বাংলাদেশের আপত্তিতে নাকচ হয়ে গেল ভারতীয় প্রস্তাব
দক্ষিণ এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের (সাফটা) আওতায় সদস্য দেশগুলোর জন্য দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা প্রস্তাব বাংলাদেশের আপত্তিতে নাকচ হয়ে গেছে।
অনেকটা হঠাৎ করেই গত মাসে সাফটা-বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশের জন্য দুটি স্পর্শকাতর তালিকা রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। পরে তা নাকচ হয়ে যায় মূলত বাংলাদেশের জোর বিরোধিতায়। পরে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও (সাফটা মিনিস্ট্রিয়াল কাউন্সিল) বিষয়টি অনুমোদন করা হয়।
মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান। বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন সরকার।
হঠাৎ প্রস্তাব: জানা গেছে, গত ১১-১২ জুন মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী সাফটা-বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১১ জুন বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকের শুরুতেই হঠাৎ করেই ভারতীয় প্রতিনিধিরা সাফটাভুক্ত প্রতিটি সদস্য দেশের দুটি স্পর্শকাতর বা নেতিবাচক পণ্য তালিকা রাখার প্রস্তাব করেন। আর ভারতীয় প্রস্তাবকে সমর্থন করে পাকিস্তান।
ভারতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিটি দেশের উচ্চ ও নিম্ন—এ রকম দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা থাকবে। তবে বর্তমান স্পর্শকাতর পণ্য তালিকার কত শতাংশ প্রস্তাবিত উচ্চ স্পর্শকাতর, আর কতটা নিম্ন স্পর্শকাতর পণ্য তালিকায় থাকবে এবং এগুলোর শুল্কহার কত হবে, সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।
বৈঠকের আলোচনায় অবশ্য উঠে আসে যে উচ্চ স্পর্শকাতর পণ্য তালিকার কোনো পণ্য সংশ্লিষ্ট দেশে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। আর নিম্ন স্পর্শকাতর তালিকার কোনো পণ্যের বিপরীতে ১০ থেকে ১২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে।
কিন্তু বৈঠকের প্রথম দিনেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বাংলাদেশ। তবে তখন অন্য কোনো সদস্য দেশের সমর্থন পাওয়া যায়নি।
তবে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শুরুর আগে নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘সাইডলাইন’ বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিদের বোঝাতে সক্ষম হন যে এভাবে দুটো তালিকা করা হলে ভারত ও পাকিস্তান লাভবান হবে। তবে স্বল্পোন্নত দেশগুলো কোনোভাবেই লাভবান হবে না।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, ভারতের যে স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা রয়েছে, তার মধ্যে বেশ কিছু পণ্যে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা আছে। তবে বেশির ভাগ পণ্যেই ১০ থেকে ১২ শতাংশ শুল্ক আরোপ রয়েছে। ফলে দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকার বিধান অনুমোদন দেওয়া হলে ভারতকে খুব বেশি শুল্ক রক্ষণশীলতা দেখাতে হবে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশকে তার সংবেদনশীল পণ্যের তালিকার সিংহভাগ পণ্যের শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০-১২ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে। এতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে বেশি। নেপাল ও ভুটানেরও একই পরিস্থিতি হবে। ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশ তুলনামূলকভাবে সুবিধা বেশি পাবে।
বিশেষজ্ঞ কমিটির দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে আবার একই প্রস্তাবের অনুকূলে আলোচনা ওঠায় ভারত। এ সময় কার্যবিবরণীতে ‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকার প্রস্তাবের ওপর মতামত দেবে’ বলে সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্তির জন্য বলা হয়।
এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সার্ক সচিবালয়কে না জানালে দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা প্রণয়নের প্রস্তাবই গৃহীত হয়ে যাবে, এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাচ্ছিল।
কিন্তু এই পর্যায়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা জানান, দুটি স্পর্শকাতর পণ্যতালিকা প্রণয়নের বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে না থাকায় তাঁদের চূড়ান্ত মতামত (ম্যান্ডেট) দেওয়ার সুযোগ নেই।
এভাবে বাংলাদেশের আপত্তিতে দ্বৈত তালিকার প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। নিয়মানুযায়ী, সাফটার যেকোনো বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গৃহীত হতে হয়।
উল্লেখ্য, স্পর্শকাতর পণ্য বলতে সেসব পণ্য বোঝায়, যেসব পণ্যে কোনো দেশ অন্য দেশকে নিজেদের বাজারে শুল্কমুক্ত বা শুল্কছাড় সুবিধা দিতে রাজি নয়।
অন্যান্য: তবে বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে বাণিজ্য উদারীকরণ কর্মসূচির (টিএলপি) আওতায় ২০১৬ সালের মধ্যে সদস্য দেশগুলো তাদের স্ব-স্ব ট্যারিফ লাইনের (আমদানিযোগ্য পণ্যের তালিকা) ৩০ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য করবে। অবশ্য বাংলাদেশে প্রায় ৩৮ শতাংশ পণ্যে ইতিমধ্যে শুল্ক শূন্য রয়েছে।
এ ছাড়া সাফটায় আফগানিস্তানের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও প্রটোকল অব এক্সেসেশনের মাধ্যমে অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী ৭ আগস্ট থেকে এই প্রটোকল কার্যকর হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকায় স্বল্পোন্নত দেশের জন্য এক হাজার ২৩৩টি ও স্বল্পোন্নত নয় এমন দেশের জন্য এক হাজার ২৪১টি পণ্য রয়েছে। সাফটাভুক্ত দেশগুলোয় পৃথিবীর এক-চতুর্থাংশ জনগোষ্ঠীর বসবাস। অথচ সাফটাভুক্ত দেশগুলো বাণিজ্য করে তাদের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ।
