বাবার কবরে নিষাদ-নিনিতঃ কবরে হাত বুলিয়ে বাবাকে আদর করে দিচ্ছি by মাহমুদুল হাসান
সকাল থেকে ঝরছে শ্রাবণ ধারা। সুনসান নীরব গাজীপুরের নূহাশ পল্লীতে কেবলই টিপ টিপ বৃষ্টির ছন্দবদ্ধ শব্দ। এই শব্দ সৃষ্টি করেছে অন্যরকম বিষাদের। সারা দেশে যখন ঈদের আনন্দ, তখন এমনই বিষাদ মন নিয়ে ঈদের নামাজ পড়লো কিংবদন্তি লেখক হুমায়ূন আহমেদের দুই শিশু সন্তান নিষাদ ও নিনিত।
সোমবার সকালে নানা মোহাম্মদ আলী ও বাবার বন্ধুদের সঙ্গে নূহাশ পল্লীর পাশের ঈদগাহে যায় নিষাদ ও নিনিত। ঈদের নামাজ পড়ে সেখান থেকে নূহাশ পল্লীতে ফিরে জিয়ারত করে বাবার কবর। সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী নিষাদ তখন বাবার কবরের মাটিতে হাত বুলাচ্ছিল আর বলছিল ‘বাবাকে আদর করে দিচ্ছি’।
আর দেড় বছর বয়সী নিনিত কেবলই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। সে হয়তো জানেই না, তার বাবা চলে গেছেন অন্যভূবনের ভ্রমণে।
ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে রোববার দুই সন্তানসহ প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন আসেন নূহাশ পল্লীতে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শাওনের বাবা মোহাম্মদ আলী, মা তহুরা আলী এমপি, অবসর প্রকাশনীর আলমগীর রহমান, অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী স্বর্ণা মাজহার, হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু আর্কিটেক্ট করিম, অভিনেতা কমল ও শাওনের বোনেরা।
সোমবার সকালে শাওনের মুঠোফোনে মা তহুরা আলী ও অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলামের স্ত্রী বাংলানিউজের সঙ্গে ঈদের দিনে নূহাশ পল্লীর পরিবেশ সম্পর্কে কথা বলেন। তারা জানান, হুমায়ূনকে স্মরণ করার জন্যে তারা সবাই নূহাশ পল্লীতে ঈদ করতে এসেছেন।
তহুরা আলী এমপি বাংলানিউজকে বলেন, শাওন সকালে নিষাদ ও নিনিতকে গোসল করান। এরপর পরিয়ে দেন হুমায়ূনের প্রিয় নীল রঙের পাঞ্জাবি। নানা ও বাবা হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু-শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়ে ওরা। ঈদগাহ থেকে নূহাশ পল্লীতে ফিরে সবার সঙ্গে দুই পুত্রও বাবার কবর জিয়ারত করে।
স্বর্ণা মাজহার বলেন, ‘‘এখানে সবাই হুমায়ূন স্যারকে স্মরণ করতে এসেছেন। শাওনসহ সবাই আগের ঈদে হুমায়ূন আহমেদ কেমন উদযাপন করতেন তার স্মৃতিচারণ করছেন। সবার মনে কষ্ট। সবাই কাঁদছেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ঈদগাহ থেকে ফিরে সবাই যখন হুমায়ূন স্যারের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করছিলেন, তখন নিষাদ বাবার কবরে হাত বোলাচ্ছিল। তখন সে বলতে থাকে ‘বাবাকে আদর করছি, আমি বাবাকে আদর করছি’। আর ছোট্ট নিনিত কেবল তাকিয়ে দেখছিল।’’
