তসলিমার বই নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য
তসলিমা
নাসরিনের ট্যুইটারের জবাবে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব
ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, তিনি কোনো সময়েই বই নিষিদ্ধ করার পক্ষে নন।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তখন ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। ২০০৩
সালে বাম সরকারের আমলে তসলিমার দ্বিখণ্ডিত বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা
হয়েছিল। গত রোববার সালমান রুশদির বই ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করা ভুল
হয়েছিল বলে সাফাই দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা চিদাম্বরম। কংগ্রেস আমলেই রুশদির বই
নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতেই তসলিমা নাসরিন টুইটারে সরাসরি
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে লিখেছেন, পি চিদম্বরম
বলেছেন, ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। বুদ্ধদেব
ভট্টাচার্য্য কবে বলবেন আমার বই ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ করাও ভুল ছিল? এই
ট্যুইটার নিয়ে সাংবাদিকরা বুদ্ধবাবুকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, বিতর্ক
খোঁচাতে চাই না। তবে আমি মৌলিকভাবে কখনও কোনো বই নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি এভাবে ভাবিই না। কিন্তু এই বইটার (দ্বিখণ্ডিত) সময়
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। অবশ্য
সেই সময়ে বুদ্ধবাবু কলকাতার কয়েকজন বিশিষ্ট সাহিত্যিকের মতামত নিয়েই
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। বুদ্ধবাবু তখন বলেছিলেন, আমি নিজে
বইটা পড়েছি। বইটা তাঁদেরও পড়িয়েছি, যাঁদের মতামতের গুরুত্ব আছে। তার পরে এই
সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বিশিষ্টদের তালিকায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নামটিই
সবার উপরে ছিল বলে সেই সময় হৈচৈ হয়েছিল। তসলিমাও এ নিয়ে সুনীলকে কটাক্ষ
করতে ছাড়েন নি। সিপিএম অবশ্য সেই সময় দাবি করেছিল, বইটি সামপ্রদায়িক
উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকার আগাম সতর্কতা
হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এদিকে তসলিমা পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করেও টুইটারে লিখেছেন, তার
টিভি ধারাবাহিকের উপর নিষেধাজ্ঞা কবে তুলবেন মমতা? এই সরকারের আমলেই টিভিতে
একশো পর্বে তসলিমার ‘দুঃসহবাস’ দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ পাঠিয়ে সেটি
বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। অবশ্য এরপরে মমতার আমলেই কলকাতা বইমেলায় মমতার বই
প্রকাশ করতে দেওয়া হয়নি বলে তসলিমা অভিযোগ করেছেন।
No comments