মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা: জবাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি ইরানের

গাজা এবং লেবাননে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এর জন্য কারো কাছে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। সারা গাজায় তারা বিক্ষিপ্তভাবে হামলা চালাচ্ছে। তাদের হামলায় শিশুসহ নতুন করে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। ওদিকে ইসরাইল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ইরানে যে হামলা চালিয়েছে তার জবাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বৈশ্বিক দাম্ভিকতাকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হবে না ইরান। বর্তমানে বিশ্বে যেসব দাম্ভিকতা চলছে এবং ক্রিমিনাল অ্যাপারেটাস আছে তাদের বিরুদ্ধে সুনিশ্চিতভাবে জবাব দেয়া হবে।

তিনি বলেন, অহংকার মানে ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য এবং সেই জাতির অধঃপতন। খোমেনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন, ইয়েমেনে হুতি, লেবাননে হিজবুল্লাহ ও গাজায় হামাসের মতো ওই অঞ্চলে যেসব গ্রুপকে তেহরান সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধে হামলার জবাব দেবে। রাজধানী তেহরানে শিক্ষার্থীদের এক জমায়েতে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং জায়নবাদি রাষ্ট্র ইসরাইলিরা উভয় শত্রুর জানা উচিত যে, ইরান নামের দেশটির বিরুদ্ধে এবং প্রতিরোধ ফ্রন্টের বিরুদ্ধে তারা যা করছে অবশ্যই তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেল। কারণ, ইসরাইল ইরানের কয়েকটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর সাবধান করেছে। ইসরাইল বলেছে, তারা চায় ইরান এর কোনো জবাব দেবে না। যদি দেয়, তাহলে এর চেয়েও বড় কোনো পরিণতি ভোগ করতে হবে। ওদিকে শনিবার ভোর থেকে গাজাজুড়ে ইসরাইল হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে কমপক্ষে ১৬ জনকে।

এর মধ্যে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ৫ জন, আস-সাফতাবিতে তিনজন এবং বেইত লাহিয়ায় আট জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে শুক্রবার লেবাননের বেকা ভ্যালিতে কমপক্ষে ২৫টি শহর ও গ্রামে আকাশ থেকে ভারি বোমা হামলা করেছে ইসরাইল। এতে বেশ কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। এমন এক পরিস্থিতিতে গাজায় পোলিও টীকার তৃতীয় ডোজ শুরু হওয়ার কথা। গত বছর ৭ই অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞে নিহতের পরিমাণ কমপক্ষে ৪৩,২৫৯। আহত হয়েছেন কমপক্ষে এক লাখ এক হাজার ৮২৭ জন। লেবাননে তারা হত্যা করেছে কমপক্ষে দুই হাজার ৮৯৭ জনকে। আহত হয়েছেন তের হাজার ১৫০ জন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। এ সময়ে গাজা উপত্যকায়  ফিলিস্তিনি সাংবাদিক বারা আলি দাঘিশ এবং বিলাল মোহাম্মদ রজকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর নিন্দা জানিয়েছে প্যালেস্টাইন জার্নালিস্টস প্রটেকশন সেন্টার (পিজেপিসি)।

বিবৃতিতে তারা বলেছে, দখলদার ইসরাইলি সেনাদের গাজায় সাংবাদিকদের টার্গেট করা এবং হত্যা করা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং মানবাধিকার ভয়াবহভাবে লঙ্ঘন করছে। এসব অপরাধ যারা ঘটাচ্ছে, আইন লঙ্ঘন করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে ব্যর্থ হচ্ছে দখলদার সরকার। কারণ, এক্ষেত্রে তারা বাইরের সমর্থন পাচ্ছে। সেই সমর্থনে তারা ভয়াবহ ও অমানবিক আচরণ করছে। গাজায় সাংবাদিকদের হত্যা করা তাদের কাছে প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছে।
ওদিকে ইসরাইলের দাবি তারা লোহিত সাগরের ওপরে তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে এসব ড্রোন কোথা থেকে ছোড়া হয়েছে সে বিষয়ে তারা বিস্তারিত কিছু বলেনি। ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলে, কিছুক্ষণ আগে পূর্ব দিক থেকে ছোড়া তিনটি ড্রোনকে লোহিত সাগরের ওপরে ভূপাতিত করা হয়েছে।  

mzamin

No comments

Powered by Blogger.