নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিপর্যয় কাটাতে চায় জামায়াত by আহমেদ জামাল
ঢাকা
ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে চলমান রাজনৈতিক
দুর্যোগ কাটাতে চায় জামায়াত। এজন্য তিন সিটিতে ৩৬ কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে
কোমর কষে মাঠে নেমেছে দলটি। দেড় বছরের মধ্যে দলের দুই সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় কঠিন বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ২০ দলীয় জোটের
শরিক জামায়াত। বিশেষ করে ১১ই এপ্রিল সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল
কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় বড় রকমের ধাক্কা লাগে দলে। তাই
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং কাঙ্ক্ষিত সাফল্য নিয়ে সেই
স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে চায় তারা। বাড়াতে চায় নেতাকর্মী-সমর্থকদের
আস্থা-মনোবল। দলের দায়িত্বশীল সূত্রে বিষয়টি স্বীকার করে বলা হয়, ২০১৩
সালের ১২ই ডিসেম্বর আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। প্রায় দেড়
বছরের মাথায় কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে দলের ভেতর বেশ রক্তক্ষরণ
শুরু হয়। সংলাপ ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের এই
প্রেক্ষাপটে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে- এমনটা আশা করেনি কেউ।
এ পর্যায়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্যদিয়ে এই ক্ষতি এবং শোক কাটিয়ে
উঠতে চায় জামায়াত। এ লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাচনের ধারাবাহিকতা সিটি
করপোরেশনেও বজায় রাখতে চায় তারা। এজন্য ঢাকায় ২৬ এবং চট্টগ্রামে ১০
কাউন্সিল প্রার্থীকে নিয়ে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে জামায়াত। তবে জোটের প্রধান
শরিক বিএনপির সঙ্গে ঢাকার ২৬ প্রার্থীর বিষয় সমন্বয় না হওয়ায় প্রার্থীরা
আপাতত গোপনে তৎপরতা চালাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, মেয়র পদে জামায়াতের কোন
প্রার্থী নেই। ঢাকার দুই অংশে ৯৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৬টি চান তারা। কিন্তু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন
বিশিষ্ট নাগরিক ও ব্যক্তিদের সংগঠন ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’ গত শুক্রবার
২০-দলীয় জোট-সমর্থিত প্রার্থীদের যে তালিকা প্রকাশ করে, তাতে
জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থীদের কোন নাম নেই। আদর্শ ঢাকা আন্দোলন ঢাকা উত্তর ও
দক্ষিণের ৯৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৮৫ জন এবং দুই সিটির ৩১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে
২৯ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। এতে জামায়াত যে ২৬টি ওয়ার্ডে প্রার্থী
দিয়েছে, তার ২৩টিতেই বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী দেখা যায়। এ নিয়ে জোটের মধ্যে
টানাপড়েন শুরু হলে বুধবার ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী পরিচিতি স্থগিত ঘোষণা
করা হয়। তবে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও জামায়াতের
মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সেখানে ৫৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলে
১০টি ওয়ার্ড জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। অবশ্য একটিতে বিএনপির একজন
বিদ্রোহী প্রার্থী এখনও বহাল আছেন। এর কাউন্টারে জামায়াত তিনটি ওয়ার্ডে
