সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আটকা পড়লেন ভোটকেন্দ্রে by কাজী আনিছ
কবি নজরুল কলেজ কেন্দ্রে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ইয়োহান ফ্রিসেল l ছবি: প্রথম আলো |
বাইরে
দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে চলছিল সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি
ধাওয়া। বোমার বিস্ফোরণও ঘটে। সংঘর্ষের পর কেন্দ্রের ভোটকক্ষে চলে জাল ভোট
দেওয়া। সংঘর্ষ ও হামলায় আহত হন এক কাউন্সিলর প্রার্থী, সাংবাদিকসহ কয়েকজন।
সংঘর্ষের কারণে কেন্দ্রে আটকা পড়েন পরিদর্শনে আসা সুইডেনের রাষ্ট্রদূত
ইয়োহান ফ্রিসেল।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ কেন্দ্রের পরিস্থিতি ছিল এমনই। এই কলেজে ছিল তিনটি কেন্দ্র। তৃতীয় তলা ও দোতলায় ছিল বেশ কয়েকটি ভোটকক্ষ। সকাল থেকেই অবস্থান নেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের গলায় ঝোলানো ছিল আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের ব্যাজ। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী এয়ার মোহাম্মদ এয়ারুর (প্রতীক ঘুড়ি) পক্ষেও ছিলেন তাঁরা। বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের কোনো পোলিং এজেন্ট সেখানে দেখা যায়নি।
দুপুর ১২টার দিকে সমর্থকদের নিয়ে ওই কেন্দ্রের ভোটকক্ষে ঢোকার চেষ্টা করেন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম (প্রতীক টিফিন ক্যারিয়ার)। তাঁদের সঙ্গে এয়ারুর সমর্থকদের প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা, পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষেই লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল ব্যবহার করে। হামলা ও ইটের আঘাতে কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম, ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর ফটোসাংবাদিক ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন কলেজের ভেতরে মহড়া দিতে থাকেন। অবস্থান নেন প্রধান ফটকে। কিছুক্ষণ পর কলেজের মাঠে বিকট শব্দে দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভয়ে কেন্দ্রে আসা ভোটাররা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে দৌড়ে যান একটি বাড়ির দিকে। তাঁদের অভিযোগ, ওই বাড়ি থেকেই বোমা মারা হয়েছে। ঘটনাস্থলে দুই গাড়ি বিজিবির সদস্য এলে পরিস্থিতি আবার শান্ত হয়।
ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়া সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ও ভোটাররা আটকা পড়েন সংঘর্ষের সময়। পরিস্থিতি শান্ত হলে রাষ্ট্রদূত বের হয়ে চলে যান।
সংঘর্ষের পর বেলা দুইটার দিকে কলেজের একটি কেন্দ্রের দোতলার একটি কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১২ জন ব্যালট পেপারে সমানে সিল মারছেন। মেয়রের ব্যালটে ইলিশ ও সাধারণ কাউন্সিলরের ব্যালটে ঘুড়ি প্রতীকে সিল পড়ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদকের গলায় ঝোলানো কার্ড দেখার পর একজন বললেন, ‘ও, সাংবাদিক। শুধু দেখেন, ছবি তুইলেন না।’ ওই যুবক নিজেকে মামুন উর রশিদ ও কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বলে পরিচয় দেন। বলেন, ‘আমার নাম পেপারে লেখেন। সমস্যা নাই।’
ওই কক্ষের কয়েকটি কক্ষ পরে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের কক্ষ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তাঁকে ঘিরে আছেন বেশ কয়েকজন। নিজেদের পরিচয় দিলেন পোলিং এজেন্ট বলে। তবে কার, তা বললেন না। তাঁদের একজন হাসতে হাসতে বলেন, ‘সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এবার টাকাটা দিলেই চলে যাব।’
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।’ পাশের কক্ষে গিয়ে জাল ভোট দেখার অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ‘আমার অনেক কাজ আছে।’
কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিমের বাসা কলেজের কাছেই। বাঁ হাতের আঙুলে ব্যান্ডেজ নিয়ে বাসার সামনে বসে ছিলেন তিনি। হাতটি ঝোলা ব্যাগে রাখা। তাঁকে ঘিরে শতাধিক সমর্থক। সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাল ভোটের কথা শুনে আমরা কলেজে গিয়েছিলাম। দেখেন, আমার হাতের অবস্থা। দেশটা শ্যাষ হইয়া গেছে।’
