ঘুমন্ত শহরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: নিহত ৫০, আহত ৭ শতাধিক
ঘুমে
বিভোর চীনের তিয়ানজিন শহর। অকস্মাৎ বিকট শব্দে হতচকিয়ে জেগে উঠলেন শহরের
বাসিন্দারা। বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পুরো শহর। ঘুম ভেঙেই মেরুদন্ড বেয়ে ভয়ার্ত
শীতল এক অনুভূতিতে হিম হয়ে এলো রক্ত। শহরবাসী প্রত্যক্ষ করলেন, আগুনের
লেলিহান শিখায় নারকীয় অগ্নিগোলক গ্রাস করে নিচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রকান্ড
সে অগ্নিগোলক যেন মহাকাশ থেকেও দৃশ্যমান! দিগি¦দিক জ্ঞানশূন্য হয়ে তারা
শুরু করলেন ছোটাছুটি। সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি প্রকা- বিস্ফোরণে সব
ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো। এরপর একের পর এক ছোট আকারের বেশ কয়েকটি সিরিজ
বিস্ফোরণ হলো। ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায়, কিছু বুঝে ওঠার আগেই লাশ হলেন কমপক্ষে
৫০ জন। নিহতদের মধ্যে ১২ জনই দমকল কর্মী। বিস্ফোরণের তীব্রতায় তাদের অঙ্গ
প্রত্যঙ্গ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে পড়ে ছিল এখানে ওখানে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭০০
জনেরও বেশি মানুষ। আহতদের আর্তনাদে হাসপাতালগুলোতে বিরাজ করছে মানবেতর
অবস্থা। ৬৬ জনের অবস্থা গুরুতর। যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে তাদের। এখনও
পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, বন্দর
নগরীর ‘বিপজ্জনক রাসায়নিক মালামাল’ সংরক্ষণের একটি বিশাল গুদামে বিস্ফোরণের
ওই ঘটনা ঘটে।
তিয়ানজিন শহরের এক বাসিন্দা ভাফা অ্যান্ডারসন ও তার স্ত্রীর ওই শহরের বাসিন্দা। বিস্ফোরণের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করতে গিয়ে ভাফা বলছিলেন, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতোই বেশি ছিল যে, তিনি এটাকে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে তুলনা করলেন। কেউ তো বললেন, এ অনুভূতি ছিল বিশ্ব ধ্বংসের মতো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেললো যুক্তরাষ্ট্র, তখনকার বিস্ফোরণের সঙ্গে এর কোন তুলনা না হলেও ২ কিলোমিটার বা দেড় মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে এ বিস্ফোরণগুলোর আঁচ ছড়িয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। প্রথম বিস্ফোরণ দুটির তীব্রতা এতোই বেশি ছিল যে, ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যে ভবনগুলো ছিল, সেগুলোর জানালা উড়ে যায়। কাঁচের টুকরোর আঘাতে আহত হন ঘুমিয়ে থাকা মানুষ। বিস্ফোরণস্থলের কাছে থাকা কয়েকটি অফিস সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। শত শত গাড়ি আগুনে পুড়ে ইস্পাতের অংশটুকু রয়ে যায়। ওই গুদামটির ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যতো গাড়ি ছিল, সবই ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিস্ফোরণে জানালার কাঁচের টুকরো ভেঙে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। স্বজন-হারানোদের গগণবিদারী ক্রন্দনে ভারি তিয়ানজিনের আকাশ। ইতিহাসের অন্যতম মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মুষড়ে পড়েছে চীন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নাশকতার কোন আশঙ্কার কথা জানা যায় নি। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং জনসমক্ষে নির্ভুল তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে চীনে বিস্ফোরণের ছবি ও ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। বিস্ফোরণের দৃশ্যও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার সময় প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে। এর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। এরপর ছোটখাটো আরও বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। এদিকে উদ্ধারকাজে অংশ নেন দমকলের ১৪০টি গাড়িতে দুর্ঘটনাস্থলে প্রায় ১ হাজার দমকল কর্মী। সারা রাত ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। পাশাপাশি চললো হতাহতদের উদ্ধারকাজ। নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিস্ফোরণের ধাক্কা কয়েক কিলোমিটার দূরেও অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিকাল সার্ভে (ইউএসজিএস) একটি ছোটখাটো ভূকম্পন নিবন্ধিত করেছে। দ্য চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্কস সেন্টার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রথম বিস্ফোরণটি ছিল ৩ টনের টিএনটি বিস্ফোরক বিস্ফোরণ ঘটানোর সমতুল্য। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ছিল ২১ টন টিএনটি বিস্ফোরণের সমতুল্য। ভোরের আলো ফোটার পর মানুষ প্রত্যক্ষ করলো ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা। ৩৮ বছর বয়সী হেয়ারস্টাইলিস্ট উয়ু দেজুন বলছিলেন, আমি আগুন জ্বলতে দেখলাম এবং এরপর: বুম! একটি প্রকা- বিস্ফোরণ ঘটলো। আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, যতো দ্রুত সম্ভব দৌড়ানো এবং মাটির ওপর শুয়ে পড়ে আমার জীবন বাঁচানো। প্রাণে রক্ষা পাওয়ার পর দেখলাম আমার সারা শরীরে রক্ত। ভাফার মতো ট্রাকচালক ঝাও ঝেনচেংও বলছিলেন, পারমাণবিক বোমা কেমন হবে, সেটা আমাদের যেমন বলা হয়েছিল, এ বিস্ফোরণ ছিল সেরকমই। তিনি বলছিলেন, আমি কখনও ভাবিনি, জীবনে কখনও এমনটা দেখবো। এটা ছিল ভয়ঙ্কর, কিন্তু একই সঙ্গে সুন্দর। এদিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনার পর চীনের গণমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে। বিপজ্জনক রাসায়নিক সংরক্ষণের একটি গুদামের অবস্থান কোথায় হওয়া উচিত তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানামুখী বিশ্লেষণ। তিয়ানজিন শহরে দেড় কোটি মানুষের বসবাস। চীনের অন্যতম বন্দর নগরী ও শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত এ শহর। এ ঘটনার পর তিয়ানজিনের বাসিন্দারা জরুরি ফোন নম্বর শেয়ার করে পোস্ট দেয়া শুরু করেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন নম্বর তারা ছড়িয়ে দেন মুহূর্তেই। বাসিন্দারা সহমর্মী হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। বিস্ফোরণের পর যারা বাড়ি ফিরতে পারেননি, তাদের আশ্রয় দিতে চেয়েছেন অনেকেই। চীনের সমগ্র অঞ্চল থেকে তিয়ানজিনের বাসিন্দাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের এই ভয়াবহ দুর্দশায় তারা একাত্ম হয়ে এগিয়ে এসেছেন।
তিয়ানজিন শহরের এক বাসিন্দা ভাফা অ্যান্ডারসন ও তার স্ত্রীর ওই শহরের বাসিন্দা। বিস্ফোরণের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করতে গিয়ে ভাফা বলছিলেন, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতোই বেশি ছিল যে, তিনি এটাকে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে তুলনা করলেন। কেউ তো বললেন, এ অনুভূতি ছিল বিশ্ব ধ্বংসের মতো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেললো যুক্তরাষ্ট্র, তখনকার বিস্ফোরণের সঙ্গে এর কোন তুলনা না হলেও ২ কিলোমিটার বা দেড় মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে এ বিস্ফোরণগুলোর আঁচ ছড়িয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। প্রথম বিস্ফোরণ দুটির তীব্রতা এতোই বেশি ছিল যে, ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যে ভবনগুলো ছিল, সেগুলোর জানালা উড়ে যায়। কাঁচের টুকরোর আঘাতে আহত হন ঘুমিয়ে থাকা মানুষ। বিস্ফোরণস্থলের কাছে থাকা কয়েকটি অফিস সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। শত