চট্টগ্রামে মা-মেয়ে খুন, খুনিরা পূর্বপরিচিত? ‘বাসায় দুজনের লাশ পড়ে আছে’
নাসিমা বেগম,রিয়া আক্তার |
দুই
ছেলে স্কুলে গেছে কি না, তা জানতে সকাল নয়টায় মুঠোফোনে স্ত্রীর সঙ্গে
কথা বলেন ব্যবসায়ী শাহ আলম। এর এক ঘণ্টা পর শ্যালকের ফোন পান তিনি।
একনিঃশ্বাসে হড়বড় করে শাহ আলমকে জানানো হয়, তাঁর একমাত্র মেয়ে ও স্ত্রী
খুন হয়েছে। বাসায় দুজনের লাশ পড়ে আছে...।
পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ নালাপাড়ার আল ইসলাম ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন শাহ আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খবর পান, বাসার ভেতরে তাঁর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৩৫) ও কন্যা রিয়া আক্তারকে (৮) নৃশংসভাবে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। রিয়া নালাপাড়ার কাছেই নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ ওই বাসার খাবার টেবিলের পাশ থেকে শাহ আলমের স্ত্রীর এবং স্নানাগার থেকে তাঁর মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ১৬টি আলামত সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মিতশ্রী বড়ুয়া।
রিয়াকে গলা কেটে এবং তাঁর মা নাছিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে বলে জানান নগর পুলিশের কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ। তিনি জানান, বাসা থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এটি হত্যায় ব্যবহৃত হতে পারে। এ ছাড়া বাসার দারোয়ান, গৃহশিক্ষকসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
শাহ আলম জানান, তাঁর সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। কেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, তা বুঝতে পারছেন না। তবে তাঁর ধারণা, হত্যাকারীরা পূর্বপরিচিত। চিনে ফেলায় তাঁদের খুন করা হয়েছে। তাঁর দাবি, দুর্বৃত্তরা বাসার আলমারি থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
দক্ষিণ নালাপাড়ায় মুরগির ও খাসির মাংসের দুটি দোকান রয়েছে শাহ আলমের। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরের পূর্বধুর গ্রামে। স্ত্রী, এক মেয়ে, দুই ছেলে রিয়াদ হোসেন ও হৃদয় হোসেন, শ্যালক আলাল হোসেন ও তাঁর বাবা রশিদ মিয়াকে নিয়ে তিনি নালাপাড়ায় ভাড়া থাকেন। দুই ছেলে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে পড়ে।
শাহ আলম জানান, সকাল সাড়ে সাতটায় তাঁর শ্যালক বাসার গলির মুখের মুরগির দোকানে যায়। পৌনে আটটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে তিনি মাংসের (মুরগির দোকান থেকে একটু দূরে) দোকানে যান। দুই ছেলে স্কুলে গেছে কি না, তা জানার জন্য সকাল নয়টার দিকে স্ত্রী নাসিমা বেগমের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্ত্রী তাঁকে জানান, বাচ্চারা স্কুলে গেছে। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁর শ্যালক তাঁকে ফোন করে জানান, বাসার গৃহকর্মী জমিলা আক্তার দোকানে ছুটে এসে জানিয়েছে, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে খুন হয়েছে।
পুলিশও ধারণা করছে, হত্যাকারীরা পূর্বপরিচিত হতে পারে। তবে ডাকাতি, পূর্বশত্রুতা, নাকি পারিবারিক বিরোধের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাসার গৃহকর্মী জমিলা আক্তার জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টার দিকে কাজ করতে আসেন তিনি। গতকাল ১০টার দিকে বাসায় এসে সদর দরজাটি সামান্য খোলা দেখতে পান। ভেতরে ঢুকেই খাবার টেবিলের পাশে নাসিমা আক্তারের লাশ দেখতে পান। ভয়ে তিনি চিৎকার শুরু করেন। পরে বাসা থেকে বের হয়ে মুরগির দোকানে গিয়ে আলালকে ঘটনাটি জানান।
পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা শান্তনু দাশ জানান, গৃহকর্মী কান্নাকাটি শুরু করলে স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করার কথা তাঁরা জানতে পারেন। একই কথা জানান আরেকটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রুনু খাস্তগীরও। গৃহকর্মী আসার আগে ওই বাসায় কোনো চিৎকার শোনেননি তাঁরা।