বিএনপির পাশাপাশি তিন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর
জামায়াতের এক তরুণ সদস্য বলেন, ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’ ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে
আলোচনা করে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বলে মনে হয় না। এজন্য জোটের ভেতর
খানিকটা ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। প্রার্থী পরিচিতি স্থগিত তারই ইঙ্গিত বলে
মনে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নয়জন ও দক্ষিণে ১০ জন জামায়াত-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন। তারা হলেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আশরাফুল আলম, লস্কর মো. তাসলিম (ওয়ার্ড-৪), এনায়েত হোসেন (ওয়ার্ড-১৩), তারেক রেজা তুহিন (ওয়ার্ড-১৪), মোস্তাফিজুর রহমান (ওয়ার্ড-২২), মো. ইকবাল হোসেন (ওয়ার্ড-২৯), মনজুরুল আলম (ওয়ার্ড-৩৫), সালেহ সিদ্দিকী (ওয়ার্ড-৩৬), শরীফ মিজানুর রহমান (ওয়ার্ড-২৬)।
ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে কবির আহমেদ, ৩ নম্বরে শহীদুল ইসলাম, ৫ নম্বরে উমর ফারুক মজুমদার, ৬ নম্বরে গোলাম শাফি মহিউদ্দিন, ১১ নম্বরে মোশাররফ হোসেন, ১৩ নম্বরে আঞ্জুমান আরা রব, ৩৯ নম্বরে আতাহার আলী, ৪৬ নম্বরে আবদুল মান্নান, ৫২ নম্বরে শফিকুল ইসলাম ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে আহমাদ হাসান।
এ ছাড়া ঢাকা উত্তরে চারজন ও দক্ষিণে তিনজন নারীকে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে জামায়াত সমর্থন দিয়েছে। তারা হলেন- উত্তরে উম্মে সালমা (৪, ১৫, ১৬ ওয়ার্ড), মাসুদা আক্তার (১২, ১৩, ১৪ ওয়ার্ড), আমেনা বেগম (২২, ২৩, ৩৬ ওয়ার্ড), কাওসার জাহান (২৯, ৩০, ৩২ ওয়ার্ড); দক্ষিণে শামিমা আকতার (২, ৩, ৪ ওয়ার্ড), দিলারা বেগম (১৩, ১৯, ২০ ওয়ার্ড) ও হাসনা হেনা (৫২, ৫৩, ৫৪ ওয়ার্ড)। ঢাকা মহানগর জামায়াত সূত্রমতে, ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার আগেই এরা নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নয়জন ও দক্ষিণে ১০ জন জামায়াত-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন। তারা হলেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আশরাফুল আলম, লস্কর মো. তাসলিম (ওয়ার্ড-৪), এনায়েত হোসেন (ওয়ার্ড-১৩), তারেক রেজা তুহিন (ওয়ার্ড-১৪), মোস্তাফিজুর রহমান (ওয়ার্ড-২২), মো. ইকবাল হোসেন (ওয়ার্ড-২৯), মনজুরুল আলম (ওয়ার্ড-৩৫), সালেহ সিদ্দিকী (ওয়ার্ড-৩৬), শরীফ মিজানুর রহমান (ওয়ার্ড-২৬)।
ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে কবির আহমেদ, ৩ নম্বরে শহীদুল ইসলাম, ৫ নম্বরে উমর ফারুক মজুমদার, ৬ নম্বরে গোলাম শাফি মহিউদ্দিন, ১১ নম্বরে মোশাররফ হোসেন, ১৩ নম্বরে আঞ্জুমান আরা রব, ৩৯ নম্বরে আতাহার আলী, ৪৬ নম্বরে আবদুল মান্নান, ৫২ নম্বরে শফিকুল ইসলাম ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে আহমাদ হাসান।
এ ছাড়া ঢাকা উত্তরে চারজন ও দক্ষিণে তিনজন নারীকে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে জামায়াত সমর্থন দিয়েছে। তারা হলেন- উত্তরে উম্মে সালমা (৪, ১৫, ১৬ ওয়ার্ড), মাসুদা আক্তার (১২, ১৩, ১৪ ওয়ার্ড), আমেনা বেগম (২২, ২৩, ৩৬ ওয়ার্ড), কাওসার জাহান (২৯, ৩০, ৩২ ওয়ার্ড); দক্ষিণে শামিমা আকতার (২, ৩, ৪ ওয়ার্ড), দিলারা বেগম (১৩, ১৯, ২০ ওয়ার্ড) ও হাসনা হেনা (৫২, ৫৩, ৫৪ ওয়ার্ড)। ঢাকা মহানগর জামায়াত সূত্রমতে, ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার আগেই এরা নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
No comments