রস+আলো প্রস্তাবিত টক শো নীতিমালা
কিছুদিন আগে শোনা গিয়েছিল, টিভির টক শোগুলোর জন্য নতুন নীতিমালা
প্রণয়ন করা হচ্ছে। কিন্তু এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
তাই এই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে রস+আলোর পক্ষ থেকে নীতিমালা ঠিক করে দিচ্ছেন আলিম আল রাজিঅতিরিক্ত সময়
টক শোর মহান আলোচকদের কথা কোনো দিনই শেষ হয় না। দেখা যায়, পুরো এক ঘণ্টা আলোচনা করার পরও শেষ মুহূর্তে এসে তাঁদের জরুরি সব কথা মনে পড়ে যায়। উপস্থাপক তখন আলোচকদের মুখের ওপর অনুষ্ঠান শেষ করে দেন। আলোচকেরা যেহেতু গণ্যমান্য ব্যক্তি, সেহেতু তাঁদের কথা বিবেচনা করে এখনই টক শোতে ফুটবল খেলার মতো ‘এক্সট্রা টাইম’ যোগ করা দরকার। এই এক্সট্রা টাইমে আলোচকেরা প্রাণ খুলে মনের কথা বলবেন।
স্কোরবোর্ড
অনেক সময় দেখা যায়, প্রতিপক্ষের কাছে চরম ধরা খেয়েও অনেক আলোচক নির্লজ্জের মতো হাসাহাসি করেন। এটা ঠিক নয়। টক শোতে স্কোরের ব্যবস্থা না থাকাতেই এই সমস্যাটা হয়। তাই এখনই টক শোতে স্কোরবোর্ডের ব্যবস্থা করা উচিত। কেউ ধরা খেলে স্কোর কাটা যাবে, আর কেউ ভালো বললে তাঁর স্কোর যোগ হবে।
হেলমেট
এটি একটি খুবই জরুরি বিষয়। আজকাল টক শোতে অনেককেই মারমুখী হয়ে যেতে দেখা যায়। কেউ টেবিল চাপড়ান, কেউ ধমকা-ধমকি করেন, কেউ কেউ চোখ উপড়ে ফেলারও হুমকি দেন। এ অবস্থায় হেলমেটের কোনো বিকল্প নেই। তাই অবিলম্বে জার্সির রঙের সঙ্গে ম্যাচ করে আলোচকদের জন্য হেলমেটের ব্যবস্থা করা জরুরি। উপস্থাপক বেচারার জন্যও একটা হেলমেটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
জার্সি
দেশে এখন টক শো আলোচক অনেক। কেউ সরকারি দলের, কেউ বিরোধী দলের, আবার কেউ বা অন্য কোনো দলের। কোন আলোচক কোন দলের, সেটা মনে রাখা বেশ কঠিন। তাই অতিসত্বর টক শো আলোচকদের জন্য জার্সির ব্যবস্থা করা হোক। এতে জার্সি দেখে দর্শকেরা সহজে বুঝে ফেলবেন—কে কোন দলের আলোচক। দর্শকদেরও তখন একটা পক্ষ নিতে সুবিধা হবে।
নিরাপত্তাকর্মী
নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। টক শোতে দেখা যায়, দুই পক্ষই বেশ কাছাকাছি থেকে ঝগড়া করে। এই টক শো কখন হানাহানিতে রূপ নেয়, তার নাই ঠিক। যদি হানাহানি সৃষ্টি হয়, তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেবে কে? তাই প্রতিটি টক শোর ময়দানে দ্রুত কিছু নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া দরকার। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাঁরা দ্রুত অবস্থা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবেন।
রেফারি
একজন আলোচক কথা শুরু করলে আর থামতেই চান না। ফলে অন্য যে আলোচক আছেন, তিনি কথা বলার সুযোগ পান না। কোনো কোনো সময় দেখা যায়, দুই আলোচক একসঙ্গে কথা বলা শুরু করেছেন, ফলে কারও কথাই স্পষ্ট হয় না। একমাত্র উপস্থাপকের পক্ষে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন। এই অবস্থা নিরসনে চাই একজন শক্তিশালী রেফারি। রেফারির হাতে থাকবে উচ্চ শব্দের বাঁশি। যখন দরকার হবে, তখন জোরে বাঁশি দিয়ে তিনি আলোচকদের থামিয়ে দেবেন। রেফারির পকেটে কিছু লাল ও হলুদ কার্ডও রাখা যেতে পারে।
ট্রফি
এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এত এত চ্যানেল, এত এত টক শো। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটা টক শোও মীমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়নি। এখনই টক শোর মীমাংসা প্রয়োজন। এ জন্য প্রতিটি টক শো শেষে দুই পক্ষের আলোচকদের স্কোর গণনা করে বেশি স্কোরকারী আলোচককে বড়সড় একটা ট্রফি দেওয়া অতি জরুরি। ট্রফি বিজয়ী যাতে ট্রফি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কিছুক্ষণ লাফালাফি করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও থাকতে হবে। লাফালাফি শেষ হলে তাঁকে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে, ‘ট্রফি পেয়ে আপনার অনুভূতি কী?’
No comments