দুই বছরে ১৬৯৩ গার্মেন্ট বন্ধ by এম এম মাসুদ
একের
পর এক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস তৈরী
পোশাকশিল্পে সংকট কাটছে না কিছুতেই। নানা কারণে এ শিল্পের উদ্যোক্তারাও
আছেন সংকটে। অনেকেই কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে গত দুই বছরে
প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় পোশাকশিল্পের ১,৬৯৩টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে
গেছে। এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত কারখানা ৫০০-এর অধিক এবং এর বাইরে
ছোট-মাঝারি মিলে হাজারের অধিক হবে। এ ছাড়া রুগ্ণ কারখানা রয়েছে আরও কয়েক
শ। এতে চাকরি হারিয়েছে কয়েক লাখ শ্রমিক। ফলে সংকুচিত হচ্ছে পোশাক
খাতসংশ্লিষ্ট অন্য শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ। নতুন কারখানা চালুর হারও
কমেছে। পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে এসব তথ্য
পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রানা প্লাজা ধস, হরতাল-অবরোধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর বিদেশি হত্যাকাণ্ডের কারণে বিদেশে বাংলাদেশের পোশাক খাতবিরোধী প্রচারণায় অনেক ক্রেতা এ দেশ থেকে ভিয়েতনামে চলে গেছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কারণে অনেকেই বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তা ছাড়া কমপ্লায়েন্ট ইস্যুতে ক্রেতারা এখন কঠোর হওয়ায় বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তারা জানান, বড় কারখানাগুলো এ প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে গেলেও ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো তা পারছে না। এ ছাড়া পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও গ্যাস না পাওয়া এবং এর মূল্য বৃদ্ধিতে অনেকেই চাপ নিতে পারেছে না বলে মন্তব্য করেন তারা। আগে বড় কারখানাগুলো বেশি করে পোশাকের অর্ডার নিয়ে তা অন্য কারখানায় সাব-কন্ট্রাক্টের ভিত্তিতে করিয়ে নিতো। কিন্তু রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর এখন বড় ক্রেতারা কারখানাগুলোর পরিবেশ ও মান যাচাই করে তবেই অর্ডার দেন। আর এ ক্রেতারা শেয়ার্ড বিল্ডিংয়ে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ছোট কারখানাগুলো কাজ না পেয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বিজিএমইএর সহসভাপতি মাহবুব হাসান খান বাবু বলেন, কয়েক বছর ধরে পোশাক খাতে অস্থিরতা চলার কারণে অনেকে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। কপ্লায়েন্স ইস্যুতে ক্রেতারা অনেক ঝামেলার সৃষ্টি করছে। যে কারণে অনেকে টিকতে পারছে না।
বিজিএমইএর ও বিকেএমইএ তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে নিবন্ধিত পোশাক কারখানা ৫ হাজার ৯৯৯টি। এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে নিবন্ধিত কারখানা ৫ হাজার ১৪৫টি এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৮৫৪টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৯৩টিই বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সচল কারখানার সংখ্যা ৪ হাজার ৩০৬টি। এর মধ্যে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে রুগ্ণ কারখানা প্রায় ৪৩৯টি। কারখানাগুলোর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে বন্ধ হয়েছে ১ হাজার ৫৪৪টি আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১৪৯টি কারখানা। আর বন্ধ হওয়া কারখানার মধ্যে ২০ শতাংশ হচ্ছে শিফট হওয়া এবং ৪০ শতাংশ শেয়ার্ড বিল্ডিং কারখানা। বাকিগুলো সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করা কারখানা। পাশাপাশি নতুন কারখানা চালুর হার কমে আসছে। ১৩ সালে ১৪০টি, ১২ সালে ২০০টি। আর ১৪ সালে নতুন কারখানা হয়েছে ৮০টি। অর্থাৎ নতুন করে বিনিয়োগ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশে পোশাক কারখানা ছিল ৫ হাজার ১৫০টি। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪০০টি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৮৭৬টি। কিন্তু ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২২২। বর্তমানে এ খাতে শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে বিজিএমইএর তথ্যে জানা যায়।
