টে লি ফো নে না গ রি ক ম ন্ত ব্য-অনেক ত্রুটি ও দুর্বলতা রয়ে গেছে
প্রিয় পাঠক, আপনাদের মন্তব্য নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে এবার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী: আপনার মন্তব্য কী? প্রশ্নে টেলিফোনের মাধ্যমে মন্তব্য আহ্বান করা হয়েছিল। আপনারা উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন। মন্তব্যগুলো এখানে ছাপা হলো।
ওয়াসিম উদ্দিন, চিকিৎসক
চট্টগ্রাম
আওয়ামী লীগ সব ব্যাপারে বেপরোয়া; বিরোধী দলের উপস্থিতিতে সংবিধান কাটছাঁট করা উচিত ছিল। তা হতো গণতন্ত্রকে সুসংহত করা।
তানজিদুল হক, ব্যবসায়ী
দোহার
সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ খালি মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
মো. ইলিয়াস হায়দার, সংগঠক
শিবপুর
যেহেতু একটি দেশের সংবিধান কোনো দলের নয়, অবশ্যই সে সংবিধানের সংশোধনীর বিষয়ে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে পরিবর্তন করা উচিত। একটি দলের বা শুধু সরকারের মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন করা ঠিক হয়নি। তা ছাড়া সুশীল সমাজ ও দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
সুকদেব বিশ্বাস, শিক্ষার্থী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বর্তমান সরকার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যেখানে আদালত বলেছেন, আরও দুই মেয়াদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় হতে পারে, সেখানে আদালতের এই কথাটি সরকার কেন বিবেচনায় নিল না, তা আমার বোধগম্য নয়। তারা কি পুনরায় ক্ষমতালাভের জন্য দলীয় সরকারের আওতায় নির্বাচন করতে চাইছে?
সৈয়দ আমিরুজ্জামান, লেখক
শ্রীমঙ্গল
রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক তিনটি বিষয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রয়ে গেছে। বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা ঠিক হয়নি। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়টিও উপেক্ষিত।
মারুফ আল কাউসার, শিক্ষার্থী
আরিইসা, চট্টগ্রাম
ক্ষমতা গ্রহণের আড়াই বছরের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে সরকার অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। এর নেতিবাচক ফল জনগণ দেখতে শুরু করছে।
বিশ্বজিৎ সেন, কবি
চট্টগ্রাম
পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পর্কে মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের হতাশাব্যঞ্জক মন্তব্যই বলে দিচ্ছে যে কাজটা কিন্তু কাজের কাজ না হয়ে কদাচারী হয়েছে।
পুলক চাকমা, শিক্ষার্থী
কুমিল্লা
পঞ্চদশ সংশোধনীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি আদিবাসীদের অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে আবার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে; যা অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বৈষম্যমূলক।
এম এ শামিম হোসাইন, শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অতীতে বিএনপি ও সামরিক শাসকেরা সংবিধান সংশোধন নিয়ে যে নোংরা রাজনীতি করেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তার অবসান হলো। বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে ধর্ম নিয়ে বিরোধী দলগুলোর অপব্যাখ্যা মূর্খতার পরিচয়।
মাহমুদুর রহমান
শিক্ষার্থী, সিলেট
ক্ষমতাসীন সব সরকার দেশের সাধারণ জনগণের কথা না ভেবে দলের ও নিজেদের সুবিধার জন্য বা ভাগ্যোন্নয়নের জন্য, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলমন্ত্র সংবিধান, যা শুধু তাদের উপকারে আসবে—এমন আইন প্রণয়ন বা সংবিধান সংশোধনের কাজ হাতে নেয়, যার বর্তমান জ্বলন্ত প্রমাণ সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল।
মো. মঞ্জুরুল হাসান, শিক্ষার্থী
ময়মনসিংহ
সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু সংবিধানের প্রস্তাবনায় বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ও দুই (ক) অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম—কথাগুলো মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তির ধর্ম থাকতে পারে, রাষ্ট্রের নয়।
গোলাম জিরানী চৌধুরী, ব্যবসায়ী
চট্টগ্রাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা ঠিক হয়নি। দেশের ৮০ শতাংশ লোক এটার পক্ষে। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য এটা করা হয়েছে। এটা টিকবে না।
ইসহাক, চাকরিজীবী
মালিবাগ
