গাজায় যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরাইল -জাতিসংঘ
গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক
কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের
এক জরুরি অনুষ্ঠানে ইসরাইলি সেনাদের প্রায় একতরফা হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে
সতর্ক করা হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ইসরাইলি সহিংসতা বন্ধে
তেলআবিবে বেনজামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি বেসামরিক
নারী-পুরুষ হত্যার তীব্র নিন্দা জানান। এদিকে ইসরাইলি সেনাদের ক্ষেপণাস্ত্র
ও গোলার আঘাতে বুধবার আরও ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ১৬ দিনে
নিহতের সংখ্যা সাড়ে ছয়শ’ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় ৪
হাজার। হতাহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু। বিবিসি, আল জাজিরা ও এএফসিসহ
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এসব তথ্য দিয়েছে।
বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের জরুরি অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা নাভি পিল্লাই বলেছেন, ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করছে। এটা যুদ্ধাপরাধ। তিনি বলেন, ইসরাইল বেসামরিক নাগরিকদের হামলা থেকে সুরক্ষার যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। গাজায় হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ধ্বংস করে দিচ্ছে তারা। হত্যা করছে শিশুদের। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন। তবে তিনি ফিলিস্তিনি হামাসের এলোপাতাড়ি রকেট ও মর্টার হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন। এদিকে ইসরাইল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেই দাবি করে আসছে এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বে কোনো তদন্তেও তারা সহযোগিতা করবে না বলেও মনে করা হচ্ছে। ইসরাইলের বিচারমন্ত্রী জিপি লিভনি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদকে ইসরাইলবিরোধী প্রতিষ্ঠান আখ্যা দিয়েছেন।
বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের জরুরি অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা নাভি পিল্লাই বলেছেন, ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করছে। এটা যুদ্ধাপরাধ। তিনি বলেন, ইসরাইল বেসামরিক নাগরিকদের হামলা থেকে সুরক্ষার যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। গাজায় হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ধ্বংস করে দিচ্ছে তারা। হত্যা করছে শিশুদের। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন। তবে তিনি ফিলিস্তিনি হামাসের এলোপাতাড়ি রকেট ও মর্টার হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন। এদিকে ইসরাইল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেই দাবি করে আসছে এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বে কোনো তদন্তেও তারা সহযোগিতা করবে না বলেও মনে করা হচ্ছে। ইসরাইলের বিচারমন্ত্রী জিপি লিভনি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদকে ইসরাইলবিরোধী প্রতিষ্ঠান আখ্যা দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের জরুরি বিভাগের কর্মর্তারা জানান, বুধবার সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ইসরাইলি সেনাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ছয়জন নিহত ও ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। পরে দিনভর আরও হামলায় হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। গাজার স্থানীয়রা জানান, ইসরাইলি সেনারা দুপুরের দিকে গাজার পাওয়ার প্ল্যান্টে হামলা চালায়। যেখান থেকে গাজার প্রায় অর্ধেক মানুষের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা হয়। পাওয়ার প্ল্যান্টের এক কর্মকর্তা জানান, এর বেশিরভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন মাত্র ১০ ভাগ বাসিন্দা বিদ্যুৎ পাবেন। বিদ্যুতের পাশাপাশি সমগ্র গাজায় খাদ্য-পানীয় ও ওষুধের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১৬ দিন ধরে চলা সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজারের বেশি। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী হতাহত ফিলিস্তিনিদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এর মধ্যে বেশকিছু শিশুও রয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর তথ্য অনুযায়ী ১ লাখ ১৮ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়েছেন। যাদের বেশিরভাগ আশ্রয় নিয়েছেন জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে। ইসরাইলি হামলা শুরুর পর থেকে জাতিসংঘের স্কুলগুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, সহিংসতায় হামাসের হামলায় ইসরাইলের ৩০ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৮ জন সেনা ও দুজন বেসামরিক নাগরিক। এদিকে হামাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজার উত্তর বেইত হানুন শহরে হামাসের সামরিক শাখা ইজাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের যোদ্ধাদের হাতে বুধবার আরও একটি ইসরাইলি ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে। এ ছাড়া আগের রাতে তেলআবিব বিমানবন্দরে রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। পরে বিমানবন্দরটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ইসরাইলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে গাজা থেকে হামাস সদস্যরা রকেট হামলা চালাচ্ছেন অভিযোগ করে গত ৮ জুলাই থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। হামলা শুরু করার কয়েক দিন পর বিমান হামলার পামাপাশি স্থল হামলাও শুরু করে তারা।
No comments