ট্রানপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রতিবেদনে বলা হয়, রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনসে দুর্ঘটনার পর কমপ্লায়েন্স (তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ) ঘাটতি ও কার্যাদেশ বাতিলের অজুহাতে কারখানা বন্ধের তালিকায় ২০১৪ সালে যোগ হয়েছে ২২০টি কারখানা। এতে বেকার হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক।
রানা প্লাজা ধসের পর ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতা ব্র্যান্ডগুলো বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়লে তারা অ্যালায়েন্স ও অ্যাকর্ড নামে দুটি সংগঠন গঠন করে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর ভবনের নিরাপত্তা, অগ্নিনিরাপত্তা, কর্মপরিবেশসহ সবকিছু তদন্ত করা শুরু করে। একই সঙ্গে বিশ্ব শ্রম সংস্থাও (আইএলও) কারখানাগুলো পরিদর্শন করে। এ পর্যন্ত এ ৩ পরিদর্শনকারী সংস্থার সুপারিশে ৩৪টি কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে অ্যাকর্ডের সুপারিশে ২৬টি, অ্যালায়েন্সের সুপারিশে ৭টি ও আইএলওর কথায় ১টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে ঠিকই, তবে তাতেও দেশের পোশাক কারখানার সংখ্যা কমছে। কারণ যে হারে কারখানা বন্ধ হচ্ছে সেই হারে নতুন কারখানা গড়ে উঠছে না।
সূত্র জানায়, চলতি বছর ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৫০টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সোয়ান, লিরিক, আরএম ফ্যাশন, মিফকিফ ও বনী। বন্ধের প্রক্রিয়ায় রয়েছে মিরপুরের লিবার্টি গার্মেন্ট, লিবার্টি ফ্যাশন ও উত্তরার ফাহিম লুমসহ ৩০-৪০টি কারখানা।
শ্রমিক নেতা মোশরেফা মিশু জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকরা বেকার হয়ে আছেন। তাদের জীবন কাটছে খুবই কষ্টে। যেসব কারখানা চলছে তাতে কর্মখালি নেই।
বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি কারখানার কর্মকর্তা বলেন, গত মওসুমেও যে কারখানায় শ্রমিকরা দিন-রাত কাজ করতেন, সেখানে এখন মেশিনগুলো অলস পড়ে আছে। পরিদর্শকদের দিয়ে কারখানা পরিদর্শন করতে না পারার কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে মালিক।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রানা প্লাজা ধস, হরতাল-অবরোধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর বিদেশি হত্যাকাণ্ডের কারণে বিদেশে বাংলাদেশের পোশাক খাতবিরোধী প্রচারণায় অনেক ক্রেতা এ দেশ থেকে ভিয়েতনামে চলে গেছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কারণে অনেকেই বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তা ছাড়া কমপ্লায়েন্ট ইস্যুতে ক্রেতারা এখন কঠোর হওয়ায় বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তারা জানান, বড় কারখানাগুলো এ প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে গেলেও ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো তা পারছে না। এ ছাড়া পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও গ্যাস না পাওয়া এবং এর মূল্য বৃদ্ধিতে অনেকেই চাপ নিতে পারেছে না বলে মন্তব্য করেন তারা। আগে বড় কারখানাগুলো বেশি করে পোশাকের অর্ডার নিয়ে তা অন্য কারখানায় সাব-কন্ট্রাক্টের ভিত্তিতে করিয়ে নিতো। কিন্তু রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর এখন বড় ক্রেতারা কারখানাগুলোর পরিবেশ ও মান যাচাই করে তবেই অর্ডার দেন। আর এ ক্রেতারা শেয়ার্ড বিল্ডিংয়ে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ছোট কারখানাগুলো কাজ না পেয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বিজিএমইএর সহসভাপতি মাহবুব হাসান খান বাবু বলেন, কয়েক বছর ধরে পোশাক খাতে অস্থিরতা চলার কারণে অনেকে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। কপ্লায়েন্স ইস্যুতে ক্রেতারা অনেক ঝামেলার সৃষ্টি করছে। যে কারণে অনেকে টিকতে পারছে না।