ভবনের দারোয়ান মো. সুমন ও মো. সিদ্দিক জানান, বাসায় কত লোকজনই আসা-যাওয়া করে। শাহ আলমের বাসায় কারা এসেছিলেন, তা জানেন না তাঁরা।
তবে ভবনের মালিক মোবাশ্বের হোসেন জানান, শাহ আলমের বাসায় প্রতিদিন প্রচুর লোকজন আসত। এ নিয়ে অন্য ভাড়াটেরা তাঁর কাছে অভিযোগও করেছেন বেশ কয়েকবার। বাসায় লোকজন কম আসতে বলা হলেও শাহ আলম তাঁর আত্মীয়স্বজন বেশি বলে অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
বাসায় নিয়মিত বাইরের লোকজন আসার বিষয়ে শাহ আলম বলেন, ‘আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন বাসায় প্রায়ই আসত। তারা কেউ এ খুনের সঙ্গে জড়িত বলে মনে হয় না। তবে এদের মাধ্যমে খবর নিয়ে কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।’
ঘটনাস্থলে কথা হয় শাহ আলমের বন্ধু কমল দাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে শাহ আলমের সঙ্গে বন্ধুত্ব। তাঁর স্ত্রী আমার বোনের মতো। বুধবার রাত সাড়ে ১২টায় তাঁদের বাসা থেকে গেছি।’
হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল দুপুর ১২টায় গিয়ে দেখা যায়, ভবনের আশপাশে লোকজনের ভিড়। সিঁড়িতে বসে কান্নাকাটি করছে নিহতদের স্বজনেরা। শাহ আলমের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে দুটি শোবার ঘর, একটি রান্নাঘর, পাশে স্নানাগার, পাশে লম্বালম্বিভাবে বসার ও খাবার ঘর। খাবার টেবিলের পাশে পড়ে আছে নাছিমা বেগমের লাশ। মেঝেতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। দুই হাত দূরে স্নানাগারে আছে রিয়া আক্তারের লাশ। বাসার সদর দরজার সামনে রক্তের দাগ এবং দ্বিতীয় তলা থেকে তৃতীয় তলার সিঁড়ির কয়েকটি ধাপেও রক্তের দাগ দেখা যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার জানান, ডাকাতি, পূর্বশত্রুতা, পারিবারিক বিরোধসহ বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। হত্যাকারীরা পূর্বপরিচিত হতে পারে। ধরন দেখে খুনিদের পেশাদার মনে হয়েছে।
পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ নালাপাড়ার আল ইসলাম ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন শাহ আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খবর পান, বাসার ভেতরে তাঁর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৩৫) ও কন্যা রিয়া আক্তারকে (৮) নৃশংসভাবে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। রিয়া নালাপাড়ার কাছেই নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ ওই বাসার খাবার টেবিলের পাশ থেকে শাহ আলমের স্ত্রীর এবং স্নানাগার থেকে তাঁর মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ১৬টি আলামত সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মিতশ্রী বড়ুয়া।
রিয়াকে গলা কেটে এবং তাঁর মা নাছিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে বলে জানান নগর পুলিশের কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ। তিনি জানান, বাসা থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এটি হত্যায় ব্যবহৃত হতে পারে। এ ছাড়া বাসার দারোয়ান, গৃহশিক্ষকসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
শাহ আলম জানান, তাঁর সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। কেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, তা বুঝতে পারছেন না। তবে তাঁর ধারণা, হত্যাকারীরা পূর্বপরিচিত। চিনে ফেলায় তাঁদের খুন করা হয়েছে। তাঁর দাবি, দুর্বৃত্তরা বাসার আলমারি থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
