মূল ফাটাফাটি শুরু হবে এখন
দখলে থাকা পিঁড়িগুলো অনেকেরই সরে গেল। গেল তো গেল, একেবারে ধরাশায়ী করে দিয়ে গেল বহুকাল ধরে পিঁড়িতে বসে থাকা দামি দলের অনেককেই। এ ক্ষেত্রে এবারের বিশ্বকাপের শুরুর পর্বের সবচেয়ে বড় ক্যাজুয়ালটি ফ্রান্স আর ইতালি। একেবারে ভরাডুবি! বেচারারা কী খেলতে গিয়ে যে কী খেলল, দারুণ কিছু করে দেখাতে গিয়ে যে কী দেখাল, বোঝাই গেল না।
এ ব্যাপারে একজন বললেন, ‘ওভার কনফিডেন্সই ডুবিয়েছে।’ কেউ আবার বললেন, ‘আন্ডারডগ ভাবা দলগুলো যে মোটেও আর আন্ডারডগ নেই, বরং বিগত দিনগুলোতে চর্চা করে করে যে বিশাল সিংহ হয়ে গেছে, তাও বোধহয় ভাবেনি কেউ। দলগুলো তো বটেই, সমর্থকেরাও টের পায়নি।’
অনেকে বলছেন, বড় বড় ক্লাবে বিভিন্ন দেশের হয়ে খেলে মিডিয়ার বদৌলতে ‘স্টার’ বনে যায়। তখন এই টাইটেলের ভারিত্বে আসমানে উড়াল দেওয়ার মতো অবস্থা হয়। বিশ্বকাপে এসে তাই খেই হারিয়ে দলকে হাবুডুবুতে ফেলা ছাড়া উপায় থাকেনি। ষোলোতে উঠতে না পারা এই বড়দের নিয়ে আমার নিজের অবশ্য অন্য আরেকটি দিকের কথা মনে আসে। আর তা হলো, ছোটখাটো দলেরও অনেকে এদের ‘ক্লাব-কলিগ’। একসঙ্গে খেলে। অতএব পরস্পরের ধরন বা টেকনিকগুলো জানা থাকে। কে কোথায় দুর্বল, তাও জেনে যায়। অতএব এই দশা। এই সমানে-সমান হয়ে যাওয়ায় আসলে বড়-ছোট, নামী-দামির মধ্যে কোনো ভেদাভেদ চোখে পড়লই না। তো, বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম পর্বের ঘোরটা এসব উঠতি-পড়তি দেখার মধ্য দিয়ে কেটে গেল। এখন আর গ্রুপগুলোর অন্তর্ভুক্ত প্রতিযোগীদের সবার সঙ্গে সবার শক্তি যাচাইয়ের সুযোগ নেই। কমতে কমতে ষোলোতে এসে ঠেকল। বলতে গেলে, আসলে মূল ফাটাফাটি-ছাঁটাছাঁটিটা শুরু হবে এখন। যারা নিজেদের বড় বলে প্রমাণ দিয়ে ষোলোতে পা রাখল, তাদের এখন শুধু শক্তিধর বা খেলায় দারুণ পারঙ্গম হলেই যে চলবে তা নয়। এখন কোন প্রতিপক্ষের সঙ্গে কেমন খেলতে হবে, কোন টেকনিকে—সেসব নিয়ে নানা প্ল্যান, ছক আর বুদ্ধি খাটানোর বুদ্ধিতে নামতে হবে আটে থাকার জন্য। নক-আউটের খেলা। হারলেই আউট। তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। ‘হারাধনের দশটি ছেলে’র মতো দশায় পড়তে হবে। একে একে বিদায়ী ঘণ্টা বাজবে আট দলের।
ইতিমধ্যেই সমর্থকদের মধ্যে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে। হেরে বিদায় নেওয়া দলগুলোর সমর্থকেরা এখন বিপদে আছে। প্রিয় দল নেই। তা হলে কাকে সাপোর্ট দেবে? এ ব্যাপারে আমার ধারণা, যেসব দলের কাছে হেরে বা ড্র করে পছন্দের দলটিকে ‘হারু-পাট্টি’র দলে শামিল হতে হয়েছে, তাদের সমর্থন দেবে না তারা। অন্তত প্রকাশ্যে।
যা-ই হোক, বহু কাঙ্ক্ষিত দুই দল—ব্রাজিল আর পর্তুগালের খেলাটি কাল রাতে দেখলাম। তবে পুরোটা নয়। আমাদের বিদ্যুৎ শেষ পাঁচ মিনিট দেখতে দেয়নি। অতএব খেলা শেষে অন্য এলাকায় পুরোটা দেখার সৌভাগ্য যাদের হয়েছিল, তাদের কাছে টেলিফোনে জেনেছিলাম ফলাফল। এবং যা ভেবেছিলাম খেলা দেখে, তাই হয়েছে। অর্থাৎ ড্র। তাও আবার গোলশূন্য।
