খোঁড়াখুঁড়িতে পাইপ লাইনে ফাটল: মিরপুরে গ্যাস না থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে by অরূপ দত্ত
মিরপুরের কাজীপাড়ায় পদচারী–সেতুর কাছে রাস্তায় ঢাকা ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে গ্যাস পাইপ ফেটে যায়। ছবিটি মঙ্গলবার দুপুরে তোলা l ছবি : আবদুস সালাম |
অসময়ে
ঢাকা ওয়াসার পানির পাইপলাইনের গর্ত খোঁড়ায় গ্যাস পাইপ ফেটে যাওয়া এবং
বিদ্যুতের কেব্ল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে মিরপুরে এক
সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দফায় গ্যাস পাইপ ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আরও অনেক
স্থানে নতুন করে গর্ত খোঁড়ার সময় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হচ্ছেন। কারণ, গ্যাস
পাইপ ফেটে যাওয়ার পর অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য চুলা জ্বলে না।
গর্ত খোঁড়ার কারণে চলাফেরার ভোগান্তি চরমে ওঠায় মিরপুর ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর সেকশন এলাকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা খননের স্থানে গিয়ে প্রতিবাদ করছেন। এসব স্থানে পাইপ খুঁড়তে বাধাও দিচ্ছেন তাঁরা। ফলে গতকাল অন্তত পাঁচটি গর্ত খোঁড়ার কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এসব এলাকায় বৈদ্যুতিক কেব্লও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।
মিরপুরের কাজীপাড়ায় ওয়াসার পানির পাইপলাইন প্রকল্পের গর্ত খুঁড়তে গিয়ে সোমবার গ্যাস লাইনের পাইপ ফেটে যায়। এ কারণে কাজীপাড়াসহ মিরপুরের বড় একটি অংশে গত সোমবার রাত ১১টা থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। এর আগে ৪ আগস্ট মধ্যরাতে মিরপুরেরই সেনপাড়া-পর্বতার শিববাড়ী এলাকায় ওয়াসার গর্ত খোঁড়ার কারণে গ্যাস পাইপ ফেটে এসব এলাকায় ১৯ ঘণ্টা গ্যাস ছিল না। এলাকাবাসীকে এসব ঘটনায় প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়তে হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে কাজীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পদচারী-সেতুর কাছে খোঁড়া গভীর গর্ত। গর্তের পাশে রাস্তায় অনেক মানুষের ভিড়। তাঁদের একটাই কথা, ‘মাটির নিচে কী আছে, তা ভালো করে না খুঁজেই বড় বড় গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে।’ সেনপাড়া-পর্বতার শিববাড়ী এলাকার বাসিন্দা রফিকুজ্জামান ৪ আগস্ট তাঁর বাসার কাছে গ্যাসের পাইপ ফেটে যাওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিলেন। তিনি বলেন, রাতে হঠাৎ তাঁর ঘুম ভেঙে যায় বৃদ্ধ মায়ের ধাক্কায়। মা বলেন, রান্নাঘরে গ্যাসের চুলাটি বোধ হয় বন্ধ করা হয়নি। গ্যাসের গন্ধ আসছে। পরে তিনি জানতে পারেন, বাইরে খোঁড়া গর্তের কারণে পাইপ ফেটে গেছে। তিনি বলেন, মায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছিল, মা সারা রাত ঘুমাতে পারেননি।
একই রকম আতঙ্ক ও বিরক্তি প্রকাশ করলেন ১৩ নম্বরের ন্যাম ফ্ল্যাট ভবন এলাকার বাসিন্দা আবদুর নূর, ইব্রাহিমপুরের সুনির্মল রায়, বউবাজার এলাকার রশিদুল হাই। তাঁরা বলেন, শুকনা মৌসুম বাদ দিয়ে অসময়ে এসব গর্ত খোঁড়ার কারণে চলাচলে বাড়তি ভোগান্তি বাড়ছে।
