পেন্টাগনে সংস্কার আনতে পারবেন কার্টার?
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে অ্যাশটন কার্টারকে বেছে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আজকের দিনে মার্কিন কোনো প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সফল হতে হলে হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনও নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। পেন্টাগনকে অনেকে বিশ্বের সবচেয়ে জটিল ও আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বলে মনে করেন। নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্টার কি পেন্টাগনের রাশ টেনে ধরতে পারবেন, অনেকের মনেই সে প্রশ্ন। প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে কার্টার একেবারে নতুন নন। তিনি কিছুদিন উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তখনকার অভিজ্ঞতা থেকে পেন্টাগনের সংস্কার করে আমলাতন্ত্র কমানোর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন তিনি। পেন্টাগন বছরে ৬০ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করে। পেন্টাগনে কাজ করেন প্রায় ১৪ লাখ নারী-পুরুষ। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সাত লাখ বেসামরিক মানুষ ও সাত লাখ পূর্ণকালীন ঠিকাদার। এ ছাড়া অস্ত্র ব্যবস্থাপনার জন্য ৫০ হাজার কোটি ডলার ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ১৬ হাজার কোটি ডলারের হিসাব ধরলে তা বর্তমান বাজেটকে ছাড়িয়ে যায়। একজন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পেন্টাগনের জটিলতাকে ‘সামরিক-শিল্প-কংগ্রেসবিষয়ক জটিলতা’ আখ্যা দিয়েছেন।
পেন্টাগনের এই পরিস্থিতির কট্টর সমালোচক রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন। পেন্টাগনের বিষয়ে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটসের অনেক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত তিনি। গেটস সম্প্রতি তাঁর স্মৃতিকথায় পেন্টাগনের বিশালতাকে ‘দানবীয়, গোলকধাঁধাপূর্ণ আমলাতন্ত্র’ বলে আখ্যা দেন। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে তিনি এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। গেটস লিখেছেন, পেন্টাগনের ৪০ শতাংশ খরচই ‘আনুষঙ্গিক ব্যয়’। তবে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্টার সংস্কারবাদী বলে পরিচিত।জন ম্যাককেইন শিগগিরই সিনেটের সশস্ত্র বাহিনীবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিচ্ছেন। আরেক সংস্কারবাদী রিপাবলিকান নেতা ম্যাক থর্নবেরি প্রতিনিধি পরিষদের একই কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন। এই ত্রয়ী পেন্টাগনকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে পারেন কি না তা দেখতে অনেকে আশা নিয়ে অপেক্ষা করবেন। তবে এটাও বাস্তবতা যে প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা আসেন এবং যান, কিন্তু ‘সামরিক-শিল্প-কংগ্রেসবিষয়ক জটিলতা’ চলতেই থাকে।
No comments