সিঙ্গাপুরের আকাশে নিষিদ্ধ হচ্ছে বিমানের উড়োজাহাজ by ফিরোজ মান্না
এবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ডিসি-১০ ও এয়ারবাস সিঙ্গাপুরের
আকাশসীমায় নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। আনত্মর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন (আইকাও)
বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনকে এসএসসি (সিগনিফিকেন্ট সেফটি কনসার্ন)
তালিকাভুক্ত করায় সিঙ্গাপুর সিভিল এভিয়েশন এ সিদ্ধানত্ম নিয়েছে।
সম্প্রতি
সিঙ্গাপুর সিভিল এভিয়েশনের দু'জন কর্মকর্তা বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন অডিট
করতে এসে এমন সিদ্ধানত্ম জানিয়ে দিয়েছে। সিঙ্গাপুর সিভিল এভিয়েশন এই মর্মে
একটি চিঠিও দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন চিঠির বিষয়টি অস্বীকার
করেছে।সূত্র জানিয়েছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যে উড়োজাহাজগুলো সিভিল এভিয়েশন মেইন্টেনেন্স বা রৰণাবেৰণ করে এবং সার্টিফিকেট দেয় সে সব উড়োজাহাজ সিঙ্গাপুরের এয়ার স্পেসে বা আকাশ সীমায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর সিভিল এভিয়েশন বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের বিভিন্ন তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে রেখেছে বলেও খবর মিলেছে। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন থেকে সেফটি সম্পর্কিত সার্টিফিকেট পাওয়া যে উড়োজাহাজ চলাচল করছে ওই সব উড়োজাহাজ সিঙ্গাপুরের আকাশ সীমায় চলতে পারবে না। যে সিভিল এভিয়েশন ক্যাটাগরি-২তে অবস্থান করছে তাদের দেয়া সেফটি সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য নয়। সিভিল এভিয়েশনকে এসএসসি তালিকা থেকে বের হতে না পারলে আরও অনেক দেশের আকাশসীমা বিমানের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। এ মাসের শুরম্নর দিকে সিঙ্গাপুর সিভিল এভিয়েশন থেকে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অডিট করা হয়েছে।
আনত্মর্জাতিক সিভিল এভিয়েশনের (আইকাও) বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনকে 'সিগনিফিকেন্ট সেফটি কনসার্ন (এসএসসি) তালিকাভুক্ত করেছে। এসএসসি তালিকাভুক্ত করা মানেই হচ্ছে যে কোন দেশ যে কোন সময় বাংলাদেশের ফাইট চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। অথরিটির অযোগ্যতার কারণে এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে। এসএসসি আসলে কালো তালিকা। এর আগে আইকাও সিভিল এভিয়েশনকে দেয়া এক চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এসএসসি তালিকা থেকে সিভিল এভিয়েশনের নাম কাটা গেলে সিঙ্গাপুর কেন, বিমান আর ইউরোপের আকাশেও উড়তে পারবে না। সিভিল এভিয়েশন বলছে, পুরো বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে। সিভিল এভিয়েশন ত্রম্নটিগুলো দ্রম্নত সমাধান করে এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে কাজ করে যাচ্ছে। আইকাও যেব এসএসসি তালিকাভুক্তির বিষয়টি সাময়িক। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স সিভিল এভিয়েশনকে এসএসসিভুক্ত করেনি বলে সিভিল এভিয়েশন বলেছে।
আইকাও এর আগে ইন্দোনেশিয়া ও পাকিসত্মান সিভিল এভিয়েশনকে এসএসসি তালিকাভুক্ত করায় তাদের উড়োজাহাজ ফাইট পরিচালনা করতে পারেনি। পরে এ দু'টি দেশ বাইরে থেকে দৰ লোক নিয়োগ করে সেফটির বিষয়টি নিশ্চিত করার পর এসএসসি তালিকা থেকে নাম কাটিয়েছে। ইসরাইলের মতো দেশের সিভিল এভিয়েশনকেও সম্প্রতি আইকাও এসএসসি তালিকাভুক্ত করেছে। সিভিল এভিয়েশনের এক কর্মকর্তা বলেন, সিঙ্গাপুর সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা সিভিল এভিয়েশনকে এসএসসি তালিকাভুক্তির কোন কথা বলেনি। এমন কি এ সংক্রানত্ম কোন চিঠিও আমাদের দেয়া হয়নি।
এদিকে, একইভাবে এফ-২৮ উড়োজাহাজও বিমান বহর থেকে সরিয়ে ফেলা উচিত বলে তারা মনে করেন। ১৯৮৩ সালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স থেকে তিনটি ডিসি-১০ উড়োজাহাজ কেনা হয়েছিল ৪৬২ কোটি টাকায়। পরে ১৯৮৯ সালে আরও একটি পুরনো ডিসি-১০ উড়োজাহাজ কেনা হয়। ১৯৭৭ সালে চারটি এফ-২৮ উড়োজাহাজ কেনা হয়েছে। এত বছরের পুরনো উড়োজাহাজ দিয়ে কিভাবে একটি এয়ারলাইন্স চলতে পারে। আর এসব উড়োজাহাজ মেইন্টেন করা হয় না। দেশেই এ গুলোর মেইন্টেনেন্স করা হয় বলে ঝুঁকি থেকে যায় এমন ধারণা অন্যান্য দেশের সিভিল এভিয়েশন মনে করে।
No comments