দুর্বল আইএসের বদলি কৌশল প্যারিস হামলা by আলী রীয়াজ
গত কয়েক মাসে আইএস ক্রমাগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছিল |
প্যারিসে
আইএসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সের প্রতিক্রিয়া যেমন অনুমান করা
হয়েছিল, তার বাইরে ঘটেনি। অর্থাৎ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে যে
সংগঠন—আইএস বা ইসলামিক স্টেট—তার ঘাঁটি বা কথিত রাজধানী সিরিয়ার অভ্যন্তরে
অবস্থিত রাকায় ফ্রান্স উপর্যুপরি বিমান হামলা চালিয়েছে। ফ্রান্সের
প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ যেমনটি বলেছিলেন, ফ্রান্স এক ‘নির্দয়’ যুদ্ধের
সূচনা করবে, তা-ই করেছে ফ্রান্স। কিন্তু ফ্রান্সের এই প্রতিক্রিয়া আবেগের
বিবেচনায় যতই সঠিক মনে হোক এবং যতই আমরা বলি না কেন যে এগুলো হচ্ছে আইএসের
প্রাপ্য উত্তর, আসলে তা সমস্যার সমাধান কি না, সেটা ভেবে দেখা দরকার। যদিও
এখন—এই বেদনাবহ সময়ে—এই কথা যথাযথ শোনাবে না তবু বলা দরকার যে শোককে
অস্ত্রে পরিণত করা (ইংরেজিতে বললে ওয়েপেনাইজেশন অব গ্রিফ) সহজ, কিন্তু
দীর্ঘ মেয়াদে তার ফল বিরূপ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
একই রকমের আবেগ ও শোকের তাড়নায়, এর চেয়ে অনেক বেশি আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট হয়ে এবং জাতিসংঘের পরোক্ষ কিন্তু অস্পষ্ট নয়, এমন সম্মতি নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধের সূচনা করেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই যুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে ২০০৩ সালে ইরাকে সামরিক অভিযান প্রমাণ করে যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্যে এবং সামরিক কৌশলের বিবেচনায় যাকে বলা হয় ‘এক্সিট প্ল্যান’, সেগুলো ছাড়া সূচিত যুদ্ধের পরিণতি কেবল যে প্রাণঘাতী ও রক্তক্ষয়ীই হয় তা নয়, তা আরও বেশি অস্থিতিশীলতা এবং সহিংসতার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। অনেকেই বলতে পারেন ওই অঞ্চলে বিশেষ করে সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে যে পরিস্থিতি, তার আর কত অবনতি ঘটবে, আর কত সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে? তদুপরি কেউ কেউ এই বক্তব্যের মধ্যে আইএসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার ইঙ্গিত দেখতে পাবেন। ফলে সুস্পষ্ট করে বলে নেওয়া দরকার যে আইএসের মতো একটি অমানবিক শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করা, তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি পুনরুদ্ধার করা, তাদের হাতে যারা কার্যত জিম্মি হয়ে আছে, সেই মানুষদের মুক্ত করা, আইএসের হাতে অর্থের যেসব উৎস আছে, সেগুলোকে উদ্ধার বা ধ্বংস করার লক্ষ্যে যেকোনো ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই, তার আর কোনো বিকল্পও আছে বলে আমি মনে করি না। আমি যেসব পদক্ষেপের কথা বলছি, তার মধ্যে সামরিক অভিযানও রয়েছে। তারপরেও আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে ফ্রান্সের এই প্রতিক্রিয়া আসলে আইএসেরই প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া কি না।
