আবের ‘আবেনোমিকস’র কি হাল?
বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃৃদ্ধশীল রাষ্ট্র জাপানে বর্তমান ক্ষমতাসীন শিনজো আবের আমলে কতটা উন্নত হয়েছে দেশটি- তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। দেশটির জাতীয় নির্বাচনের আগে আবের প্রতিশ্রুতি অনেকের কাছে অযৌক্তিক মনে হলেও কারও কাছে প্রাসঙ্গিক। তার নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল- ‘আমাকে নির্বাচিত করুন। জাপানের আর্থিক ঊর্ধ্বগতি আনায়ন করব। দেশের জাতীয় ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করব।’ আবের এই প্রতিশ্রুতির কতটা তিনি বাস্তবায়ন করেছেন তারই আলোকে বুধবার আবে শাসনের ভাঙা-গড়ার তিন বছর নিয়ে এক প্রতিবেদন তৈরি করেছে এএফপি। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির জয়ে ক্ষমতায় বসেন শিনজো আবে। চলতি সপ্তাহের শনিবার তার ৩ বছর পূর্ণ হয়। ক্ষমতায় এসে অর্থনীতির লাগাম পুনরুদ্ধারে রাজস্ব বৃদ্ধি, আর্থিক স্বচ্ছলতা ও কাঠামোগত সংস্কার-এ ৩ নীতির সমন্বয়ে ‘আবেনোমিকস’ নামক নতুন এক অর্থ পলিসি ঘোষণা করেন আবে। এক সময়কার এশিয়া অর্থনীতির অন্যতম পরিচালিকা খ্যাত জাপানে আশানুরূপ নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি পূরণে ব্যর্থ আবে। দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা, ২০১১ সালের ভূমিকম্প, সুনামি ও চীনের সঙ্গে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা জাপানের শক্তিকে খর্ব করেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, রফতানিকারদের জন্য এটা সুখবর যে,
গত ৩ বছরে দেশটির শেয়ার সূচক দ্বিগুণ হয়ে ২০ হাজার লেভেলে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে আবের শাসনামলে দেশটির উন্নয়ন নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিএনপি পরিবাসের অর্থনীতিবিদ রাউথারো কুনো বলেন, আবেনোমিকসকে বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায়, দেশটির আর্থিক কর্মক্ষমতা খুবই দুর্বল। দাইওয়া ইন্সটিটিউট অব রিসার্চের অর্থনীতিবিদ সাতোশি ওসানাই বলেন, আবে সরকারে প্রথমার্ধে ভালোই চলছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তা ফিকে হয়ে যায়। জাপান আগামী ২০২০ সালের অলিম্পিকের আয়োজক দেশ। এর দ্বারা দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক চপেটাঘাত আসতে পারে বলে মনে করেন দাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান হাইদিও কুমানো। এদিকে চলতি বছরের জুন মাসে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারি ১০ সংস্থা কর্তৃক ৪১৭ ক্যাটাগরিতে দেশটির প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার প্রশাসনিক নথির পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে ৩টি গোপন নথি ফাঁস হয়েছে। এজন্য নথি ফাঁসে জড়িতদের সাজা হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড নির্ধারণে আইন পাস করে জাপান সরকার। তবে এর সপক্ষে এখনও কোনো মামলা করা হয়নি।
No comments