বালু পরিবহনের জন্য বড়গাঙে বাঁধ! by উজ্জ্বল মেহেদী
ট্রাকে বালু পরিবহনের জন্য সিলেটের জৈন্তাপুরে সারী নদীর অন্যতম শাখা নদী বড়গাঙে প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ তৈরি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যবসায়ীদের সুবিধা হওয়ায় বেড়েছে যত্রতত্র বালু উত্তোলন। বন্ধ হয়ে গেছে পানির প্রবাহ ও সরাসরি নৌকা চলাচল।
স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে, সারী নদী থেকে তুলনামূলক বড় আকার ধারণ করে জৈন্তাপুর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নাম হয়েছে ‘বড়গাঙ’। এটি উত্তরে সারীর শাখা লালাখাল ও উত্তর-পূর্বে গিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইন নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশে ফেরিঘাট এলাকায় বালুমহাল হওয়ায় বড়গাঙের একাংশ শুকনো মৌসুমে ‘বালুর ঘাট’ হিসেবে ব্যবহূত হয়। এই বালু ট্রাকে করে পরিবহনের জন্য প্রায় এক মাস আগে ফেরিঘাটের ঠাকুরবাড়ী এলাকায় বড়গাঙে প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ তৈরি করেছেন বালু ব্যবসায়ীরা।
সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল-হাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নদী আইন অনুযায়ী এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। উপজেলা প্রশাসনের উচিত এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বালু ও মাটি ফেলে বাঁশ পুঁতে বাঁধটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন বালু ফেলে সংস্কার করা হচ্ছে বাঁধটি। এ জন্য নির্মাণ খরচ বাবদ ট্রাকপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ফেরিঘাটের কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী জানান, আগে বালু তুলে তা নৌকায় করে বালুর ঘাটে এনে ট্রাকে বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হতো। কিন্তু বড়গাঙের নাব্যতা কমায় বালুবোঝাই নৌকাগুলো এখন সরাসরি তীরে ভিড়তে পারছে না। এ জন্য নদীতে বাঁধ দিয়েই সরাসরি বালু উত্তোলনের স্থান থেকে ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ ও সময় দুটিই কম লাগছে।
বাঁধ তদারকিতে নিয়োজিত দুই যুবক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বালুমহালের ইজারাদার। বাঁধে যাতায়াতের জন্য ট্রাকপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করছি।’ বাঁধ কারা দিল—এমন প্রশ্নে দুজনই বলেন, ‘এটা বালু ব্যবসায়ী সমিতির কাজ।’ নাম জানতে চাইলে ‘জানি না’ বলে তাঁরা এড়িয়ে যান।
তবে ফেরিঘাট এলাকার ওই বালুমহালটি উন্মুক্ত হওয়ায় প্রশাসন তা কাউকে ইজারা দেয়নি বলে জানিয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।
যোগাযোগ করলে ফেরিঘাট বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জমির উদ্দিন বলেন, ‘ফেরিঘাটে আমার কোনো ব্যবসা নেই। আমি জাফলংয়ে পাথরের ব্যবসা করছি।’ জমির বলেন, সমিতি এই বাঁধ দেয়নি। নদীতে এভাবে বাঁধ নির্মাণ ‘অনুচিত’। তবে কারা বাঁধ দিয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফেরিঘাটে বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে আরেকটি সংগঠন রয়েছে। তারা এই কাজ করতে পারে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকায় ফেরিঘাট বালু ব্যবসায়ী সমিতি ছাড়া অন্য কোনো সংগঠন নেই।
বাঁধের প্রভাব: এলাকাবাসী বলেন, বাঁধ হওয়ায় বালু পরিবহনে সুবিধা বেড়েছে। এ জন্য উন্মুক্ত ওই বালুমহাল থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন হচ্ছে। বড়গাঙের উজানে লক্ষ্মীপুর মৌজাসংলগ্ন নদীর দুই পাড়ের মাটি কেটে ২৫-৩০ ফুট গভীর গর্ত করা হয়েছে। এই গর্তগুলো থেকে আগামী বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুরের ইউএনও মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরিঘাট বালুমহালটি উন্মুক্ত হওয়ায় সেখানে অনেকেই বালুর ব্যবসা করে। তবে নদীতে বাঁধ দেওয়া অবৈধ। বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। আমি জানিও না। আজই (গতকাল) খোঁজ নিয়ে দেখব এবং বাঁধ কেটে ফেলার ব্যবস্থা করব।’
