স্থানীয় সাংসদকেই দায় নিতে হবে- লাঞ্ছিত শিক্ষক
কলেজশিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্থানীয়
সাংসদের একজন সমালোচক এবং তিনি জানতেন যে এ কারণে সাংসদ তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ।
কিন্তু তিনি কখনো চিন্তা করতে পারেননি যে একজন সাংসদ ‘ক্ষুব্ধ’ হলে তার
পরিণতি কী হতে পারে! ময়মনসিংহের মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের এই
শিক্ষককে সাংসদের সমর্থকেরা দিগম্বর ও লাঞ্ছিত করে তা জানিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকিরের সমর্থকেরা কেন এ কাজ করেছেন তা স্পষ্ট। উদ্দেশ্যটি ভয় দেখানো ও এমন পরিস্থিতি তৈরি করা, যাতে কেউ সাংসদের সমালোচনা করার ‘সাহস’ না পায়।
অভিযোগ আছে, সাংসদের সমর্থকেরা বেশ আগে থেকেই এ ধরনের কাজের চর্চা করে আসছিলেন। এত দিন সাংসদের কার্যালয় ‘সেবালয়’-এ লোকজনকে ধরে এনে মাথা কামিয়ে দেওয়া বা লাঞ্ছনার মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। এখন দিগম্বর করার পথ নিয়েছেন, সামনের দিনগুলোতে তাঁরা কোন পথ ধরবেন, কে জানে! সাংসদের সমর্থকেরা অবশ্য প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘এমপির নামে কোনো সমালোচনা করলে ইহজগতে থাকতে পারবে না।’
সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটালেও এর দায় সাংসদ মজিবুর রহমানেরই। কারণ, তাঁর চিহ্নিত ও আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়া সমর্থকেরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন এবং তাঁর কার্যালয়ে কলেজশিক্ষককে আটকে রাখা হয়েছিল। সাংসদের সমর্থকেরা যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা ফৌজদারি অপরাধ। এ ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে এবং যাঁরা এই জঘন্য ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তাঁদের নাম গণমাধ্যমে এসেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, আইন যদি নিজের মতো চলে এবং স্থানীয় পুলিশ যদি সাংসদের প্রভাবমুক্ত হয়ে থাকে, তবে এখন তাদের দায়িত্ব হচ্ছে অভিযুক্ত লোকদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করা।
মুমিনুন্নিসা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাঁদের একজন শিক্ষকের প্রতি এ ধরনের চরম অসভ্য আচরণের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করেছেন। আমরা শিক্ষক দিগম্বর করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সাংসদ তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
No comments