আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ‘ক্রসফায়ার’-এই কৌশল সরকারের অক্ষমতাকেই তুলে ধরছে
র্যাব ও পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইদানীং ‘ক্রসফায়ার’ শব্দটি বাদ দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়তো বলছেন যে দেশে ‘ক্রসফায়ার’ বলে কিছু নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভিন্ন নামে এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পথকেই প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সরকারের দেওয়া অঙ্গীকার—কোনো কিছুই এখন আর বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না।
প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ মাসে ৬০টি এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ও সায় ছাড়া এটি ঘটছে, এমন ভাবার কারণ নেই। সরকার কেন এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্ট। ক্রসফায়ার বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছাড়া সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ক্রসফায়ারের নামে দেশে যখন এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়, তখন প্রথম দিকে সাধারণ জনগণ এ ধরনের ঘটনায় বেশ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী নিহত হওয়ায় স্বস্তি বোধ করেছিল। ২০০৫ সালে প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব আইরিন খান বলেছিলেন, কোনো সমাজে যখন বিচার ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং জনগণ তাতে খুশি হয়, তখন বুঝতে হবে যে সেই সমাজে অপরাধকর্ম সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং সরকারের সেই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নেই।
২০০৪ সালে জোট সরকার অপরাধ ও অপরাধী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ক্রসফায়ারের যে পথ বেছে নিয়েছিল, ২০০৯ সালে এসে এখন দেখা যাচ্ছে মহাজোট সরকারও সেই একই পথ বেছে নিয়েছে। অর্থাত্ বর্তমান সরকারও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়েছে। আর বিচারবহির্ভূত এ হত্যাকাণ্ড করে যদি সত্যিই অপরাধ ও অপরাধী নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তবে ২০০৪ সালে শুরু হওয়া ক্রসফায়ার এখনো অব্যাহত রাখার প্রয়োজন পড়ত না। এরও আগে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’-এর নামে অপরাধী ও সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত কিছু লোককে হত্যা করা হয়েছিল। বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পৃথিবীর কোনো দেশ অপরাধীদের দমন করতে পারেনি। ক্ষমতার বাইরে থাকতে ক্রসফায়ারের ব্যাপক সমালোচনা করে এবং ক্রসফায়ার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার আবার অপরাধ দমনের সেই অকার্যকর ও ভুল পথ বেছে নিয়েছে।
বোঝা যায়, সরকারের কোনো দূরদৃষ্টি নেই। সরকারকে এটা বুঝতে হবে যে ক্রসফায়ারের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনো অপরাধ দমনের কার্যকর ও বাস্তবসন্মত পথ হতে পারে না। আইনের শাসন কার্যকর আছে— এমন একটি সমাজে অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত না করা গেলে নিরপরাধ ব্যক্তির অধিকারও নিশ্চিত করা যায় না। সরকার যদি ক্রসফায়ারকে অপরাধ দমনের সহজ পথ মনে করে এই ধারা অব্যাহত রাখে, তবে দেশের ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে পুরো বিচারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য। দেশে আইনের শাসন কায়েম রাখতে হলে এবং আন্তর্জাতিকভাবে একটি সভ্য, গণতান্ত্রিক ও আইনের শাসন কায়েম আছে এমন রাষ্ট্র হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা এনকাউন্টার—যে নামেই হোক, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের কোনো বিকল্প নেই।
প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ মাসে ৬০টি এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ও সায় ছাড়া এটি ঘটছে, এমন ভাবার কারণ নেই। সরকার কেন এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্ট। ক্রসফায়ার বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছাড়া সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ক্রসফায়ারের নামে দেশে যখন এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়, তখন প্রথম দিকে সাধারণ জনগণ এ ধরনের ঘটনায় বেশ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী নিহত হওয়ায় স্বস্তি বোধ করেছিল। ২০০৫ সালে প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব আইরিন খান বলেছিলেন, কোনো সমাজে যখন বিচার ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং জনগণ তাতে খুশি হয়, তখন বুঝতে হবে যে সেই সমাজে অপরাধকর্ম সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং সরকারের সেই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নেই।
২০০৪ সালে জোট সরকার অপরাধ ও অপরাধী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ক্রসফায়ারের যে পথ বেছে নিয়েছিল, ২০০৯ সালে এসে এখন দেখা যাচ্ছে মহাজোট সরকারও সেই একই পথ বেছে নিয়েছে। অর্থাত্ বর্তমান সরকারও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়েছে। আর বিচারবহির্ভূত এ হত্যাকাণ্ড করে যদি সত্যিই অপরাধ ও অপরাধী নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তবে ২০০৪ সালে শুরু হওয়া ক্রসফায়ার এখনো অব্যাহত রাখার প্রয়োজন পড়ত না। এরও আগে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’-এর নামে অপরাধী ও সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত কিছু লোককে হত্যা করা হয়েছিল। বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পৃথিবীর কোনো দেশ অপরাধীদের দমন করতে পারেনি। ক্ষমতার বাইরে থাকতে ক্রসফায়ারের ব্যাপক সমালোচনা করে এবং ক্রসফায়ার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার আবার অপরাধ দমনের সেই অকার্যকর ও ভুল পথ বেছে নিয়েছে।
বোঝা যায়, সরকারের কোনো দূরদৃষ্টি নেই। সরকারকে এটা বুঝতে হবে যে ক্রসফায়ারের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনো অপরাধ দমনের কার্যকর ও বাস্তবসন্মত পথ হতে পারে না। আইনের শাসন কার্যকর আছে— এমন একটি সমাজে অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত না করা গেলে নিরপরাধ ব্যক্তির অধিকারও নিশ্চিত করা যায় না। সরকার যদি ক্রসফায়ারকে অপরাধ দমনের সহজ পথ মনে করে এই ধারা অব্যাহত রাখে, তবে দেশের ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে পুরো বিচারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য। দেশে আইনের শাসন কায়েম রাখতে হলে এবং আন্তর্জাতিকভাবে একটি সভ্য, গণতান্ত্রিক ও আইনের শাসন কায়েম আছে এমন রাষ্ট্র হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা এনকাউন্টার—যে নামেই হোক, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের কোনো বিকল্প নেই।
No comments