সরকারি আনুমতির অপেক্ষায় ঝুলে আছে বিচার
রানা
প্লাজা ট্র্যাজেডির হত্যা মামলায় সরকারি চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ
আমলে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সরকারি আনুমতির অপেক্ষায় বিচারিক কাজ শুরু
ঝুলে আছে। রোববার এ মামলার চার্জশিট গ্রহণের শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও
সরকারি মঞ্জুরি আদেশ না আসায় আবার তা পিছিয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজ জিন্নাত পুনরায় চার্জশিট গ্রহণের শুনানির জন্য আগামী ৮
নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন। গত ১৮ আগস্টও সরকারি মঞ্জুরি আদেশ না থাকায়
চা্র্জশিট গ্রহণের শুনানি হতে পারেনি। যে চার কর্মকর্তার জন্য চার্জশিট
গ্রহণের শুনানি পিছাল তারা হলেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী,
পরিদর্শক প্রকৌশল মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন,
উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান। হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই
মামলা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর গত ১ জুন রানা, রানার
বাবা-মাসহ ৪২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন । গত ৮ জুলাই
ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ
করে আদালত। কিন্তু হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত চার সরকারি কর্মকর্তার বিষয়ে
মঞ্জুরি আদেশ না থাকায় পেছানো হয় মামলার চার্জশিট আমলে নেয়ার শুনানি।
হত্যা মামলায় সোহেল রানাসহ ৪১ জন আসামি। ইমারত নির্মাণ আইনে রানাসহ আসামি
১৮ জন। এ হিসাবে দুই মামলার আসামি ৫৯ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে ১৭ জনের নাম
উভয় মামলার চার্জশিটে থাকায় ব্যক্তি হিসেবে আসামি ৪২ জন। দুই মামলায় মোট
সাক্ষী ৭৫০ জন। আসামির তালিকায় রয়েছেন ১২ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী,
সাভার পৌরসভার মেয়র, রানার অনুগত বাহিনীর সদস্য এবং তাকে পালাতে
সহায়তাকারীরা। মামলা দুটির আসামিদের মধ্যে রানাসহ চারজন ছাড়া সব আসামি
জামিন নিয়ে জেলহাজতের বাইরে রয়েছেন। মামলায় ২৬ জন আসামি পলাতক। ২০১৩ সালের
২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ভবন ধসে ১ হাজার ১১৭ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়। পরে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৯ জন মারা যায়। সে হিসাবে নিহত হয় ১
হাজার ১৩৬ জন। অন্যদিকে আহত হয় ১ হাজার ১৭০ জন। আসামিরা হলেন, ভবন মালিক
সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, সাভার পৌর মেয়র আলহাজ
রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম,
উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিেিটডের
চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
মাহমুদুর রহমান তাপস, ইতার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে
আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিানয়ার মো, সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর
সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান,
সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কমকর্তা উত্তম কুমার রায়, সোহেল রানার মা
মর্জিনা বেগম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ
ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান
পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান,
উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী,
পরিদর্শক প্রকৌশল মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইতার
টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম
ভূইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ
মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্টাকটার, মো. আব্দুল
হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী, তসলিম ও
মাহবুল আলম। উক্ত আসামিদের মধ্যে সোহেল রানা, আব্দুল খালেক ওরফে কুলু
খালেক, মর্জিনা বেগম, রেফাত উল্লাহ, মোহাম্মাদ আলী খান, রফিকুল ইসলাম,
রাকিবুল হাসান রাসেল, বজলুস সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান তাপস, আনিসুর
রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, মো, সারোয়ার কামাল, উত্তম কুমার
রায়, মাহবুবুর রহমান, ফারজানা ইসলাম, রেজাউল ইসলাম ও নান্টু কন্টাকটার উভয়
মামলার আসামি। আসামিদের মধ্যে প্রথম ১৬ গ্রেপ্তার হয়েছিলে। পরে এদের মধ্যে
আবদুল খালেক, রেফাতউল্লাহ, অনিল দাস, শাহ আলম ও আবুল হাসান, মোহাম্মদ আলী
খান ও রাকিবুল হাসান জামিন পান। অপর ২৬ জন পলাতক।
No comments