খেলা দেখেই মনে হচ্ছিল, ‘এই তবে এবারের ব্রাজিল?’ আসলে আগের মতো ধার নেই যেন। পর্তুগালের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে মনে হয় ড্র করারই আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল। পর্তুগাল তাদের স্বাভাবিক খেলাই খেলেছে বলা যায়। তবে আমার ধারণা, ব্রাজিল হয়তো ভালো খেলবে পরবর্তী ধাপে। অনেকটা সহজ প্রতিপক্ষ তাদের সামনে। চিলির সঙ্গে খেলবে। চিলিকে তাই বলে ছোট করে দেখলে খবর হয়ে যাবে। কারণ ষোলোতে ওঠায় তারা দারুণ উজ্জীবিত। স্পেনের সঙ্গে শেষ খেলায় হেরেছে বটে, কিন্তু শুরুর দিন থেকে সব খেলায় এক ধরনের ছন্দময় মান বজায় রেখে খেলেছে।
ব্রাজিলের সমর্থকেরা আশাবাদী। তাদের হিসাব-নিকাশে গতকালের খেলায় দলটি খুবই নাজুক ছিল কাকা লাল কার্ড খেয়ে বাইরে থাকায়। তা ছাড়া রবিনহোকেও খেলানো হয়নি। ফুটবলবোদ্ধাদের ধারণা, পরবর্তী পর্বের জন্য তৈরি করতেই এ খেলায় বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বেশ কজনকে।
এদিকে রেফারিদের হলুদ কার্ড দেখানোর বাতিকটা যেন আরও বেশি বেশি ভর করছে। এই পর্বেই এমন, পরবর্তী খেলাগুলোতে তো আরও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, তখন কী হবে! ব্রাজিল আর পর্তুগালের খেলার দিন তো মনে হলো, রেফারি পাগলা হয়ে গিয়েছিল। একনাগাড়ে পকেট থেকে হলুদ কার্ড বের করছিল আর দেখাচ্ছিল। তা দেখে বিরক্ত হয়ে আমার এক বন্ধু বললেন, ‘ঘন ঘন হলুদ কার্ড দেখাইবার ইচ্ছা যখন, তখন পকেটে হাত ঢুকাইয়া কষ্ট কইরা বারে বারে বাইর করনের দরকার কী? আর কার্ডই বা পকেটে রাখনের দরকার কী? হাতের তালুতে হলুদ মাখাইয়া রাখলেই হয়!’ কথাটা মন্দ বলেননি। আমি খুব মজা পেয়েছি।
তাঁর কথা শুনে আমি বলেছি, মনে হয়, ওটা রেফারিদের খেলা! খেলোয়াড়দের নিয়ে খেলছে আর কী!
এ ব্যাপারে একজন বললেন, ‘ওভার কনফিডেন্সই ডুবিয়েছে।’ কেউ আবার বললেন, ‘আন্ডারডগ ভাবা দলগুলো যে মোটেও আর আন্ডারডগ নেই, বরং বিগত দিনগুলোতে চর্চা করে করে যে বিশাল সিংহ হয়ে গেছে, তাও বোধহয় ভাবেনি কেউ। দলগুলো তো বটেই, সমর্থকেরাও টের পায়নি।’
অনেকে বলছেন, বড় বড় ক্লাবে বিভিন্ন দেশের হয়ে খেলে মিডিয়ার বদৌলতে ‘স্টার’ বনে যায়। তখন এই টাইটেলের ভারিত্বে আসমানে উড়াল দেওয়ার মতো অবস্থা হয়। বিশ্বকাপে এসে তাই খেই হারিয়ে দলকে হাবুডুবুতে ফেলা ছাড়া উপায় থাকেনি। ষোলোতে উঠতে না পারা এই বড়দের নিয়ে আমার নিজের অবশ্য অন্য আরেকটি দিকের কথা মনে আসে। আর তা হলো, ছোটখাটো দলেরও অনেকে এদের ‘ক্লাব-কলিগ’। একসঙ্গে খেলে। অতএব পরস্পরের ধরন বা টেকনিকগুলো জানা থাকে। কে কোথায় দুর্বল, তাও জেনে যায়। অতএব এই দশা। এই সমানে-সমান হয়ে যাওয়ায় আসলে বড়-ছোট, নামী-দামির মধ্যে কোনো ভেদাভেদ চোখে পড়লই না। তো, বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম পর্বের ঘোরটা এসব উঠতি-পড়তি দেখার মধ্য দিয়ে কেটে গেল। এখন আর গ্রুপগুলোর অন্তর্ভুক্ত প্রতিযোগীদের সবার সঙ্গে সবার শক্তি যাচাইয়ের সুযোগ নেই। কমতে কমতে ষোলোতে এসে ঠেকল। বলতে গেলে, আসলে মূল ফাটাফাটি-ছাঁটাছাঁটিটা শুরু হবে এখন। যারা নিজেদের বড় বলে প্রমাণ দিয়ে ষোলোতে পা রাখল, তাদের এখন শুধু শক্তিধর বা খেলায় দারুণ পারঙ্গম হলেই যে চলবে তা নয়। এখন কোন প্রতিপক্ষের সঙ্গে কেমন খেলতে হবে, কোন টেকনিকে—সেসব নিয়ে নানা প্ল্যান, ছক আর বুদ্ধি খাটানোর বুদ্ধিতে নামতে হবে আটে থাকার জন্য। নক-আউটের খেলা। হারলেই আউট। তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। ‘হারাধনের দশটি ছেলে’র মতো দশায় পড়তে হবে। একে একে বিদায়ী ঘণ্টা বাজবে আট দলের।
ইতিমধ্যেই সমর্থকদের মধ্যে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে। হেরে বিদায় নেওয়া দলগুলোর সমর্থকেরা এখন বিপদে আছে। প্রিয় দল নেই। তা হলে কাকে সাপোর্ট দেবে? এ ব্যাপারে আমার ধারণা, যেসব দলের কাছে হেরে বা ড্র করে পছন্দের দলটিকে ‘হারু-পাট্টি’র দলে শামিল হতে হয়েছে, তাদের সমর্থন দেবে না তারা। অন্তত প্রকাশ্যে।
যা-ই হোক, বহু কাঙ্ক্ষিত দুই দল—ব্রাজিল আর পর্তুগালের খেলাটি কাল রাতে দেখলাম। তবে পুরোটা নয়। আমাদের বিদ্যুৎ শেষ পাঁচ মিনিট দেখতে দেয়নি। অতএব খেলা শেষে অন্য এলাকায় পুরোটা দেখার সৌভাগ্য যাদের হয়েছিল, তাদের কাছে টেলিফোনে জেনেছিলাম ফলাফল। এবং যা ভেবেছিলাম খেলা দেখে, তাই হয়েছে। অর্থাৎ ড্র। তাও আবার গোলশূন্য।
খেলা দেখেই মনে হচ্ছিল, ‘এই তবে এবারের ব্রাজিল?’ আসলে আগের মতো ধার নেই যেন। পর্তুগালের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে মনে হয় ড্র করারই আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল। পর্তুগাল তাদের স্বাভাবিক খেলাই খেলেছে বলা যায়। তবে আমার ধারণা, ব্রাজিল হয়তো ভালো খেলবে পরবর্তী ধাপে। অনেকটা সহজ প্রতিপক্ষ তাদের সামনে। চিলির সঙ্গে খেলবে। চিলিকে তাই বলে ছোট করে দেখলে খবর হয়ে যাবে। কারণ ষোলোতে ওঠায় তারা দারুণ উজ্জীবিত। স্পেনের সঙ্গে শেষ খেলায় হেরেছে বটে, কিন্তু শুরুর দিন থেকে সব খেলায় এক ধরনের ছন্দময় মান বজায় রেখে খেলেছে।
ব্রাজিলের সমর্থকেরা আশাবাদী। তাদের হিসাব-নিকাশে গতকালের খেলায় দলটি খুবই নাজুক ছিল কাকা লাল কার্ড খেয়ে বাইরে থাকায়। তা ছাড়া রবিনহোকেও খেলানো হয়নি। ফুটবলবোদ্ধাদের ধারণা, পরবর্তী পর্বের জন্য তৈরি করতেই এ খেলায় বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বেশ কজনকে।
এদিকে রেফারিদের হলুদ কার্ড দেখানোর বাতিকটা যেন আরও বেশি বেশি ভর করছে। এই পর্বেই এমন, পরবর্তী খেলাগুলোতে তো আরও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, তখন কী হবে! ব্রাজিল আর পর্তুগালের খেলার দিন তো মনে হলো, রেফারি পাগলা হয়ে গিয়েছিল। একনাগাড়ে পকেট থেকে হলুদ কার্ড বের করছিল আর দেখাচ্ছিল। তা দেখে বিরক্ত হয়ে আমার এক বন্ধু বললেন, ‘ঘন ঘন হলুদ কার্ড দেখাইবার ইচ্ছা যখন, তখন পকেটে হাত ঢুকাইয়া কষ্ট কইরা বারে বারে বাইর করনের দরকার কী? আর কার্ডই বা পকেটে রাখনের দরকার কী? হাতের তালুতে হলুদ মাখাইয়া রাখলেই হয়!’ কথাটা মন্দ বলেননি। আমি খুব মজা পেয়েছি।
তাঁর কথা শুনে আমি বলেছি, মনে হয়, ওটা রেফারিদের খেলা! খেলোয়াড়দের নিয়ে খেলছে আর কী!
No comments