একটি সংবিধান একই সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম ধারণ ও বহন করতে পারে না, করলে সংবিধান, রাষ্ট্রধর্ম ও অন্য ধর্ম—সবকিছুকেই অপমান ও অপবিত্র করা হয়। সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তা-ই করেছে।
তৌহিদুর রহমান, ব্যবসায়ী
শাহজাহানপুর
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দিয়ে সংবিধান কখনো ফলপ্রসূ হবে না। ক্ষমতাসীনেরা সব সময়ই চাইবে নিজেদের দলকে বিজয়ী করতে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্ভব না।
ডা. মো. করিমুল্লাহ
ফেনী
দুই দলীয় রাজনীতিতে আদর্শগত কোনো পার্থক্য নেই। তাই ক্ষমতার তীব্র প্রতিযোগিতায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিকল্প নেই।
মো. সাহিনুর রহমান, শিক্ষার্থী
রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতা একে অপরের বিপরীত। সুতরাং দুটি একই সঙ্গে থাকতে পারে না। এবং যে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান, সে দেশে কখনো এটা সম্ভব নয়।
মো. মোয়াজ্জেম হোসেন
শিক্ষক, টঙ্গী
এই সংবিধান সংশোধনী জাতীয় জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট নয়, এই সংশোধনী বর্তমান সরকারের একটি স্বার্থবাদী সংশোধনী।
বিকাশ রঞ্জন কর, শিক্ষার্থী
তেজগাঁও
পঞ্চদশ সংশোধনীর সব ঠিক রেখে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়া গেলে আরও ভালো হতো।
মনিরুজ্জামান, চাকরিজীবী
ময়মনসিংহ
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী ভালো ফল বয়ে আনবে। কারণ, ত্রুটিপূর্ণ সংবিধানের ধারাগুলো যেকোনো সরকারের সময় পরিবর্তিত হতে পারে।
মো. রেজাউল ইসলাম, চাকরিজীবী
সুনামগঞ্জ
সংবিধান সংশোধনের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করে ফেলা হচ্ছে। এতে সরকারের ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার হবে, জনগণের কিছুই হবে না।
আরিফ বিন নজরুল, শিক্ষার্থী
খুলনা
সরকারের এত তড়িঘড়ি না করে আরও সময় নিয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসে সংবিধান সংশোধন করা উচিত ছিল। এতে কোনো দল কোনো কর্মসূচি দিত না এবং দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হতো না।
সাব্বির, শিক্ষার্থী
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
সবার মতামত নিয়ে যদি সংবিধান সংশোধন করা হতো, তাহলে আরও ভালো হতো। এভাবে একা একা সরকারের দ্রুত সংবিধান সংশোধন করা ঠিক হয়নি। গণভোটের মাধ্যমে করা গেলে উপযুক্ত সংশোধনী হতো।
জয়কুমার দে, শিক্ষার্থী
ময়মনসিংহ
রাষ্ট্রীয় কিছু মূলনীতির সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বিষয় রেখে সংবিধানের এই পঞ্চদশ সংশোধনী আবারও সংশোধনের অবকাশ রেখে গেল। আমার মতো সাধারণের কাছে যা বোধগম্য নয়।
মো. কামরুজ্জামান, শিক্ষার্থী
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ অবশ্যই থাকা উচিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তুলে দেওয়ার সময় এখনো হয়নি বলে মনে করি।
রিয়েল সৈকত জজ, শিক্ষার্থী
খাগড়াছড়ি
বর্তমান সরকার যেহেতু ভালো কাজ করছে, তাই তাদের সংবিধান সংশোধনীও ভালো হয়েছে। তাদের দমে গেলে হবে না।
বোরহান উদ্দিন, ব্যবসায়ী
মাইজদী, নোয়াখালী
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে জাতীয় প্রগতিশীল অংশের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি।
ফরিদুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা
গাইবান্ধা
দেশে বহু ধর্মের মানুষের অবর্ণনীয় ত্যাগে এই স্বাধীন রাষ্ট্রের উৎপত্তি বিধায় বিশেষ কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম নয় বরং ধর্মনিরপেক্ষতাই সব ধর্মের মানবিক অধিকার সংরক্ষণ করতে পারে।
এস এম রুবেল, শিক্ষার্থী
সিরাজগঞ্জ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা ঠিক হয়নি। আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলে এ নিয়ে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না।
মো. ইমরান হোসেন
শিক্ষার্থী, টঙ্গী
বর্তমান সরকারের এক-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাই এই সরকারের পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন করার ক্ষেত্রে আরেকটু সময় নিয়ে করা দরকার ছিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল।
মামুন, শিক্ষার্থী
খুলনা বিএল কলেজ
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঠিক আছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা ঠিক হয়নি। কারণ, আমাদের দেশের অধিকাংশ জনগণ মনে করে, জাতীয় স্বার্থে নির্বাচনের জন্য এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি।
হাসান আল সাহাব
