ব্যাংকঋণ শোধ না করতেই আগুন! by আহমেদ রাজু
আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরিন ফ্যাশনের আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত! ব্যাংকঋণ পরিশোধ না করতেই মালিকপক্ষ আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। মালিকরা মনে করেছেন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলে ব্যাংকের ঋণের টাকা ফেরত দিতে হবে না।
উপরন্তু, তারা ইন্সুরেন্সের টাকা পাবেন। সেই টাকায় আবারও কারখানা চালু করতে পারবেন। কারখানাটির শ্রমিকরা এমন ধারণাই করছেন।
আগুনের পূর্বাপর ঘটনা বিশ্লেষণ করলে শ্রমিকদের এই অভিযোগ অমূলক মনে হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক শ্রমিক জানান, কারখানাটির মালিক দেলোয়ার হোসেন একজন ঋণখেলাপি। কেবল তাজরিন ফ্যাশনের নামেই তিনি ব্যাংকঋণ নিয়েছেন ৫০ কোটি টাকা। শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও নিয়মিত দিতেন না বলে জানান ওই কারখানার শ্রমিকরা। তাই কারাখানাটিতে মাঝেমধ্যেই শ্রমিকবিক্ষোভ হতো। বিক্ষোভ করেই তাদের বেতনভাতা আদায় করতে হতো।
অন্যদিকে আগুনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়া অপর এক নারী শ্রমিক শ্রমিক জানান, ঘটনার দিনকয় আগেই প্রডাকশন ম্যানেজাররা তাদের বলেছিলেন, ‘অগ্নিনির্বাপণ মহড়া চলবে। তোমরা ভয় পাবা না এবং নিচেও নামবা না।’
আগুনের মহড়ার কথা আগে প্রচার করায় শ্রমিকদের মনে সন্দেহ হচ্ছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। তাই তাদের ধারণা, আগুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত।
এদিকে আগুন আগুন লাগার পর পোশাক কারখানাটির কর্মকর্তারা তালা মেরে চলে যান। তাদের কেউ আগুনে পুড়ে মারা যাননি। উপরন্তু, অগ্নিকাণ্ডের সময় মালিকপক্ষের কেউ কারখানায় আসেননি। তাই শ্রমিকরা আগুনের ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে মনে করছেন।
এদিকে তাজরিন ফ্যাশনের মালিক দেলোয়ার হোসেন রোববার টেলিফোনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার কারখানায় আমি কেন আগুন লাগাবো। তিনি বলেন, আমার যে ব্যাংকঋণ আছে, কারখানাটির মেশিনপত্রের মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি। আমার বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।’
পোশাক কারখানার বেঁচে যাওয়া এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেছেন, ‘সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন লাগে। আগুন লাগা আঁচ করতে পেরেই শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ছোটাছুটি করতে থাকেন। তারা উদ্বিগ্ন, উৎকণ্ঠিত ও শংকিত হয়ে পড়েন। তারা নিচে নেমে যেতে চাইলে কারখানার প্রডাকশন মানেজাররা (পিএম) শ্রমিকদের বলেন, ‘নিচে আগুনের মহড়া হচ্ছে। ভয়ের কিছুই নেই।’
তারপরও শ্রমিকদের কেউ কেউ বের হয়ে যান। এক পর্যায়ে গেট বন্ধ করে উচ্চৈ:স্বরে সাউন্ড বক্সে গান ছাড়েন। তার প্রডাকশন ম্যানেজাররা শ্রমিকদের বের হবার পথ তালাবদ্ধ করে বের হয়ে যান।
এরই মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। শ্রমিকরা বাঁচার জন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের ফোন করেন। তারা জানালার পাশে এসে বাইরের লোকজনকে তাদের জীবন বাঁচাতে আকুতি জানাতে থাকেন।
আগুন লাগার আধাঘণ্টার মধ্যেই পুরো পোশাক কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো কারখানা।
নিহত শ্রমিকদের সরকারঘোষিত সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শ্রমিকরা। বেশ কয়েকজন শ্রমিক বলেছেন, ৯তলা পোশাক কারখানাটির প্রত্যেক তলায় ৬ থেকে ৯টি করে লাইন ছিলো। কারখানায় প্রতি শিফটে কাজ করতো চার থেকে পাঁচ হাজার শ্রমিক।
