হুমকিতে জীবন, তবু জনপ্রিয়
(কুষ্টিয়ার
ছেঁউরিয়ায় লালন শাহর আখড়ায় প্রতিবছর তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে জড়ো হন
বহু বাউল। বাউলেরা মানুষে-মানুষে বা জাত-পাতে ভেদাভেদ করেন না। গানের মধ্য
দিয়ে শান্তি আর ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দেন তাঁরা। ছবি: এএফপি) সাদা
পোশাকে হাতে একতারা নিয়ে গ্রামে-গঞ্জে শান্তি আর ভালোবাসার বার্তাবাহী
গান গেয়ে বেড়ানো মানুষগুলো বাংলাদেশে বাউল হিসেবে পরিচিত। প্রথাগত
ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে থেকে নিজেদের মতো অন্তরাত্মার সন্ধানে মগ্ন
থাকেন তাঁরা। রক্ষণশীল এই সমাজে অন্যধারার জীবনযাপনের জন্য প্রতিনিয়ত
হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের। আবার কখনো কখনো শিকার হন শারীরিক লাঞ্ছনার।
তার পরও তাঁরা থেমে নেই, যার প্রমাণ ক্রমশ তাঁদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি।
বাংলাদেশের বাউলদের নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির আজ মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে এ
বিষয়গুলো উঠে এসেছে। বাউল নেতাদের মতে, বাংলাদেশে বাউলদের জনপ্রিয়তা
বাড়ছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা তাঁদের দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
নিজেকে বাউল সাধক পরিচয় দিয়ে ৩৫ বছর বয়সী ইংরেজির শিক্ষক মোহাম্মদ
আয়নুদ্দীন বললেন, ‘হামলা ও প্রাত্যহিক লাঞ্ছনার পরও দিন দিন আরও অধিক
সংখ্যক লোক বাউল দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।’
এই অঞ্চলে বাউল দর্শনের প্রাণপুরুষ লালন শাহ। সপ্তদশ শতকে তিনি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার গান গেয়ে অনুপ্রাণিত করেছিলেন বহু কবি ও চিন্তাবিদকে। কুষ্টিয়ায় এই বাউল দর্শনের প্রসার দেখা যায়। বাউলদের মধ্যে একটি অংশ আছে যারা এই আধুনিক সময়েও খালি পায়ে বাড়ি বাড়ি হেঁটে গায়। গান শুনে খুশি হয়ে যে যা দেয়, তা নিয়েই তারা খুশি মনে ফিরে যায়। কোনো জায়গায় আশ্রমের মতো বানিয়ে আস্তানা গাড়ে তারা, আবার সেখান থেকে চলেও যায়। তাদের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা থাকে না। আবার বাউলদের আরেকটি গোষ্ঠী আছে, যারা ঘরে থেকেই সংগীত আর সাধনা চালিয়ে যায়।
গত মাসে বাউল দর্শনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপক খুন হন। তিনি তাঁর বাড়িতে বাউল দর্শনের ওপর সাপ্তাহিক আলোচনার আয়োজন করতেন। নিহতের পরিবারের সন্দেহ, উগ্র মৌলবাদী কোনো গোষ্ঠী অধ্যাপককে হত্যা করেছে। ডেইলি স্টারের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্ট মাসে একদল মুসলিম গ্রামবাসী বাউলদের আটক করে মাথার চুল ও দাড়ি কেটে দেয়। এর পরও লালনের আখড়ায় মানুষের ঢল কমেনি। লালনের মৃত্যুবার্ষিকীতে দূর-দূরান্ত থেকে বাউলেরা এখানে আসে। এক বয়স্ক দম্পতি ঢাকায় তাদের রমরমা রেস্তেরাঁ ব্যবসা ছেলেমেয়েদের কাছে দিয়ে বাউল জীবন বেছে নিয়েছে। এই ব্যক্তি জানালেন, ‘আজ আমি ফকির। যা পাব তা দিয়ে জীবন চালাব, বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আর ভাবনা নেই।’ এটিকে মুক্ত আত্মা হিসেবে শেষ যাত্রা বলে উল্লেখ করলেন তিনি।
কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ায় লালনের আখড়ায় তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে পাঁচ দিনের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে হাজার হাজার বাউল যোগ দেন। সাত বছর আগে বাউল দর্শনে আকৃষ্ট হয়ে বাউল হওয়া বিনাত আলী ফকির জানান, প্রথম দিকে মাত্র কয়েক শ লোক এখানে সমবেত হতো। এখন দুই থেকে পাঁচ হাজার লোক এখানে আসে। মানববাদে আকৃষ্ট হয়ে বাউলের দীক্ষা নেওয়া ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। বাউলেরা মানুষে মানুষে বা জাত-পাতে ভেদাভেদ করেন না। আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার পরও বাউল দর্শনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়া প্রসঙ্গে বাউল গবেষক সাইমন জাকারিয়া বলেন, এ ধরনের আক্রমণ নতুন কোনো ঘটনা না। যুগের পর যুগ উগ্রপন্থীরা এসব বাউলকে হুমকি হিসেবেই দেখেছে। তবে বাউলেরা এগুলো গায়ে না মেখে শান্তিপূর্ণভাবে লালনের গান আর বাউলের জীবনদর্শন নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেন।
এই অঞ্চলে বাউল দর্শনের প্রাণপুরুষ লালন শাহ। সপ্তদশ শতকে তিনি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার গান গেয়ে অনুপ্রাণিত করেছিলেন বহু কবি ও চিন্তাবিদকে। কুষ্টিয়ায় এই বাউল দর্শনের প্রসার দেখা যায়। বাউলদের মধ্যে একটি অংশ আছে যারা এই আধুনিক সময়েও খালি পায়ে বাড়ি বাড়ি হেঁটে গায়। গান শুনে খুশি হয়ে যে যা দেয়, তা নিয়েই তারা খুশি মনে ফিরে যায়। কোনো জায়গায় আশ্রমের মতো বানিয়ে আস্তানা গাড়ে তারা, আবার সেখান থেকে চলেও যায়। তাদের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা থাকে না। আবার বাউলদের আরেকটি গোষ্ঠী আছে, যারা ঘরে থেকেই সংগীত আর সাধনা চালিয়ে যায়।
গত মাসে বাউল দর্শনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপক খুন হন। তিনি তাঁর বাড়িতে বাউল দর্শনের ওপর সাপ্তাহিক আলোচনার আয়োজন করতেন। নিহতের পরিবারের সন্দেহ, উগ্র মৌলবাদী কোনো গোষ্ঠী অধ্যাপককে হত্যা করেছে। ডেইলি স্টারের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্ট মাসে একদল মুসলিম গ্রামবাসী বাউলদের আটক করে মাথার চুল ও দাড়ি কেটে দেয়। এর পরও লালনের আখড়ায় মানুষের ঢল কমেনি। লালনের মৃত্যুবার্ষিকীতে দূর-দূরান্ত থেকে বাউলেরা এখানে আসে। এক বয়স্ক দম্পতি ঢাকায় তাদের রমরমা রেস্তেরাঁ ব্যবসা ছেলেমেয়েদের কাছে দিয়ে বাউল জীবন বেছে নিয়েছে। এই ব্যক্তি জানালেন, ‘আজ আমি ফকির। যা পাব তা দিয়ে জীবন চালাব, বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আর ভাবনা নেই।’ এটিকে মুক্ত আত্মা হিসেবে শেষ যাত্রা বলে উল্লেখ করলেন তিনি।
কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ায় লালনের আখড়ায় তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে পাঁচ দিনের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে হাজার হাজার বাউল যোগ দেন। সাত বছর আগে বাউল দর্শনে আকৃষ্ট হয়ে বাউল হওয়া বিনাত আলী ফকির জানান, প্রথম দিকে মাত্র কয়েক শ লোক এখানে সমবেত হতো। এখন দুই থেকে পাঁচ হাজার লোক এখানে আসে। মানববাদে আকৃষ্ট হয়ে বাউলের দীক্ষা নেওয়া ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। বাউলেরা মানুষে মানুষে বা জাত-পাতে ভেদাভেদ করেন না। আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার পরও বাউল দর্শনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়া প্রসঙ্গে বাউল গবেষক সাইমন জাকারিয়া বলেন, এ ধরনের আক্রমণ নতুন কোনো ঘটনা না। যুগের পর যুগ উগ্রপন্থীরা এসব বাউলকে হুমকি হিসেবেই দেখেছে। তবে বাউলেরা এগুলো গায়ে না মেখে শান্তিপূর্ণভাবে লালনের গান আর বাউলের জীবনদর্শন নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেন।
No comments