একুশ শতকের মহামন্দা - পল ক্রুগম্যান
মন্দা (রিসেশন) সচরাচর দেখা যায়, কিন্তু মহামন্দার (ডিপ্রেশন) দেখা মেলে কদাচিৎ। আমি শুধু এতটুকুই বলতে পারি যে অর্থনৈতিক ইতিহাসে মাত্র দুবার এমন অবস্থা তৈরি হয়েছিল, যাকে সেই সময় ব্যাপকভাবে ‘মহামন্দা’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে: ১৮৭৩ সালের আতঙ্ক-পরবর্তী মূল্য সংকোচন ও অস্থিতিশীলতার বছরগুলোতে একবার, আরেকবার ১৯২৯-৩১ সালের অর্থনৈতিক সংকট-পরবর্তী গণবেকারত্বের বছরগুলোতে।
১৯ শতকের ‘লং ডিপ্রেশন’ কিংবা ২০ শতকের ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ যে সময়ের কথাই বলা হোক, এর কোনো যুগেই অর্থনীতি একটানা নিম্নমুখী হয়ে চলেনি। বরং এই দুই যুগের মধ্যেই এমন কিছু সময় ছিল, যখন অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু শুরুর ধসের ফলে যে ক্ষতি হয় তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য অর্থনৈতিক উন্নতির এই পর্যায়গুলো কখনোই যথেষ্ট ছিল না।
আমার আশঙ্কা, আমরা এখন তৃতীয় মহামন্দার প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। এই মহামন্দা সম্ভবত ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’-এর মতো তীব্র না হয়ে অনেকটা ‘লং ডিপ্রেশন’-এর মতো হবে। বিশ্ব অর্থনীতিকে এবং চাকরির অভাবে বিবর্ণ লাখ লাখ মানুষকে এ জন্য অপরিমেয় মূল্য দিতে হবে।
আর এই তৃতীয় মহামন্দা হবে মূলত নীতিরই ব্যর্থতা। দুনিয়াজুড়ে সরকারগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ে মেতে আছে এমন এক সময়ে, যখন সত্যিকারের হুমকি মূল্য সংকোচন; মিতব্যয়ী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে তারা নসিহত করছে, যখন সত্যিকারের সমস্যা অপর্যাপ্ত ব্যয়। সর্বশেষ জি-২০ সম্মেলনটিও এ ব্যাপারে ছিল সবচেয়ে হতাশাব্যঞ্জক।
২০০৮ ও ২০০৯ সালে মনে হয়েছিল, আমরা বোধহয় ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আগের বছরগুলোর মতো সুদের হার বাড়ানোর পথে যায়নি ফেডারেল রিজার্ভ এবং ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের নেতারা। তাঁরা ঋণবাজারকে সহায়তায় উদ্যোগী হয়েছিলেন। অতীতের সরকারগুলো অর্থনীতির নিম্নমুখিতার সময়ে বাজেটকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু বর্তমান সরকারগুলো সে পথ অনুসরণ না করে ঘাটতি বাড়তে দিয়েছে। আর অধিকতর ভালো নীতি গ্রহণ দুনিয়াকে সম্পূর্ণ বিপর্যয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া এড়াতে সহায়তা করেছে: অর্থনৈতিক সংকটের ফলে যে মন্দা (রিসেশন) এসেছিল, সেটি বহুজনের মতে গত গ্রীষ্মে শেষ হয়েছে।
কিন্তু ভবিষ্যতের ঐতিহাসিকেরা আমাদের বলবেন যে তৃতীয় মহামন্দার শেষ এটা ছিল না, ঠিক যেমন করে ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’-এর সমাপ্তি ছিল না ১৯৩৩ সালে এসে ব্যবসায়ের ঊর্ধ্বমুখিতা। বেকারত্ব, বিশেষত দীর্ঘমেয়াদি বেকারত্ব, এখন যে স্তরে রয়ে গেছে, সেটিকে মাত্র কিছুদিন আগেও বিপর্যয়কর হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। বেকারত্বের হার দ্রুত কমে আসারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ উভয়ই জাপানের মতো মূল্য সংকোচনের ফাঁদের দিকে ধাবিত হওয়ার পথে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে।
