বিএনপি চলতি অধিবেশনেই সংসদে যোগ দিচ্ছে
নবম জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিএনপি ৬৬ দিন অনুপস্থিত। চলতি অধিবেশনেই যোগ দিচ্ছে বিএনপি। আগামী দু'একদিনের মধ্যে সংসদীয় দলের সভা ডাকবেন দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সভায় সংসদে ফেরার দিন-তারিখ চূড়ানত্ম হবে।
পাশাপাশি সরকারী দলকে মোকাবেলার জন্য কী বিষয় নিয়ে সংসদে কথা বলা যাবে তাও ঠিক করবে বিএনপি। আটঘাট বেঁধেই বিরোধী দল বিএনপি সংসদে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে জনগণের উৎকণ্ঠার কথা তুলে ধরার জন্যই সংসদে ফেরার ইতিবাচক সিদ্ধানত্ম নেয়া হচ্ছে বলে মনত্মব্য করেন বিরোধী দলের চীফ হুইপ। সংসদের বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারম্নক বলেন, দু'একদিনের মধ্যেই সংসদীয় দলের সভা আহ্বান করা হতে পারে। ওই সভায়ই বিএনপি সংসদে ফিরে যাওয়ার ইতিবাচক সিদ্ধানত্ম নিবে। তবে তিনি আরও বলেন, বিএনপি সব সময় সংসদে ফিরতে চায়। সংসদকে কার্যকর করতে চায়। কিন্তু সরকার চায় না বিএনপি সংসদে ফিরে যাক। বরং বিভিন্নভাবে হয়রানি নির্যাতন করছে সরকার। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাসায় তাঁর কর্মচারীদের পর্যনত্ম প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। সেখানে গত ২৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৩টায় শহীদ মইনুল রোডের বাসায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতের সমন পৌঁছানো হয়। গভীর রাতে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে সমন পৌঁছানোর বিষয়টি অমর্যাদাকর। আমরা এ ধরনের কার্যকলাপের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিরোধী দলের চীফ হুইপ বলেন, বিরোধী দল যে মুহূর্তে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধানত্ম নিতে যাচ্ছে, সেই মুহূর্তে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের বিরোধী দলের নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সনকে গভীর রাতে সমন দেয়া কতটুকু মর্যাদাকর? সরকারের এসব কার্যকলাপে প্রমাণ হচ্ছে সরকার চায় না, বিরোধী দল সংসদে ফিরে যাক। বিরোধী দলকে দমন করতে চায় সরকার। দেখা গেছে সরকারী দলের সদস্যদের নামের মামলা প্রত্যাহার করা হলেও বিরোধীদলীয় নেতাদের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে না। বরং নতুন করে মামলা দেয়া হচ্ছে।শুক্রবার দুপুরে গুলশানের নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারম্নক এসব কথা বলেন। সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়া না দেয়ার বিষয় ছাড়াও গভীর রাতে বেগম জিয়ার বাড়িতে সমন পৌঁছানোর তিনি তীব্র নিন্দা জানান। একই সঙ্গে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক নেতা বিএম বাকির হোসেন এবং জাসাসের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরম্নল ইসলাম মিন্টুর মৃতু্যর তদনত্ম দাবি করেন বিরোধী দলের চীফ হুইপ। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপি ও আবুল খায়ের ভুঁইয়া এমপি প্রমুখ।
উলেস্নখ্য সংসদের সামনের সারিতে আসন বাড়ানোর দাবিতে প্রথম অধিবেশন থেকেই বিরোধী দল বিএনপি সংসদ বর্জন করে আসছে। বর্তমানে নবম জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন চলছে। প্রথম অধিবেশনের পর বিএনপি আর সংসদে ফিরে যায়নি। ইতোমধ্যে সামনের সারিতে আসন বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের কাছে ১০টি শর্ত পূরণের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। চলতি অধিবেশন আগামী মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় বসছে। এই অধিবেশনেই বিরোধী দলের যোগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিএনপি ৬৬ দিন অনুপস্থিত আছে। টানা ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে সংসদ সদস্যপদ খারিজের বিধান রয়েছে। নিজেদের সদস্যপদ রৰার জন্য হলেও বিএনপিকে সংসদে ফিরতে হবে। সদস্যপদ খারিজের সুযোগ দেবে না বিএনপি। চলতি অধিবেশনেই যোগ দেয়ার সম্ভাবনা বিএনপির।
এক প্রশ্নের জবাবে জয়নুল আবদীন ফারম্নক বলেন, একদিকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পীকার আমাদেরকে সংসদে ফিরতে আহবান জানাচ্ছেন। অন্যদিকে আমাদের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বাসায় গভীর রাতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন। বিরোধী দলের নেতার বাসায় তাঁর গাড়ি, সংসদের কাগজপত্র ও ব্যক্তিগত সহকারীদের পর্যনত্ম প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এটা কী ধরনের গণতন্ত্র? এভাবে কী সংসদ কার্যকর করা যায়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদের সামনের সারিতে আসন বাড়ানোর দাবিতে আমরা সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়া থেকে বিরত আছি। স্পীকারের কাছে আসন বাড়ানোর দাবি করেছি। স্পীকার যে আশ্বাস দিয়েছেন, আশা করি তিনি তাঁর কথা রাখবেন।
No comments