পেছনে প্রেমে ব্যর্থতার গল্প!
সচরাচর
যেমন ঘটে তেমন নয়। গল্পটা একেবারে উল্টো, সিনেমাতেও এমন গল্পের দেখা মেলে
না। সিনেমার গল্পগুলোতে দেখা যায় নারী চরিত্রের বিয়ের সংবাদে ক্ষেপে গিয়ে
প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠে প্রেমপ্রত্যাখ্যাত পুরুষ চরিত্রটি। প্রচলিত এমন
গল্পের ঠিক যেনো উল্টোটাই ঘটেছে সিলেটে। ‘প্রেমিকে’র বিয়ের সংবাদে ক্ষেপে
উঠে প্রতিশোধাকাঙ্ক্ষা জাগে প্রেমিকার মনে। নিজের নাক কেটে হলেও যাত্রা
ভঙ্গ করতে চান প্রেমিকের।
গেলো বছরের ৮ই ডিসেম্বর ছিলো সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ’র গায়ে হলুদ। বিমানবন্দরের স্টাফ কোয়ার্টারে চলছিলো গায়ে হলুদের আয়োজন। প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে নিজের কোয়ার্টারে দুই সন্তান নিয়ে থাকেন নিরাপত্তাকর্মী সাহিদা আক্তার রুনু। অভিভাবক হিসেবে তার সঙ্গে থাকেন তার এক মামী। সাহিদা আক্তার ভালবাসতেন ইব্রাহীমকে। হৃদয়ে ভালবাসার এ বীজ গেঁথেছিলো ৭ বছর আগে। রুনু ও ইব্রাহীম দুজনের বাড়িই সিলেট বিভাগে। তবে আগে থেকে তাদের পরিচয় ছিলো না। পরিচয় হয় ঢাকার কুর্মিটোলায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। ২০০৭ সালে আরো ২৫ জনের সঙ্গে একসাথে সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ইব্রাহীম ও রুনু। সেখানেই পরিচয় ও বন্ধুত্ব। তারপর দুজনের পোস্টিং হয় দু’জায়গায়। রুনুর ঠিকানা হয় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আর ইব্রাহীমের ঠিকানা হয় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। দূরে গেলেও হাতের মুঠোফোন কাছে রেখেছিলো তাদের। যোগাযোগ হতো ফোনে ফোনে। এক সময় ইব্রাহীম বদলি হয়ে আসেন সিলেটে। একই কর্মস্থলে দুজনের রোজ দেখা হতে থাকে। ভালোই বোঝাপড়া ছিলো দুজনের মাঝে। ইব্রাহীম রুনুকে নিজের ভালো বন্ধু হিসেবে ভাবতেন। তবে রুনুর চোখে ইব্রাহীম ধরা দেন অন্য আরেক পরিচয়ে। রুনু ভালবেসে ফেলেছিলেন ইব্রাহীমকে। স্বামীর সঙ্গে ইতিমধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে রুনুর। ইব্রাহীমের মাঝে আশ্রয় খুঁজতে চেয়েছিলেন রুনু। তাকে নিয়ে রুনু যে হৃদয়ের গহিনে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন তা টের পাননি ইব্রাহীম। তিনি কেবল বন্ধু হিসেবেই দেখেন রুনুকে। এরই মাঝে পারিবারিক পছন্দে বিয়ে ঠিক হয় ইব্রাহীমের। মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়ে রুনুর। হৃদয়ের গহিন কোনের কথা মুখ ফুটে বলেন তিনি ইব্রাহীমকে। ভালবাসার কথা বলেন, বিয়ে করার প্রস্তাবও দেন। এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না ইব্রাহীম। তিনি ফিরিয়ে দেন রুনুর প্রস্তাব। হৃদয় ভেঙে যায় রুনুর। ব্যর্থ প্রেম রূপ নেয় প্রতিশোধাঙ্ক্ষায়।
প্রতিশোধ পরিকল্পনার ছকে রুনু বেছে নেন ২০১৪ সালের ৮ই ডিসেম্বর, ইব্রাহীমের গায়ে হলুদের দিন। হয়তো শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রুনু অপেক্ষায় ছিলেন ফিরে আসবেন ইব্রাহীম। আসেন না ইব্রাহীম, তবে নিজের প্রতিশোধ গল্পে সেদিন ঠিকই তার ঘরে হাজির করেন ইব্রাহীমকে। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৭ই ফেব্রুয়ারি দায়েরকৃত মামলায় সাহিদা আক্তার রুনু উল্লেখ করেন, ৮ই ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার সময় ইব্রাহীম তার কোয়ার্টারে আসেন। জোর করে তার সম্ভ্রম কেড়ে নেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন, জ্ঞান ফেরে ভোরে ফজরের সময়। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বিষয়টি ফোনে তার কয়েকজন সহকর্মীকে জানান। তারা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি বিমানবন্দর থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ তার মামলাটি গ্রহণ করেনি।