এমন ভয়ানক অবস্থায়, লোকে প্রত্যাশা করে নীতিনির্ধারকেরা উপলব্ধি করবেন যে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজ এগিয়ে নিতে তাঁরা এখনো যথেষ্ট কাজ করেননি। কিন্তু না, গত কয়েক মাসে কাঁচা টাকা এবং ভারসাম্য বাজেট গোঁড়ামির বিস্ময়কর পুনরাবির্ভাব ঘটেই চলেছে।
ভাষাগত দিক থেকে এই পুরোনো আমলের কথামালার ফিরে আসা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়েছে ইউরোপে। ইউরোপের কর্মকর্তারা হারবার্ট হুভারের বক্তৃতামালা থেকে তাঁদের আলোচ্য বক্তব্যগুলো পাচ্ছেন বলে মনে হয়। তাঁরা যখন দাবি করেন যে কর বৃদ্ধি এবং ব্যয় হ্রাসের ফলে ব্যবসায়ে আস্থার উন্নতি ঘটানোর মাধ্যমে আসলে অর্থনীতি বিস্তৃত হবে, তখন হারবার্ট হুভারের কথাই মাথায় আসে। অবশ্য, বাস্তবিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রও তেমন ভালো করছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ-ব্যবস্থা মূল্য সংকোচনের ঝুঁকি বিষয়ে সচেতন বলেই মনে হয়; কিন্তু এসব ঝুঁকির ব্যাপারে এর প্রস্তাবনা কী? না, কোনো প্রস্তাবনা তো নেই। ওবামা প্রশাসন বোঝে অকালীন আর্থিক কৃচ্ছ্রসাধনের বিপদ—কিন্তু যেহেতু কংগ্রেসের রিপাবলিকান এবং রক্ষণশীল ডেমোক্র্যাটরা রাজ্য সরকারগুলোকে বাড়তি সহায়তা অনুমোদন করবেন না, তাই রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ে বাজেট বরাদ্দ কমানোর আকারে কৃচ্ছ্রসাধন তো এসেই যাচ্ছে।
নীতিগত প্রশ্নে এই ভুল পথে যাত্রা কেন? চরমপন্থীরা তাঁদের কর্মকাণ্ডের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে গ্রিস ও ইউরোপের সীমান্তবর্তী অন্য দেশগুলো যে সমস্যা মোকাবিলা করত, সেসবের কথা বলেন। এটা তো সত্যি যে বন্ড বিনিয়োগকারীরা দুর্দমনীয় ঘাটতিতে থাকা সরকারগুলোর ওপর বৈরী। কিন্তু মন্দাভারাক্রান্ত অর্থনীতি মোকাবিলায় স্বল্প সময়ের আর্থিক কৃচ্ছ্রতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে, সেটিরও কোনো লক্ষণও তো নেই। উল্টো, গ্রিস কঠোর কৃচ্ছ্রসাধনে সম্মত হওয়ার ফলে দেখতে পাচ্ছে যে ঝুঁকি শুধু বেড়েই চলেছে। আয়ারল্যান্ড সরকারি ব্যয় নির্মমভাবে ছেঁটে দেওয়ার নীতি আরোপ করেছে, ফলে বাজারের কাছে আয়ারল্যান্ড শুধু হয়ে উঠেছে স্পেনের চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ, যেই স্পেন এসব চরমপন্থীর দাওয়াই গিলতে অনেক বেশি অনিচ্ছুক।
অবস্থা দেখে মনে হয়, আর্থিক বাজার যা বুঝতে পারে তা নীতিনির্ধারকেরা যেন বোঝে না। দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক দায়িত্ব যেমন গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি কোনো মহামন্দার সময় ব্যয় প্রচণ্ডভাবে কমানোর পদক্ষেপ, যা সেই মহামন্দাকে গভীরতর করে এবং ব্যয় সংকোচনের পথ করে দেয়, আসলে নিজেই ব্যর্থতার বীজ বহন করে।
তাই আমি মনে করি না এটা আসলে গ্রিসের অথবা ঘাটতি ও চাকরির মধ্যে আপসের কোনো বাস্তবসম্মত উপলব্ধির ব্যাপার। উল্টো, এটা সেই গোঁড়ামিরই বিজয়, যে গোঁড়ামি যৌক্তিক বিশ্লেষণের ধার ধারে না, যার মূল বিশ্বাস হলো কঠিন সময়ে আপনি আপনার নেতৃত্ব প্রদর্শন করেন অন্য মানুষের ওপর ভোগান্তি চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে।
গোঁড়ামির এই বিজয়ের দাম দিতে হবে কাকে? উত্তর: কোটি কোটি কর্মসংস্থানহীন মজদুরকে। তাদের অনেককে বছরের পর বছর কাজহীন থাকতে হবে আর কেউ কেউ আর কোনো দিনও কাজ পাবে না।