যোগাযোগের চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী এয়ার মোহাম্মদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর সমর্থক ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার দাবি, সেলিম ও তাঁর সমর্থকেরাই কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন। কোনো জাল ভোট হচ্ছে না।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ কেন্দ্রের পরিস্থিতি ছিল এমনই। এই কলেজে ছিল তিনটি কেন্দ্র। তৃতীয় তলা ও দোতলায় ছিল বেশ কয়েকটি ভোটকক্ষ। সকাল থেকেই অবস্থান নেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের গলায় ঝোলানো ছিল আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের ব্যাজ। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী এয়ার মোহাম্মদ এয়ারুর (প্রতীক ঘুড়ি) পক্ষেও ছিলেন তাঁরা। বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের কোনো পোলিং এজেন্ট সেখানে দেখা যায়নি।
দুপুর ১২টার দিকে সমর্থকদের নিয়ে ওই কেন্দ্রের ভোটকক্ষে ঢোকার চেষ্টা করেন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম (প্রতীক টিফিন ক্যারিয়ার)। তাঁদের সঙ্গে এয়ারুর সমর্থকদের প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা, পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষেই লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল ব্যবহার করে। হামলা ও ইটের আঘাতে কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম, ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর ফটোসাংবাদিক ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন কলেজের ভেতরে মহড়া দিতে থাকেন। অবস্থান নেন প্রধান ফটকে। কিছুক্ষণ পর কলেজের মাঠে বিকট শব্দে দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভয়ে কেন্দ্রে আসা ভোটাররা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে দৌড়ে যান একটি বাড়ির দিকে। তাঁদের অভিযোগ, ওই বাড়ি থেকেই বোমা মারা হয়েছে। ঘটনাস্থলে দুই গাড়ি বিজিবির সদস্য এলে পরিস্থিতি আবার শান্ত হয়।
ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়া সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ও ভোটাররা আটকা পড়েন সংঘর্ষের সময়। পরিস্থিতি শান্ত হলে রাষ্ট্রদূত বের হয়ে চলে যান।
সংঘর্ষের পর বেলা দুইটার দিকে কলেজের একটি কেন্দ্রের দোতলার একটি কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১২ জন ব্যালট পেপারে সমানে সিল মারছেন। মেয়রের ব্যালটে ইলিশ ও সাধারণ কাউন্সিলরের ব্যালটে ঘুড়ি প্রতীকে সিল পড়ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদকের গলায় ঝোলানো কার্ড দেখার পর একজন বললেন, ‘ও, সাংবাদিক। শুধু দেখেন, ছবি তুইলেন না।’ ওই যুবক নিজেকে মামুন উর রশিদ ও কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বলে পরিচয় দেন। বলেন, ‘আমার নাম পেপারে লেখেন। সমস্যা নাই।’
ওই কক্ষের কয়েকটি কক্ষ পরে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের কক্ষ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তাঁকে ঘিরে আছেন বেশ কয়েকজন। নিজেদের পরিচয় দিলেন পোলিং এজেন্ট বলে। তবে কার, তা বললেন না। তাঁদের একজন হাসতে হাসতে বলেন, ‘সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এবার টাকাটা দিলেই চলে যাব।’
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।’ পাশের কক্ষে গিয়ে জাল ভোট দেখার অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ‘আমার অনেক কাজ আছে।’
কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিমের বাসা কলেজের কাছেই। বাঁ হাতের আঙুলে ব্যান্ডেজ নিয়ে বাসার সামনে বসে ছিলেন তিনি। হাতটি ঝোলা ব্যাগে রাখা। তাঁকে ঘিরে শতাধিক সমর্থক। সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাল ভোটের কথা শুনে আমরা কলেজে গিয়েছিলাম। দেখেন, আমার হাতের অবস্থা। দেশটা শ্যাষ হইয়া গেছে।’
যোগাযোগের চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী এয়ার মোহাম্মদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর সমর্থক ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার দাবি, সেলিম ও তাঁর সমর্থকেরাই কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন। কোনো জাল ভোট হচ্ছে না।
No comments