ম্যান্ডেলার জন্য উদ্বেগ, প্রার্থনা
বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ের অবিসংবাদিত নায়ক ও
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলাকে লাইফ সাপোর্টেই রাখা
হয়েছে হাসপাতালে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর বড় মেয়ে মাকাজিওয়েকে উদ্ধৃত
করে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ম্যান্ডেলার অবস্থা
'আশঙ্কাজনক হলেও স্থিতিশীল'।
পরিবারের সদস্যরা কথা বললে তিনি (ম্যান্ডেলা) চোখ খোলার চেষ্টা করছেন।
প্রিটোরিয়ার মেডিক্লিনিক হার্ট হসপিটালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নোবেলজয়ী ম্যান্ডেলাকে দেখতে বুধবার রাতে হাসপাতালে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। এ সময় ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যরাও সেখানে ছিল। পরে গতকাল চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জুমা বলেন, 'গত রাতে (বুধবার) আমি তাঁকে যেমন দেখে এসেছিলাম, তার থেকে আজ অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।'
হাসপাতাল থেকে ফিরেই জুমা তাঁর মোজাম্বিক সফর বাতিল ঘোষণা করেন। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মোজাম্বিকে অনুষ্ঠেয় সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটির (এসএডিসি) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল জুমার। এ সফর বাতিলের খবর প্রকাশের পরপরই ম্যান্ডেলাকে নিয়ে ভক্তদের দুশ্চিন্তা আরো ঘনীভূত হয়। গতকাল সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জরুরি তলবের পর ফুলের তোড়া নিয়ে ম্যান্ডেলাকে দেখতে যান তাঁর নাতি-নাতনিরা।
ম্যান্ডেলার চিরবিদায়ের সময় ঘনিয়ে এসেছে আশঙ্কা করে ওই হাসপাতালের সামনে গতকাল মোমবাতি জ্বালিয়েছে তাঁর ভক্তরা। অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ম্যাক মাহারাজ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, '৪৮ ঘণ্টা ধরে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাদিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁর অবস্থা ক্রমশ জটিল হচ্ছে।'
এদিকে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ২৬ জুনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ৯৪ বছর বয়সী নেলসন ম্যান্ডেলা ২৫ জুন রাতে মারা গেছেন। তাঁর পরিবার এ সত্যকে প্রকাশ করতে পারছে না এ কারণে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শুক্রবার (আজ) দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসছেন। ওবামার এ সফর দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওবামার ঐতিহাসিক সফরের মধ্যেই ম্যান্ডেলাকে মৃত ঘোষণা করা হতে পারে।
আফ্রিকার তিনটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে গতকাল সেনেগালে পৌঁছে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বর্ণবাদবিরোধী নেতা ম্যান্ডেলাকে 'সারা বিশ্বের নায়ক' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ম্যান্ডেলার বড় মেয়ে মাকাজিওয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, 'তাতা (বাবা) খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। যেকোনো কিছুই হয়ে যেতে পারে। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে অপেক্ষা করব। একমাত্র ঈশ্বরই বলতে পারবেন কখন তাঁর যাওয়ার সময়।' তিনি আরো বলেন, 'আমি মিথ্যা বলছি না। তিনি আমাদের আশান্বিত করছেন। আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং চোখ খুলতে চাইছেন।'
নিউমোনিয়া থেকে ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় গত ৮ জুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ম্যান্ডেলাকে। চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তাঁকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। গত রবিবার থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে জড়ো হতে শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। ওই দিনই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাও।
ম্যান্ডেলার অবস্থা সংকটাপন্ন- এমন খবর প্রকাশের পর থেকেই হাসপাতালের সামনে তাঁর ভক্তদের ভিড় লেগেই আছে। বুধবার থেকে তাঁর উদ্দেশে চিঠি, নানা রঙের ফুল, বেলুন ও পোস্টারে আবেগমথিত নানা বাক্য লিখে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিবাসীরা। হাসপাতালের চার দেয়াল ছেয়ে যায় তাঁর প্রতি শুভাকাঙ্ক্ষীদের লেখা বার্তা ও ফুলের তোড়ায়। বিলবোর্ডগুলোতে লেখা হয় ম্যান্ডেলাকে নিয়ে বার্তা, পুতুলের গলাতেও ঝুলিয়ে দেওয়া হয় শ্রদ্ধার বাণী।
কিংবদন্তির নেতা ম্যান্ডেলার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বজুড়ে প্রার্থনা করছে তাঁর ভক্তরা। এ ছাড়া ধর্মীয় শীর্ষস্থানীয় নেতারাও প্রার্থনায় বসেছেন তাঁর জন্য। ঈশ্বরের কাছে সবারই প্রার্থনা, মাদিবা (ম্যান্ডেলার গোত্রের দেওয়া নাম) যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। আর যদি তাঁর সময় শেষ হয়ে এসে থাকে, তাহলে যেন কোনো ধরনের কষ্ট পাওয়া ছাড়াই 'শান্তিপূর্ণ প্রস্থান' ঘটে। এদিকে ম্যান্ডেলার জন্য বিশ্ববাসীকে প্রার্থনা করতে অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার থেম্বু রাজবংশে। কালো মানুষদের অধিকারের পক্ষে আন্দোলনের কারণে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে স্নাতক ম্যান্ডেলাকে তারুণ্যের ২৭টি বছর কাটাতে হয়েছে কারাগারে। ওই সময় উন্মুক্ত খনিতে কাজ করার সময় তাঁর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা। দেশটির শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ-নির্বিশেষে সবাইকে একই ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার 'গণতন্ত্রের জনক' আখ্যায়িত করা হয়। বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য ম্যান্ডেলাকে ১৯৯৩ সালে এফ ডাব্লিউ ডি ক্লার্কের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। সূত্র : বিবিসি, সিএনএন, এএফপি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান এক্সপ্রেস, সিবিএস নিউজ (অনলাইন)।
