‘বাংলাদেশি বন্ধুদের নিয়ে একদিন মুক্ত-স্বাধীন ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়াব’
গাজায় প্রায় সব পরিবারের গল্পই এখন এ রকম। আমার বন্ধু কিংবা আত্মীয়স্বজন সবার বাড়িই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে তো পরিবারের সদস্য হারিয়েছেন। আল্লাহর রহমতে আমার পরিবারের সবাই নিরাপদে আছেন, এটাই এখন মন্দের ভালো খবর। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রায় ২০ জন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। সবাই এখন পরিবারের লোকজনের কথা ভেবে চিন্তিত। গাজায় তো দীর্ঘদিন ধরে সংঘাতময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাই আমরা যেন দুঃসংবাদের সঙ্গে অনেকটা মানিয়ে নিয়েছি। তবে গেল কয়েক দিনের অবস্থা বর্ণনা করার মতো নয়। এত খারাপ অবস্থা আগে হয়নি, এতটুকু বলতে পারি।
ফেসবুক বা যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকলেই আমার ভাইবোনদের করুণ পরিস্থিতি দেখতে হচ্ছে। মৃত্যুর খবর সামনে চলে আসছে। এসব থেকে দূরে থাকতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও কম ব্যবহার করছি। আমাদের যেহেতু সামনে পরীক্ষা, তাই পড়াশোনার মধ্যে নিজেদের ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করছি।
তবে ফিলিস্তিনে পরিস্থিতির অবনতির পর থেকেই আমাদের বাংলাদেশি বন্ধু, সহপাঠী, শিক্ষকেরা সবাই নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। ক্লাসে গেলেই আমাদের বাড়ির খবর জানতে চায় বন্ধুরা। আমাদের শিক্ষকেরা সব সময় দেশি-বিদেশি সব শিক্ষার্থীকেই সমান চোখে দেখেন। এখন তাঁরা যেন এটি আরও বেশি করে চর্চা করছেন। যেন আমরা মাথা থেকে দুশ্চিন্তা সরিয়ে অন্য সবার মতো পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারি। আমরাও যথাসম্ভব পড়াশোনায় ব্যস্ত থেকে নিজেদের স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।
আমার মেডিকেল কলেজের সহপাঠীসহ বাংলাদেশের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি জানি, এ দেশের সব মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে। ৬ এপ্রিল ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। আমার মেডিকেল কলেজের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও ওই দিন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, ইসরায়েলিদের বর্বরতার প্রতিবাদ করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিন একদিন মুক্ত হবে। বাংলাদেশি বন্ধুদের নিয়ে একদিন মুক্ত-স্বাধীন ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়াব।
![]() |
গাজায় প্রায় সব পরিবারের গল্পই এখন এ রকম। ছবি: এএফপি |
No comments