শিক্ষার্থী, খুলনা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা ঠিক হয়নি। এর ফলে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দ্বার রুদ্ধ হয়ে গেল। আমাদের দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। স্বল্প সময়ে সংবিধান সংশোধন দুঃখজনক।
মো. রহিম মেহমুদ, চাকরিজীবী
নরসিংদী
পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী দেশে বাকশাল কায়েমের পথ সুগম করল। এ অবস্থায় দেশে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
মো. আজাব হোসেন, শিক্ষার্থী
সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তি বর্তমান সরকারের সাজানো পরিকল্পনা। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত না হলে আগামী নির্বাচনে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বিএনপি সরকারও চেয়েছিল পর পর দুবার ক্ষমতায় আসতে, কিন্তু পারেনি। এ সরকারও চাইছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে, কিন্তু তা সম্ভব নয়। কারণ, এ দেশের জনগণ তা কখনো মেনে নেবে না।
নিতন মণ্ডল, শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমান সংশোধিত সংবিধানে প্রায় সব অনুচ্ছেদ সঠিক আছে। তবে ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করে সংসদের মত প্রকাশের ক্ষমতা দেওয়া উচিত।
অনুপম ঘোষ, শিক্ষার্থী
যশোর
দেশের বুদ্ধিজীবী সুশীল সমাজ ও সংস্কৃতিকর্মী থেকে শুরু করে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাবাপন্ন নাগরিকেরা সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ বাতিল করার পক্ষে ছিল এবং মনে হয়েছিল, সরকার ধর্মীয় চেতনা ও রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে এসে এ কাজটি করতে পারবে, কিন্তু তা হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করি, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ রাখা ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কে এলাহী, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী
শান্তিনগর, ঢাকা
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বর্তমান সরকারের চরম হঠকারী ও একগুঁয়ে সিদ্ধান্ত। সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সাংঘর্ষিক।
ফারুক আহমেদ, সাংবাদিক
রাজশাহী
স্বাধীন দেশের প্রচলিত আইনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অপসারণ করা হয়েছে। যেহেতু আদালত রায় দিয়েছেন, এতে ক্ষমতাসীন দলের কোনো হাত নেই।
এস এম সিহাবুর রহমান, শিক্ষার্থী
খুলনা পলিটেকনিক
সংশোধনী ভালো হয়েছে।
শাহীন, চাকরিজীবী
কাকরাইল, ঢাকা
আমাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন কেউ মানতে চায় না এবং বলে, কারচুপি হয়েছে। সেই দেশে এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী রায় কে মানবে? হবে অরাজকতা আর নৈরাজ্যের কারখানা।
মো. শাহাদাত হোসেন, ব্যবসায়ী
সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশ থেকে সংঘাতের রাজনীতি দূর হবে। এটি সরকারের জন্য একটি কঠিন কাজ ছিল। আমরা এক-এগারোর মতো কোনো কাজ দেখতে চাই না। আমরা সুস্থ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
মো. সেলিমুর রহমান, শিক্ষার্থী
আইইউসি, চট্টগ্রাম
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়েছে, এর মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আমি মনে করি, আগে যে চারটি মূলনীতি ছিল, তা দেশের জন্য ভালো ছিল। কারণ, নীতিগুলোর দ্বারা দেশের কোনো ক্ষতি হয়নি, বরং উপকারই হয়েছে।
কাজী রাফি হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধনের ইতিহাস সুখকর নয়। চতুর্থ, পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী তার প্রকাশ। পঞ্চদশ সংশোধনী যেভাবে এবং যা করা হলো, তা জনগণের কাছে কাম্য ছিল না। এটা ঠিক যে অনির্বাচিত সরকার কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত ছিল বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে একটি যুগোপযোগী সংশোধনী আনা।
ওয়াহিদ মুরাদ
স্বরূপকাঠি, দিনাজপুর
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তার অধীনে সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশের জন্যই শুধু নয়, সারা বিশ্বের জন্য একটি নতুন অনুকরণীয় বিষয় হতে পারত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সত্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিচালনায় কতগুলো ত্রুটি, পাশাপাশি ৯০ দিনের মাথায় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুফল পেতে ব্যর্থ হয়েছি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আগামী দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখন দুটি দল রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত করতে পারত না। এ বিষয়টির প্রতি যদি সরকার নজর দিত, তাহলে ভালো হতো।
