পবিত্র কোরআনের আলো-দান-খয়রাত করলে অমুসলিমগণ দুনিয়ায় বিনিময় পাবেন
৯৩. ইযহাবূ বিকামীসী হা-যা- ফাআলকূহু 'আলা- ওয়াজহি আবী য়া'তি বাসীরান, ওয়া'তূনী বিআহলিকুম আজমা'ঈনা। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ৯৩. তোমরা আমার এই পোশাকটি নিয়ে যাও।
অনুবাদ : ৯৩. তোমরা আমার এই পোশাকটি নিয়ে যাও।
অতঃপর এটি পিতাজির মুখের ওপর রেখে দিও, এতে তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে। তোমাদের পরিবারের সবাইকে আমার এখানে নিয়ে আসো।*
তাফসির : * পিতা ইয়াকুব (আ.) ইউসুফ (আ.)-এর বিরহ বেদনায় কাঁদতে কাঁদতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। নিজের পরিচয় প্রকাশের পর ভাইদের বাড়ি ফেরার সময় বললেন, তোমরা আমার এই পোশাকটি নিয়ে পিতাজির মুখের ওপর রেখে দাও। এতেই তাঁর দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক হয়ে ওঠবে। তখন তিনি এখানে চলে আসতেও সক্ষম হবেন। তিনি ভাইদের পরিবারের সব সদস্যসহ মিসরে চলে আসতে নির্দেশ করলেন। লক্ষ করার মতো বিষয় হলো, পিতা ইয়াকুব (আ.)-কে তিনি নিয়ে আসতে সরাসরি কিছু না বলে শুধু এটুকু বলেছেন, আমার পোশাকটি পিতাজির মুখের ওপর রেখে দিলে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। এরপর তিনি এখানে চলে আসতেও সক্ষম হবেন। সরাসরি পিতাকে মিসরে চলে আসার নির্দেশ দেওয়াটা আদবের পরিপন্থী আচরণ। তাই তিনি এ ধরনের নির্দেশ দেননি, বরং পিতা ইয়াকুব (আ.) মিসরে চলে আসার ক্ষেত্রে যে প্রধান বাধা ছিল দৃষ্টিশক্তিহীনতা, তা দূর করার ব্যবস্থা করে সর্বোচ্চ আদব চর্চার নজির স্থাপন করলেন।
মাসআলা : ইউসুফ (আ.)-এর কাছে গিয়ে ভাইয়েরা 'সদকা' প্রাপ্তির আবেদন করেছিলেন- পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, ভাইয়েরা আল্লাহর নবী হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর সন্তান। কারো কাছ থেকে নিজেদের জন্য সদকা-খয়রাত গ্রহণ করা কিভাবে হালাল হয়? তা ছাড়া সদকা গ্রহণ হালাল ধরে নিলেও অন্যের কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া কিভাবে বৈধ হলো? নবী-রাসুল এবং তাঁদের সন্তান-সন্তুতিদের জন্য তো সদকা-খয়রাত গ্রহণ করা হালাল নয়। আবার ইউসুফ (আ.) নিজেও নবী ছিলেন। ভাইয়েরা তাঁর কাছে সদকা প্রার্থনা করলেও তিনি তাদের এ বিষয়ে সতর্ক করলেন না কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর হলো, এখানে সদকা শব্দটি উল্লেখ করা হলেও প্রকৃত অর্থে যে ধরনের সদকা গ্রহণ করা নবী-রাসুলদের জন্য অবৈধ, তা চাওয়া হয়নি। এখানে সদকা শব্দ ব্যবহার করে বাণিজ্যিক সুবিধা প্রার্থনা করা হয়েছে। কারণ, ভাইয়েরা ইউসুফ (আ.)-এর কাছে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে খাদ্যশস্য পাওয়ার আবেদন করেনি, বরং তারা কিছু অকেজো বা কম দামি বস্তু পেশ করেছিলেন। তাদের অনুরোধের মর্ম ছিল এ রকম, এসব স্বল্পমূল্যের বস্তু রেয়াত করে গ্রহণ করুন। বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন মুজাহিদ (রহ.) এ ক্ষেত্রে বলেছেন, সদকা-খয়রাত গ্রহণ করার অবৈধতা শুধু উম্মতে মুহাম্মদির সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত। অন্য নবী-রাসুলের জন্য এবং তাঁদের সন্তান-সন্তুতিদের ক্ষেত্রে তা অবৈধ ছিল না। দান-খয়রাত করলে আল্লাহ তায়ালা উত্তম বিনিময় দিয়ে থাকেন। মুমিন বান্দাদের দুনিয়া ও আখিরাতে এবং অমুসলিম দাতাদের শুধু দুনিয়াতে বিনিময় দিয়ে থাকেন। এখানে ভাইয়েরা পরিচয় জানার আগেই মিসরের আজিজ ইউসুফের জন্য দোয়া করেছেন। তাই তারা ব্যাপক অর্থে এমন ভাষায় দোয়া করেছে, যা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতের বিনিময় বোঝায়।