তিনি বলেন, কবর জিয়ারত করে ফিরে এসে নিষাদ এখন তার বাবার কবরের ছবি আঁকছে। নিনিতের বয়স মাত্র দেড় বছর। তাই সে কিছুই তেমন বোঝেনা। কিন্তু নিষাদ বারবার বাবার কথা বলছে।
স্বর্ণা জানান, অন্য সকল ঈদে সন্তানদের নিজ হাতে গোসল করাতেন হুমায়ূন আহমেদ। তারপর নিয়ে যেতেন ঈদগাহে। আজ গোসল কারালেন শাওন। আর ঈদগাহে নিয়ে গেলেন অন্যরা।
হুমায়ূন আহমেদ তার এই দুই পুত্রকে অত্যান্ত ভালবাসতেন। তার বিভিন্ন লেখায় তার গভীর ভালবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়।
মোঘল সম্রাট হুমায়ূনকে নিয়ে লেখা হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘বাদশাহ নামদার’ বইটি তিনি উৎসর্গ করেন দেড় বছর বয়সী কনিষ্ঠ পুত্র নিনিতকে।
উৎসর্গপত্রে তিনি বলেন, ‘‘আমার কেবলই মনে হচ্ছে, পুত্র নিনিত পিতার কোনো স্মৃতি না নিয়েই বড় হবে। সে যেন আমাকে মনে রাখে, এই জন্য নানা কর্মকাণ্ড করছি। আমি ছবি তুলতে পছন্দ করি না । এখন সুযোগ পেলেই নিনিতকে কোলে নিয়ে ছবি তুলি। এই বইয়ের উৎসর্গপত্রও স্মৃতি মনে রাখার প্রকল্প।’’
দ্বিতীয় পক্ষের বড় ছেলে নিষাদ হুমায়ূনের নামেও হুমায়ূন কয়েকটি বই উৎসর্গ করেন। তিনি বলপয়েন্ট বইয়ের উৎসর্গপত্রে বলেন, ‘‘নিতাত বেবিকে (নিষাদ হুমায়ূন)। বাবাকে সে খুব বেশি দিন কাছে পাবে বলে মনে হচ্ছে না। যদি কোনো বিষন্ন চৈত্রের দিনে বাবার কথা তার জানতে ইচ্ছে করে, তখন এই বই সে পড়বে। এবং সে নিশ্চয়ই বলবে, আমার বাবা ছিলেন একজন দু:খী বলপয়েন্ট।’’
তার ভ্রমণ কাহিনীমূলক ‘দেখা না দেখা’ বইয়ের উৎসর্গ নিষাদকে করে হুমায়ূন উৎসর্গপত্রে লেখেন, ‘‘এখন নানা ভ্রমণের গল্প মানুষকে শুনিয়ে যাচ্ছি। তুমি যখন বড় হবে তখন আমি আরেক ভ্রমণে বের হবো অন্য ভূবনে। আফসোস! সেই ভ্রমণের কথা কাউকে শুনিয়ে যেতে পারবো না।’’
আর দেড় বছর বয়সী নিনিত কেবলই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। সে হয়তো জানেই না, তার বাবা চলে গেছেন অন্যভূবনের ভ্রমণে।
ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে রোববার দুই সন্তানসহ প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন আসেন নূহাশ পল্লীতে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শাওনের বাবা মোহাম্মদ আলী, মা তহুরা আলী এমপি, অবসর প্রকাশনীর আলমগীর রহমান, অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী স্বর্ণা মাজহার, হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু আর্কিটেক্ট করিম, অভিনেতা কমল ও শাওনের বোনেরা।
সোমবার সকালে শাওনের মুঠোফোনে মা তহুরা আলী ও অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলামের স্ত্রী বাংলানিউজের সঙ্গে ঈদের দিনে নূহাশ পল্লীর পরিবেশ সম্পর্কে কথা বলেন। তারা জানান, হুমায়ূনকে স্মরণ করার জন্যে তারা সবাই নূহাশ পল্লীতে ঈদ করতে এসেছেন।
তহুরা আলী এমপি বাংলানিউজকে বলেন, শাওন সকালে নিষাদ ও নিনিতকে গোসল করান। এরপর পরিয়ে দেন হুমায়ূনের প্রিয় নীল রঙের পাঞ্জাবি। নানা ও বাবা হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু-শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়ে ওরা। ঈদগাহ থেকে নূহাশ পল্লীতে ফিরে সবার সঙ্গে দুই পুত্রও বাবার কবর জিয়ারত করে।
স্বর্ণা মাজহার বলেন, ‘‘এখানে সবাই হুমায়ূন স্যারকে স্মরণ করতে এসেছেন। শাওনসহ সবাই আগের ঈদে হুমায়ূন আহমেদ কেমন উদযাপন করতেন তার স্মৃতিচারণ করছেন। সবার মনে কষ্ট। সবাই কাঁদছেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ঈদগাহ থেকে ফিরে সবাই যখন হুমায়ূন স্যারের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করছিলেন, তখন নিষাদ বাবার কবরে হাত বোলাচ্ছিল। তখন সে বলতে থাকে ‘বাবাকে আদর করছি, আমি বাবাকে আদর করছি’। আর ছোট্ট নিনিত কেবল তাকিয়ে দেখছিল।’’
তিনি বলেন, কবর জিয়ারত করে ফিরে এসে নিষাদ এখন তার বাবার কবরের ছবি আঁকছে। নিনিতের বয়স মাত্র দেড় বছর। তাই সে কিছুই তেমন বোঝেনা। কিন্তু নিষাদ বারবার বাবার কথা বলছে।
স্বর্ণা জানান, অন্য সকল ঈদে সন্তানদের নিজ হাতে গোসল করাতেন হুমায়ূন আহমেদ। তারপর নিয়ে যেতেন ঈদগাহে। আজ গোসল কারালেন শাওন। আর ঈদগাহে নিয়ে গেলেন অন্যরা।
হুমায়ূন আহমেদ তার এই দুই পুত্রকে অত্যান্ত ভালবাসতেন। তার বিভিন্ন লেখায় তার গভীর ভালবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়।
মোঘল সম্রাট হুমায়ূনকে নিয়ে লেখা হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘বাদশাহ নামদার’ বইটি তিনি উৎসর্গ করেন দেড় বছর বয়সী কনিষ্ঠ পুত্র নিনিতকে।
উৎসর্গপত্রে তিনি বলেন, ‘‘আমার কেবলই মনে হচ্ছে, পুত্র নিনিত পিতার কোনো স্মৃতি না নিয়েই বড় হবে। সে যেন আমাকে মনে রাখে, এই জন্য নানা কর্মকাণ্ড করছি। আমি ছবি তুলতে পছন্দ করি না । এখন সুযোগ পেলেই নিনিতকে কোলে নিয়ে ছবি তুলি। এই বইয়ের উৎসর্গপত্রও স্মৃতি মনে রাখার প্রকল্প।’’
দ্বিতীয় পক্ষের বড় ছেলে নিষাদ হুমায়ূনের নামেও হুমায়ূন কয়েকটি বই উৎসর্গ করেন। তিনি বলপয়েন্ট বইয়ের উৎসর্গপত্রে বলেন, ‘‘নিতাত বেবিকে (নিষাদ হুমায়ূন)। বাবাকে সে খুব বেশি দিন কাছে পাবে বলে মনে হচ্ছে না। যদি কোনো বিষন্ন চৈত্রের দিনে বাবার কথা তার জানতে ইচ্ছে করে, তখন এই বই সে পড়বে। এবং সে নিশ্চয়ই বলবে, আমার বাবা ছিলেন একজন দু:খী বলপয়েন্ট।’’
তার ভ্রমণ কাহিনীমূলক ‘দেখা না দেখা’ বইয়ের উৎসর্গ নিষাদকে করে হুমায়ূন উৎসর্গপত্রে লেখেন, ‘‘এখন নানা ভ্রমণের গল্প মানুষকে শুনিয়ে যাচ্ছি। তুমি যখন বড় হবে তখন আমি আরেক ভ্রমণে বের হবো অন্য ভূবনে। আফসোস! সেই ভ্রমণের কথা কাউকে শুনিয়ে যেতে পারবো না।’’
No comments