চট্টগ্রাম
আওয়ামী লীগ সব ব্যাপারে বেপরোয়া; বিরোধী দলের উপস্থিতিতে সংবিধান কাটছাঁট করা উচিত ছিল। তা হতো গণতন্ত্রকে সুসংহত করা।
তানজিদুল হক, ব্যবসায়ী
দোহার
সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ খালি মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
মো. ইলিয়াস হায়দার, সংগঠক
শিবপুর
যেহেতু একটি দেশের সংবিধান কোনো দলের নয়, অবশ্যই সে সংবিধানের সংশোধনীর বিষয়ে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে পরিবর্তন করা উচিত। একটি দলের বা শুধু সরকারের মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন করা ঠিক হয়নি। তা ছাড়া সুশীল সমাজ ও দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
সুকদেব বিশ্বাস, শিক্ষার্থী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বর্তমান সরকার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যেখানে আদালত বলেছেন, আরও দুই মেয়াদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় হতে পারে, সেখানে আদালতের এই কথাটি সরকার কেন বিবেচনায় নিল না, তা আমার বোধগম্য নয়। তারা কি পুনরায় ক্ষমতালাভের জন্য দলীয় সরকারের আওতায় নির্বাচন করতে চাইছে?
সৈয়দ আমিরুজ্জামান, লেখক
শ্রীমঙ্গল
রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক তিনটি বিষয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রয়ে গেছে। বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা ঠিক হয়নি। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়টিও উপেক্ষিত।
মারুফ আল কাউসার, শিক্ষার্থী
আরিইসা, চট্টগ্রাম
ক্ষমতা গ্রহণের আড়াই বছরের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে সরকার অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। এর নেতিবাচক ফল জনগণ দেখতে শুরু করছে।
বিশ্বজিৎ সেন, কবি
চট্টগ্রাম
পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পর্কে মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের হতাশাব্যঞ্জক মন্তব্যই বলে দিচ্ছে যে কাজটা কিন্তু কাজের কাজ না হয়ে কদাচারী হয়েছে।
পুলক চাকমা, শিক্ষার্থী
কুমিল্লা
পঞ্চদশ সংশোধনীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি আদিবাসীদের অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে আবার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে; যা অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বৈষম্যমূলক।
এম এ শামিম হোসাইন, শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অতীতে বিএনপি ও সামরিক শাসকেরা সংবিধান সংশোধন নিয়ে যে নোংরা রাজনীতি করেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তার অবসান হলো। বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে ধর্ম নিয়ে বিরোধী দলগুলোর অপব্যাখ্যা মূর্খতার পরিচয়।
মাহমুদুর রহমান
শিক্ষার্থী, সিলেট
ক্ষমতাসীন সব সরকার দেশের সাধারণ জনগণের কথা না ভেবে দলের ও নিজেদের সুবিধার জন্য বা ভাগ্যোন্নয়নের জন্য, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলমন্ত্র সংবিধান, যা শুধু তাদের উপকারে আসবে—এমন আইন প্রণয়ন বা সংবিধান সংশোধনের কাজ হাতে নেয়, যার বর্তমান জ্বলন্ত প্রমাণ সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল।
মো. মঞ্জুরুল হাসান, শিক্ষার্থী
ময়মনসিংহ
সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু সংবিধানের প্রস্তাবনায় বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ও দুই (ক) অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম—কথাগুলো মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তির ধর্ম থাকতে পারে, রাষ্ট্রের নয়।
গোলাম জিরানী চৌধুরী, ব্যবসায়ী
চট্টগ্রাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা ঠিক হয়নি। দেশের ৮০ শতাংশ লোক এটার পক্ষে। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য এটা করা হয়েছে। এটা টিকবে না।
ইসহাক, চাকরিজীবী
মালিবাগ
একটি সংবিধান একই সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম ধারণ ও বহন করতে পারে না, করলে সংবিধান, রাষ্ট্রধর্ম ও অন্য ধর্ম—সবকিছুকেই অপমান ও অপবিত্র করা হয়। সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তা-ই করেছে।
তৌহিদুর রহমান, ব্যবসায়ী
শাহজাহানপুর