তবে মানবজমিনকে ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ বললেন, গত বছরের ৮ই ডিসেম্বর রাতে আমি গায়ে হলুদের পিঁড়িতে। আমার বাসা ভর্তি তখন মানুষজন। সবার দৃষ্টি ছিলো আমার দিকে। ঝামেলা পেরিয়ে সে সময় রুনুর কাছে যাওয়া কি সম্ভব ছিলো? তিনি বলেন, রুনু ছাড়াও তার কোয়ার্টারে তার দুই সন্তান ও তার মামী থাকেন। আমি বাসায় গেলে তাদের কারো না কারো চোখে পড়ার কথা ছিলো।
এদিকে, নির্যাতনের পর ৪/৫ ঘণ্টা অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলেন বলে মামলায় যে কথা রুনু উল্লেখ করেছেন তা নিয়েও সন্দেহ তদন্ত কর্মকর্তার। বাসায় এত লোক থাকার পরও এত দীর্ঘ সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার বিষয়টি কারো নজরে না পড়াটা রহস্যজনকই বলে মন্তব্য করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া, রুনুর ভাষ্যমতে ভোর পর্যন্ত তার দরজাও খোলা ছিলো। প্রতিবেশী কারো চোখে বিষয়টি ধরা না পড়াটাও প্রশ্নের সৃষ্টি করছে।
মামলার নথিপত্রে দেখা যায়, পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে সাহিদা আক্তার রুনু গত বছরের ৯-১০ই ডিসেম্বর সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে মানবজমিনের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ৯ই ডিসেম্বর রুনু কর্মক্ষেত্রে হাজির ছিলেন। ওসমানী বিমানবন্দরের হাজিরা বইতে তার স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ অভিযোগমতে, এ সময় ওসমানী বিমানবন্দরে নয় রুনুর থাকার কথা ওসমানী হাসপাতালে। চিকিৎসকের প্রতিবেদনও কথা বলছে না সাহিদা আক্তার রুনুর পক্ষে। মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর পরই সাহিদা আক্তার রুনুর মামলা কেন নেননি- এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) নূরুল আলম বলেন, মামলা নেইনি এ কথা ঠিক নয়। যথাযথ প্রক্রিয়ায় এজাহার আমাদের কাছে পৌঁছেনি। তিনি বলেন, আদালতে মামলা হওয়ার পর তা থানায় এসেছে, আমরা মামলা রেকর্ড করেছি এবং তদন্তও চলছে। তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল আলম বলেন, মেডিক্যাল রিপোর্টে নির্যাতন ও ধর্ষণের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, তদন্তে অনেক অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে।
গেলো বছরের ৮ই ডিসেম্বর ছিলো সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ’র গায়ে হলুদ। বিমানবন্দরের স্টাফ কোয়ার্টারে চলছিলো গায়ে হলুদের আয়োজন। প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে নিজের কোয়ার্টারে দুই সন্তান নিয়ে থাকেন নিরাপত্তাকর্মী সাহিদা আক্তার রুনু। অভিভাবক হিসেবে তার সঙ্গে থাকেন তার এক মামী। সাহিদা আক্তার ভালবাসতেন ইব্রাহীমকে। হৃদয়ে ভালবাসার এ বীজ গেঁথেছিলো ৭ বছর আগে। রুনু ও ইব্রাহীম দুজনের বাড়িই সিলেট বিভাগে। তবে আগে থেকে তাদের পরিচয় ছিলো না। পরিচয় হয় ঢাকার কুর্মিটোলায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। ২০০৭ সালে আরো ২৫ জনের সঙ্গে একসাথে সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ইব্রাহীম ও রুনু। সেখানেই পরিচয় ও বন্ধুত্ব। তারপর দুজনের পোস্টিং হয় দু’জায়গায়। রুনুর ঠিকানা হয় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আর ইব্রাহীমের ঠিকানা হয় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। দূরে গেলেও হাতের মুঠোফোন কাছে রেখেছিলো তাদের। যোগাযোগ হতো ফোনে ফোনে। এক সময় ইব্রাহীম বদলি হয়ে আসেন সিলেটে। একই কর্মস্থলে দুজনের রোজ দেখা হতে থাকে। ভালোই বোঝাপড়া ছিলো দুজনের মাঝে। ইব্রাহীম রুনুকে নিজের ভালো বন্ধু হিসেবে ভাবতেন। তবে রুনুর চোখে ইব্রাহীম ধরা দেন অন্য আরেক পরিচয়ে। রুনু ভালবেসে ফেলেছিলেন ইব্রাহীমকে। স্বামীর সঙ্গে ইতিমধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে রুনুর। ইব্রাহীমের মাঝে আশ্রয় খুঁজতে চেয়েছিলেন রুনু। তাকে নিয়ে রুনু যে হৃদয়ের গহিনে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন তা টের পাননি ইব্রাহীম। তিনি কেবল বন্ধু হিসেবেই দেখেন রুনুকে। এরই মাঝে পারিবারিক পছন্দে বিয়ে ঠিক হয় ইব্রাহীমের। মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়ে রুনুর। হৃদয়ের গহিন কোনের কথা মুখ ফুটে বলেন তিনি ইব্রাহীমকে। ভালবাসার কথা বলেন, বিয়ে করার প্রস্তাবও দেন। এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না ইব্রাহীম। তিনি ফিরিয়ে দেন রুনুর প্রস্তাব। হৃদয় ভেঙে যায় রুনুর। ব্যর্থ প্রেম রূপ নেয় প্রতিশোধাঙ্ক্ষায়।
