এফডিআই, জ্বালানি -প্রথম দিনেই উত্তপ্ত লোকসভা-রাজ্যসভামূল্যবৃদ্ধি-তৃণমূলের অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ
তীব্র বাগ্বিতণ্ডার উত্তাপ ছড়িয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ভারতে শুরু হয়েছে পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন। খুচরা ব্যবসায় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি কমানো নিয়ে দিনের শুরু থেকেই জমে ওঠে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং নিম্নকক্ষ লোকসভার অধিবেশন। হট্টগোলের কারণে লোকসভার অধিবেশন দুই দফা মুলতবি করা হয়।
কথামতো এফডিআইয়ের প্রতিবাদে প্রথম দিনেই পার্লামেন্টে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে প্রস্তাবটি খারিজ করে দেন স্পিকার মীরা কুমার। বিরোধী দলগুলোর দাবি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং এফডিআই কার্যকর হলে দরিদ্ররা চরম সংকটে পড়বে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়বেন। পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেত্রী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সুষমা স্বরাজ বলেন, 'একতরফাভাবে এফডিআইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার পার্লামেন্টকে অপমান করেছে। এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা ও ভোটের সুযোগ দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। এখন আমরা সেই সুযোগ চাই।' তাদের দাবি, বর্তমান রাষ্ট্রপতি ও সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি তাদের এ আশ্বাস দিয়েছিলেন। যদিও এ দাবির কোনো সত্যতা নেই বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস।এ ছাড়া তেলের দাম বাড়ানো নিয়েও ক্ষোভ দেখান বিরোধীদলীয় এমপিরা। লোকসভায় সরকারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) তেল ও সিলিন্ডারের গ্যাসে ভর্তুকি কমানো নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এফডিআই নিয়ে বিরোধের জের ধরেই গত সেপ্টেম্বরে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকার থেকে নিজেদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। সে সময়ই তারা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থার হুমকি দিয়েছিল। এবার এরই বাস্তবায়ন হলো। তবে সফল হতে পারেনি তারা। প্রস্তাব তোলার জন্য ৫০ জন এমপির সমর্থনের প্রয়োজন ছিল। তবে ১৯ সদস্যের তৃণমূলকে ওড়িশা রাজ্যের বিজু জনতা দলের তিন এমপি ছাড়া আর কেউ সমর্থন দেয়নি। ফলে অনাস্থা প্রস্তাবটি খারিজ হয়ে যায়।
তবে সরকার মনে করে, ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি চাঙ্গা করতে এ ক্ষেত্রে সংস্কার অপরিহার্য। রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বিষয়টি নিয়ে গতকাল বিরোধীদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'বিরোধী দল বা সরকার যেখানেই থাকি না কেন, পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রকে সচল রাখতে আমাদের সবারই দায়বদ্ধতা রয়েছে। শীতকালীন অধিবেশনে আমাদের কার্যতালিকা অনেক দীর্ঘ। আমি পার্লামেন্টে আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাই।' চলতি অধিবেশন শেষ হবে ২০ ডিসেম্বর। সূত্র : বিবিসি, দ্য হিন্দু।
No comments