২০০১ সালে আল-কায়েদা যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোকে তাদের কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনের পথে টেনে নিয়ে দুনিয়াজুড়ে এক ‘অনন্ত যুদ্ধের’ পরিস্থিতি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, এখন আইএস ফ্রান্সের হাত ধরে আবার পশ্চিমা বিশ্বসমেত সারা দুনিয়াকে বাকি পথটুকু নিয়ে যেতে চলেছে কি না, সেটা সবারই ভাবা দরকার। যাঁরা এই যুদ্ধকে কেবল ফ্রান্স ও পশ্চিমাদের সঙ্গে আইএসের লড়াই ভাবেন এবং তা থেকে পশ্চিমাদের অবশ্যম্ভাবী ক্ষতি বলে তাঁদের লাভ মনে করেন, তাঁদের কাছেও আমার আবেদন—ভেবে দেখুন। কেননা, বিস্মৃত হওয়ার উপায় নেই যে আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের লড়াইয়ের বিরূপ ফল সবচেয়ে বেশি কাদের বইতে হয়েছে এবং হচ্ছে। কাদের প্রাণনাশ হয়েছে বেশি, নিরাপত্তার নামে কারা তাদের অনেক কষ্টে অর্জিত নাগরিক অধিকার হারিয়েছে, পৃথিবীজুড়ে রাষ্ট্রগুলো কীভাবে নিপীড়নের শক্তি সঞ্চয় করেছে, কী করে আমরা সবাই একধরনের নজরদারির মধ্যে জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছি এবং কী অজুহাত দেখিয়ে মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশগুলোতে কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা তাদের স্বৈরাচারী শাসনকে বৈধতা দিয়েছে।
আমার কথাগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য তিনটি প্রশ্ন সাহায্য করবে। প্রথমত, আইএস কেন এখন ইরাক-সিরিয়ার বাইরে (যেমন তুরস্ক, বৈরুত, মিসর থেকে উড্ডয়নরত রাশিয়ার বিমান, প্যারিস) হামলা চালাচ্ছে? দ্বিতীয়ত, আইএসের এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ফলে বিভিন্ন দেশের নিজ দেশে ও বাইরে কোন প্রতিক্রিয়াকে আমরা স্বাভাবিক বলে ধরে নেব? তৃতীয়ত, আইএসকে পরাজিত করার উপায় কী?
২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালে আইএসের প্রতিষ্ঠার সময় আমরা লক্ষ করেছিলাম যে আইএস নিজেকে একটি রাষ্ট্র বলে দাবি করে এবং নিজের নিয়ন্ত্রণে জায়গা ও প্রাকৃতিক সম্পদ আনার জন্য সচেষ্ট হয়। তারপর থেকে যাঁরা আইএসের উত্থানকে ঘনিষ্ঠভাবে লক্ষ করেছেন, তাঁরা দেখেছেন যে আইএস তার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তাদের মতো করে একটি প্রশাসনিক কাঠামো পর্যন্ত তৈরি করে ফেলে, তারা তেলক্ষেত্রগুলো দখল করে নিয়মিত রাজস্বের একটা উপায় তৈরি করেছে, এমনকি স্থানীয়ভাবে রাজস্ব আদায়ের উপায়ও বের করেছে। গত কয়েক দশকে আমরা যেসব আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থান দেখেছি, তারা কেউই নিজেদের জন্য জায়গা তৈরি করতে চায়নি। কেননা, কোনো সুনির্দিষ্ট জায়গায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার অর্থই হচ্ছে প্রতিপক্ষের আক্রমণের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হওয়া।
সহিংস উগ্রপন্থী সেসব গোষ্ঠীই কেবল নিজেদের জন্য ভূমির সন্ধান করেছে, যাদের লক্ষ্য ব্যাপকার্থে জাতীয়তাবাদী, যাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা একটি অঞ্চলকেন্দ্রিক এবং যারা জানে যে ওই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে তাদের সমর্থনের ভিত্তি রয়েছে, এমনকি যদি তা সংখ্যায় অতি ক্ষুদ্রও হয়। যারা একটি আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় বিশ্বাস করে, তারা ঘাঁটি বা অবস্থানের জন্য অন্যদের ওপরে নির্ভর করে। আল-কায়েদার ইতিহাস এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তার পরিচালনাকেন্দ্র ছিল প্রধানত পেশোয়ারে; ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সুদানে, ১৯৯৬ সালের পরে আফগানিস্তানে। সুদান বা আফগানিস্তানে আল-কায়েদা চাইলে ক্ষমতা দখল করে সরকার চালাতে পারত বলেই ধারণা করা হয়; কিন্তু আল-কায়েদার নেতারা তা করেননি। আইএসের উত্থানের পটভূমিকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যায় (এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখতে পারেন আমার লেখা তিন পর্বের আলোচনা, প্রথম আলো ১৬, ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪)। এর জন্য প্রত্যক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোকে দোষারোপ করা হয়ে থাকে; সেই আলোচনায় না গেলেও এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই যে ইরাকের রাজনীতিতে সুন্নি মতানুসারীদের কোণঠাসা করা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় ট্রাইব বা গোত্রগুলোর সমর্থন লাভ এবং ইরাকি সেনাবাহিনীর ব্যর্থতার ফলে কম সময়ের মধ্যে আইএস তার ভিত্তি তৈরি করতে পেরেছিল।
এক বছরের বেশি সময় ধরে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইরান ও হিজবুল্লাহর আক্রমণ মোকাবিলা করে টিকে আছে এবং সারা পৃথিবী থেকে, বিশেষ করে ইউরোপ থেকে তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হচ্ছিল। আইএসের আদর্শের নামে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে কিছু অভিযান বিভিন্ন দেশে পরিচালিত হলেও কয়েক দিন ধরে সংঘটিত আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞের আগে আইএসের জ্ঞাতসারে, তাদের পরিকল্পনার মাধ্যমে কোনো অভিযানের ঘটনা ঘটেনি। তাহলে এখন এমন কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে আইএস কার্যত তার শত্রুদের ঘরে ডেকে আনছে? তার কারণ এই নয় যে আইএস নিজেকে শক্তিশালী মনে করছে, বরং ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে আসলে ঘটনা ঠিক তার বিপরীত।
গত কয়েক মাসে আইএস ক্রমাগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছিল। আগে তারা বিদেশ থেকে যে হারে তরুণদের আকর্ষণ করছিল, তা আর করছে না। গত দুই মাসে তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা হারিয়েছে। যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে সম্প্রতি সিনজির শহরের পতন। সিরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আইএসকে যে সুবিধা দিয়েছিল, এখন তা ক্রমেই সীমিত হয়ে আসছে—যুদ্ধে রাশিয়ার অংশগ্রহণ, ভিয়েনায় কুড়িটি দেশের সম্মেলনে একটি রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা, বাশার আল-আসাদকে আপাততভাবে হলেও ক্ষমতায় রেখে পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সম্মতি এবং আইএসের বর্বরোচিত আচরণের ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠা—এগুলো আইএসের অস্তিত্বকে ক্রমেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছিল। আর সে কারণেই আইএসের নেতারা বুঝতে পেরেছেন যে তাঁদের এখন কৌশল বদলের বিকল্প নেই। সেই ক্ষেত্রে তারা তাদের অনিবার্য ধ্বংস থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে চাইছে। একদিকে যদি তারা পশ্চিমা কোনো দেশের দৃশ্যমান হামলার কারণে সরে যেতে বাধ্য হয়, তবে তা মনে হবে তাদের কৌশলগত পশ্চাদপসরণ। তদুপরি তাদের ওপরে হামলার সময় যে ধরনের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হবে, তাকে আইএস সাংগঠনিকভাবে পুঁজি করতে না পারলেও ভবিষ্যতে তাদের মতো অন্য কোনো সংগঠন যে তাকে পুঁজি করতে পারবে, সেটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। প্রাসঙ্গিকভাবে স্মরণ করা দরকার যে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখার মধ্য থেকেই আইএসের উত্থান ঘটেছে। ফলে আইএসের এই আক্রমণকে যাঁরা আইএসের শক্তি প্রদর্শন ভাবছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি ভিন্নমত পোষণ করি। কিন্তু পাশাপাশি এটাও আমার অনুমান যে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তারা আগের যেকোনো সংগঠনের চেয়ে বেশি ভয়ংকর হবে।
