ইফতারে এবারও নতুন পদ
পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে থেকেই চলছিল প্রস্তুতি। এ প্রস্তুতিটা ছিল নানা পদ ও স্বাদের ইফতার সামগ্রী তৈরি ও বিক্রির। রোজাদারদের আকৃষ্ট করতে এখন প্রতিযোগিতা চলছে ব্যবসায়ীদের। অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে অলি-গলিতে বসছে ইফতার সামগ্রী বিক্রির ছোট-বড় দোকান। প্রতি বছরের মতো এবারও নতুন নতুন নানা পদের ইফতার সামগ্রী আনছেন রাজধানীর ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতি, শুক্র, শনি ও রোববার পুরান ঢাকার চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। এ সময়ে দেখা গেছে, উপকরণ সংগ্রহ ও বিক্রয়ের স্থান সজ্জার ব্যস্ততা। পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম এবং এশিয়ার সব থেকে বড় শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্কেও রোজাদারদের জন্য ইফতারে বিশেষ আয়োজন থাকছে। ফুড কর্নারে দেশি-বিদেশি সুস্বাদু আইটেমের পাশাপাশি থাকছে বৈচিত্র্যময় ইফতারি। বিভিন্ন রেস্তোরাঁ আয়োজন রাখছে বুফেরও। বিশাল স্থানে এক সঙ্গে বহু মানুষ ইফতার করতে পারবেন এখানে।
পাশাপাশি রোজাদারদের সঙ্গে আসা শিশুরা মেতে উঠতে পারবে খেলাধুলায়, বিভিন্ন রাইড উপভোগে। পার্কের দ্বিতীয় তলায় বিশ্বমানের মাল্টি কুকিং রেস্টুরেন্ট ‘গারলিক এন জিনজার’-এর ম্যানেজার সৈকত হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, এবার আমরা রোজাদারদের সম্মানে বিশেষ প্যাকেজ করেছি। ৭৯৯ টাকায় প্রায় ৫৩ রকমের আইটেম দিয়ে এ প্যাকেজ। প্যাকেজে ইফতারির পাশাপাশি ডিনারও থাকছে। এর বাইরেও থাকছে স্পেশাল সুপার হালিম, চিকেন শামি কাবাব, শরবত ইত্যাদি। বেইলি রোডের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ফখরুদ্দিন রেস্টুরেন্ট এবার ৫০ ধরনরে ইফতার সামগ্রী তৈরি করছে। ভিকারুন নিসা নূন স্কুল ও কলেজের মাঠে টানানো হয়েছে বিশাল শামিয়ানা। সেখান থেকে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে চলবে বেচাকেনা। হাজী মো. ফখরুদ্দিনের ছেলে হাজী মো. রফিক জানান, ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১৪শ’ টাকায় মিলবে মুখরোচক নানা খাবার। নতুন আইটেম হিসেবে থাকছে শাহি টুকরা বক্স ১৫০-২৫০ টাকা, বাসমতির জর্দা বক্স ২৩০ টাকা, চাটনি ১৫০-২৫০ টাকা, দইবড়া ৬৫ টাকা। এবার খাসির হালিম ৩৫০-৬০০ টাকা, মুরগির হালিম ৪০০-৬০০ টাকা, গরুর চপ কেজি ৮০০ টাকা, খাসির চপ ৯০০ টাকা, খাসির কোর্মা ৯০০ টাকা, আস্ত মুরগি রোস্ট ৪৮০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট ৯০০ টাকা, শিক কাবাব কেজি ১৪০০ টাকায় বিক্রি হবে। তিনি বলেন, বেইলি রোড ছাড়াও ধানমণ্ডি, মগবাজার মোড়, গুলশান ও মিরপুরে ফখরুদ্দিনের শাখায় এসব পাওয়া যাবে। বেইলি রোডের ‘ক্যাপিটাল ইফতার বাজার’র স্বত্বাধিকারী এহসান উদ্দিন জুয়েল বলেন, আমরা পুরান ঢাকার সব ধরনের ইফতার সামগ্রী বিক্রি করি। হালিম থেকে সুতি কাবাব সবই পাওয়া যাবে। ৪২ ধরনের মসলা দিয়ে তৈরি হয় মজাদার সব ইফতার।
গত কয়েক বছর ধরে তৈরি হচ্ছে জাম্বুরোস্ট। এটি ঘি, বাটার, জয়ফল ও আলু বোখারা দিয়ে তৈরি করা হয়। নতুন আইটেম ‘ব্রেইন মসল্লা’। গরুর মগজ দিয়ে তৈরি এ খাবারের দাম পড়বে ৯শ’ টাকা কেজি। গুলশান এভিনিউতে সেয়েস্তা রোজ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মুখলেছুর রহমান বলেন, এবার নতুন ১২ ধরনের সামগ্রী দিয়ে একটি প্যাকেজ করা হয়েছে, দাম রাখা হবে ১ হাজার ১৫০ টাকা। বনানী স্টার কাবাব অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ইফতারের পাশাপাশি রোজাদারদের জন্য সেহরিরও ব্যবস্থা করছি। ভোর ৫টা পর্যন্ত আমাদের রেস্টুুরেন্ট খোলা রাখা হবে। তিনি বলেন, নতুন আইটেমের মধ্যে মাটন লেগ রোস্ট পিস ৩৫০ টাকা, চিকেন রোস্ট পিস ২৭০-৩৪০ টাকা এবং মাটন গ্রিল চপ কেজি ৭৪০ টাকা বিক্রি হবে। মহাখালীর সিন্যামন রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শাকিল সারোয়ার বলেন, রোজাদারদের জন্য আমরা এবার ২টি বিশেষ প্যাকেজ করেছি। ১২ ধরনের আইটেম রয়েছে এতে। দাম রাখা হবে ১৬৫-২০৫ টাকা।
No comments