলিম বলেন, সুশীল সমাজের কিছু লোক ও কিছু বুদ্ধিজীবী সন্ত্রাসের পক্ষ নিয়ে সংলাপের কথা বলছেন। তারা মূলত সন্ত্রাসী দলের লোক। এত রক্তের ওপর দিয়ে শেখ হাসিনা কোনো খুনির সঙ্গে সংলাপ করতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া কূটনীতিকদের কাছে কাঁদেন। আর বলেন, আমার কী হবে, আমার কী হবে। কোনো বিদেশী দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না।’ প্রত্যেকটা খুনের দায়ে খালেদা জিয়াকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলেও উল্লেখ করেন সেলিম। এ সময় তিনি ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনেও অবরোধ দেয়ায় খালেদা জিয়াকে নাস্তিক বলে অভিহিত করেন।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, এতিমের টাকা মেরে খাওয়া খালেদা জিয়ার বাঁচার উপায় নেই। তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবেই হবে। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান অমিত শাহের ‘মিথ্যা’ ফোনকল ও মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করায় বিএনপিকে তিনি ফোর টুয়ান্টি (পেনাল কোডের প্রতারণার ধারা) দল বলে মন্তব্য করেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি বিদেশীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে তাতে কোনো লাভ হবে না। তারা পরাজিত হবেই হবে।
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, কঠিন এক সময়ে আমাদের সামনে কঠিন এক শত্রু আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খালেদা জিয়া। সুশীল সমাজের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য কান্নাকাটি করছেন, সংলাপের তদবির না করে খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে আগুনে মানুষ পোড়ানো বন্ধের তদবির করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করলেই বাংলাদেশ শান্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে আত্মহত্যা করেছে। তিনি এখন জঙ্গিবাদের নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আজ জনগণ ফুঁসে উঠেছে।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বিএনপি জোটের নাশকতার বিরুদ্ধে আাগমী ৮, ৯ ও ১০ মার্চ সারা দেশে শান্তির সপক্ষে ও নাশকতার বিরুদ্ধে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও রংপুরে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে।
পরে মিছিল শেষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করা এবং বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ করে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট।
গণমিছিলে সিটি নির্বাচনী আমেজ : এদিকে গণমিছিলে আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ নিজ নেতাকর্মীদের নিয়ে বড় ধরনের শোডাউন করেছে। তার মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন, স্বতন্ত্র এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম, আসলামুল হক আসলাম এমপির শোডাউন ছিল দেখার মতো। এছাড়া ঢাকা এমপি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সংরক্ষিত নারী আসনের সানজিদা খানম, সাবিনা আক্তার তুহিনের নেতৃত্বে মিছিল ছিল দৃষ্টিনন্দন। পিছিয়ে ছিলেন না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় যুবলীগ, মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসারের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, নাজমা আক্তার ও অপু উকিলের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ মিছিলে অংশ নেয়। এছাড়া ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলুর নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল ছিল চোখে পড়ার মতো। জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, এছাড়া ১৪ দলের জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, তরিকত ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এতে অংশ নেয়।
সারা দেশ : বিভিন্ন স্থান থেকে যুগান্তর ব্যুরো, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বরিশাল : বিকালে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সমাবেশ করে ১৪ দল। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস এমপির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ১৪ দল নেতা টিপু সুলতান এমপি, জাহিদ ফারুক শামিম, আফজালুল করিম, আবদুল হাই মাহাবুব, শান্তি দাস, দাসগুপ্ত আশীষ কুমার প্রমুখ। পরে একটি গণমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কিশোরগঞ্জ : বিকাল ৫টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিল শেষে কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
খুলনা : বিকালে খুলনায় সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে ১৪ দলীয় জোট। রূপসা ট্রাফিক স্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক। পরিচালনা করেন ১৪ দলের সমন্বয়ক এমপি মিজানুর রহমান মিজান। বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা, জাসদের রফিকুল হক খোকন, মো. খালিদ হোসেন, ন্যাপের ফজলুর রহমান প্রমুখ।
সিলেট : বিকালে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা জাসদের সভাপতি কলমদর আলী প্রমুখ।
No comments