হিমঘরে পাঁচ মাস ধ্যানে গুরু!
ভারতের পাঞ্জাবের একটি আশ্রমের হিমঘরে পাঁচ মাস ধরে রাখা হয়েছে গুরু আশুতোষ মহারাজকে৷ ভক্তরা বলছেন, গুরু ধ্যানে আছেন৷ কিন্তু তাঁর ছেলেসহ (দাবিদার) ভক্তদের একটি অংশ বলছেন, গুরু আর বেঁচে নেই, তাঁর মরদেহ সৎকারের সুযোগ দেওয়া হোক৷ খবর ইনডিপেনডেন্টের৷ ভারতে ধর্মগুরুর মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ বা আশ্রম নিয়ে টানাহেঁচড়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়৷ এর আগেও এমনটা ঘটতে দেখা গেছে৷ প্রায় ক্ষেত্রে এর কারণ গুরু বা তাঁর আশ্রমের সম্পদের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব৷ গুরু আশুতোষ মহারাজের আশ্রমের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড৷ আশুতোষ মহারাজের আশ্রমটি অবস্থিত পাঞ্জাবের জলন্ধার জেলার নূরমহল গ্রামে৷ আশ্রমের সংগঠন দিব্য জ্যোতি জাগৃিত সংস্থা বা ডিিজজিএসের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি বলা হয়েছে, ‘গুরু শ্রী আশুতোষ মহারাজজি গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ধ্যানে আছেন৷’ মহারাজের ভক্তদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁদের গুরু গভীর ধ্যানে মগ্ন৷ যেকোনো সময় তিনি জেগে উঠবেন৷ আশুতোষ মহারাজের জন্ম বিহারে৷ ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে তিনি পরিবার-পরিজন ছেড়ে আধ্যাত্মিক জীবন শুরু করেন৷ এর আগে তাঁর নাম ছিল মহেশ কুমার ঝা৷ ঘাঁটি গাড়েন পাঞ্জাবে৷
পরথম আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৮৩ সালে৷ এখন ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তাঁর আশ্রমের সংগঠন দিব্য জ্যোতি জাগৃতি সংস্থার বা ডিিজজিএসের শাখা আছে৷ মহারাজের কথিত ধ্যান নিয়ে পাঁচ মাস ধরে অনেক রহস্য জমা হয়েছে৷ তাঁর সাবেক গাড়িচালক পুরাণ সিং দাবি করেন, মহারাজের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি৷ বিষ প্রয়োগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে৷ এর পেছনে রয়েছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল৷ কারণ, গুরু তাঁর ছেলেকে আশ্রমের উত্তরাধিকারী করে যেতে চেয়েছিলেন৷ এদিকে বিহারের জনৈক দিলীপ ঝা নিজেকে মহারাজের ছেলে বলে দাবি করে প্রমাণ হিসেবে তাঁর ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ দিলীপ জানান, তাঁর বাবার আশ্রমের দখল নেওয়ার কোনো ইচ্ছা তাঁর নেই৷ তাঁর চাওয়া, বাবার মৃতদেহটা তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হোক, যাতে হিন্দু রীতি অনুযায়ী তা সৎকার করা যায়৷ পুরাণ সিং ও দিলীপ ঝা দুজনেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন৷ মামলা হয়েছে পাঞ্জাব হাইকোর্ট ও চণ্ডীগড়ের আদালতে৷ তাঁদের দাবি, মহারাজের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হোক৷ কিন্তু আদালত বলেছেন, এমন নির্দেশ তাঁরা দিতে পারেন না৷ এ অবস্থায় সার্বিক ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (সিবিআই) তদন্ত দাবি করেছেন পুরাণ সিং ও দিলীপের আইনজীবী এসপি সোই৷
No comments