বাংলাদেশীর বর্ণনায় ভূমধ্যসাগরে নৌডুবি
জীবিত
উদ্ধার করা বাংলাদেশীর মুখ থেকে বেরিয়ে এলো ভূমধ্যসাগরে ভয়াবহ নৌডুবির
ঘটনা। তিনি বললেন, লিবীয় উপকূলের কাছে যে নৌযানটি বিপুল পরিমাণ অভিবাসী
নিয়ে ডুবে গেছে তাতে ‘ইঁদুরের মতো খাঁচায়’ আটকে রাখা হয়েছিল অনেক
অভিবাসীকে। ৩২ বছর বয়সী এই বাংলাদেশীকে উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে
যাওয়া হয়েছে সিসিলিতে। সেখানে একটি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার
বক্তব্য উদ্ধৃত করে গতকাল বিশ্ব মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে
তার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে সংবাদ শিরোনাম করেছে লন্ডনের প্রভাবশালী ও বহুল
প্রচারিত পত্রিকা ডেইলি মেইল। তবে উদ্ধার করা ওই বাংলাদেশীর নাম, ঠিকানা
প্রকাশ করা হয় নি। তবে তিনি কিছুটা সুস্থ। রোমে নিয়োজিত বাংলাদেশী
রাষ্ট্রদূত শাহাদাত হোসেন বিবিসি’কে বলেছেন, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশীর সঙ্গে
তার কথা হয় নি। তবে কাতানিয়াতে বাংলাদেশের অনারারি কনসালকে তিনি দায়িত্ব
দিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই বাংলাদেশীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার অবস্থার
খোঁজখবর নিতে। উদ্ধার হওয়া ওই বাংলাদেশী ডেইলি মেইলকে বলেছেন, তাদেরকে
বহনকারী নৌযানে ছিলেন কমপক্ষে ৯৫০ জন আরোহী। তিনি বলেন, নৌযানের অভিবাসীদের
রাখা হয়েছিল চাপের মুখে। যখনই তারা পাশ দিয়ে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ দেখতে
পায় তারা মনে করে যে, এটি তাদেরকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই অভিবাসীরা
নৌযানের একপাশে চলে যায়। এ কারণেই ডুবে যায় নৌযানটি। তবে তার ভেতর যেসব
মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল যাতে তারা বাইরে আসতে না পারে তারা সেই অবস্থায়ই
মারা যান। ওই বাংলাদেশী বলেছেন, তাদের সঙ্গে ছিলেন ২০০ নারী ও ৫০ জন শিশু।
তাদের কার কি পরিণতি তিনি বলতে পারেন না। তিনি বলতে পারেন নি তাদের সঙ্গে
কতজন বাংলাদেশী ছিলেন। তার ভাষায় এসব নারী ও শিশুর অনেককেই খাঁচায় আটকে
রাখার মতো আটকে রাখা হয়েছিল। তাই তারা মারা গেছে খাঁচায় বন্দি ইঁদুরের মতো।
তিনি লা সিসিলিয়া পত্রিকাকে বলেছেন, আমি এবং অন্য যারা বেঁচে আছি আমরা
ছিলাম নৌযানের ডেকে। তাই আমরা বেঁচে গিয়েছি। অন্যরা ডুবে মারা গেছে। তাদের
বাইরে বের হয়ে আসার কোন পথ ছিল না। ওই বাংলাদেশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে
প্রসিকিউটররা। তার কাছ থেকে আরও তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। বলা হচ্ছে,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ নৌ ট্র্যাজেডি। উদ্ধার অভিযানে
গিয়ে এক উদ্ধারকর্মী যখন ১০ বছর বয়সী একটি বালকের লাশ পান তখন তিনি আবেগে
আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছিল আমার নিজের সন্তানের লাশ বুকে
জড়িয়ে ধরলাম। আর কান্না থামাতে পারলাম না। এখন ধারণা করা হচ্ছে, এই ভয়াবহ
ট্র্যাজেডিতে কমপক্ষে ৯০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে তীব্র সমালোচনার
মুখে পড়েছে ইতালি। কারণ, ইতালি গত বছরই ভূমধ্যসাগরে নজরদারি ও অভিযান বন্ধ
করেছে। এতে সমর্থন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ জন্য রাজনীতিবিদ ও দাতব্য
সংস্থাগুলো তীব্র সমালোচনার বাণ ছুড়ে মারছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দিকে।
ওদিকে গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা বিশেষ বৈঠক
করেছে। এতে কোন কোন মন্ত্রী ভূমধ্যসাগরে নজরদারি বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে।
এক্ষেত্রে খরচের তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, লিবিয়া বা
অন্য যেকোন দেশে যেসব নৌযান অবৈধ উপায়ে অভিবাসীদের নিয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য
অপেক্ষায় রয়েছে তা গুলি করে ডুবিয়ে দিতে। কোন কোন মন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞ
বলেছেন, যেসব অভিবাসী ইতালিতে যেতে চান তারা যেন আগে থেকে জানিয়ে দেন।
