বেনজিরকে পাকিস্তানে ফিরতে বারণ করেছিলেন মোশাররফ
পাকিস্তানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে দেশে আসতে সতর্ক করেছিলেন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী মার্কিন সাংবাদিক মার্ক সিজেল এ তথ্য জানিয়েছেন। শনিবার এ খবর প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। সমাবেশের তিন সপ্তাহ আগেই মোশাররফ বেনজিরকে সতর্ক করেছিলেন। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে রেকর্ড করা ভিডিওতে এই তথ্য জানান। মার্ক সিজেল জানান, ২০০৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে মার্কিন সিনেটর টম ল্যানটোসের অফিসে একটি ফোন কল রিসিভ করেন বেনজির ভুট্টো। ১৫ মিনিটের ওই কলটি ছিল প্রেসিডেন্ট মোশাররফের। তাতে মোশাররফ বেনজিরকে পাকিস্তানে ফিরতে বারণ করেন। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের পাকিস্তান দূতাবাসে স্থানীয় সময় রাত ৮টায় তার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। এ সময় তিনি বেনজিরের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। কারণ ১৯৮৪ সাল থেকে বেনজিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন মার্ক সিজেল। বেনজির ওই কলটিকে খুব খারাপ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
তিনি হতাশও হয়েছিলেন। মোবাইলের স্ক্রিনে মোশাররফের নামটিও তিনি দেখিয়েছিলেন। মোশাররফ বলেছিলেন, পাকিস্ত?ানে তার জীবন শংকার মধ্যে আছে। দেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালন করাটা তার নিজের দায়িত্বেই করতে হবে। মোশাররফ এও বলেছিলেন, আপনার নিরাপত্তা নির্ভর করে আমাদের মধ্যকার সম্পর্কের ওপর। সিজেল বলেন, মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগেও (২৩ অক্টোবর, ২০০৭) আমার কাছে একটি ই-মেইল পাঠিয়েছিলেন বেনজির। সেই ই-মেইলে তার নিরাপত্তা ঘাটতির কথা উল্লেখ করেছিলেন বেনজির। ওই ই-মেইলেই বেনজির লিখেছিলেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য মোশাররফই দায়ী থাকবে। সাবেক আইএসআই প্রধান হামিদ গুল, ইন্টিলিজেন্স ব্যুরোর সাবেক প্রধান ইজাজ শাহ এবং পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ ইলাহীর নামও উল্লেখ করেছিলেন বেনজির। সিজেল আরও বলেন, মোশাররফের আজ্ঞাবহ সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কয়েকজন অফিসার বেনজিরকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে জানিয়ে একটা চিঠিও লিখেছিলেন মোশাররফকে। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২৭ অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডিতে এক নির্বাচনী প্রচারণায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন বেনজির। সেই থেকেই বেনজির হত্যাকাণ্ড মামলাটি বিচারাধীন। ৫ অক্টোবর মামলাটির আরেকটি শুনানি শুরু হবে।
No comments