আইএসের এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ফলে ফ্রান্সের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে আরও বেশি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া, আইএসকে ধ্বংস করার সংকল্প ঘোষণা। এগুলো স্বাভাবিক এবং সম্ভবত আইএসের প্রত্যাশিত। পাশাপাশি ইউরোপের মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশপ্রেম বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, মসজিদে হামলা হচ্ছে, অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে সন্দেহের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাণে বাঁচার আশায় যে মানুষেরা এখন ইউরোপে, তাদের দেখা হচ্ছে এমনভাবে, যেন তারাই অপরাধী। ইউরোপের দক্ষিণপন্থীরা এই অবস্থা থেকে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে তৎপর। তাদের সঙ্গে কার্যত যোগ দিয়েছে ইউরোপের কিছু উগ্র ইসলামপন্থী। তারাও চায় এই সময়ে সমাজের ভেতরে তৈরি হোক বিভক্তি। এই বিভক্তি ইউরোপের অভিবাসীদের মধ্যে, অভিবাসীদের উত্তরসূরিদের মধ্যে তৈরি করবে বিচ্ছিন্নতা, ক্ষোভ। আর আইএস বা তার মতো সংগঠন আজ হোক কাল হোক, তাকে পুঁজি করতে চাইবে, তাতে সম্পূর্ণ সফল হওয়ার দরকার হবে না, সামান্য সাফল্যই এক অনন্ত যুদ্ধের পথে ঠেলে দেবে। ‘আমরা’ আর ‘তারা’—এই ভাগে আর শেষ হবে না। আইএসের একটি ডকুমেন্টে বলা হয়েছে যে তারা চায় পৃথিবীকে সাদা-কালোতে বিভক্ত করতে, যে ‘ধূসর এলাকা’ (গ্রে জোন) আছে, তা শেষ করে দুই শিবিরে ভাগ করতে।
তাহলে আইএসকে পরাজিত করতে হলে কী করতে হবে? আইএসকে পরাজিত করার একটি অংশ হচ্ছে সামরিক। আর সেটি অবশ্যই কেবল বিমান হামলা নয়। নাটকীয় বিমান হামলা করে আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা মুক্ত করা যাবে না, তার জন্য স্থল অভিযানের দরকার হবে। তবে তার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারদের, সেখানকার নাগরিকদের। বিদেশি শক্তি—সেটি যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ফ্রান্স কিংবা রাশিয়া যা-ই হোক—তাদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণের ফল হবে বিপরীত। কিন্তু তার আগে দরকার হবে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা। দেশ পরিচালনায় সিরিয়ার নাগরিকদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা, ইরাকের নাগরিকদের মধ্যে বিভক্তির অবসান, লিবিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এসব পদক্ষেপ রাতারাতি অর্জন করা যাবে না, কিন্তু প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এখনই। যা অবিলম্বে করতে হবে তা হলো, আইএসের প্রতি প্রত্যক্ষ সমর্থন ও অর্থ জোগানোর পথ বন্ধ করে দেওয়া, তাদের সঙ্গে বাণিজ্যের পথ বন্ধ করে দেওয়া। এই অঞ্চলের দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে এটা ঠিক, কিন্তু সহিংস চরমপন্থা বিস্তারে কার কী ভূমিকা, সেটা সবার জানা। এসব ভূমিকা অব্যাহত রেখে আইএসকে পরাস্ত করা যাবে না।
আলী রীয়াজ: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক।
