সান্ত্বনা পুরস্কার পাচ্ছেন মুলার
সকার সিটি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে ফিফা জ্যাঁ-পল ব্রিগার যতটা রহস্য করে বিশ্বকাপের সেরা যুব খেলোয়াড়দের সংক্ষিপ্ত তালিকা ঘোষণা করলেন, ততটা রহস্য এর মধ্যে ছিল না। অনেক সাংবাদিকই তাঁদের খাতায় প্রথমে এই তিনটি নামই লিখে রেখেছিলেন—জার্মানির টমাস মুলার, মেক্সিকোর জিওভানি ডস সান্টোস ও ঘানার আন্দ্রে আইয়ু। ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের পরিচালক তাই কাল যখন তাঁদের নাম ঘোষণা করলেন, অনেকেরই মুখে মুচকি হাসি। ভাবখানা এমন, এর মধ্যে রহস্যটা কোথায়, আমরা তো জানতামই!
ব্রিগার তিনজন খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করে তাঁদের এই বিশ্বকাপ কীর্তির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন, সাংবাদিকেরা ফিসফাস করেন, ‘হয়েছে, হয়েছে। আমরা সব জানি।’
একেবারেই সঠিক নির্বাচন। সামান্য বিতর্কের কালো দাগও এতে লাগার কথা নয়। কিন্তু সেরা যুব খেলোয়াড়ের পুরস্কারটি শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠতে যাচ্ছে? এটাও সম্ভবত ঠিক হয়ে আছে। কে আবার? ২০ বছর বয়সী জার্মান স্ট্রাইকার টমাস মুলার!
টমাস মুলারকে স্ট্রাইকার বলাটা কি ঠিক হলো? ২০ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় তাঁর শরীরে যেন ৩২ বছর বয়সী একটা মাথা নিয়ে খেলেছেন। কখনো খেলেছেন উইঙ্গার হিসেবে। কখনো মিরোস্লাভ ক্লোসার পেছনে দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে, আবার কখনো হয়ে গেছেন খাঁটি মিডফিল্ডার। চারটি গোল করেছেন, বানিয়ে দিয়েছেন তিনটি। দুই পায়ের সঙ্গে তাঁর মাথাটাও যেন স্বয়ংক্রিয়, বাজপাখির চোখে খুঁজে নেন সঠিক পাসটা—সব্যসাচী খেলোয়াড়। অথচ মাত্রই গত মার্চে জাতীয় দলে তাঁর অভিষেক। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ওই প্রীতি ম্যাচে খেলেছিলেন ৬৬ মিনিট পর্যন্ত। তার পর জার্মানি তাঁকে সংবাদ সম্মেলনে পাঠালে বিজয়ী দলের কোচ ডিয়েগো ম্যারাডোনা কী অপমানটাই করলেন! ‘এখানে এই ছেলেটা থাকলে আমি থাকব না’ বলে উঠে গেলেন ম্যারাডোনা। ‘এই ছেলেটা’ বলতে ম্যারাডোনা বুঝিয়েছিলেন বলবয়। সেই বলবয়ই চার মাস পর কেপটাউনের গ্রিন পয়েন্ট স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার আরেকটি স্বপ্ন খুন করায় নেতৃত্ব দিলেন প্রথম গোল করে। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা জার্মানির কাছে হারল চার গোলে। ম্যারাডোনা মুলারকে চিনেছেন। তাঁকে চিনেছে সারা বিশ্বই।