প্রিটোরিয়ার মেডিক্লিনিক হার্ট হসপিটালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নোবেলজয়ী ম্যান্ডেলাকে দেখতে বুধবার রাতে হাসপাতালে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। এ সময় ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যরাও সেখানে ছিল। পরে গতকাল চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জুমা বলেন, 'গত রাতে (বুধবার) আমি তাঁকে যেমন দেখে এসেছিলাম, তার থেকে আজ অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।'
হাসপাতাল থেকে ফিরেই জুমা তাঁর মোজাম্বিক সফর বাতিল ঘোষণা করেন। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মোজাম্বিকে অনুষ্ঠেয় সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটির (এসএডিসি) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল জুমার। এ সফর বাতিলের খবর প্রকাশের পরপরই ম্যান্ডেলাকে নিয়ে ভক্তদের দুশ্চিন্তা আরো ঘনীভূত হয়। গতকাল সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জরুরি তলবের পর ফুলের তোড়া নিয়ে ম্যান্ডেলাকে দেখতে যান তাঁর নাতি-নাতনিরা।
ম্যান্ডেলার চিরবিদায়ের সময় ঘনিয়ে এসেছে আশঙ্কা করে ওই হাসপাতালের সামনে গতকাল মোমবাতি জ্বালিয়েছে তাঁর ভক্তরা। অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ম্যাক মাহারাজ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, '৪৮ ঘণ্টা ধরে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাদিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁর অবস্থা ক্রমশ জটিল হচ্ছে।'
এদিকে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ২৬ জুনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ৯৪ বছর বয়সী নেলসন ম্যান্ডেলা ২৫ জুন রাতে মারা গেছেন। তাঁর পরিবার এ সত্যকে প্রকাশ করতে পারছে না এ কারণে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শুক্রবার (আজ) দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসছেন। ওবামার এ সফর দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওবামার ঐতিহাসিক সফরের মধ্যেই ম্যান্ডেলাকে মৃত ঘোষণা করা হতে পারে।
আফ্রিকার তিনটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে গতকাল সেনেগালে পৌঁছে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বর্ণবাদবিরোধী নেতা ম্যান্ডেলাকে 'সারা বিশ্বের নায়ক' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ম্যান্ডেলার বড় মেয়ে মাকাজিওয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, 'তাতা (বাবা) খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। যেকোনো কিছুই হয়ে যেতে পারে। তবে আমরা তাঁর সঙ্গে অপেক্ষা করব। একমাত্র ঈশ্বরই বলতে পারবেন কখন তাঁর যাওয়ার সময়।' তিনি আরো বলেন, 'আমি মিথ্যা বলছি না। তিনি আমাদের আশান্বিত করছেন। আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং চোখ খুলতে চাইছেন।'
নিউমোনিয়া থেকে ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় গত ৮ জুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ম্যান্ডেলাকে। চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তাঁকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। গত রবিবার থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে জড়ো হতে শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। ওই দিনই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাও।
ম্যান্ডেলার অবস্থা সংকটাপন্ন- এমন খবর প্রকাশের পর থেকেই হাসপাতালের সামনে তাঁর ভক্তদের ভিড় লেগেই আছে। বুধবার থেকে তাঁর উদ্দেশে চিঠি, নানা রঙের ফুল, বেলুন ও পোস্টারে আবেগমথিত নানা বাক্য লিখে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিবাসীরা। হাসপাতালের চার দেয়াল ছেয়ে যায় তাঁর প্রতি শুভাকাঙ্ক্ষীদের লেখা বার্তা ও ফুলের তোড়ায়। বিলবোর্ডগুলোতে লেখা হয় ম্যান্ডেলাকে নিয়ে বার্তা, পুতুলের গলাতেও ঝুলিয়ে দেওয়া হয় শ্রদ্ধার বাণী।
কিংবদন্তির নেতা ম্যান্ডেলার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বজুড়ে প্রার্থনা করছে তাঁর ভক্তরা। এ ছাড়া ধর্মীয় শীর্ষস্থানীয় নেতারাও প্রার্থনায় বসেছেন তাঁর জন্য। ঈশ্বরের কাছে সবারই প্রার্থনা, মাদিবা (ম্যান্ডেলার গোত্রের দেওয়া নাম) যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। আর যদি তাঁর সময় শেষ হয়ে এসে থাকে, তাহলে যেন কোনো ধরনের কষ্ট পাওয়া ছাড়াই 'শান্তিপূর্ণ প্রস্থান' ঘটে। এদিকে ম্যান্ডেলার জন্য বিশ্ববাসীকে প্রার্থনা করতে অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার থেম্বু রাজবংশে। কালো মানুষদের অধিকারের পক্ষে আন্দোলনের কারণে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে স্নাতক ম্যান্ডেলাকে তারুণ্যের ২৭টি বছর কাটাতে হয়েছে কারাগারে। ওই সময় উন্মুক্ত খনিতে কাজ করার সময় তাঁর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা। দেশটির শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ-নির্বিশেষে সবাইকে একই ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার 'গণতন্ত্রের জনক' আখ্যায়িত করা হয়। বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য ম্যান্ডেলাকে ১৯৯৩ সালে এফ ডাব্লিউ ডি ক্লার্কের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। সূত্র : বিবিসি, সিএনএন, এএফপি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান এক্সপ্রেস, সিবিএস নিউজ (অনলাইন)।
No comments