একই রকমের আবেগ ও শোকের তাড়নায়, এর চেয়ে অনেক বেশি আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট হয়ে এবং জাতিসংঘের পরোক্ষ কিন্তু অস্পষ্ট নয়, এমন সম্মতি নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধের সূচনা করেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই যুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে ২০০৩ সালে ইরাকে সামরিক অভিযান প্রমাণ করে যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্যে এবং সামরিক কৌশলের বিবেচনায় যাকে বলা হয় ‘এক্সিট প্ল্যান’, সেগুলো ছাড়া সূচিত যুদ্ধের পরিণতি কেবল যে প্রাণঘাতী ও রক্তক্ষয়ীই হয় তা নয়, তা আরও বেশি অস্থিতিশীলতা এবং সহিংসতার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। অনেকেই বলতে পারেন ওই অঞ্চলে বিশেষ করে সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে যে পরিস্থিতি, তার আর কত অবনতি ঘটবে, আর কত সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে? তদুপরি কেউ কেউ এই বক্তব্যের মধ্যে আইএসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার ইঙ্গিত দেখতে পাবেন। ফলে সুস্পষ্ট করে বলে নেওয়া দরকার যে আইএসের মতো একটি অমানবিক শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করা, তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি পুনরুদ্ধার করা, তাদের হাতে যারা কার্যত জিম্মি হয়ে আছে, সেই মানুষদের মুক্ত করা, আইএসের হাতে অর্থের যেসব উৎস আছে, সেগুলোকে উদ্ধার বা ধ্বংস করার লক্ষ্যে যেকোনো ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই, তার আর কোনো বিকল্পও আছে বলে আমি মনে করি না। আমি যেসব পদক্ষেপের কথা বলছি, তার মধ্যে সামরিক অভিযানও রয়েছে। তারপরেও আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে ফ্রান্সের এই প্রতিক্রিয়া আসলে আইএসেরই প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া কি না।
২০০১ সালে আল-কায়েদা যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোকে তাদের কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনের পথে টেনে নিয়ে দুনিয়াজুড়ে এক ‘অনন্ত যুদ্ধের’ পরিস্থিতি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, এখন আইএস ফ্রান্সের হাত ধরে আবার পশ্চিমা বিশ্বসমেত সারা দুনিয়াকে বাকি পথটুকু নিয়ে যেতে চলেছে কি না, সেটা সবারই ভাবা দরকার। যাঁরা এই যুদ্ধকে কেবল ফ্রান্স ও পশ্চিমাদের সঙ্গে আইএসের লড়াই ভাবেন এবং তা থেকে পশ্চিমাদের অবশ্যম্ভাবী ক্ষতি বলে তাঁদের লাভ মনে করেন, তাঁদের কাছেও আমার আবেদন—ভেবে দেখুন। কেননা, বিস্মৃত হওয়ার উপায় নেই যে আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের লড়াইয়ের বিরূপ ফল সবচেয়ে বেশি কাদের বইতে হয়েছে এবং হচ্ছে। কাদের প্রাণনাশ হয়েছে বেশি, নিরাপত্তার নামে কারা তাদের অনেক কষ্টে অর্জিত নাগরিক অধিকার হারিয়েছে, পৃথিবীজুড়ে রাষ্ট্রগুলো কীভাবে নিপীড়নের শক্তি সঞ্চয় করেছে, কী করে আমরা সবাই একধরনের নজরদারির মধ্যে জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছি এবং কী অজুহাত দেখিয়ে মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশগুলোতে কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা তাদের স্বৈরাচারী শাসনকে বৈধতা দিয়েছে।
আমার কথাগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য তিনটি প্রশ্ন সাহায্য করবে। প্রথমত, আইএস কেন এখন ইরাক-সিরিয়ার বাইরে (যেমন তুরস্ক, বৈরুত, মিসর থেকে উড্ডয়নরত রাশিয়ার বিমান, প্যারিস) হামলা চালাচ্ছে? দ্বিতীয়ত, আইএসের এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ফলে বিভিন্ন দেশের নিজ দেশে ও বাইরে কোন প্রতিক্রিয়াকে আমরা স্বাভাবিক বলে ধরে নেব? তৃতীয়ত, আইএসকে পরাজিত করার উপায় কী?