সম্প্রতি ভারতের মেঘালয় রাজ্য সারীর উজানে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য একটি বাঁধ দিয়েছে। এই বাঁধের অপসারণ নিয়ে সিলেটজুড়ে আন্দোলন চলা অবস্থায় সারীর শাখা বড়গাঙে এ রকম বাঁধ নির্মাণের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল-হাদী। তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে, অথচ উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানে না, তা হতে পারে না।’
সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল-হাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নদী আইন অনুযায়ী এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। উপজেলা প্রশাসনের উচিত এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বালু ও মাটি ফেলে বাঁশ পুঁতে বাঁধটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন বালু ফেলে সংস্কার করা হচ্ছে বাঁধটি। এ জন্য নির্মাণ খরচ বাবদ ট্রাকপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ফেরিঘাটের কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী জানান, আগে বালু তুলে তা নৌকায় করে বালুর ঘাটে এনে ট্রাকে বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হতো। কিন্তু বড়গাঙের নাব্যতা কমায় বালুবোঝাই নৌকাগুলো এখন সরাসরি তীরে ভিড়তে পারছে না। এ জন্য নদীতে বাঁধ দিয়েই সরাসরি বালু উত্তোলনের স্থান থেকে ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ ও সময় দুটিই কম লাগছে।
বাঁধ তদারকিতে নিয়োজিত দুই যুবক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বালুমহালের ইজারাদার। বাঁধে যাতায়াতের জন্য ট্রাকপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করছি।’ বাঁধ কারা দিল—এমন প্রশ্নে দুজনই বলেন, ‘এটা বালু ব্যবসায়ী সমিতির কাজ।’ নাম জানতে চাইলে ‘জানি না’ বলে তাঁরা এড়িয়ে যান।
তবে ফেরিঘাট এলাকার ওই বালুমহালটি উন্মুক্ত হওয়ায় প্রশাসন তা কাউকে ইজারা দেয়নি বলে জানিয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।
যোগাযোগ করলে ফেরিঘাট বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জমির উদ্দিন বলেন, ‘ফেরিঘাটে আমার কোনো ব্যবসা নেই। আমি জাফলংয়ে পাথরের ব্যবসা করছি।’ জমির বলেন, সমিতি এই বাঁধ দেয়নি। নদীতে এভাবে বাঁধ নির্মাণ ‘অনুচিত’। তবে কারা বাঁধ দিয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফেরিঘাটে বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে আরেকটি সংগঠন রয়েছে। তারা এই কাজ করতে পারে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকায় ফেরিঘাট বালু ব্যবসায়ী সমিতি ছাড়া অন্য কোনো সংগঠন নেই।
বাঁধের প্রভাব: এলাকাবাসী বলেন, বাঁধ হওয়ায় বালু পরিবহনে সুবিধা বেড়েছে। এ জন্য উন্মুক্ত ওই বালুমহাল থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন হচ্ছে। বড়গাঙের উজানে লক্ষ্মীপুর মৌজাসংলগ্ন নদীর দুই পাড়ের মাটি কেটে ২৫-৩০ ফুট গভীর গর্ত করা হয়েছে। এই গর্তগুলো থেকে আগামী বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুরের ইউএনও মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরিঘাট বালুমহালটি উন্মুক্ত হওয়ায় সেখানে অনেকেই বালুর ব্যবসা করে। তবে নদীতে বাঁধ দেওয়া অবৈধ। বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। আমি জানিও না। আজই (গতকাল) খোঁজ নিয়ে দেখব এবং বাঁধ কেটে ফেলার ব্যবস্থা করব।’
সম্প্রতি ভারতের মেঘালয় রাজ্য সারীর উজানে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য একটি বাঁধ দিয়েছে। এই বাঁধের অপসারণ নিয়ে সিলেটজুড়ে আন্দোলন চলা অবস্থায় সারীর শাখা বড়গাঙে এ রকম বাঁধ নির্মাণের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল-হাদী। তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে, অথচ উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানে না, তা হতে পারে না।’
No comments