কাজীপাড়ার কয়েকজন দোকানমালিক বলেন, সোমবার গ্যাস পাইপ ফাটার আগেই গর্তটি খোঁড়া হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তিতাসের লোকজন গর্তের গভীরে পাইপ ফেটে যাওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মচারীরা জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে গ্যাসপাইপ লাইনের পাঁচটি ভাল্ভ (গ্যাস সরবরাহ লাইনে থাকে) বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সেনপাড়া-পর্বতা, মিরপুর ১৩, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাট ভবন এলাকা, বউবাজার, কাফরুলসহ ১৪ নম্বরের বেশ কিছু এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কাজীপাড়ার বাসিন্দা আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি খুব ভোরে উঠে ভ্রমণ শেষে গরম পানিতে গোসল করেন। মঙ্গলবার গোসল করার আগে পানি গরম করতে গিয়ে দেখেন, চুলা জ্বলছে না।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাট ভবনের বাসিন্দা রিতা দেবী বলেন, গত সপ্তাহেও গ্যাসের সমস্যার কারণে বেশ কয়েক ঘণ্টা চুলা জ্বলেনি। এক সপ্তাহের মাথায় আবার এই অবস্থা।
বউবাজারের একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক আবদুর রশীদ জানায়, গত সপ্তাহে গ্যাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনেক ক্রেতা আসে। ভাত বা রুটি দিয়ে কুলাতে পারেননি। কখন গ্যাস আসে, এটা ঠিক বুঝতে না পেরে সিলিন্ডারের চুলায় যথেষ্ট পরিমাণ ভাত, রুটি, ডাল ও তরকারি রান্না করে রাখা হয়েছে।
তবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কিছু আগেই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যায়। তিতাস গ্যাস কোম্পানির পরিচালক আশরাফুল হক বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ফেটে যাওয়া গ্যাস পাইপ মেরামত করা হয়েছে।
মিরপুরে পানির পাইপ লাইনের গর্তগুলো খোঁড়া হচ্ছে ঢাকা ওয়াসার ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (ডিডব্লিউএসএসডিপি) আওতায়। তিনটি পর্বে মিরপুর ১০ থেকে ১৪ নম্বর সেকশন ছাড়াও শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়ায় এসব লাইন হচ্ছে।
উপপ্রকল্প পরিচালক আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, অনেক সময় মাটির গভীরে গ্যাস বা বিদ্যুৎ লাইন আছে বলে বোঝা যায় না। সে জন্য বিপত্তি ঘটে। তিনি আরও বলেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ওয়াসার এই প্রকল্পে ঢাকায় পানির ১ হাজার ৮০৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত কাজ করে বাকি কাজ শেষ করা হবে।
গর্ত খোঁড়ার কারণে চলাফেরার ভোগান্তি চরমে ওঠায় মিরপুর ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর সেকশন এলাকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা খননের স্থানে গিয়ে প্রতিবাদ করছেন। এসব স্থানে পাইপ খুঁড়তে বাধাও দিচ্ছেন তাঁরা। ফলে গতকাল অন্তত পাঁচটি গর্ত খোঁড়ার কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এসব এলাকায় বৈদ্যুতিক কেব্লও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।
মিরপুরের কাজীপাড়ায় ওয়াসার পানির পাইপলাইন প্রকল্পের গর্ত খুঁড়তে গিয়ে সোমবার গ্যাস লাইনের পাইপ ফেটে যায়। এ কারণে কাজীপাড়াসহ মিরপুরের বড় একটি অংশে গত সোমবার রাত ১১টা থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। এর আগে ৪ আগস্ট মধ্যরাতে মিরপুরেরই সেনপাড়া-পর্বতার শিববাড়ী এলাকায় ওয়াসার গর্ত খোঁড়ার কারণে গ্যাস পাইপ ফেটে এসব এলাকায় ১৯ ঘণ্টা গ্যাস ছিল না। এলাকাবাসীকে এসব ঘটনায় প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়তে হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে কাজীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পদচারী-সেতুর কাছে খোঁড়া গভীর গর্ত। গর্তের পাশে রাস্তায় অনেক মানুষের ভিড়। তাঁদের একটাই কথা, ‘মাটির নিচে কী আছে, তা ভালো করে না খুঁজেই বড় বড় গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে।’ সেনপাড়া-পর্বতার শিববাড়ী এলাকার বাসিন্দা রফিকুজ্জামান ৪ আগস্ট তাঁর বাসার কাছে গ্যাসের পাইপ ফেটে যাওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিলেন। তিনি বলেন, রাতে হঠাৎ তাঁর ঘুম ভেঙে যায় বৃদ্ধ মায়ের ধাক্কায়। মা বলেন, রান্নাঘরে গ্যাসের চুলাটি বোধ হয় বন্ধ করা হয়নি। গ্যাসের গন্ধ আসছে। পরে তিনি জানতে পারেন, বাইরে খোঁড়া গর্তের কারণে পাইপ ফেটে গেছে। তিনি বলেন, মায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছিল, মা সারা রাত ঘুমাতে পারেননি।
একই রকম আতঙ্ক ও বিরক্তি প্রকাশ করলেন ১৩ নম্বরের ন্যাম ফ্ল্যাট ভবন এলাকার বাসিন্দা আবদুর নূর, ইব্রাহিমপুরের সুনির্মল রায়, বউবাজার এলাকার রশিদুল হাই। তাঁরা বলেন, শুকনা মৌসুম বাদ দিয়ে অসময়ে এসব গর্ত খোঁড়ার কারণে চলাচলে বাড়তি ভোগান্তি বাড়ছে।
কাজীপাড়ার কয়েকজন দোকানমালিক বলেন, সোমবার গ্যাস পাইপ ফাটার আগেই গর্তটি খোঁড়া হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তিতাসের লোকজন গর্তের গভীরে পাইপ ফেটে যাওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মচারীরা জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে গ্যাসপাইপ লাইনের পাঁচটি ভাল্ভ (গ্যাস সরবরাহ লাইনে থাকে) বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সেনপাড়া-পর্বতা, মিরপুর ১৩, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাট ভবন এলাকা, বউবাজার, কাফরুলসহ ১৪ নম্বরের বেশ কিছু এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কাজীপাড়ার বাসিন্দা আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি খুব ভোরে উঠে ভ্রমণ শেষে গরম পানিতে গোসল করেন। মঙ্গলবার গোসল করার আগে পানি গরম করতে গিয়ে দেখেন, চুলা জ্বলছে না।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাট ভবনের বাসিন্দা রিতা দেবী বলেন, গত সপ্তাহেও গ্যাসের সমস্যার কারণে বেশ কয়েক ঘণ্টা চুলা জ্বলেনি। এক সপ্তাহের মাথায় আবার এই অবস্থা।
বউবাজারের একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক আবদুর রশীদ জানায়, গত সপ্তাহে গ্যাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনেক ক্রেতা আসে। ভাত বা রুটি দিয়ে কুলাতে পারেননি। কখন গ্যাস আসে, এটা ঠিক বুঝতে না পেরে সিলিন্ডারের চুলায় যথেষ্ট পরিমাণ ভাত, রুটি, ডাল ও তরকারি রান্না করে রাখা হয়েছে।
তবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কিছু আগেই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যায়। তিতাস গ্যাস কোম্পানির পরিচালক আশরাফুল হক বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ফেটে যাওয়া গ্যাস পাইপ মেরামত করা হয়েছে।
মিরপুরে পানির পাইপ লাইনের গর্তগুলো খোঁড়া হচ্ছে ঢাকা ওয়াসার ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (ডিডব্লিউএসএসডিপি) আওতায়। তিনটি পর্বে মিরপুর ১০ থেকে ১৪ নম্বর সেকশন ছাড়াও শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়ায় এসব লাইন হচ্ছে।
উপপ্রকল্প পরিচালক আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, অনেক সময় মাটির গভীরে গ্যাস বা বিদ্যুৎ লাইন আছে বলে বোঝা যায় না। সে জন্য বিপত্তি ঘটে। তিনি আরও বলেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ওয়াসার এই প্রকল্পে ঢাকায় পানির ১ হাজার ৮০৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত কাজ করে বাকি কাজ শেষ করা হবে।
No comments