জার্মান কিংবদন্তি যে গার্ড মুলারের ‘অপয়া’ ১৩ নম্বর জার্সিটাকে গায়ে তুলেছেন টমাস মুলার, তিনিই তাঁকে দেখছেন জার্মান ফুটবলের পয়মন্ত এক আবিষ্কার রূপে, ‘ও অনেক দূর যাবে। ওর বয়সে আমিও এমন ছিলাম না।’ গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১টি গোল করেছিলেন, দ্বিতীয় রাউন্ডে ইংল্যান্ড মূলত ডুবল তাঁর ২ গোলেই। পেলে ও বেকেনবাওয়ারের পর এত কম বয়সে বিশ্বকাপ নকআউট পর্বের কোনো ম্যাচে একাধিক গোল আর কেউ করতে পারেননি। ৬২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৬৬ গোলের মালিক জার্ড মুলারের জহুরি চোখ জহর ঠিকই চিনতে পেরেছে।
কিন্তু মুলার একটা দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছেন বুকে। দুটো হলুদ কার্ডের বেড়াজালে আটকে খেলতে পারলেন না সেমিফাইনাল। দর্শক হয়ে স্পেনের কাছে সেমিফাইনালে স্বপ্ন শেষ হতে দেখলেন জার্মানির। ডারবানের মোজেস মাভিদা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে চূর্ণ করে শুরু হয়েছিল জার্মানির স্বপ্নদৌড়, সমাপ্তিও হলো সেখানেই। পুরো জার্মান শিবিরে মুলার তাই আনন্দের পাশে একটা হতাশারও নাম। সমর্থকেরা বলছে, মুলার থাকলে জার্মানিকে হারানো যেত না। জার্মান সাংবাদিকেরা বলছেন, মুলারের অভাবটাই বড় হয়ে দেখা দিল আসল ম্যাচে। কোচ জোয়াকিম লো মুলারের জন্য এখনো ‘হাহাকার’ করছেন, ‘মুলার থাকলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত।’
মুলারের বুকের মধ্যে কী ঝড় বইছে, সেটি কেবল তিনিই বুঝবেন। তবে একটা স্বগতোক্তি হয়তো করছেন বায়ার্ন মিউনিখের তরুণ তুর্কি, ‘এ রকম অর্জনের মুহূর্তেই কী যেন ঘটে যায় জার্মানির! ২০০২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কার্ডের খাঁড়ায় কাটা পড়লেন মাইকেল বালাক, আর এবার কোয়ার্টার ফাইনালে আমি।’
জার্মানির নতুন এই ‘পোস্টার-বয়ের’ সামনে বিশ্বকাপের বড় একটা পুরস্কারের হাতছানি এখনো আছে। আজ পোর্ট এলিজাবেথে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়ের জালে আরও বার দুয়েক বল পাঠাতে পারলে সোনার জুতাও উঠতে পারে তাঁর পায়ে। না হলে সেরা যুব খেলোয়াড়ের পুরস্কার তো রইলই। ডস সান্টোস আর ঘানার কিংবদন্তি আবেদি পেলে তনয় নিশ্চিত করেই তাঁর পেছনে থাকবেন। কিন্তু এই পুরস্কার তাঁকে আরও কষ্টই দেবে। গতবার এই পুরস্কার যেমন কষ্ট দিয়েছিল সতীর্থ লুকাস পোডলস্কিকে।
ব্রিগার তিনজন খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করে তাঁদের এই বিশ্বকাপ কীর্তির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন, সাংবাদিকেরা ফিসফাস করেন, ‘হয়েছে, হয়েছে। আমরা সব জানি।’
একেবারেই সঠিক নির্বাচন। সামান্য বিতর্কের কালো দাগও এতে লাগার কথা নয়। কিন্তু সেরা যুব খেলোয়াড়ের পুরস্কারটি শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠতে যাচ্ছে? এটাও সম্ভবত ঠিক হয়ে আছে। কে আবার? ২০ বছর বয়সী জার্মান স্ট্রাইকার টমাস মুলার!