অনেকটা হঠাৎ করেই গত মাসে সাফটা-বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশের জন্য দুটি স্পর্শকাতর তালিকা রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। পরে তা নাকচ হয়ে যায় মূলত বাংলাদেশের জোর বিরোধিতায়। পরে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও (সাফটা মিনিস্ট্রিয়াল কাউন্সিল) বিষয়টি অনুমোদন করা হয়।
মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান। বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন সরকার।
হঠাৎ প্রস্তাব: জানা গেছে, গত ১১-১২ জুন মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী সাফটা-বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১১ জুন বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকের শুরুতেই হঠাৎ করেই ভারতীয় প্রতিনিধিরা সাফটাভুক্ত প্রতিটি সদস্য দেশের দুটি স্পর্শকাতর বা নেতিবাচক পণ্য তালিকা রাখার প্রস্তাব করেন। আর ভারতীয় প্রস্তাবকে সমর্থন করে পাকিস্তান।
ভারতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিটি দেশের উচ্চ ও নিম্ন—এ রকম দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা থাকবে। তবে বর্তমান স্পর্শকাতর পণ্য তালিকার কত শতাংশ প্রস্তাবিত উচ্চ স্পর্শকাতর, আর কতটা নিম্ন স্পর্শকাতর পণ্য তালিকায় থাকবে এবং এগুলোর শুল্কহার কত হবে, সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।
বৈঠকের আলোচনায় অবশ্য উঠে আসে যে উচ্চ স্পর্শকাতর পণ্য তালিকার কোনো পণ্য সংশ্লিষ্ট দেশে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। আর নিম্ন স্পর্শকাতর তালিকার কোনো পণ্যের বিপরীতে ১০ থেকে ১২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে।
কিন্তু বৈঠকের প্রথম দিনেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বাংলাদেশ। তবে তখন অন্য কোনো সদস্য দেশের সমর্থন পাওয়া যায়নি।
তবে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শুরুর আগে নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘সাইডলাইন’ বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিদের বোঝাতে সক্ষম হন যে এভাবে দুটো তালিকা করা হলে ভারত ও পাকিস্তান লাভবান হবে। তবে স্বল্পোন্নত দেশগুলো কোনোভাবেই লাভবান হবে না।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, ভারতের যে স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা রয়েছে, তার মধ্যে বেশ কিছু পণ্যে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা আছে। তবে বেশির ভাগ পণ্যেই ১০ থেকে ১২ শতাংশ শুল্ক আরোপ রয়েছে। ফলে দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকার বিধান অনুমোদন দেওয়া হলে ভারতকে খুব বেশি শুল্ক রক্ষণশীলতা দেখাতে হবে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশকে তার সংবেদনশীল পণ্যের তালিকার সিংহভাগ পণ্যের শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০-১২ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে। এতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে বেশি। নেপাল ও ভুটানেরও একই পরিস্থিতি হবে। ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশ তুলনামূলকভাবে সুবিধা বেশি পাবে।
বিশেষজ্ঞ কমিটির দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে আবার একই প্রস্তাবের অনুকূলে আলোচনা ওঠায় ভারত। এ সময় কার্যবিবরণীতে ‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকার প্রস্তাবের ওপর মতামত দেবে’ বলে সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্তির জন্য বলা হয়।
এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সার্ক সচিবালয়কে না জানালে দুটি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা প্রণয়নের প্রস্তাবই গৃহীত হয়ে যাবে, এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাচ্ছিল।
কিন্তু এই পর্যায়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা জানান, দুটি স্পর্শকাতর পণ্যতালিকা প্রণয়নের বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে না থাকায় তাঁদের চূড়ান্ত মতামত (ম্যান্ডেট) দেওয়ার সুযোগ নেই।
এভাবে বাংলাদেশের আপত্তিতে দ্বৈত তালিকার প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। নিয়মানুযায়ী, সাফটার যেকোনো বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গৃহীত হতে হয়।
উল্লেখ্য, স্পর্শকাতর পণ্য বলতে সেসব পণ্য বোঝায়, যেসব পণ্যে কোনো দেশ অন্য দেশকে নিজেদের বাজারে শুল্কমুক্ত বা শুল্কছাড় সুবিধা দিতে রাজি নয়।
অন্যান্য: তবে বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে বাণিজ্য উদারীকরণ কর্মসূচির (টিএলপি) আওতায় ২০১৬ সালের মধ্যে সদস্য দেশগুলো তাদের স্ব-স্ব ট্যারিফ লাইনের (আমদানিযোগ্য পণ্যের তালিকা) ৩০ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য করবে। অবশ্য বাংলাদেশে প্রায় ৩৮ শতাংশ পণ্যে ইতিমধ্যে শুল্ক শূন্য রয়েছে।
এ ছাড়া সাফটায় আফগানিস্তানের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও প্রটোকল অব এক্সেসেশনের মাধ্যমে অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী ৭ আগস্ট থেকে এই প্রটোকল কার্যকর হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকায় স্বল্পোন্নত দেশের জন্য এক হাজার ২৩৩টি ও স্বল্পোন্নত নয় এমন দেশের জন্য এক হাজার ২৪১টি পণ্য রয়েছে। সাফটাভুক্ত দেশগুলোয় পৃথিবীর এক-চতুর্থাংশ জনগোষ্ঠীর বসবাস। অথচ সাফটাভুক্ত দেশগুলো বাণিজ্য করে তাদের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ।
No comments