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
পল ক্রুগম্যান: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ, কলামিস্ট ও লেখক।
১৯ শতকের ‘লং ডিপ্রেশন’ কিংবা ২০ শতকের ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ যে সময়ের কথাই বলা হোক, এর কোনো যুগেই অর্থনীতি একটানা নিম্নমুখী হয়ে চলেনি। বরং এই দুই যুগের মধ্যেই এমন কিছু সময় ছিল, যখন অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু শুরুর ধসের ফলে যে ক্ষতি হয় তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য অর্থনৈতিক উন্নতির এই পর্যায়গুলো কখনোই যথেষ্ট ছিল না।
আমার আশঙ্কা, আমরা এখন তৃতীয় মহামন্দার প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। এই মহামন্দা সম্ভবত ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’-এর মতো তীব্র না হয়ে অনেকটা ‘লং ডিপ্রেশন’-এর মতো হবে। বিশ্ব অর্থনীতিকে এবং চাকরির অভাবে বিবর্ণ লাখ লাখ মানুষকে এ জন্য অপরিমেয় মূল্য দিতে হবে।
আর এই তৃতীয় মহামন্দা হবে মূলত নীতিরই ব্যর্থতা। দুনিয়াজুড়ে সরকারগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ে মেতে আছে এমন এক সময়ে, যখন সত্যিকারের হুমকি মূল্য সংকোচন; মিতব্যয়ী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে তারা নসিহত করছে, যখন সত্যিকারের সমস্যা অপর্যাপ্ত ব্যয়। সর্বশেষ জি-২০ সম্মেলনটিও এ ব্যাপারে ছিল সবচেয়ে হতাশাব্যঞ্জক।
২০০৮ ও ২০০৯ সালে মনে হয়েছিল, আমরা বোধহয় ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আগের বছরগুলোর মতো সুদের হার বাড়ানোর পথে যায়নি ফেডারেল রিজার্ভ এবং ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের নেতারা। তাঁরা ঋণবাজারকে সহায়তায় উদ্যোগী হয়েছিলেন। অতীতের সরকারগুলো অর্থনীতির নিম্নমুখিতার সময়ে বাজেটকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু বর্তমান সরকারগুলো সে পথ অনুসরণ না করে ঘাটতি বাড়তে দিয়েছে। আর অধিকতর ভালো নীতি গ্রহণ দুনিয়াকে সম্পূর্ণ বিপর্যয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া এড়াতে সহায়তা করেছে: অর্থনৈতিক সংকটের ফলে যে মন্দা (রিসেশন) এসেছিল, সেটি বহুজনের মতে গত গ্রীষ্মে শেষ হয়েছে।
কিন্তু ভবিষ্যতের ঐতিহাসিকেরা আমাদের বলবেন যে তৃতীয় মহামন্দার শেষ এটা ছিল না, ঠিক যেমন করে ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’-এর সমাপ্তি ছিল না ১৯৩৩ সালে এসে ব্যবসায়ের ঊর্ধ্বমুখিতা। বেকারত্ব, বিশেষত দীর্ঘমেয়াদি বেকারত্ব, এখন যে স্তরে রয়ে গেছে, সেটিকে মাত্র কিছুদিন আগেও বিপর্যয়কর হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। বেকারত্বের হার দ্রুত কমে আসারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ উভয়ই জাপানের মতো মূল্য সংকোচনের ফাঁদের দিকে ধাবিত হওয়ার পথে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে।
এমন ভয়ানক অবস্থায়, লোকে প্রত্যাশা করে নীতিনির্ধারকেরা উপলব্ধি করবেন যে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজ এগিয়ে নিতে তাঁরা এখনো যথেষ্ট কাজ করেননি। কিন্তু না, গত কয়েক মাসে কাঁচা টাকা এবং ভারসাম্য বাজেট গোঁড়ামির বিস্ময়কর পুনরাবির্ভাব ঘটেই চলেছে।