প্রতিশোধ পরিকল্পনার ছকে রুনু বেছে নেন ২০১৪ সালের ৮ই ডিসেম্বর, ইব্রাহীমের গায়ে হলুদের দিন। হয়তো শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রুনু অপেক্ষায় ছিলেন ফিরে আসবেন ইব্রাহীম। আসেন না ইব্রাহীম, তবে নিজের প্রতিশোধ গল্পে সেদিন ঠিকই তার ঘরে হাজির করেন ইব্রাহীমকে। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৭ই ফেব্রুয়ারি দায়েরকৃত মামলায় সাহিদা আক্তার রুনু উল্লেখ করেন, ৮ই ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার সময় ইব্রাহীম তার কোয়ার্টারে আসেন। জোর করে তার সম্ভ্রম কেড়ে নেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন, জ্ঞান ফেরে ভোরে ফজরের সময়। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বিষয়টি ফোনে তার কয়েকজন সহকর্মীকে জানান। তারা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি বিমানবন্দর থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ তার মামলাটি গ্রহণ করেনি।
তবে মানবজমিনকে ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ বললেন, গত বছরের ৮ই ডিসেম্বর রাতে আমি গায়ে হলুদের পিঁড়িতে। আমার বাসা ভর্তি তখন মানুষজন। সবার দৃষ্টি ছিলো আমার দিকে। ঝামেলা পেরিয়ে সে সময় রুনুর কাছে যাওয়া কি সম্ভব ছিলো? তিনি বলেন, রুনু ছাড়াও তার কোয়ার্টারে তার দুই সন্তান ও তার মামী থাকেন। আমি বাসায় গেলে তাদের কারো না কারো চোখে পড়ার কথা ছিলো।
এদিকে, নির্যাতনের পর ৪/৫ ঘণ্টা অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলেন বলে মামলায় যে কথা রুনু উল্লেখ করেছেন তা নিয়েও সন্দেহ তদন্ত কর্মকর্তার। বাসায় এত লোক থাকার পরও এত দীর্ঘ সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার বিষয়টি কারো নজরে না পড়াটা রহস্যজনকই বলে মন্তব্য করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া, রুনুর ভাষ্যমতে ভোর পর্যন্ত তার দরজাও খোলা ছিলো। প্রতিবেশী কারো চোখে বিষয়টি ধরা না পড়াটাও প্রশ্নের সৃষ্টি করছে।
মামলার নথিপত্রে দেখা যায়, পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে সাহিদা আক্তার রুনু গত বছরের ৯-১০ই ডিসেম্বর সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে মানবজমিনের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ৯ই ডিসেম্বর রুনু কর্মক্ষেত্রে হাজির ছিলেন। ওসমানী বিমানবন্দরের হাজিরা বইতে তার স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ অভিযোগমতে, এ সময় ওসমানী বিমানবন্দরে নয় রুনুর থাকার কথা ওসমানী হাসপাতালে। চিকিৎসকের প্রতিবেদনও কথা বলছে না সাহিদা আক্তার রুনুর পক্ষে। মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর পরই সাহিদা আক্তার রুনুর মামলা কেন নেননি- এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) নূরুল আলম বলেন, মামলা নেইনি এ কথা ঠিক নয়। যথাযথ প্রক্রিয়ায় এজাহার আমাদের কাছে পৌঁছেনি। তিনি বলেন, আদালতে মামলা হওয়ার পর তা থানায় এসেছে, আমরা মামলা রেকর্ড করেছি এবং তদন্তও চলছে। তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল আলম বলেন, মেডিক্যাল রিপোর্টে নির্যাতন ও ধর্ষণের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, তদন্তে অনেক অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে।
No comments