চার বছর আগে নির্মাণ শেষ হলেও বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল ‘নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল’ বা এনসিটির দরপত্রের শর্ত শিথিল করে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে -‘বন্দর রক্ষা’ আন্দোলনে মহিউদ্দিন, বিলি হচ্ছে ৫০ হাজার প্রচারপত্র by মাসুদ মিলাদ
চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে অনিয়ম ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামছেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ‘চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা পরিষদ’-এর ব্যানারে এই আন্দোলন কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
জনমত সৃষ্টির জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ হাজার প্রচারপত্র নগরবাসীর মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
তবে বন্দর ব্যবহারকারী ফোরাম দাবি করেছে, তারা প্রচারপত্র বিলি ও আন্দোলনের বিষয়ে কিছু জানে না। আর প্রচারপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা নিয়ম মেনে সব কাজ করছে।
এর আগে বন্দরের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ঈদের দিন সোমবার জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে নামাজ শেষে তিনি বন্দর নিয়ে ষড়ষন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করার কথা বললেও এর কোনো কমিটি এখনো গঠন করা হয়নি। আপাতত মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থিত বন্দর কর্মচারী পরিষদ এবং ডক বন্দর শ্রমিক কর্মচারী পরিষদের নেতারা প্রচারপত্র বিলি করছেন। বন্দরের বিভিন্ন বিভাগ, সংবাদপত্র কার্যালয়েও প্রচারপত্র বিলি হচ্ছে। তবে বন্দর অচল করে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা এখনো ‘পরিষদের’ নেই।
জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরী গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। আমরা ধীরে ধীরে আন্দোলনের পথে অগ্রসর হচ্ছি।’
জানা গেছে, আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির কাজ করছেন ডক বন্দর শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান। জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক নেতা, পেশাজীবী, সাংবাদিকসহ সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধি নিয়ে বৃহত্তর পরিসরে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। খুব শিগগির একটি সভা করে কমিটি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, এর মধ্যেই গণসংযোগ, মতবিনিময়ের মতো প্রচারণামূলক কার্যক্রম চলছে। বন্দর নিয়ে অনিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
প্রচারপত্রে বলা হয়, চার বছর আগে নির্মাণ শেষ হলেও বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল ‘নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল’ বা এনসিটির দরপত্রের শর্ত শিথিল করে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। বন্দরের তহবিল থেকে টাকা নিয়ে অন্য এলাকায় উন্নয়ন করার চেষ্টা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর মেরিন কন্ট্রাক্টর পাহারাদার কল্যাণ সমিতির তালিকা অনুসারে জাহাজে পাহারাদার নিয়োগ না করার বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়। বন্দরের যেসব জরুরি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে না, সেগুলো তুলে ধরবে এই পরিষদ।
মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে গভীর ষড়ষন্ত্র হচ্ছে। চার বছরেও নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিপূর্ণভাবে চালু করা যায়নি। সাইফ পাওয়ার টেক নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার জন্য এনসিটির দরপত্র দলিলের ১২টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত শিথিল করা হয়েছে। নিয়ম না থাকলেও বন্দরের টাকা নিয়ে অন্যত্র উন্নয়নের ষড়ষন্ত্র হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায় পাহারাদার কল্যাণ সমিতির পক্ষে গেলেও বন্দর টাকা খরচ করে এর বিরুদ্ধে আবারও আইনি কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
মহিউদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করেন, বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই সাইফ পাওয়ার টেক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করছে। তাদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার আয়োজন চলছে। এই প্রতিষ্ঠান কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই বন্দর থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, তাঁদের বক্তব্য বন্দরের উপদেষ্টা কমিটির আগামী সভায় লিখিতভাবে তুলে ধরা হবে। এর পরও অনিয়ম-ষড়ষন্ত্র বন্ধ না হলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের দরপত্রে অনিয়ম নিয়ে গত ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদ-উজ-জামানের কাছে চিঠি দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও দেওয়া হয়। চিঠিতে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের দরপত্রের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নৌমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দরপত্র-প্রক্রিয়া বাতিল এবং নতুন করে দরপত্রের প্রক্রিয়া শুরু, আপত্তি সত্ত্বেও সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডকে নির্বাচিত করা ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। মহাজোট সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য একটি মহল এই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার চক্রান্ত করছে বলে চিঠিতে দাবি করা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মহিউদ্দিন চৌধুরীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে অবহিত করতে বলা হয়। মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে ৫ আগস্ট মতামত দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই বন্দর কর্তৃপক্ষ দরপত্রের শর্ত সংশোধন-বিয়োজন করেছিল। এখন আবার অভিযোগের বিষয়ে তারাই মতামত দিচ্ছে। এনসিটির দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ মুহূর্তেও শর্ত সংশোধন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ৩০ আগস্ট এই প্রকল্পের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে বন্দরের মুখপাত্র ও সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রচারপত্রটি দেখেছি। নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে প্রচারপত্রে যেসব শর্ত সংশোধন বা শিথিল করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে করা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বন্দর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। বন্দর নিয়ে তাঁর কোনো পরামর্শ থাকলে উপদেষ্টা কমিটির আগামী সভায় জানাতে পারবেন।
তবে বন্দর ব্যবহারকারী ফোরামের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মোরশেদ মুরাদ দাবি করেছেন, প্রচারপত্র বিলি ও আন্দোলনের বিষয়টি এখনো তাঁর নজরে আসেনি। তিনি বলেন, ‘বন্দর অচল করে কোনো আন্দোলন আমরা সমর্থন করি না। নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন হলে অর্থাৎ মানববন্ধন, প্রচারপত্র বিলি, নানা পর্ষদে অভিযোগ জানানো—এগুলো সমর্থন করা যায়।’
দরপত্রে অনিয়মের পাশাপাশি জাহাজে পাহারাদার নিয়োগের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদকে গত ১৮ জুলাই চিঠি দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। গত ৩০ জুলাই বন্দর চেয়ারম্যান সেই চিঠির জবাবে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে জানান, ‘জাহাজে পাহারাদার সরবরাহের বিষয়টি আমি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখব। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের উক্ত রায়ের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সিভিল রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। এমতাবস্থায় বিষয়টি সুরাহা হলে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তবে বন্দর ব্যবহারকারী ফোরাম দাবি করেছে, তারা প্রচারপত্র বিলি ও আন্দোলনের বিষয়ে কিছু জানে না। আর প্রচারপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা নিয়ম মেনে সব কাজ করছে।
এর আগে বন্দরের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ঈদের দিন সোমবার জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে নামাজ শেষে তিনি বন্দর নিয়ে ষড়ষন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করার কথা বললেও এর কোনো কমিটি এখনো গঠন করা হয়নি। আপাতত মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থিত বন্দর কর্মচারী পরিষদ এবং ডক বন্দর শ্রমিক কর্মচারী পরিষদের নেতারা প্রচারপত্র বিলি করছেন। বন্দরের বিভিন্ন বিভাগ, সংবাদপত্র কার্যালয়েও প্রচারপত্র বিলি হচ্ছে। তবে বন্দর অচল করে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা এখনো ‘পরিষদের’ নেই।
জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরী গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। আমরা ধীরে ধীরে আন্দোলনের পথে অগ্রসর হচ্ছি।’
জানা গেছে, আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির কাজ করছেন ডক বন্দর শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান। জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক নেতা, পেশাজীবী, সাংবাদিকসহ সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধি নিয়ে বৃহত্তর পরিসরে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। খুব শিগগির একটি সভা করে কমিটি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, এর মধ্যেই গণসংযোগ, মতবিনিময়ের মতো প্রচারণামূলক কার্যক্রম চলছে। বন্দর নিয়ে অনিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
