রাষ্ট্রদূত পদে রাজনৈতিক নিয়োগ বাড়ছেঃ কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষতি হতে পারে
বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলোতে রাজনৈতিক বিবেচনায় রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার নিয়োগ দেয়ার প্রবণতা আগেও ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে তা মাত্রাছাড়া রূপ নিয়েছে। বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় আসতে নানাভাবে সহায়তা করার পুরস্কার হিসেবে এসব নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে মনে করা হয়।
এভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে সাবেক আমলা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর পর্যন্ত অনেকেই আছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত পেশাদার কূটনীতিকদের পাশ কাটিয়ে এভাবে দলীয় নিয়োগ চলতে থাকলে কূটনীতিকদের মধ্যে অসন্তোষ এবং হতাশা দেখা দিতে বাধ্য। এর পরিণতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজের গতি যদি কমে যায় এবং সমন্বয়হীনতা দেখা দেয় তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে ভোটারদের সমর্থন ছাড়াও বিভিন্ন মহলের সাহায্য সহযোগিতা যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে সে তথ্য এখন ওপেন-সিক্রেট। এসব সাহায্যের প্রতিদান দেয়ার একটা তাগিদ সরকার অনুভব করতে পারে বৈকি! কিন্তু বিদেশে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনগুলো দেশের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর দায়িত্ব পালন করে থাকে। এর জন্য সর্বোচ্চ পেশাগত দক্ষতা আবশ্যক। অন্যথায় রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই, কূটনৈতিক মিশনগুলোকে দান-প্রতিদানের খেলা থেকে মুক্ত রাখাই বাঞ্ছনীয়। অন্যথায় কী কাণ্ড ঘটতে পারে তার একটি খণ্ডচিত্র আমরা এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেয়ার সময় দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী যখন ডায়াসে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন রাজনৈতিক বিবেচনায় নিযুক্ত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীর ছেড়ে যাওয়া আসনে টুক করে বসে পড়েছিলেন। জাতিসংঘের অধিবেশন হলে এ ঘটনায় ভব্যতা রক্ষার খাতিরে উচ্চস্তরে হাসির রোল পড়েনি বটে, তবে এতে অনেকের মনে বাংলাদেশের মান সম্পর্কে যে ধারণা গেঁথে গেছে তা মোটেও মর্যাদাকর নয়।
আমাদের দেশে বিসিএস পরীক্ষায় যারা খুব ভালো ফল করেন তারাই ফরেন ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগ পান। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে নিম্ন বা সাধারণ মেধার কারো পক্ষে অফিসার হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চৌকাঠ ডিঙানো অসম্ভব। এসব চৗকস তরুণ অফিসার ফরেন ডেস্কে এবং বিদেশে বিভিন্ন মিশনে কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন এবং এক পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হন। যখন যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা নিষ্ঠার সঙ্গে রাষ্ট্রকে সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশিত। এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যদি ‘আমাদের’ আর ‘তাদের’ লোক হিসেবে ভাগ করে ফেলা হয় তবে সেটা হবে দেশের জন্য এক স্থায়ী ক্ষতি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘আমাদের’ লোকের আকাল দেখা দেয়ায় যদি বাইরে থেকে লোক ধরে এনে একের পর এক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পদগুলোতে বসানো হতে থাকে, তবে অতি অবশ্যই কূটনৈতিক তত্পরতায় ছন্দপতন ঘটবে। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
আমরা দলীয়করণের সংকীর্ণ খেলা খেলতে গিয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাবমূর্তি একেবারে মলিন করে ফেলেছি। এখন দরীয়করণের ভূত যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও তাড়া করে, তবে তাকে দুর্ভাগ্যজনক ছাড়া আর কী বলার থাকে। ফরেন সার্ভিসের অফিসারদের স্বপ্ন থাকে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পদে পোস্টিং পাওয়ার। এই পদগুলোতেই যদি বাইরে থেকে লোক এনে বসিয়ে দেয়া হয় তবে তাদের স্বপ্নভঙ্গ ঘটে। যাদের হাতে বিদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখার দায়িত্ব অর্পিত, তাদেরকে এভাবে অসুস্থ করে তোলার অদূরদর্শিতা থেকে সরকারের অবিলম্বে সরে আসা উচিত।
আমাদের দেশে বিসিএস পরীক্ষায় যারা খুব ভালো ফল করেন তারাই ফরেন ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগ পান। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে নিম্ন বা সাধারণ মেধার কারো পক্ষে অফিসার হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চৌকাঠ ডিঙানো অসম্ভব। এসব চৗকস তরুণ অফিসার ফরেন ডেস্কে এবং বিদেশে বিভিন্ন মিশনে কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন এবং এক পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হন। যখন যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা নিষ্ঠার সঙ্গে রাষ্ট্রকে সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশিত। এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যদি ‘আমাদের’ আর ‘তাদের’ লোক হিসেবে ভাগ করে ফেলা হয় তবে সেটা হবে দেশের জন্য এক স্থায়ী ক্ষতি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘আমাদের’ লোকের আকাল দেখা দেয়ায় যদি বাইরে থেকে লোক ধরে এনে একের পর এক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পদগুলোতে বসানো হতে থাকে, তবে অতি অবশ্যই কূটনৈতিক তত্পরতায় ছন্দপতন ঘটবে। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
আমরা দলীয়করণের সংকীর্ণ খেলা খেলতে গিয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাবমূর্তি একেবারে মলিন করে ফেলেছি। এখন দরীয়করণের ভূত যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও তাড়া করে, তবে তাকে দুর্ভাগ্যজনক ছাড়া আর কী বলার থাকে। ফরেন সার্ভিসের অফিসারদের স্বপ্ন থাকে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পদে পোস্টিং পাওয়ার। এই পদগুলোতেই যদি বাইরে থেকে লোক এনে বসিয়ে দেয়া হয় তবে তাদের স্বপ্নভঙ্গ ঘটে। যাদের হাতে বিদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখার দায়িত্ব অর্পিত, তাদেরকে এভাবে অসুস্থ করে তোলার অদূরদর্শিতা থেকে সরকারের অবিলম্বে সরে আসা উচিত।
No comments