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দিয়ে সংবিধান কখনো ফলপ্রসূ হবে না। ক্ষমতাসীনেরা সব সময়ই চাইবে নিজেদের দলকে বিজয়ী করতে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্ভব না।
ডা. মো. করিমুল্লাহ
ফেনী
দুই দলীয় রাজনীতিতে আদর্শগত কোনো পার্থক্য নেই। তাই ক্ষমতার তীব্র প্রতিযোগিতায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিকল্প নেই।
মো. সাহিনুর রহমান, শিক্ষার্থী
রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতা একে অপরের বিপরীত। সুতরাং দুটি একই সঙ্গে থাকতে পারে না। এবং যে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান, সে দেশে কখনো এটা সম্ভব নয়।
মো. মোয়াজ্জেম হোসেন
শিক্ষক, টঙ্গী
এই সংবিধান সংশোধনী জাতীয় জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট নয়, এই সংশোধনী বর্তমান সরকারের একটি স্বার্থবাদী সংশোধনী।
বিকাশ রঞ্জন কর, শিক্ষার্থী
তেজগাঁও
পঞ্চদশ সংশোধনীর সব ঠিক রেখে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়া গেলে আরও ভালো হতো।
মনিরুজ্জামান, চাকরিজীবী
ময়মনসিংহ
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী ভালো ফল বয়ে আনবে। কারণ, ত্রুটিপূর্ণ সংবিধানের ধারাগুলো যেকোনো সরকারের সময় পরিবর্তিত হতে পারে।
মো. রেজাউল ইসলাম, চাকরিজীবী
সুনামগঞ্জ
সংবিধান সংশোধনের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করে ফেলা হচ্ছে। এতে সরকারের ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার হবে, জনগণের কিছুই হবে না।
আরিফ বিন নজরুল, শিক্ষার্থী
খুলনা
সরকারের এত তড়িঘড়ি না করে আরও সময় নিয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসে সংবিধান সংশোধন করা উচিত ছিল। এতে কোনো দল কোনো কর্মসূচি দিত না এবং দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হতো না।
সাব্বির, শিক্ষার্থী
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
সবার মতামত নিয়ে যদি সংবিধান সংশোধন করা হতো, তাহলে আরও ভালো হতো। এভাবে একা একা সরকারের দ্রুত সংবিধান সংশোধন করা ঠিক হয়নি। গণভোটের মাধ্যমে করা গেলে উপযুক্ত সংশোধনী হতো।
জয়কুমার দে, শিক্ষার্থী
ময়মনসিংহ
রাষ্ট্রীয় কিছু মূলনীতির সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বিষয় রেখে সংবিধানের এই পঞ্চদশ সংশোধনী আবারও সংশোধনের অবকাশ রেখে গেল। আমার মতো সাধারণের কাছে যা বোধগম্য নয়।
মো. কামরুজ্জামান, শিক্ষার্থী
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ অবশ্যই থাকা উচিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তুলে দেওয়ার সময় এখনো হয়নি বলে মনে করি।
রিয়েল সৈকত জজ, শিক্ষার্থী
খাগড়াছড়ি
বর্তমান সরকার যেহেতু ভালো কাজ করছে, তাই তাদের সংবিধান সংশোধনীও ভালো হয়েছে। তাদের দমে গেলে হবে না।
বোরহান উদ্দিন, ব্যবসায়ী
মাইজদী, নোয়াখালী
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে জাতীয় প্রগতিশীল অংশের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি।
ফরিদুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা
গাইবান্ধা
দেশে বহু ধর্মের মানুষের অবর্ণনীয় ত্যাগে এই স্বাধীন রাষ্ট্রের উৎপত্তি বিধায় বিশেষ কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম নয় বরং ধর্মনিরপেক্ষতাই সব ধর্মের মানবিক অধিকার সংরক্ষণ করতে পারে।
এস এম রুবেল, শিক্ষার্থী
সিরাজগঞ্জ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা ঠিক হয়নি। আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলে এ নিয়ে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না।
মো. ইমরান হোসেন
শিক্ষার্থী, টঙ্গী
বর্তমান সরকারের এক-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাই এই সরকারের পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন করার ক্ষেত্রে আরেকটু সময় নিয়ে করা দরকার ছিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল।
মামুন, শিক্ষার্থী
খুলনা বিএল কলেজ
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঠিক আছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা ঠিক হয়নি। কারণ, আমাদের দেশের অধিকাংশ জনগণ মনে করে, জাতীয় স্বার্থে নির্বাচনের জন্য এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি।
হাসান আল সাহাব
শিক্ষার্থী, খুলনা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা ঠিক হয়নি। এর ফলে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দ্বার রুদ্ধ হয়ে গেল। আমাদের দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। স্বল্প সময়ে সংবিধান সংশোধন দুঃখজনক।