প্রচারপত্রে বলা হয়, চার বছর আগে নির্মাণ শেষ হলেও বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল ‘নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল’ বা এনসিটির দরপত্রের শর্ত শিথিল করে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। বন্দরের তহবিল থেকে টাকা নিয়ে অন্য এলাকায় উন্নয়ন করার চেষ্টা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর মেরিন কন্ট্রাক্টর পাহারাদার কল্যাণ সমিতির তালিকা অনুসারে জাহাজে পাহারাদার নিয়োগ না করার বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়। বন্দরের যেসব জরুরি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে না, সেগুলো তুলে ধরবে এই পরিষদ।
মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে গভীর ষড়ষন্ত্র হচ্ছে। চার বছরেও নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিপূর্ণভাবে চালু করা যায়নি। সাইফ পাওয়ার টেক নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার জন্য এনসিটির দরপত্র দলিলের ১২টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত শিথিল করা হয়েছে। নিয়ম না থাকলেও বন্দরের টাকা নিয়ে অন্যত্র উন্নয়নের ষড়ষন্ত্র হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায় পাহারাদার কল্যাণ সমিতির পক্ষে গেলেও বন্দর টাকা খরচ করে এর বিরুদ্ধে আবারও আইনি কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
মহিউদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করেন, বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই সাইফ পাওয়ার টেক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করছে। তাদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার আয়োজন চলছে। এই প্রতিষ্ঠান কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই বন্দর থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, তাঁদের বক্তব্য বন্দরের উপদেষ্টা কমিটির আগামী সভায় লিখিতভাবে তুলে ধরা হবে। এর পরও অনিয়ম-ষড়ষন্ত্র বন্ধ না হলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের দরপত্রে অনিয়ম নিয়ে গত ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদ-উজ-জামানের কাছে চিঠি দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও দেওয়া হয়। চিঠিতে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের দরপত্রের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নৌমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দরপত্র-প্রক্রিয়া বাতিল এবং নতুন করে দরপত্রের প্রক্রিয়া শুরু, আপত্তি সত্ত্বেও সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডকে নির্বাচিত করা ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। মহাজোট সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য একটি মহল এই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার চক্রান্ত করছে বলে চিঠিতে দাবি করা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মহিউদ্দিন চৌধুরীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে অবহিত করতে বলা হয়। মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে ৫ আগস্ট মতামত দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই বন্দর কর্তৃপক্ষ দরপত্রের শর্ত সংশোধন-বিয়োজন করেছিল। এখন আবার অভিযোগের বিষয়ে তারাই মতামত দিচ্ছে। এনসিটির দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ মুহূর্তেও শর্ত সংশোধন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ৩০ আগস্ট এই প্রকল্পের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে বন্দরের মুখপাত্র ও সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রচারপত্রটি দেখেছি। নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে প্রচারপত্রে যেসব শর্ত সংশোধন বা শিথিল করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে করা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বন্দর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। বন্দর নিয়ে তাঁর কোনো পরামর্শ থাকলে উপদেষ্টা কমিটির আগামী সভায় জানাতে পারবেন।
তবে বন্দর ব্যবহারকারী ফোরামের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মোরশেদ মুরাদ দাবি করেছেন, প্রচারপত্র বিলি ও আন্দোলনের বিষয়টি এখনো তাঁর নজরে আসেনি। তিনি বলেন, ‘বন্দর অচল করে কোনো আন্দোলন আমরা সমর্থন করি না। নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন হলে অর্থাৎ মানববন্ধন, প্রচারপত্র বিলি, নানা পর্ষদে অভিযোগ জানানো—এগুলো সমর্থন করা যায়।’
দরপত্রে অনিয়মের পাশাপাশি জাহাজে পাহারাদার নিয়োগের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদকে গত ১৮ জুলাই চিঠি দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। গত ৩০ জুলাই বন্দর চেয়ারম্যান সেই চিঠির জবাবে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে জানান, ‘জাহাজে পাহারাদার সরবরাহের বিষয়টি আমি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখব। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের উক্ত রায়ের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সিভিল রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। এমতাবস্থায় বিষয়টি সুরাহা হলে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
No comments