বেঁচে যাওয়া শ্রমিক এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানার গেট ও ছাদ বন্ধ থাকায় কেউ বাইরে নেমে যেতে পারেন নি। একটি জানালা ভেঙে এক থেকে দেড়শ’ শ্রমিক বাইরে নেমে আসতে পেরেছেন। বাকি শ্রমিকরা করুণ পরিণতি বরণ করেছেন। তাই দমকল বাহিনী ১১২ শ্রমিকের নিহত হওয়ার য়ে ঘোষণা দিয়েছে তা নিয়ে শ্রমিকরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি, লাশের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন শ্রমিক।
তারা বলেছেন, ভোরের দিকে পোশাক কারখানার প্রধান গেট বন্ধ করে দমকল বাহিনী নিহত শ্রমিকদের লাশ উদ্ধার শুরু করে। তখন দমকল বাহিনীর গাড়িতে লাশ উঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, সকালে দমকল বাহিনীর সদস্যরা পোশাক কারখানায় অবস্থান করলেও তাদের গাড়িগুলিকে চলে যেতে দেখতে পান তারা। তাদের ধারণা ওইসব গাড়িতে করেই অনেক লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
লাশের সংখ্যা বেশি হলে পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তাই অনেক লাশ গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।
আগেও অনেক বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সেসব দুর্ঘনায় অনেক শ্রমিক মারা গেছেন। কিন্তু, লাশ উদ্ধারে সেনাবাহিনী ডাকা হয়নি। কিন্তু, এই আগুনের ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবিকে ডাকা হয়েছে।
শ্রমিকদের ধারণা, লাশের সংখ্যা বেশি জানাজানি হলে শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিতে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। শনিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর তাজরিন ফ্যাশন এবং সোমবার উত্তর খানের দু’টি গার্মেন্টসে আগুন লাগে। তাজরিন ফ্যাশনে আগুন লাগার একদিন পরই আশুলিয়ার ডেবোনিয়ার গার্মেন্টে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন সুমি বেগম নামে ওই কারখানার এক নারীশ্রমিক। ওই ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তাই একের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক শ্রমিক জানান, কারখানাটির মালিক দেলোয়ার হোসেন একজন ঋণখেলাপি। কেবল তাজরিন ফ্যাশনের নামেই তিনি ব্যাংকঋণ নিয়েছেন ৫০ কোটি টাকা। শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও নিয়মিত দিতেন না বলে জানান ওই কারখানার শ্রমিকরা। তাই কারাখানাটিতে মাঝেমধ্যেই শ্রমিকবিক্ষোভ হতো। বিক্ষোভ করেই তাদের বেতনভাতা আদায় করতে হতো।
অন্যদিকে আগুনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়া অপর এক নারী শ্রমিক শ্রমিক জানান, ঘটনার দিনকয় আগেই প্রডাকশন ম্যানেজাররা তাদের বলেছিলেন, ‘অগ্নিনির্বাপণ মহড়া চলবে। তোমরা ভয় পাবা না এবং নিচেও নামবা না।’
আগুনের মহড়ার কথা আগে প্রচার করায় শ্রমিকদের মনে সন্দেহ হচ্ছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। তাই তাদের ধারণা, আগুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত।
এদিকে আগুন আগুন লাগার পর পোশাক কারখানাটির কর্মকর্তারা তালা মেরে চলে যান। তাদের কেউ আগুনে পুড়ে মারা যাননি। উপরন্তু, অগ্নিকাণ্ডের সময় মালিকপক্ষের কেউ কারখানায় আসেননি। তাই শ্রমিকরা আগুনের ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে মনে করছেন।
এদিকে তাজরিন ফ্যাশনের মালিক দেলোয়ার হোসেন রোববার টেলিফোনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার কারখানায় আমি কেন আগুন লাগাবো। তিনি বলেন, আমার যে ব্যাংকঋণ আছে, কারখানাটির মেশিনপত্রের মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি। আমার বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।’
