দেড় বছরে কোনো সাক্ষী হাজির হননি
সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় ১০ বছর ধরে ঝুলে আছে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে
জঙ্গিদের বোমা হামলায় পুলিশ কনস্টেবলসহ দুই ব্যক্তি হত্যার ঘটনায় করা
মামলার বিচারকাজ। খোদ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও সাক্ষ্য দেননি। গত দেড় বছরে
একজন সাক্ষীকেও আদালতে হাজির করা যায়নি। শুধু পুলিশ সাক্ষীরাই নন, সাক্ষ্য
দিতে আসছেন না র্যাবের কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকেরাও। ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর
চট্টগ্রাম আদালত ভবনের প্রবেশপথে পুলিশের তল্লাশিচৌকির সামনে বোমা হামলা
চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি)
জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলে মারা যান পুলিশ কনস্টেবল রাজীব বড়ুয়া ও শাহাবুদ্দীন
নামের এক ব্যক্তি। আহত হন পুলিশ কনস্টেবল আবু রায়হান, সামসুল কবির, রফিকুল
ইসলাম, আবদুল মজিদসহ ১০ জন। আজ রোববার এ মামলার ১০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। আদালত
সূত্র জানায়, গত ১০ বছরে এ মামলার ৭৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২৮ জনের
সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ১ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন
ধার্য থাকলেও কোনো সাক্ষী হাজির হননি। বর্তমানে প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম
মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌসের আদালতে মামলাটির বিচার চলছে।
সমন জারি করার পরও সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকায় ১ নভেম্বর আদালত এক আদেশে বলেছেন, সাক্ষীদের হাজির করতে না পারায় মামলাটি নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার দায়িত্ব পুলিশের। আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি ধার্য দিনে সাক্ষীদের হাজির করতে নগর পুলিশ কমিশনারের মাধ্যমে আদালতের আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট থানার ওসির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় করা মামলার প্রায় ছয় মাস পর ২০০৬ সালের ১৮ মে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক হ্লা চিং প্রু জেএমবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে মোহাম্মদ ও বোমা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। জাবেদ ইকবাল কারাগারে আটক আছেন। বোমারু মিজান ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে পালিয়ে পলাতক রয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন হাজির না হওয়া পুলিশ সাক্ষীরা হলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক হ্লা চিং প্রু, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন, কোতোয়ালি থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) জাবেদ মাসুদ, মোফাজ্জল হোসেন, আবু বকর সিদ্দিক, সানাউল্লাহসহ ১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা।
র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা বোমা হামলার পর ঘটনাস্থলে আসায় মামলায় তাঁদের সাক্ষী রাখা হয়েছে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও নিহত দুজনের ময়নাতদন্ত করায় কয়েকজন চিকিৎসককেও সাক্ষী রাখা হয়েছে। তবে পুলিশ, র্যাব ও চিকিৎসকদের অনেকেই এখন চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে অন্য জেলায় কর্মরত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাক্ষী হ্লা চিং প্রু বর্তমানে খাগড়াছড়িতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। গত বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমন না পাওয়ায় সাক্ষ্য দিতে পারছি না। এর আগে ২০০৮ সালে একবার সমন পেয়ে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিচারক না থাকায় সাক্ষ্য হয়নি।’ আরেক সাক্ষী মো. মঈন উদ্দিন বর্তমানে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) হিসেবে কর্মরত। চট্টগ্রাম আদালত ভবন থেকে তাঁর কার্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ৩০০ গজ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সমন পাইনি। কীভাবে সাক্ষ্য দিতে যাব?’ এ মামলায় সাক্ষীদের তালিকায় রয়েছেন র্যাব-৭-এর সাবেক উপসহকারী পরিচালক হান্নান হোসেন চৌধুরী ও সোহরাব হাছান। জানতে চাইলে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব-৭-এ বর্তমানে ওই দুজন কর্মরত নেই। তারা নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত গেছেন। আদালত থেকে কারও সমন পেলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসক সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহকারী অধ্যাপক জুবাইদুর রহমান, সাবেক প্রভাষক ফজলে রাব্বী, চিকিৎসক এন এম সাইফুদ্দিন, ইয়াকুব হোসেন ও হাছানুর রহমান, জাবেদ জাহাঙ্গীরসহ আট চিকিৎসক।
জানতে চাইলে এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি অশোক কুমার দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘র্যাব, পুলিশ, চিকিৎসক ও তিন বিচারক সাক্ষীকে হাজির করতে না পারায় মামলাটি ঝুলে আছে। পুলিশ তাঁদের হাজির করতে পারছে না।’