২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালে আইএসের প্রতিষ্ঠার সময় আমরা লক্ষ করেছিলাম যে আইএস নিজেকে একটি রাষ্ট্র বলে দাবি করে এবং নিজের নিয়ন্ত্রণে জায়গা ও প্রাকৃতিক সম্পদ আনার জন্য সচেষ্ট হয়। তারপর থেকে যাঁরা আইএসের উত্থানকে ঘনিষ্ঠভাবে লক্ষ করেছেন, তাঁরা দেখেছেন যে আইএস তার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তাদের মতো করে একটি প্রশাসনিক কাঠামো পর্যন্ত তৈরি করে ফেলে, তারা তেলক্ষেত্রগুলো দখল করে নিয়মিত রাজস্বের একটা উপায় তৈরি করেছে, এমনকি স্থানীয়ভাবে রাজস্ব আদায়ের উপায়ও বের করেছে। গত কয়েক দশকে আমরা যেসব আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থান দেখেছি, তারা কেউই নিজেদের জন্য জায়গা তৈরি করতে চায়নি। কেননা, কোনো সুনির্দিষ্ট জায়গায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার অর্থই হচ্ছে প্রতিপক্ষের আক্রমণের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হওয়া।
সহিংস উগ্রপন্থী সেসব গোষ্ঠীই কেবল নিজেদের জন্য ভূমির সন্ধান করেছে, যাদের লক্ষ্য ব্যাপকার্থে জাতীয়তাবাদী, যাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা একটি অঞ্চলকেন্দ্রিক এবং যারা জানে যে ওই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে তাদের সমর্থনের ভিত্তি রয়েছে, এমনকি যদি তা সংখ্যায় অতি ক্ষুদ্রও হয়। যারা একটি আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় বিশ্বাস করে, তারা ঘাঁটি বা অবস্থানের জন্য অন্যদের ওপরে নির্ভর করে। আল-কায়েদার ইতিহাস এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তার পরিচালনাকেন্দ্র ছিল প্রধানত পেশোয়ারে; ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সুদানে, ১৯৯৬ সালের পরে আফগানিস্তানে। সুদান বা আফগানিস্তানে আল-কায়েদা চাইলে ক্ষমতা দখল করে সরকার চালাতে পারত বলেই ধারণা করা হয়; কিন্তু আল-কায়েদার নেতারা তা করেননি। আইএসের উত্থানের পটভূমিকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যায় (এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখতে পারেন আমার লেখা তিন পর্বের আলোচনা, প্রথম আলো ১৬, ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪)। এর জন্য প্রত্যক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোকে দোষারোপ করা হয়ে থাকে; সেই আলোচনায় না গেলেও এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই যে ইরাকের রাজনীতিতে সুন্নি মতানুসারীদের কোণঠাসা করা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় ট্রাইব বা গোত্রগুলোর সমর্থন লাভ এবং ইরাকি সেনাবাহিনীর ব্যর্থতার ফলে কম সময়ের মধ্যে আইএস তার ভিত্তি তৈরি করতে পেরেছিল।
এক বছরের বেশি সময় ধরে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইরান ও হিজবুল্লাহর আক্রমণ মোকাবিলা করে টিকে আছে এবং সারা পৃথিবী থেকে, বিশেষ করে ইউরোপ থেকে তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হচ্ছিল। আইএসের আদর্শের নামে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে কিছু অভিযান বিভিন্ন দেশে পরিচালিত হলেও কয়েক দিন ধরে সংঘটিত আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞের আগে আইএসের জ্ঞাতসারে, তাদের পরিকল্পনার মাধ্যমে কোনো অভিযানের ঘটনা ঘটেনি। তাহলে এখন এমন কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে আইএস কার্যত তার শত্রুদের ঘরে ডেকে আনছে? তার কারণ এই নয় যে আইএস নিজেকে শক্তিশালী মনে করছে, বরং ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে আসলে ঘটনা ঠিক তার বিপরীত।
গত কয়েক মাসে আইএস ক্রমাগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছিল। আগে তারা বিদেশ থেকে যে হারে তরুণদের আকর্ষণ করছিল, তা আর করছে না। গত দুই মাসে তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা হারিয়েছে। যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে সম্প্রতি সিনজির শহরের পতন। সিরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আইএসকে যে সুবিধা দিয়েছিল, এখন তা ক্রমেই সীমিত হয়ে আসছে—যুদ্ধে রাশিয়ার অংশগ্রহণ, ভিয়েনায় কুড়িটি দেশের সম্মেলনে একটি রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা, বাশার আল-আসাদকে আপাততভাবে হলেও ক্ষমতায় রেখে পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সম্মতি