পোশাক কারখানার বেঁচে যাওয়া এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেছেন, ‘সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন লাগে। আগুন লাগা আঁচ করতে পেরেই শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ছোটাছুটি করতে থাকেন। তারা উদ্বিগ্ন, উৎকণ্ঠিত ও শংকিত হয়ে পড়েন। তারা নিচে নেমে যেতে চাইলে কারখানার প্রডাকশন মানেজাররা (পিএম) শ্রমিকদের বলেন, ‘নিচে আগুনের মহড়া হচ্ছে। ভয়ের কিছুই নেই।’
তারপরও শ্রমিকদের কেউ কেউ বের হয়ে যান। এক পর্যায়ে গেট বন্ধ করে উচ্চৈ:স্বরে সাউন্ড বক্সে গান ছাড়েন। তার প্রডাকশন ম্যানেজাররা শ্রমিকদের বের হবার পথ তালাবদ্ধ করে বের হয়ে যান।
এরই মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। শ্রমিকরা বাঁচার জন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের ফোন করেন। তারা জানালার পাশে এসে বাইরের লোকজনকে তাদের জীবন বাঁচাতে আকুতি জানাতে থাকেন।
আগুন লাগার আধাঘণ্টার মধ্যেই পুরো পোশাক কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো কারখানা।
নিহত শ্রমিকদের সরকারঘোষিত সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শ্রমিকরা। বেশ কয়েকজন শ্রমিক বলেছেন, ৯তলা পোশাক কারখানাটির প্রত্যেক তলায় ৬ থেকে ৯টি করে লাইন ছিলো। কারখানায় প্রতি শিফটে কাজ করতো চার থেকে পাঁচ হাজার শ্রমিক।
বেঁচে যাওয়া শ্রমিক এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানার গেট ও ছাদ বন্ধ থাকায় কেউ বাইরে নেমে যেতে পারেন নি। একটি জানালা ভেঙে এক থেকে দেড়শ’ শ্রমিক বাইরে নেমে আসতে পেরেছেন। বাকি শ্রমিকরা করুণ পরিণতি বরণ করেছেন। তাই দমকল বাহিনী ১১২ শ্রমিকের নিহত হওয়ার য়ে ঘোষণা দিয়েছে তা নিয়ে শ্রমিকরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি, লাশের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন শ্রমিক।
তারা বলেছেন, ভোরের দিকে পোশাক কারখানার প্রধান গেট বন্ধ করে দমকল বাহিনী নিহত শ্রমিকদের লাশ উদ্ধার শুরু করে। তখন দমকল বাহিনীর গাড়িতে লাশ উঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, সকালে দমকল বাহিনীর সদস্যরা পোশাক কারখানায় অবস্থান করলেও তাদের গাড়িগুলিকে চলে যেতে দেখতে পান তারা। তাদের ধারণা ওইসব গাড়িতে করেই অনেক লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
লাশের সংখ্যা বেশি হলে পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তাই অনেক লাশ গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।
আগেও অনেক বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সেসব দুর্ঘনায় অনেক শ্রমিক মারা গেছেন। কিন্তু, লাশ উদ্ধারে সেনাবাহিনী ডাকা হয়নি। কিন্তু, এই আগুনের ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবিকে ডাকা হয়েছে।
শ্রমিকদের ধারণা, লাশের সংখ্যা বেশি জানাজানি হলে শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিতে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। শনিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর তাজরিন ফ্যাশন এবং সোমবার উত্তর খানের দু’টি গার্মেন্টসে আগুন লাগে। তাজরিন ফ্যাশনে আগুন লাগার একদিন পরই আশুলিয়ার ডেবোনিয়ার গার্মেন্টে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন সুমি বেগম নামে ওই কারখানার এক নারীশ্রমিক। ওই ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তাই একের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
No comments