শত গাড়ি আগুনে পুড়ে ইস্পাতের অংশটুকু রয়ে যায়। ওই গুদামটির ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যতো গাড়ি ছিল, সবই ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিস্ফোরণে জানালার কাঁচের টুকরো ভেঙে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। স্বজন-হারানোদের গগণবিদারী ক্রন্দনে ভারি তিয়ানজিনের আকাশ। ইতিহাসের অন্যতম মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মুষড়ে পড়েছে চীন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নাশকতার কোন আশঙ্কার কথা জানা যায় নি। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং জনসমক্ষে নির্ভুল তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে চীনে বিস্ফোরণের ছবি ও ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। বিস্ফোরণের দৃশ্যও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার সময় প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে। এর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। এরপর ছোটখাটো আরও বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। এদিকে উদ্ধারকাজে অংশ নেন দমকলের ১৪০টি গাড়িতে দুর্ঘটনাস্থলে প্রায় ১ হাজার দমকল কর্মী। সারা রাত ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। পাশাপাশি চললো হতাহতদের উদ্ধারকাজ। নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিস্ফোরণের ধাক্কা কয়েক কিলোমিটার দূরেও অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিকাল সার্ভে (ইউএসজিএস) একটি ছোটখাটো ভূকম্পন নিবন্ধিত করেছে। দ্য চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্কস সেন্টার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রথম বিস্ফোরণটি ছিল ৩ টনের টিএনটি বিস্ফোরক বিস্ফোরণ ঘটানোর সমতুল্য। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ছিল ২১ টন টিএনটি বিস্ফোরণের সমতুল্য। ভোরের আলো ফোটার পর মানুষ প্রত্যক্ষ করলো ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা। ৩৮ বছর বয়সী হেয়ারস্টাইলিস্ট উয়ু দেজুন বলছিলেন, আমি আগুন জ্বলতে দেখলাম এবং এরপর: বুম! একটি প্রকা- বিস্ফোরণ ঘটলো। আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, যতো দ্রুত সম্ভব দৌড়ানো এবং মাটির ওপর শুয়ে পড়ে আমার জীবন বাঁচানো। প্রাণে রক্ষা পাওয়ার পর দেখলাম আমার সারা শরীরে রক্ত। ভাফার মতো ট্রাকচালক ঝাও ঝেনচেংও বলছিলেন, পারমাণবিক বোমা কেমন হবে, সেটা আমাদের যেমন বলা হয়েছিল, এ বিস্ফোরণ ছিল সেরকমই। তিনি বলছিলেন, আমি কখনও ভাবিনি, জীবনে কখনও এমনটা দেখবো। এটা ছিল ভয়ঙ্কর, কিন্তু একই সঙ্গে সুন্দর। এদিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনার পর চীনের গণমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে। বিপজ্জনক রাসায়নিক সংরক্ষণের একটি গুদামের অবস্থান কোথায় হওয়া উচিত তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানামুখী বিশ্লেষণ। তিয়ানজিন শহরে দেড় কোটি মানুষের বসবাস। চীনের অন্যতম বন্দর নগরী ও শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত এ শহর। এ ঘটনার পর তিয়ানজিনের বাসিন্দারা জরুরি ফোন নম্বর শেয়ার করে পোস্ট দেয়া শুরু করেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন নম্বর তারা ছড়িয়ে দেন মুহূর্তেই। বাসিন্দারা সহমর্মী হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। বিস্ফোরণের পর যারা বাড়ি ফিরতে পারেননি, তাদের আশ্রয় দিতে চেয়েছেন অনেকেই। চীনের সমগ্র অঞ্চল থেকে তিয়ানজিনের বাসিন্দাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের এই ভয়াবহ দুর্দশায় তারা একাত্ম হয়ে এগিয়ে এসেছেন।
No comments