সিরিয়া নিয়েই কি হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!
চারদিকে
উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। কি ঘটতে যাচ্ছে সিরিয়ায়। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত
হামলা চালাতে। প্রস্তুত ফ্রান্স। প্রস্তুতি নিচ্ছে বৃটেন। রাশিয়ার তরফ থেকে
সতর্কতা দেয়া হয়েছে। কোন দিকে মোড় নেবে সিরিয়া যুদ্ধ! তবে কি এখান থেকেই
শুরু হবে এ শতকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সিরিয়ার আকাশসীমায় এতগুলো দেশের
যুদ্ধবিমান যখন গর্জন করবে তখন একটির সঙ্গে আরেকটির টক্কর লেগে গেলেই সূচনা
হতে পারে এমন যুদ্ধ। আর তার ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্যে সিরিয়া নামের যে
একটি দেশ ছিল, তাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ছিল তা হতে পারে বিপন্ন। এখনই তো
সিরিয়া বলতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক ধ্বংসস্তূপ। চারদিকে লাশের সারি। পচে
যাওয়া, পরিত্যক্ত লাশের গন্ধে ভারি হয়েছে বাতাস। হাসপাতালগুলো হিমশিম
খাচ্ছে আহতদের সামাল দিতে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বেসামরিক
লোকজনের ওপর রাসায়নিক গ্যাস হামলা চালিয়েছেন, এই অভিযোগে তার ওপর তীব্র
আক্রমণ চালাতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স। তার সঙ্গে যোগ দেবে বৃটেন।
বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের পদক্ষেপে
তারা সহযোগিতা করবেন। এ জন্য তিনি সিনিয়র মন্ত্রীদের এক বৈঠক আহ্বান
করেছেন। বুধবার রাতে সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানো নিয়ে হাউস অব
কমন্সে ভোটের আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন তেরেসা মে। তবে প্রেসিডেন্ট
বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যৌথ
হামলায় অংশ নিতে মন্ত্রীদের সমর্থন চেয়েছেন তিনি । এ জন্য ডাউনিং স্ট্রিটে
তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। তেরেসা মে বলেছেন, রাসায়নিক গ্যাস হামলাকে কোনো
জবাব না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে না। দামেস্কের কাছে শনিবার যে নৃশংসতা চালানো
হয়েছে তার জন্য দায়ী বাশার আল আসাদের বাহিনী। ওদিকে বৃটেনের সেনা প্রধানদের
নির্দেশ দেয়া হয়েছে বৃটিশ সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজকে প্রস্তুত থাকতে। বলা
হয়েছে, টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সম্বলিত এসব সাবমেরিনকে সিরিয়ার কাছাকাছি
ছুটে গিয়ে অবস্থান নিতে। এক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সংঘাতের প্রবল
আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কেউ পিছু হটছে না। আর সিরিয়ায় হামলা চালানোর জন্য
পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন নেই বলেই বিশ্বাস করছে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট।
ওদিকে রাশিয়াকে প্রস্তুত থাকার কথা বলে বুধবার নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতিকে
উত্তেজনাকর করে তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, চমৎকার ও
সুন্দর স্মার্ট ক্রজ ক্ষেপণাস্ত্র আসছে। এ সময় তিনি প্রেসিডেন্ট বাশার আল
আসাদের পক্ষ না নিতে আহ্বান জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে।
ওদিকে লেবাননে অবস্থানরত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যদি সিরিয়ার ক্ষমতাসীন
সরকারের বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো হামলা হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ও
যুদ্ধজাহাজকে টার্গেট করতে প্রস্তুত তার দেশ। যদি এমনটাই হয় তাহলে তা
সিরিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নতুন এক মাত্রা পাবে। এমন কি তা তৃতীয়
বিশ্বযুুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সাবেক সিনিয়র সেনা কমান্ডার
স্যার রিচার্ড ব্যারোনস। সিরিয়ায় এমন হস্তক্ষেপেরা বিপদ সম্পর্কে তেরেসা
মেকে সতর্ক করেছেন হাউস অব কমন্সের প্রতিরক্ষা বিষয়ক কমিটির চেয়ার জুলিয়ান
লুইস। এমনতরো মনোভাব পোষণ করেন আরো অনেক এমপি। ওদিকে সর্বশেষ যে খবর পাওয়া
যাচ্ছে তাতে বলা হচ্ছে, সাইপ্রাসের আক্রোতিরিতে রয়েল এয়ার ফোর্সের যেসব
বৃটিশ সেনারা অবস্থান করছেন তারা ক্রজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার নির্দেশের
অপেক্ষায় আছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একটি স্ট্রাইক ফোর্স উপসাগরমুখে
যাত্রা করেছে। এটি যুদ্ধবিমান বহনে সক্ষম। অন্যদিকে সিরিয়ার সেনাবাহিনীও
তাদের এয়ার ইউনিটগুলো নতুন করে সাজানো শুরু করেছে। রাশিয়ার সেনাদের সরিয়ে
নেয়া হয়েছে দুমাতে।
No comments