কে হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি?
বিকাশ দত্ত দেশের ১৮তম প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে সুপ্রীমকোর্ট এলাকায় চুলচেরা হিসাব-নিকাশ চলছে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম ৭ ফেব্রম্নয়ারি অবসরে যাচ্ছেন।
নিয়ম অনুযায়ী পরবতর্ী প্রধান বিচারপতি হওয়ার কথা বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমের। কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি প্রধান বিচারপতি হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতোমধ্যে তাঁর দু'বার স্ট্রোক হয়েছে। তিনটি সরকারে পর পর চার বার তাঁকে সুপারসিড করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে এবারও স্বাস্থ্যগত কারণে বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমকে প্রধান বিচারপতি না করার সম্ভাবনাই বেশি। সে ৰেত্রে পরবতর্ী প্রধান বিচারপতি কে হবেন তা নিয়ে চলছে সুপ্রীমকোর্ট অঙ্গনে নানান আলোচনা। এসব আলোচনায় অনেক ৰেত্রে উঠে আসছে বিচারপতি খায়রম্নল হকের নাম। এবার তাঁকে না করলেও পরবতর্ীতে তিনিই হবেন প্রধান বিচারপতি।যিনি প্রধান বিচারপতি হবেন, তাঁকে শুধু সুপ্রীমকোর্টই নয় দেশের ৬৪ বিচারিক আদালতের কাজ তদারকি করতে হবে। এ ছাড়া সামনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরম্ন হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করার পর পরই দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরম্ন হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আনত্মর্জাতিক মিডিয়া থেকে শুরম্ন করে বিদেশী পর্যবেৰণগণ আসবেন। সেদিক থেকে প্রধান বিচারপতিকে নানা বিষয়ে সিদ্ধানত্ম গ্রহণ করতে হবে। তা ছাড়া সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে বলা আছে, শারীরিক মানসিক অৰম থাকলে কেউ বিচারপতি হতে পারবেন না। তেমনি শারীরিকভাবে পুরো সুস্থ নন এমন ব্যক্তি প্রধান বিচারপতি হতেও পারেন না। এ ৰেত্রে বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিম সবার চেয়ে সিনিয়র। শারীরিক অৰমতা তাঁর বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি হতে গেলে তাঁর অতীত কর্মকা-, হাইকোর্টে গুরম্নত্বপূর্ণ মামলার রায় এবং সরকারের সাপোর্টও থাকতে হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কে হবেন পরবতর্ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান_ সে বিষয়টিও মাথায় রেখে সরকার অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রধান বিচারপতি বাদে বর্তমানে আপীল বিভাগে ৭ জন বিচারপতি রয়েছেন।
জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে প্রথমে রয়েছেন বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিম। তিনি অবসরে যাবেন ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। বিচারপতি এমএ মতিন ২০১০ সালের ২৫ ডিসেম্বর, বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান ২০১১ সালের ১৪ নবেম্বর। বিচারপতি বিজন কুমার দাস ২০১০ সালের ১০ এপ্রিল, বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক ২০১১ সালের ১৭ মে, বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ২০১৫ সালের ১৬ নবেম্বর এবং বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারিতে অবসরে যাবেন।
বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমের পরে সিনিয়রিটির ক্রমানুসারে রয়েছেন বিচারপতি এমএ মতিন, বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান, বিচারপতি বিজন কুমার দাস, বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক, বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
সূত্র জানায়, বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমের দু'দু'বার স্ট্রোক হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি আমলে দু'বার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একবার এবং সর্বশেষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময়ে মোট চারবার তাঁকে টপকিয়ে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছে। নিয়মানুসারে তাকে প্রধান বিচারপতি করার কথা। যদিও সরকারের একটি অংশ চায়, বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমকেই প্রধান বিচারপতি করা হোক। অন্য অংশে সাফ জবাব যে ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ, পর পর চারবার সুপারসিড করে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছে, তাঁকে কিভাবে প্রধান বিচারপতি করা যায়?
প্রধান বিচারপতি এবং আপীল বিভাগের বিচারক নিয়োগের ৰেত্রে সিনিয়রিটি মানা রেওয়াজ। ইতোপূর্বে বিএনপি সরকার সিনিয়রিটি না মেনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কেএম হাসানকে নিয়োগ দেয়াতে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও প্রধান বিচারপতির পদ প্রদর্শনজনিত পদ নয়। বিচারপতি বা প্রধান বিচারপতির পদ কোন চাকরি নয়। এটা সাংবিধানিক পদ। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন।
No comments