বিধ্বস্ত নেপাল যেন শ্মশান
যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই আগুন- কুণ্ডলী পাকানো গুমোট ধোঁয়ায় পোড়া মাংসের গন্ধ। সামনে-পেছনে, ডানে-বাঁয়ে সারি সারি চিতা। কুড়িয়ে পাওয়া কাঠ-খড়ের আগুনে ছাই হয়ে যাচ্ছে প্রিয়জনের লাশ- পাশে অসহায় প্রলাপ বকছেন ভাগ্যের জোরে বেঁচে যাওয়া শোকার্ত স্বজন। প্রায় ৫ হাজার মানুষের প্রাণহানির পর বিধ্বস্ত নেপাল এখন শ্মশানভূমি। মাঠে কিংবা ঘাটে যেনতেন করে লাশটা দাহ করতে পারলেই হয়। চারদিকে চিতার আগুন। স্থানীয় হিন্দু গণসৎকারে উঠেছে শোকের মাতম। তবু সবাই কি আর পারছেন? অনেকেই তো স্বজনের লাশটাই উদ্ধার করতে পারেননি। আবার পেলেও ধর্মীয় মতে সৎকারের যে উপকরণ লাগে তা পাবেন কোথায়?
একটা কাপড় মুড়ে কিছু টাকা ফেলে বিদায় জানাচ্ছেন তারা। মঙ্গলবার ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের বাগমাতি নদীর তীরে গণসৎকারের আয়োজন করা হয়েছে। কাঠের ওপর লাশ সাজিয়ে সাদা কাপড় পরিয়ে অগ্নিদাহ করা হচ্ছে। রাজধানী কাঠমান্ডুকে বিভক্তকারী ওই নদী তীর এখন চিতার আগুনে পরিপূর্ণ। মঙ্গলবার সকালে অন্তত কয়েকশ’ লাশ পুড়িয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ সময় স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল ওঠে। নিজেদের মতো করে প্রার্থনা করেছেন ভালো থাকুক প্রিয়জনের আত্মা। প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, একটি লাশ দাহ করার জন্য ২৫০ কেজি কাঠের প্রয়োজন। কিন্তু এখন কোথায় পাবে ওই সব? এদিকে পোড়ানোর মতো সুবিধামতো জায়গাও নেই। এত লাশ। যে যেভাবে পারছেন সেখানে জায়গা করে শেষকৃত্য করছে। জায়গা নিয়ে দুই লাশের স্বজনদের মধ্যে মৃদু ঝগড়াও হচ্ছে। রাস্তার পাশে, বিধ্বস্ত ঘরের আনাচে, পাহাড়ের পাদদেশে চারিদিকে জ্বলছে চিতার আগুন। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, লোকজন তাদের প্রিয়জনের শেষকৃত্যানুষ্ঠান পরিপূর্ণ রীতিতে শেষ করতে পারছে না।
No comments