ভাষাগত দিক থেকে এই পুরোনো আমলের কথামালার ফিরে আসা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়েছে ইউরোপে। ইউরোপের কর্মকর্তারা হারবার্ট হুভারের বক্তৃতামালা থেকে তাঁদের আলোচ্য বক্তব্যগুলো পাচ্ছেন বলে মনে হয়। তাঁরা যখন দাবি করেন যে কর বৃদ্ধি এবং ব্যয় হ্রাসের ফলে ব্যবসায়ে আস্থার উন্নতি ঘটানোর মাধ্যমে আসলে অর্থনীতি বিস্তৃত হবে, তখন হারবার্ট হুভারের কথাই মাথায় আসে। অবশ্য, বাস্তবিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রও তেমন ভালো করছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ-ব্যবস্থা মূল্য সংকোচনের ঝুঁকি বিষয়ে সচেতন বলেই মনে হয়; কিন্তু এসব ঝুঁকির ব্যাপারে এর প্রস্তাবনা কী? না, কোনো প্রস্তাবনা তো নেই। ওবামা প্রশাসন বোঝে অকালীন আর্থিক কৃচ্ছ্রসাধনের বিপদ—কিন্তু যেহেতু কংগ্রেসের রিপাবলিকান এবং রক্ষণশীল ডেমোক্র্যাটরা রাজ্য সরকারগুলোকে বাড়তি সহায়তা অনুমোদন করবেন না, তাই রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ে বাজেট বরাদ্দ কমানোর আকারে কৃচ্ছ্রসাধন তো এসেই যাচ্ছে।
নীতিগত প্রশ্নে এই ভুল পথে যাত্রা কেন? চরমপন্থীরা তাঁদের কর্মকাণ্ডের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে গ্রিস ও ইউরোপের সীমান্তবর্তী অন্য দেশগুলো যে সমস্যা মোকাবিলা করত, সেসবের কথা বলেন। এটা তো সত্যি যে বন্ড বিনিয়োগকারীরা দুর্দমনীয় ঘাটতিতে থাকা সরকারগুলোর ওপর বৈরী। কিন্তু মন্দাভারাক্রান্ত অর্থনীতি মোকাবিলায় স্বল্প সময়ের আর্থিক কৃচ্ছ্রতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে, সেটিরও কোনো লক্ষণও তো নেই। উল্টো, গ্রিস কঠোর কৃচ্ছ্রসাধনে সম্মত হওয়ার ফলে দেখতে পাচ্ছে যে ঝুঁকি শুধু বেড়েই চলেছে। আয়ারল্যান্ড সরকারি ব্যয় নির্মমভাবে ছেঁটে দেওয়ার নীতি আরোপ করেছে, ফলে বাজারের কাছে আয়ারল্যান্ড শুধু হয়ে উঠেছে স্পেনের চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ, যেই স্পেন এসব চরমপন্থীর দাওয়াই গিলতে অনেক বেশি অনিচ্ছুক।
অবস্থা দেখে মনে হয়, আর্থিক বাজার যা বুঝতে পারে তা নীতিনির্ধারকেরা যেন বোঝে না। দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক দায়িত্ব যেমন গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি কোনো মহামন্দার সময় ব্যয় প্রচণ্ডভাবে কমানোর পদক্ষেপ, যা সেই মহামন্দাকে গভীরতর করে এবং ব্যয় সংকোচনের পথ করে দেয়, আসলে নিজেই ব্যর্থতার বীজ বহন করে।
তাই আমি মনে করি না এটা আসলে গ্রিসের অথবা ঘাটতি ও চাকরির মধ্যে আপসের কোনো বাস্তবসম্মত উপলব্ধির ব্যাপার। উল্টো, এটা সেই গোঁড়ামিরই বিজয়, যে গোঁড়ামি যৌক্তিক বিশ্লেষণের ধার ধারে না, যার মূল বিশ্বাস হলো কঠিন সময়ে আপনি আপনার নেতৃত্ব প্রদর্শন করেন অন্য মানুষের ওপর ভোগান্তি চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে।
গোঁড়ামির এই বিজয়ের দাম দিতে হবে কাকে? উত্তর: কোটি কোটি কর্মসংস্থানহীন মজদুরকে। তাদের অনেককে বছরের পর বছর কাজহীন থাকতে হবে আর কেউ কেউ আর কোনো দিনও কাজ পাবে না।
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
পল ক্রুগম্যান: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ, কলামিস্ট ও লেখক।
No comments