দক্ষিণ নালাপাড়ায় মুরগির ও খাসির মাংসের দুটি দোকান রয়েছে শাহ আলমের। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরের পূর্বধুর গ্রামে। স্ত্রী, এক মেয়ে, দুই ছেলে রিয়াদ হোসেন ও হৃদয় হোসেন, শ্যালক আলাল হোসেন ও তাঁর বাবা রশিদ মিয়াকে নিয়ে তিনি নালাপাড়ায় ভাড়া থাকেন। দুই ছেলে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে পড়ে।
শাহ আলম জানান, সকাল সাড়ে সাতটায় তাঁর শ্যালক বাসার গলির মুখের মুরগির দোকানে যায়। পৌনে আটটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে তিনি মাংসের (মুরগির দোকান থেকে একটু দূরে) দোকানে যান। দুই ছেলে স্কুলে গেছে কি না, তা জানার জন্য সকাল নয়টার দিকে স্ত্রী নাসিমা বেগমের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্ত্রী তাঁকে জানান, বাচ্চারা স্কুলে গেছে। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁর শ্যালক তাঁকে ফোন করে জানান, বাসার গৃহকর্মী জমিলা আক্তার দোকানে ছুটে এসে জানিয়েছে, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে খুন হয়েছে।
পুলিশও ধারণা করছে, হত্যাকারীরা পূর্বপরিচিত হতে পারে। তবে ডাকাতি, পূর্বশত্রুতা, নাকি পারিবারিক বিরোধের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাসার গৃহকর্মী জমিলা আক্তার জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টার দিকে কাজ করতে আসেন তিনি। গতকাল ১০টার দিকে বাসায় এসে সদর দরজাটি সামান্য খোলা দেখতে পান। ভেতরে ঢুকেই খাবার টেবিলের পাশে নাসিমা আক্তারের লাশ দেখতে পান। ভয়ে তিনি চিৎকার শুরু করেন। পরে বাসা থেকে বের হয়ে মুরগির দোকানে গিয়ে আলালকে ঘটনাটি জানান।
পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা শান্তনু দাশ জানান, গৃহকর্মী কান্নাকাটি শুরু করলে স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করার কথা তাঁরা জানতে পারেন। একই কথা জানান আরেকটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রুনু খাস্তগীরও। গৃহকর্মী আসার আগে ওই বাসায় কোনো চিৎকার শোনেননি তাঁরা।
ভবনের দারোয়ান মো. সুমন ও মো. সিদ্দিক জানান, বাসায় কত লোকজনই আসা-যাওয়া করে। শাহ আলমের বাসায় কারা এসেছিলেন, তা জানেন না তাঁরা।
তবে ভবনের মালিক মোবাশ্বের হোসেন জানান, শাহ আলমের বাসায় প্রতিদিন প্রচুর লোকজন আসত। এ নিয়ে অন্য ভাড়াটেরা তাঁর কাছে অভিযোগও করেছেন বেশ কয়েকবার। বাসায় লোকজন কম আসতে বলা হলেও শাহ আলম তাঁর আত্মীয়স্বজন বেশি বলে অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
বাসায় নিয়মিত বাইরের লোকজন আসার বিষয়ে শাহ আলম বলেন, ‘আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন বাসায় প্রায়ই আসত। তারা কেউ এ খুনের সঙ্গে জড়িত বলে মনে হয় না। তবে এদের মাধ্যমে খবর নিয়ে কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।’
ঘটনাস্থলে কথা হয় শাহ আলমের বন্ধু কমল দাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে শাহ আলমের সঙ্গে বন্ধুত্ব। তাঁর স্ত্রী আমার বোনের মতো। বুধবার রাত সাড়ে ১২টায় তাঁদের বাসা থেকে গেছি।’
হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল দুপুর ১২টায় গিয়ে দেখা যায়, ভবনের আশপাশে লোকজনের ভিড়। সিঁড়িতে বসে কান্নাকাটি করছে নিহতদের স্বজনেরা। শাহ আলমের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে দুটি শোবার ঘর, একটি রান্নাঘর, পাশে স্নানাগার, পাশে লম্বালম্বিভাবে বসার ও খাবার ঘর। খাবার টেবিলের পাশে পড়ে আছে নাছিমা বেগমের লাশ। মেঝেতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। দুই হাত দূরে স্নানাগারে আছে রিয়া আক্তারের লাশ। বাসার সদর দরজার সামনে রক্তের দাগ এবং দ্বিতীয় তলা থেকে তৃতীয় তলার সিঁড়ির কয়েকটি ধাপেও রক্তের দাগ দেখা যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার জানান, ডাকাতি, পূর্বশত্রুতা, পারিবারিক বিরোধসহ বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। হত্যাকারীরা পূর্বপরিচিত হতে পারে। ধরন দেখে খুনিদের পেশাদার মনে হয়েছে।
No comments