চোখের সামনেই মা, বোন ও নানিকে হারালো সুপ্ত
ময়মনসিংহ জেলা শহরের একটি ফ্যাক্টরি থেকে জাকাতের কাপড় সংগ্রহ করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু |
দশ
বছরের সুপ্ত। মা-বোন ও নানির সঙ্গে ত্রাণ আনতে গিয়েছিল। হাতে নতুন কাপড়
পাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যাওয়া এ শিশুর চোখের সামনেই হারাতে হয়েছে তিন আপনজনকে।
স্বজন হারিয়ে নির্বাক সুপ্তের পরিবার। তার পিতা নুরুল ইসলাম ওরফে কৃষ্ণা
মিয়া একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি (৪৫)। থাকেন শহরের থানাঘাট ব্রহ্মপুত্র নদের
তীরের বস্তিতে। স্থানীয় সূত্র জানায় ধর্মান্তরিত হয়ে বিহারি মেয়ে সখিনাকে
বিয়ে করেছিলেন নুরুল ইসলাম। দুই সন্তান নিয়ে টানাপড়েনের সংসার ছিল তাদের।
নুরানী জর্দা ফ্যাক্টরির মালিকও বিহারি। পাকিস্তান আমল থেকে ব্যবসা বাণিজ্য
করে আসছে তাদের পরিবার। শামীম বিহারি হিসাবে ময়মনসিংহে অবস্থানরত আটকে পড়া
বিহারিদের মাঝে মূলত জাকাতের কাপড় বিতরণ করে আসছিল ৩৬ বছর ধরে। সেই হিসেবে
বাস্তুহারা ক্যাম্পের একই পরিবারের বিহারি শামিমা বেগম (৬০), তার মেয়ে
সখিনা (৩৫) কে জাকাতের কাপড় দেয়ার জন্য ২টি কার্ড প্রদান করেছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী থানাঘাট এলাকার কৃষ্ণা মিয়ার ছেলে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র
শরিয়তুল সুপ্ত জানায়, সে তার নানী শামিমা বেগম (৬০), তার মা সখিনা (৩৫) ও
বোন লামিয়াকে (৩) নিয়ে ভোর চারটার দিকে জাকাতের কাপড়ের জন্য নুরানী জর্দা
ফ্যাক্টরিতে যায়। এ সময় অনেক লোক ফ্যাক্টরি ফটকের সামনে ভিড় করছিল।
ফ্যাক্টরি গেটটি ছিল হালকা ও দুর্বল। ভেতর থেকে বাঁশ দিয়ে ঠেকা দিয়ে রাখা
হয়েছিল। জাকাত প্রত্যাশীরা গেট খোলার জন্য ধাক্কা দিলে ফ্যাক্টরির লোকজন
গেট খুলেনি। সুপ্ত জানায়, মানুষের ধাক্কাধাক্কিতে এক সময় গেট খুলে যায়।
এরপর হুড়োহুড়ি করে ফ্যাক্টরিতে প্রবেশের সময় পায়ের নিচে চাপা পরে অনেক লোক।
সে কোন মতে বেঁচে গিয়ে পড়ে থাকা লাশের মধ্যে মা-বোন ও নানীর লাশ শনাক্ত
করে।
মা আর খালার সঙ্গে জাকাতের কাপড় নিতে এসেছিলেন শহরের পাটগুদাম বিহারি ক্যাম্পের সিদ্দিক (১২)। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে তার নিথর শরীরের সামনে বসে অঝোরে কাঁদছিলেন খালা রওশন আরা। ‘আমগর মানিকরে বুকে দাও। আমগর বাজান গেল কই?’ রওশন আরার আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে হাসপাতালের বাতাস। কাঁদতে কাঁদতে রওশন আরা বলেন, ‘গেটের সামনে অনেক লোক বইসা ছিল। ভোরে গেটের সামনে অনেক লোক পীড়াপীড়ি শুরু করে। এ সময় মরলাম মরলাম কইয়া অনেক লোক চিল্লাচিল্লি করে। কিন্তু কেউ গেট খুলে না। কারখানা মালিক শামীম ফজরের নামাজে যাওয়ার সময় ছোট গেট একটু খুলে। ঝামেলা হয় ওই সময়ই। ঢুকবার যাইয়াই মারা পড়ে সব। তিনি অভিযোগ করেন, বাড়ির মালিক শামীম ছোট গেটের বদলে বড় গেট খুলে দিলে এ ঘটনা ঘটতো না। এতজন মানুষেরও প্রাণ যেত না।
মা আর খালার সঙ্গে জাকাতের কাপড় নিতে এসেছিলেন শহরের পাটগুদাম বিহারি ক্যাম্পের সিদ্দিক (১২)। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে তার নিথর শরীরের সামনে বসে অঝোরে কাঁদছিলেন খালা রওশন আরা। ‘আমগর মানিকরে বুকে দাও। আমগর বাজান গেল কই?’ রওশন আরার আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে হাসপাতালের বাতাস। কাঁদতে কাঁদতে রওশন আরা বলেন, ‘গেটের সামনে অনেক লোক বইসা ছিল। ভোরে গেটের সামনে অনেক লোক পীড়াপীড়ি শুরু করে। এ সময় মরলাম মরলাম কইয়া অনেক লোক চিল্লাচিল্লি করে। কিন্তু কেউ গেট খুলে না। কারখানা মালিক শামীম ফজরের নামাজে যাওয়ার সময় ছোট গেট একটু খুলে। ঝামেলা হয় ওই সময়ই। ঢুকবার যাইয়াই মারা পড়ে সব। তিনি অভিযোগ করেন, বাড়ির মালিক শামীম ছোট গেটের বদলে বড় গেট খুলে দিলে এ ঘটনা ঘটতো না। এতজন মানুষেরও প্রাণ যেত না।
No comments