এবং আইএসের বর্বরোচিত আচরণের ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠা—এগুলো আইএসের অস্তিত্বকে ক্রমেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছিল। আর সে কারণেই আইএসের নেতারা বুঝতে পেরেছেন যে তাঁদের এখন কৌশল বদলের বিকল্প নেই। সেই ক্ষেত্রে তারা তাদের অনিবার্য ধ্বংস থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে চাইছে। একদিকে যদি তারা পশ্চিমা কোনো দেশের দৃশ্যমান হামলার কারণে সরে যেতে বাধ্য হয়, তবে তা মনে হবে তাদের কৌশলগত পশ্চাদপসরণ। তদুপরি তাদের ওপরে হামলার সময় যে ধরনের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হবে, তাকে আইএস সাংগঠনিকভাবে পুঁজি করতে না পারলেও ভবিষ্যতে তাদের মতো অন্য কোনো সংগঠন যে তাকে পুঁজি করতে পারবে, সেটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। প্রাসঙ্গিকভাবে স্মরণ করা দরকার যে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখার মধ্য থেকেই আইএসের উত্থান ঘটেছে। ফলে আইএসের এই আক্রমণকে যাঁরা আইএসের শক্তি প্রদর্শন ভাবছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি ভিন্নমত পোষণ করি। কিন্তু পাশাপাশি এটাও আমার অনুমান যে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তারা আগের যেকোনো সংগঠনের চেয়ে বেশি ভয়ংকর হবে।
আইএসের এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ফলে ফ্রান্সের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে আরও বেশি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া, আইএসকে ধ্বংস করার সংকল্প ঘোষণা। এগুলো স্বাভাবিক এবং সম্ভবত আইএসের প্রত্যাশিত। পাশাপাশি ইউরোপের মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশপ্রেম বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, মসজিদে হামলা হচ্ছে, অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে সন্দেহের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাণে বাঁচার আশায় যে মানুষেরা এখন ইউরোপে, তাদের দেখা হচ্ছে এমনভাবে, যেন তারাই অপরাধী। ইউরোপের দক্ষিণপন্থীরা এই অবস্থা থেকে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে তৎপর। তাদের সঙ্গে কার্যত যোগ দিয়েছে ইউরোপের কিছু উগ্র ইসলামপন্থী। তারাও চায় এই সময়ে সমাজের ভেতরে তৈরি হোক বিভক্তি। এই বিভক্তি ইউরোপের অভিবাসীদের মধ্যে, অভিবাসীদের উত্তরসূরিদের মধ্যে তৈরি করবে বিচ্ছিন্নতা, ক্ষোভ। আর আইএস বা তার মতো সংগঠন আজ হোক কাল হোক, তাকে পুঁজি করতে চাইবে, তাতে সম্পূর্ণ সফল হওয়ার দরকার হবে না, সামান্য সাফল্যই এক অনন্ত যুদ্ধের পথে ঠেলে দেবে। ‘আমরা’ আর ‘তারা’—এই ভাগে আর শেষ হবে না। আইএসের একটি ডকুমেন্টে বলা হয়েছে যে তারা চায় পৃথিবীকে সাদা-কালোতে বিভক্ত করতে, যে ‘ধূসর এলাকা’ (গ্রে জোন) আছে, তা শেষ করে দুই শিবিরে ভাগ করতে।
তাহলে আইএসকে পরাজিত করতে হলে কী করতে হবে? আইএসকে পরাজিত করার একটি অংশ হচ্ছে সামরিক। আর সেটি অবশ্যই কেবল বিমান হামলা নয়। নাটকীয় বিমান হামলা করে আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা মুক্ত করা যাবে না, তার জন্য স্থল অভিযানের দরকার হবে। তবে তার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারদের, সেখানকার নাগরিকদের। বিদেশি শক্তি—সেটি যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ফ্রান্স কিংবা রাশিয়া যা-ই হোক—তাদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণের ফল হবে বিপরীত। কিন্তু তার আগে দরকার হবে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা। দেশ পরিচালনায় সিরিয়ার নাগরিকদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা, ইরাকের নাগরিকদের মধ্যে বিভক্তির অবসান, লিবিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এসব পদক্ষেপ রাতারাতি অর্জন করা যাবে না, কিন্তু প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এখনই। যা অবিলম্বে করতে হবে তা হলো, আইএসের প্রতি প্রত্যক্ষ সমর্থন ও অর্থ জোগানোর পথ বন্ধ করে দেওয়া, তাদের সঙ্গে বাণিজ্যের পথ বন্ধ করে দেওয়া। এই অঞ্চলের দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে এটা ঠিক, কিন্তু সহিংস চরমপন্থা বিস্তারে কার কী ভূমিকা, সেটা সবার জানা। এসব ভূমিকা অব্যাহত রেখে আইএসকে পরাস্ত করা যাবে না।
আলী রীয়াজ: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক।
No comments