সরকার বদল হতেই ১৪ মামলা 'নেই', অতঃপর পুলিশের বন্ধু! by এস এম রানা
রেলওয়েতে টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে
যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় শিশুসহ দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায়
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবরকে চার দিন এবং তাঁর অন্য
চার সহযোগীকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম
আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম নূরে
আলম ভূঁইয়ার আদালতে শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। পুলিশ প্রত্যেকের সাত
দিনের রিমান্ড চেয়েছিল। তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অন্য আসামিরা হলো
যুবলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী খোকন চন্দ্র তাঁতি, রিটু দাশ ওরফে বাবলু,
প্রেমাসিস মুৎসদ্দি ওরফে ছোটন বড়ুয়া এবং বাবরের দেহরক্ষী শাহ আলম। এদের
মধ্যে খোকন ও রিটু প্রথমে মিথ্যা পরিচয় দিয়েছিল।
জানা যায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আসে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর। এরপর একে এক সব মামলা থেকে মেলে খালাস। এরপর বাবর যাতায়াত শুরু করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর দপ্তরে, সখ্য গড়ে তোলে বেশ কয়েকজন পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে। পুলিশের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার পর কয়েকটি আবাসন কম্পানির সঙ্গে আঁতাত করে নিয়মিত চাঁদাবাজি করা তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজে পরিণত হয়। চাঁদার ভাগ ঠিকমতো না পেয়ে একটি আবাসন কম্পানির মালিককে পুলিশের মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও আছে বাবরের বিরুদ্ধে। ওই ব্যবসায়ী প্রাণভয়ে বাবরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেননি। বাবর গ্রেপ্তার হওয়ার পর এ ধরনের বহু অপকর্মের কথা বের হতে শুরু করেছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ বাবরের পরিচয় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও অস্ত্রধারী হিসেবেই নিশ্চিত করেছে। সিএমপির সন্ত্রাসী তালিকার উল্লিখিত তথ্যমতে, বাবরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১৪টি। নগরীর কোতোয়ালি থানার বুড্ডিস্ট টেম্পল এলাকার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ছেলে বাবর পরবর্তী সময়ে সব মামলা থেকে খালাস পেয়ে যায়।
সিএমপির একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাবরের। সেখানে নানা সময়ে তদবির নিয়ে যেত বাবর। এ ছাড়া গোয়েন্দা কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে তার বিশেষ সখ্যও রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত একজন উপপরিদর্শক বলেছেন, 'কয়েক দিন আগেও বাবর তদবির নিয়ে গোয়েন্দা কার্যালয়ে এসেছিল। একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী গোয়েন্দা কার্যালয়ে যাতায়াতে দৃষ্টিকটু হলেও ডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা তার বিষয়ে নমনীয় ছিলেন।' এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত জোট সরকার আমলে হত্যা, হত্যা-প্রচেষ্টা, অস্ত্র আইনসহ ১৪টি মামলার আসামি হওয়ার পর বাবর পালিয়ে থাইল্যান্ডে চলে যায়। থাইল্যান্ডে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর ওই দেশে জেলও খাটতে হয় বাবরকে। সূত্র মতে, দেশে ফেরার পর নিয়মিত আগ্রাবাদ এলাকার একটি আবাসিক হোটেলসহ বুড্ডিস্ট টেম্পল এলাকার একটি ফুলের বাগানে সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে আড্ডা বসাত বাবর। আধিপত্য বিস্তার ঘটাতে থাকে আবাসন খাত, রেলওয়ের দরপত্রসহ রাজনীতিতে। সব শেষ এই শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদকের পদ পায়।
'ফাঁসানো হয়েছে' : গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাবরসহ পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে। গাড়ি থেকে নামার সময় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখে বাবর বলতে শুরু করে, 'আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এখানে (চট্টগ্রামে) আওয়ামী লীগ তিন ভাগে বিভক্ত, আমি আছি এক অংশে- তাই ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সময় আমি চট্টগ্রামে ছিলাম না, ঢাকায় ছিলাম।' বাবরকে আগের দিন বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় আনতেই একই দাবি করে এবং পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছিল। সে তুলনায় বৃহস্পতিবার আদালত অঙ্গনে শান্ত ছিল বাবর।
ভুয়া পরিচয় কৌশল : টেন্ডারবাজির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবরের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয় খোকন চন্দ্র তাঁতি (৩৮) ও রিটু দাশ বাবলু (৪০)। ঢাকার গুলশান থেকে গ্রেপ্তারের পর দুজনই ভুয়া পরিচয় দেয়। এদের মধ্যে খোকন চন্দ্র তাঁতি নিজেকে পলাশ দাশ এবং রিটু দাশ নিজেকে রবি দে বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু কোতোয়ালি থানায় আনার পর তথ্য যাছাই-বাছাইকালে তারা ধরে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ নিশ্চিত হয়, তারা দুজনই যুবলীগ ক্যাডার এবং টেন্ডারবাজি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম কালের কণ্ঠকে বলেন, খোকন এবং রিটু দুজনই ভুয়া পরিচয় দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালিয়েছিল। প্রকৃত পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর দেখা গেছে, তারা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত মাজহারুল ইসলাম শাকিলকে টেন্ডারবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। ঢাকার রমনা থানার মামলার আসামি শাকিলকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শাকিল ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও পুলিশের মোস্ট ওয়ানটেড জিশানের সেকেন্ড ইন কমান্ড।