গতকাল ইতালির কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ ২৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে
মালটায় সমাহিত করার জন্য। এর আগে উদ্ধার করা মাত্র ২৮ জনকে নিয়ে তারা পৌঁছে
দেয় সিসিলিতে। ওদিকে কাতানিয়ায় সেভ দ্য চিলড্রেনের মুখপাত্র সারাহ টেইলর
বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরে এভাবে পানিতে ডুবে মারা গেছেন কমপক্ষে
এক হাজার মানুষ। তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক টাইটানিক জাহাজডুবিতে যত মানুষ
মারা গিয়েছিলেন এ সংখ্যা প্রায় তার সমান। এছাড়া, সম্প্রতি কোস্টা কনকরডিয়া
জাহাজ ডুবে যত মানুষ মারা গিয়েছেন তার ৩১ গুণ মানুষ মারা গিয়েছে এই
ভূমধ্যসাগরে।
ওদিকে বিবিসি বলেছে, ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া নৌযান থেকে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশী এখন সিসিলির কাতানিয়াতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগে থেকেই তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকায় ডুবে যাওয়ার পর তা কিছুটা বেড়ে যায়। এ কারণে তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি এখন আগের তুলনায় অনেক সুস্থ বোধ করছেন। রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশীর সঙ্গে তার কথা হয় নি। তবে তিনি চিকিৎসাধীন বাংলাদেশীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে কাতানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী অনারারি কনসালকে দায়িত্ব দিয়েছেন। শাহাদাত হোসেন আরও বলেছেন, ওই নৌযানে আরো বাংলাদেশী ছিল কিনা তা তারা খোঁজ নিয়ে দেখছেন। ইতালির সরকারি কৌঁসুলিরা উদ্ধারকৃত ওই বাংলাদেশীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি তাদের বলেছেন, ঐ নৌকায় ৯৫০ জন যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে কয়েকশ’ মানুষকে পাচারকারীরা বন্দি করে নিয়ে যাচ্ছিল। ইতালির কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনো পর্যন্ত মাত্র ২৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মৃত ২৪ জন ব্যক্তির লাশ নিয়ে একটি জাহাজ মালটায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন ইতালির উপকূলরক্ষীরা। লিবিয়া উপকূলের কাছে রোববার ডুবে যাওয়া নৌযানটিতে ৭০০র মতো অভিবাসী ছিল, যাদের মধ্যে কয়েকশ’ সাগরে ডুবে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডুবে যাওয়া নৌযানের গন্তব্য ছিল ইতালি।
ওদিকে বিবিসি বলেছে, ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া নৌযান থেকে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশী এখন সিসিলির কাতানিয়াতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগে থেকেই তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকায় ডুবে যাওয়ার পর তা কিছুটা বেড়ে যায়। এ কারণে তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি এখন আগের তুলনায় অনেক সুস্থ বোধ করছেন। রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশীর সঙ্গে তার কথা হয় নি। তবে তিনি চিকিৎসাধীন বাংলাদেশীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে কাতানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী অনারারি কনসালকে দায়িত্ব দিয়েছেন। শাহাদাত হোসেন আরও বলেছেন, ওই নৌযানে আরো বাংলাদেশী ছিল কিনা তা তারা খোঁজ নিয়ে দেখছেন। ইতালির সরকারি কৌঁসুলিরা উদ্ধারকৃত ওই বাংলাদেশীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি তাদের বলেছেন, ঐ নৌকায় ৯৫০ জন যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে কয়েকশ’ মানুষকে পাচারকারীরা বন্দি করে নিয়ে যাচ্ছিল। ইতালির কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনো পর্যন্ত মাত্র ২৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মৃত ২৪ জন ব্যক্তির লাশ নিয়ে একটি জাহাজ মালটায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন ইতালির উপকূলরক্ষীরা। লিবিয়া উপকূলের কাছে রোববার ডুবে যাওয়া নৌযানটিতে ৭০০র মতো অভিবাসী ছিল, যাদের মধ্যে কয়েকশ’ সাগরে ডুবে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডুবে যাওয়া নৌযানের গন্তব্য ছিল ইতালি।
No comments