তাফসিরে বায়ানুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * পিতা ইয়াকুব (আ.) ইউসুফ (আ.)-এর বিরহ বেদনায় কাঁদতে কাঁদতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। নিজের পরিচয় প্রকাশের পর ভাইদের বাড়ি ফেরার সময় বললেন, তোমরা আমার এই পোশাকটি নিয়ে পিতাজির মুখের ওপর রেখে দাও। এতেই তাঁর দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক হয়ে ওঠবে। তখন তিনি এখানে চলে আসতেও সক্ষম হবেন। তিনি ভাইদের পরিবারের সব সদস্যসহ মিসরে চলে আসতে নির্দেশ করলেন। লক্ষ করার মতো বিষয় হলো, পিতা ইয়াকুব (আ.)-কে তিনি নিয়ে আসতে সরাসরি কিছু না বলে শুধু এটুকু বলেছেন, আমার পোশাকটি পিতাজির মুখের ওপর রেখে দিলে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। এরপর তিনি এখানে চলে আসতেও সক্ষম হবেন। সরাসরি পিতাকে মিসরে চলে আসার নির্দেশ দেওয়াটা আদবের পরিপন্থী আচরণ। তাই তিনি এ ধরনের নির্দেশ দেননি, বরং পিতা ইয়াকুব (আ.) মিসরে চলে আসার ক্ষেত্রে যে প্রধান বাধা ছিল দৃষ্টিশক্তিহীনতা, তা দূর করার ব্যবস্থা করে সর্বোচ্চ আদব চর্চার নজির স্থাপন করলেন।
মাসআলা : ইউসুফ (আ.)-এর কাছে গিয়ে ভাইয়েরা 'সদকা' প্রাপ্তির আবেদন করেছিলেন- পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, ভাইয়েরা আল্লাহর নবী হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর সন্তান। কারো কাছ থেকে নিজেদের জন্য সদকা-খয়রাত গ্রহণ করা কিভাবে হালাল হয়? তা ছাড়া সদকা গ্রহণ হালাল ধরে নিলেও অন্যের কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া কিভাবে বৈধ হলো? নবী-রাসুল এবং তাঁদের সন্তান-সন্তুতিদের জন্য তো সদকা-খয়রাত গ্রহণ করা হালাল নয়। আবার ইউসুফ (আ.) নিজেও নবী ছিলেন। ভাইয়েরা তাঁর কাছে সদকা প্রার্থনা করলেও তিনি তাদের এ বিষয়ে সতর্ক করলেন না কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর হলো, এখানে সদকা শব্দটি উল্লেখ করা হলেও প্রকৃত অর্থে যে ধরনের সদকা গ্রহণ করা নবী-রাসুলদের জন্য অবৈধ, তা চাওয়া হয়নি। এখানে সদকা শব্দ ব্যবহার করে বাণিজ্যিক সুবিধা প্রার্থনা করা হয়েছে। কারণ, ভাইয়েরা ইউসুফ (আ.)-এর কাছে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে খাদ্যশস্য পাওয়ার আবেদন করেনি, বরং তারা কিছু অকেজো বা কম দামি বস্তু পেশ করেছিলেন। তাদের অনুরোধের মর্ম ছিল এ রকম, এসব স্বল্পমূল্যের বস্তু রেয়াত করে গ্রহণ করুন। বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন মুজাহিদ (রহ.) এ ক্ষেত্রে বলেছেন, সদকা-খয়রাত গ্রহণ করার অবৈধতা শুধু উম্মতে মুহাম্মদির সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত। অন্য নবী-রাসুলের জন্য এবং তাঁদের সন্তান-সন্তুতিদের ক্ষেত্রে তা অবৈধ ছিল না। দান-খয়রাত করলে আল্লাহ তায়ালা উত্তম বিনিময় দিয়ে থাকেন। মুমিন বান্দাদের দুনিয়া ও আখিরাতে এবং অমুসলিম দাতাদের শুধু দুনিয়াতে বিনিময় দিয়ে থাকেন। এখানে ভাইয়েরা পরিচয় জানার আগেই মিসরের আজিজ ইউসুফের জন্য দোয়া করেছেন। তাই তারা ব্যাপক অর্থে এমন ভাষায় দোয়া করেছে, যা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতের বিনিময় বোঝায়।
তাফসিরে বায়ানুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments