চিকিৎসক হত্যাকাণ্ড-খুনিদের খুঁজে বের করুন
রাজধানীসহ সারাদেশে নির্বিঘ্নে ঈদ উৎসব পালিত হওয়ায় সরকার স্বস্তিবোধ করতেই পারে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউ কেউ এ জন্য কৃতিত্বও দাবি করতে থাকেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঈদের দীর্ঘ ছুটির সময় 'তালা দিয়ে গ্রামে যাওয়ার' কথা বলে যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিলেন। এ নিয়ে ঠাট্টা-মস্করাও কম হয়নি।
তবে লাখ লাখ নারী-পুরুষ-শিশুর মোটামুটি ভালোভাবেই 'শিকড়ে ফেরা' নিশ্চিত করতে পুলিশ-র্যাবের ভূমিকার স্বীকৃতি এমনকি সরকারের কট্টর সমালোচকরাও দিচ্ছে। কিন্তু সব ভালো তার, শেষ ভালো যার_ এমনটি ঘটল না। বুধবার রাতের কোনো এক সময়ে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ডক্টরস কোয়ার্টারের বাসায় খুন হয়েছেন নৃশংসভাবে। এ হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ও পূর্বশত্রুতাবশত করা হয়েছে, নাকি বাধা পেয়ে চোর-ডাকাতদের আকস্মিক উন্মত্ততাবশত ঘটেছে_ সেটা বের করতে পারবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী খুনিদের খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছেন। পুলিশও বড় ধরনের অগ্রগতির তথ্য দিয়েছে। তাদের তৎপরতায় খুনিরা দ্রুত ধরা পড়লে তা হবে স্বস্তির খবর। একজন চিকিৎসক হাসপাতালের সুরক্ষিত কোয়ার্টারে খুন হয়েছেন_ এটা বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয় বৈকি। হাসপাতালের নিয়োগ নিয়ে ক্ষুব্ধ কোনো মহল এ অপরাধ সংঘটিত করে থাকলে সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার। ঘটনার পর হাসপাতাল সংলগ্ন বস্তিতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেখানে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশের এ ধরনের তৎপরতা অনেক সময় নিছক লোক দেখানো বলে মনে করা হয়। চাঞ্চল্যকর খুন-রাহাজানির ঘটনায় তারা যে বসে নেই_ সেটাই প্রমাণের চেষ্টা করা হয় এসব তৎপরতায়। ফেব্রুয়ারি মাসে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের পর তারা এমনটি করেছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী '৪৮ ঘণ্টার মধ্যে' অপরাধী ধরা পড়বে বলে যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তার স্মৃতি এখনও সতেজ। এ ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের জন্যও বিব্রতকর হয়ে রয়েছে। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র দত্তের হত্যাকাণ্ড চাপা পড়বে না, দ্রুত খুনিরা চিহ্নিত হবে এবং আইনের আওতায় আসবে_ এটাই আমরা আশা করব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিবিড় মনোযোগ প্রদান কেবল নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনের ব্যাপার নয়, বরং সব সময়ের বিষয়_ এটা মনে রেখেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া উচিত।
No comments