মো. রহিম মেহমুদ, চাকরিজীবী
নরসিংদী
পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী দেশে বাকশাল কায়েমের পথ সুগম করল। এ অবস্থায় দেশে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
মো. আজাব হোসেন, শিক্ষার্থী
সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তি বর্তমান সরকারের সাজানো পরিকল্পনা। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত না হলে আগামী নির্বাচনে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বিএনপি সরকারও চেয়েছিল পর পর দুবার ক্ষমতায় আসতে, কিন্তু পারেনি। এ সরকারও চাইছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে, কিন্তু তা সম্ভব নয়। কারণ, এ দেশের জনগণ তা কখনো মেনে নেবে না।
নিতন মণ্ডল, শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমান সংশোধিত সংবিধানে প্রায় সব অনুচ্ছেদ সঠিক আছে। তবে ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করে সংসদের মত প্রকাশের ক্ষমতা দেওয়া উচিত।
অনুপম ঘোষ, শিক্ষার্থী
যশোর
দেশের বুদ্ধিজীবী সুশীল সমাজ ও সংস্কৃতিকর্মী থেকে শুরু করে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাবাপন্ন নাগরিকেরা সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ বাতিল করার পক্ষে ছিল এবং মনে হয়েছিল, সরকার ধর্মীয় চেতনা ও রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে এসে এ কাজটি করতে পারবে, কিন্তু তা হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করি, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ রাখা ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কে এলাহী, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী
শান্তিনগর, ঢাকা
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বর্তমান সরকারের চরম হঠকারী ও একগুঁয়ে সিদ্ধান্ত। সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সাংঘর্ষিক।
ফারুক আহমেদ, সাংবাদিক
রাজশাহী
স্বাধীন দেশের প্রচলিত আইনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অপসারণ করা হয়েছে। যেহেতু আদালত রায় দিয়েছেন, এতে ক্ষমতাসীন দলের কোনো হাত নেই।
এস এম সিহাবুর রহমান, শিক্ষার্থী
খুলনা পলিটেকনিক
সংশোধনী ভালো হয়েছে।
শাহীন, চাকরিজীবী
কাকরাইল, ঢাকা
আমাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন কেউ মানতে চায় না এবং বলে, কারচুপি হয়েছে। সেই দেশে এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী রায় কে মানবে? হবে অরাজকতা আর নৈরাজ্যের কারখানা।
মো. শাহাদাত হোসেন, ব্যবসায়ী
সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশ থেকে সংঘাতের রাজনীতি দূর হবে। এটি সরকারের জন্য একটি কঠিন কাজ ছিল। আমরা এক-এগারোর মতো কোনো কাজ দেখতে চাই না। আমরা সুস্থ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
মো. সেলিমুর রহমান, শিক্ষার্থী
আইইউসি, চট্টগ্রাম
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়েছে, এর মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আমি মনে করি, আগে যে চারটি মূলনীতি ছিল, তা দেশের জন্য ভালো ছিল। কারণ, নীতিগুলোর দ্বারা দেশের কোনো ক্ষতি হয়নি, বরং উপকারই হয়েছে।
কাজী রাফি হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধনের ইতিহাস সুখকর নয়। চতুর্থ, পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী তার প্রকাশ। পঞ্চদশ সংশোধনী যেভাবে এবং যা করা হলো, তা জনগণের কাছে কাম্য ছিল না। এটা ঠিক যে অনির্বাচিত সরকার কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত ছিল বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে একটি যুগোপযোগী সংশোধনী আনা।
ওয়াহিদ মুরাদ
স্বরূপকাঠি, দিনাজপুর
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তার অধীনে সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশের জন্যই শুধু নয়, সারা বিশ্বের জন্য একটি নতুন অনুকরণীয় বিষয় হতে পারত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সত্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিচালনায় কতগুলো ত্রুটি, পাশাপাশি ৯০ দিনের মাথায় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুফল পেতে ব্যর্থ হয়েছি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আগামী দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখন দুটি দল রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত করতে পারত না। এ বিষয়টির প্রতি যদি সরকার নজর দিত, তাহলে ভালো হতো।
No comments