গত সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের টেন্ডারবাজি নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগে গোলাগুলি হলে শিশুসহ দুইজন নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এই মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবর ৫৩ নম্বর আসামি। বাবর মঙ্গলবার ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে দুই সহযোগীসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
জানা যায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আসে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর। এরপর একে এক সব মামলা থেকে মেলে খালাস। এরপর বাবর যাতায়াত শুরু করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর দপ্তরে, সখ্য গড়ে তোলে বেশ কয়েকজন পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে। পুলিশের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার পর কয়েকটি আবাসন কম্পানির সঙ্গে আঁতাত করে নিয়মিত চাঁদাবাজি করা তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজে পরিণত হয়। চাঁদার ভাগ ঠিকমতো না পেয়ে একটি আবাসন কম্পানির মালিককে পুলিশের মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও আছে বাবরের বিরুদ্ধে। ওই ব্যবসায়ী প্রাণভয়ে বাবরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেননি। বাবর গ্রেপ্তার হওয়ার পর এ ধরনের বহু অপকর্মের কথা বের হতে শুরু করেছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ বাবরের পরিচয় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও অস্ত্রধারী হিসেবেই নিশ্চিত করেছে। সিএমপির সন্ত্রাসী তালিকার উল্লিখিত তথ্যমতে, বাবরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১৪টি। নগরীর কোতোয়ালি থানার বুড্ডিস্ট টেম্পল এলাকার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ছেলে বাবর পরবর্তী সময়ে সব মামলা থেকে খালাস পেয়ে যায়।
সিএমপির একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাবরের। সেখানে নানা সময়ে তদবির নিয়ে যেত বাবর। এ ছাড়া গোয়েন্দা কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে তার বিশেষ সখ্যও রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত একজন উপপরিদর্শক বলেছেন, 'কয়েক দিন আগেও বাবর তদবির নিয়ে গোয়েন্দা কার্যালয়ে এসেছিল। একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী গোয়েন্দা কার্যালয়ে যাতায়াতে দৃষ্টিকটু হলেও ডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা তার বিষয়ে নমনীয় ছিলেন।' এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত জোট সরকার আমলে হত্যা, হত্যা-প্রচেষ্টা, অস্ত্র আইনসহ ১৪টি মামলার আসামি হওয়ার পর বাবর পালিয়ে থাইল্যান্ডে চলে যায়। থাইল্যান্ডে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর ওই দেশে জেলও খাটতে হয় বাবরকে। সূত্র মতে, দেশে ফেরার পর নিয়মিত আগ্রাবাদ এলাকার একটি আবাসিক হোটেলসহ বুড্ডিস্ট টেম্পল এলাকার একটি ফুলের বাগানে সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে আড্ডা বসাত বাবর। আধিপত্য বিস্তার ঘটাতে থাকে আবাসন খাত, রেলওয়ের দরপত্রসহ রাজনীতিতে। সব শেষ এই শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদকের পদ পায়।
'ফাঁসানো হয়েছে' : গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাবরসহ পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে। গাড়ি থেকে নামার সময় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখে বাবর বলতে শুরু করে, 'আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এখানে (চট্টগ্রামে) আওয়ামী লীগ তিন ভাগে বিভক্ত, আমি আছি এক অংশে- তাই ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সময় আমি চট্টগ্রামে ছিলাম না, ঢাকায় ছিলাম।' বাবরকে আগের দিন বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় আনতেই একই দাবি করে এবং পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছিল। সে তুলনায় বৃহস্পতিবার আদালত অঙ্গনে শান্ত ছিল বাবর।
ভুয়া পরিচয় কৌশল : টেন্ডারবাজির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবরের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয় খোকন চন্দ্র তাঁতি (৩৮) ও রিটু দাশ বাবলু (৪০)। ঢাকার গুলশান থেকে গ্রেপ্তারের পর দুজনই ভুয়া পরিচয় দেয়। এদের মধ্যে খোকন চন্দ্র তাঁতি নিজেকে পলাশ দাশ এবং রিটু দাশ নিজেকে রবি দে বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু কোতোয়ালি থানায় আনার পর তথ্য যাছাই-বাছাইকালে তারা ধরে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ নিশ্চিত হয়, তারা দুজনই যুবলীগ ক্যাডার এবং টেন্ডারবাজি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম কালের কণ্ঠকে বলেন, খোকন এবং রিটু দুজনই ভুয়া পরিচয় দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালিয়েছিল। প্রকৃত পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর দেখা গেছে, তারা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত মাজহারুল ইসলাম শাকিলকে টেন্ডারবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। ঢাকার রমনা থানার মামলার আসামি শাকিলকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শাকিল ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও পুলিশের মোস্ট ওয়ানটেড জিশানের সেকেন্ড ইন কমান্ড।
গত সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের টেন্ডারবাজি নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগে গোলাগুলি হলে শিশুসহ দুইজন নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এই মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবর ৫৩ নম্বর আসামি। বাবর মঙ্গলবার ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে দুই সহযোগীসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
No comments