টমাস মুলারকে স্ট্রাইকার বলাটা কি ঠিক হলো? ২০ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় তাঁর শরীরে যেন ৩২ বছর বয়সী একটা মাথা নিয়ে খেলেছেন। কখনো খেলেছেন উইঙ্গার হিসেবে। কখনো মিরোস্লাভ ক্লোসার পেছনে দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে, আবার কখনো হয়ে গেছেন খাঁটি মিডফিল্ডার। চারটি গোল করেছেন, বানিয়ে দিয়েছেন তিনটি। দুই পায়ের সঙ্গে তাঁর মাথাটাও যেন স্বয়ংক্রিয়, বাজপাখির চোখে খুঁজে নেন সঠিক পাসটা—সব্যসাচী খেলোয়াড়। অথচ মাত্রই গত মার্চে জাতীয় দলে তাঁর অভিষেক। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ওই প্রীতি ম্যাচে খেলেছিলেন ৬৬ মিনিট পর্যন্ত। তার পর জার্মানি তাঁকে সংবাদ সম্মেলনে পাঠালে বিজয়ী দলের কোচ ডিয়েগো ম্যারাডোনা কী অপমানটাই করলেন! ‘এখানে এই ছেলেটা থাকলে আমি থাকব না’ বলে উঠে গেলেন ম্যারাডোনা। ‘এই ছেলেটা’ বলতে ম্যারাডোনা বুঝিয়েছিলেন বলবয়। সেই বলবয়ই চার মাস পর কেপটাউনের গ্রিন পয়েন্ট স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার আরেকটি স্বপ্ন খুন করায় নেতৃত্ব দিলেন প্রথম গোল করে। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা জার্মানির কাছে হারল চার গোলে। ম্যারাডোনা মুলারকে চিনেছেন। তাঁকে চিনেছে সারা বিশ্বই।
জার্মান কিংবদন্তি যে গার্ড মুলারের ‘অপয়া’ ১৩ নম্বর জার্সিটাকে গায়ে তুলেছেন টমাস মুলার, তিনিই তাঁকে দেখছেন জার্মান ফুটবলের পয়মন্ত এক আবিষ্কার রূপে, ‘ও অনেক দূর যাবে। ওর বয়সে আমিও এমন ছিলাম না।’ গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১টি গোল করেছিলেন, দ্বিতীয় রাউন্ডে ইংল্যান্ড মূলত ডুবল তাঁর ২ গোলেই। পেলে ও বেকেনবাওয়ারের পর এত কম বয়সে বিশ্বকাপ নকআউট পর্বের কোনো ম্যাচে একাধিক গোল আর কেউ করতে পারেননি। ৬২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৬৬ গোলের মালিক জার্ড মুলারের জহুরি চোখ জহর ঠিকই চিনতে পেরেছে।
কিন্তু মুলার একটা দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছেন বুকে। দুটো হলুদ কার্ডের বেড়াজালে আটকে খেলতে পারলেন না সেমিফাইনাল। দর্শক হয়ে স্পেনের কাছে সেমিফাইনালে স্বপ্ন শেষ হতে দেখলেন জার্মানির। ডারবানের মোজেস মাভিদা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে চূর্ণ করে শুরু হয়েছিল জার্মানির স্বপ্নদৌড়, সমাপ্তিও হলো সেখানেই। পুরো জার্মান শিবিরে মুলার তাই আনন্দের পাশে একটা হতাশারও নাম। সমর্থকেরা বলছে, মুলার থাকলে জার্মানিকে হারানো যেত না। জার্মান সাংবাদিকেরা বলছেন, মুলারের অভাবটাই বড় হয়ে দেখা দিল আসল ম্যাচে। কোচ জোয়াকিম লো মুলারের জন্য এখনো ‘হাহাকার’ করছেন, ‘মুলার থাকলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত।’
মুলারের বুকের মধ্যে কী ঝড় বইছে, সেটি কেবল তিনিই বুঝবেন। তবে একটা স্বগতোক্তি হয়তো করছেন বায়ার্ন মিউনিখের তরুণ তুর্কি, ‘এ রকম অর্জনের মুহূর্তেই কী যেন ঘটে যায় জার্মানির! ২০০২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কার্ডের খাঁড়ায় কাটা পড়লেন মাইকেল বালাক, আর এবার কোয়ার্টার ফাইনালে আমি।’
জার্মানির নতুন এই ‘পোস্টার-বয়ের’ সামনে বিশ্বকাপের বড় একটা পুরস্কারের হাতছানি এখনো আছে। আজ পোর্ট এলিজাবেথে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়ের জালে আরও বার দুয়েক বল পাঠাতে পারলে সোনার জুতাও উঠতে পারে তাঁর পায়ে। না হলে সেরা যুব খেলোয়াড়ের পুরস্কার তো রইলই। ডস সান্টোস আর ঘানার কিংবদন্তি আবেদি পেলে তনয় নিশ্চিত করেই তাঁর পেছনে থাকবেন। কিন্তু এই পুরস্কার তাঁকে আরও কষ্টই দেবে। গতবার এই পুরস্কার যেমন কষ্ট দিয়েছিল সতীর্থ লুকাস পোডলস্কিকে।
No comments