বিজিএমইএর ও বিকেএমইএ তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে নিবন্ধিত পোশাক কারখানা ৫ হাজার ৯৯৯টি। এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে নিবন্ধিত কারখানা ৫ হাজার ১৪৫টি এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৮৫৪টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৯৩টিই বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সচল কারখানার সংখ্যা ৪ হাজার ৩০৬টি। এর মধ্যে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে রুগ্ণ কারখানা প্রায় ৪৩৯টি। কারখানাগুলোর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে বন্ধ হয়েছে ১ হাজার ৫৪৪টি আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১৪৯টি কারখানা। আর বন্ধ হওয়া কারখানার মধ্যে ২০ শতাংশ হচ্ছে শিফট হওয়া এবং ৪০ শতাংশ শেয়ার্ড বিল্ডিং কারখানা। বাকিগুলো সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করা কারখানা। পাশাপাশি নতুন কারখানা চালুর হার কমে আসছে। ১৩ সালে ১৪০টি, ১২ সালে ২০০টি। আর ১৪ সালে নতুন কারখানা হয়েছে ৮০টি। অর্থাৎ নতুন করে বিনিয়োগ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশে পোশাক কারখানা ছিল ৫ হাজার ১৫০টি। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪০০টি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৮৭৬টি। কিন্তু ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২২২। বর্তমানে এ খাতে শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে বিজিএমইএর তথ্যে জানা যায়।
ট্রানপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রতিবেদনে বলা হয়, রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনসে দুর্ঘটনার পর কমপ্লায়েন্স (তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ) ঘাটতি ও কার্যাদেশ বাতিলের অজুহাতে কারখানা বন্ধের তালিকায় ২০১৪ সালে যোগ হয়েছে ২২০টি কারখানা। এতে বেকার হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক।
রানা প্লাজা ধসের পর ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতা ব্র্যান্ডগুলো বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়লে তারা অ্যালায়েন্স ও অ্যাকর্ড নামে দুটি সংগঠন গঠন করে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর ভবনের নিরাপত্তা, অগ্নিনিরাপত্তা, কর্মপরিবেশসহ সবকিছু তদন্ত করা শুরু করে। একই সঙ্গে বিশ্ব শ্রম সংস্থাও (আইএলও) কারখানাগুলো পরিদর্শন করে। এ পর্যন্ত এ ৩ পরিদর্শনকারী সংস্থার সুপারিশে ৩৪টি কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে অ্যাকর্ডের সুপারিশে ২৬টি, অ্যালায়েন্সের সুপারিশে ৭টি ও আইএলওর কথায় ১টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে ঠিকই, তবে তাতেও দেশের পোশাক কারখানার সংখ্যা কমছে। কারণ যে হারে কারখানা বন্ধ হচ্ছে সেই হারে নতুন কারখানা গড়ে উঠছে না।
সূত্র জানায়, চলতি বছর ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৫০টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সোয়ান, লিরিক, আরএম ফ্যাশন, মিফকিফ ও বনী। বন্ধের প্রক্রিয়ায় রয়েছে মিরপুরের লিবার্টি গার্মেন্ট, লিবার্টি ফ্যাশন ও উত্তরার ফাহিম লুমসহ ৩০-৪০টি কারখানা।
শ্রমিক নেতা মোশরেফা মিশু জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকরা বেকার হয়ে আছেন। তাদের জীবন কাটছে খুবই কষ্টে। যেসব কারখানা চলছে তাতে কর্মখালি নেই।
বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি কারখানার কর্মকর্তা বলেন, গত মওসুমেও যে কারখানায় শ্রমিকরা দিন-রাত কাজ করতেন, সেখানে এখন মেশিনগুলো অলস পড়ে আছে। পরিদর্শকদের দিয়ে কারখানা পরিদর্শন করতে না পারার কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে মালিক।
No comments