বিভিন্ন মামলায় সাক্ষী হাজির না হওয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি সভায় আলোচনা হয়েছে। মামলার ধার্য দিনে সাক্ষীদের হাজির করতে অভিযোগপত্রে সাক্ষীদের মুঠোফোন নম্বর লিখে রাখতে তদন্ত কর্মকর্তাদের ওই সভায় তাগিদ দেন চট্টগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. মুন্সী মশিয়ার রহমান। জানতে চাইলে পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী জানান, পুলিশ সাক্ষীসহ এই মামলায় হাজির না হওয়া সব সাক্ষীর পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। আশা করা যায় পরবর্তী ধার্য দিনে তাঁদের হাজির করা যাবে। ইতিমধ্যে কয়েকজন সাক্ষীর সঙ্গে কথাও হয়েছে।
সমন জারি করার পরও সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকায় ১ নভেম্বর আদালত এক আদেশে বলেছেন, সাক্ষীদের হাজির করতে না পারায় মামলাটি নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার দায়িত্ব পুলিশের। আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি ধার্য দিনে সাক্ষীদের হাজির করতে নগর পুলিশ কমিশনারের মাধ্যমে আদালতের আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট থানার ওসির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় করা মামলার প্রায় ছয় মাস পর ২০০৬ সালের ১৮ মে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক হ্লা চিং প্রু জেএমবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে মোহাম্মদ ও বোমা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। জাবেদ ইকবাল কারাগারে আটক আছেন। বোমারু মিজান ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে পালিয়ে পলাতক রয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন হাজির না হওয়া পুলিশ সাক্ষীরা হলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক হ্লা চিং প্রু, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন, কোতোয়ালি থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) জাবেদ মাসুদ, মোফাজ্জল হোসেন, আবু বকর সিদ্দিক, সানাউল্লাহসহ ১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা।
র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা বোমা হামলার পর ঘটনাস্থলে আসায় মামলায় তাঁদের সাক্ষী রাখা হয়েছে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও নিহত দুজনের ময়নাতদন্ত করায় কয়েকজন চিকিৎসককেও সাক্ষী রাখা হয়েছে। তবে পুলিশ, র্যাব ও চিকিৎসকদের অনেকেই এখন চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে অন্য জেলায় কর্মরত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাক্ষী হ্লা চিং প্রু বর্তমানে খাগড়াছড়িতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। গত বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমন না পাওয়ায় সাক্ষ্য দিতে পারছি না। এর আগে ২০০৮ সালে একবার সমন পেয়ে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিচারক না থাকায় সাক্ষ্য হয়নি।’ আরেক সাক্ষী মো. মঈন উদ্দিন বর্তমানে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) হিসেবে কর্মরত। চট্টগ্রাম আদালত ভবন থেকে তাঁর কার্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ৩০০ গজ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সমন পাইনি। কীভাবে সাক্ষ্য দিতে যাব?’ এ মামলায় সাক্ষীদের তালিকায় রয়েছেন র্যাব-৭-এর সাবেক উপসহকারী পরিচালক হান্নান হোসেন চৌধুরী ও সোহরাব হাছান। জানতে চাইলে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব-৭-এ বর্তমানে ওই দুজন কর্মরত নেই। তারা নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত গেছেন। আদালত থেকে কারও সমন পেলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসক সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহকারী অধ্যাপক জুবাইদুর রহমান, সাবেক প্রভাষক ফজলে রাব্বী, চিকিৎসক এন এম সাইফুদ্দিন, ইয়াকুব হোসেন ও হাছানুর রহমান, জাবেদ জাহাঙ্গীরসহ আট চিকিৎসক।
জানতে চাইলে এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি অশোক কুমার দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘র্যাব, পুলিশ, চিকিৎসক ও তিন বিচারক সাক্ষীকে হাজির করতে না পারায় মামলাটি ঝুলে আছে। পুলিশ তাঁদের হাজির করতে পারছে না।’
বিভিন্ন মামলায় সাক্ষী হাজির না হওয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি সভায় আলোচনা হয়েছে। মামলার ধার্য দিনে সাক্ষীদের হাজির করতে অভিযোগপত্রে সাক্ষীদের মুঠোফোন নম্বর লিখে রাখতে তদন্ত কর্মকর্তাদের ওই সভায় তাগিদ দেন চট্টগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. মুন্সী মশিয়ার রহমান। জানতে চাইলে পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী জানান, পুলিশ সাক্ষীসহ এই মামলায় হাজির না হওয়া সব সাক্ষীর পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। আশা করা যায় পরবর্তী ধার্য দিনে তাঁদের হাজির করা যাবে। ইতিমধ্যে কয়েকজন সাক্ষীর সঙ্গে কথাও হয়েছে।
No comments