আমীনুল হক ও একাত্তর
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু জাফর মোহাম্মদ আমীনুল হক বীর উত্তম মুক্তিযুদ্ধের এক অসীম সাহসী সৈনিক। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি তিনি মারা গেলেও তাঁকে নিয়ে কোনো আলোচনা বা সেমিনার হয়েছে বলে জানা নেই। নিভৃত মানুষটি নিভৃতেই চলে গেলেন।
১৯৮১ সালে জেনারেল জিয়া নিহত হওয়ার পর হঠাৎ জেনারেল এরশাদ তাঁকে বেআইনিভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। চাকরি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আমীনুল হক। তবু মনোবল হারাননি। মনোবল হারাননি তাঁর স্ত্রী মরিয়ুম হকও। স্বামীর পাশে প্রত্যয়ী মনোবল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমীনুল হকের কথা স্মরণ করতে গিয়ে মনে পড়ে স্বাধীনতা-উত্তর দেশের ক্রান্তিলগ্নের বহু ঘটনা। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাসদের গণবাহিনী যখন সশস্ত্র বাহিনীর ওপর অতর্কিত আঘাত হানছিল, তখন ঢাকা সেনানিবাসে লে. কর্নেল (পরবর্তীকালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) আমীনুল হক বীর উত্তম ছাড়া আর কারোরই তেমন কমান্ড ছিল না। চারদিকে বিশৃঙ্খলা এবং প্রচণ্ড গোলাগুলি। প্রথম ধাক্কায় কর্নেল হুদা ও হায়দর, জেনারেল খালেদ মোশাররফসহ ১২ জন অফিসার (মহিলা সেনা ডাক্তার ও মিসেস ওসমানসহ) নিহত হলেন। নির্ভীক আমীনুল হক একাই তাদের ঠেকালেন। সৈনিকেরা তাঁদের চেনা কমান্ডারের ডাকে সাড়া দিলেন। জেনারেল জিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে এই বীর সৈনিক সেদিন একটি মাত্র ব্যাটালিয়নকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত সৈনিকদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সফল হলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি তখন ৪৬তম (ঢাকা) ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার। তেজগাঁও এয়ারপোর্টে (জাপানি উড়োজাহাজ হাইজ্যাক হওয়াকে কেন্দ্র করে) কর্মরত এয়ারফোর্সের ১১ জন পাইলট অফিসারকে হত্যা করে দ্বিতীয় দফা তথাকথিত অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। সেই সময়েও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমীনুল হক সেনাপ্রধানের প্রতি অবিচল আস্থা ও আনুগত্য প্রদর্শনপূর্বক জেনারেল জিয়ার নির্দেশে ও জেনারেল শওকতের সঙ্গে মিলে কঠোর হাতে বিদ্রোহীদের দমন করেন।
ফিরে যাই ১৯৭১ সালে। এপ্রিল মাসে সহকর্মী সালাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ইউনিটের জিপে করে পালিয়ে ভারতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন আমীনুল হক। এপ্রিল-মে মাসে বিলোনিয়া যুদ্ধে সাহসের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে গড়ে তোলেন এক অপ্রতিরোধ্য ডিফেন্স। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বিলোনিয়া রণাঙ্গন থেকে অষ্টম বেঙ্গল নিয়ে চলে আসেন আসামের মেঘালয়ে। জেড ফোর্সের অধীন থেকে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। একের পর এক তাদের ডিফেন্সের ওপর আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ, রেইড করে তাদের ডিফেন্সকে তছনছ করে ফেলেন। সেপ্টেম্বর মাসে জেড ফোর্সকে সিলেটে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ধলাই বিওপি থেকে শুরু করে শমশেরনগর, আলীনগর, ছাগলনীল, ফুলতলা, ভানুগাছ, কমলগঞ্জ হয়ে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার পর্যন্ত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গলের অপারেশনগুলোর নেতৃত্ব দেন।
তাঁর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে মনে পড়ল জামালপুর সীমান্তে অবস্থিত নকশি বিওপি এলাকার ঘটনা। শালবন ঘেঁষে ভারতীয় সীমান্ত। তার ওপারে নকশি বিওপি। বিওপি আক্রমণ করে শেষে ব্যর্থ হয়ে পিছু হটার সময় ধানখেতের শেষ প্রান্তে এসে কিছুক্ষণ আগে ৩০০ জন সৈনিক সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩১ বেলুচের ডিফেন্স আক্রমণ করতে গিয়ে ঊরুতে শেল, গ্রেনেডের স্প্লিন্টার ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ক্যাপ্টেন আমীন (লেখক) থমকে গেলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মোপিংআপ অপারেশনের সৈনিকেরা খুঁজে বেড়াচ্ছে ক্যাপ্টেন আমীনকে। পেছন থেকে অগ্রসরমাণ পাকিস্তানি মোপিংআপ পার্টি তাঁকে প্রায় ঘিরে ফেলছে। ঠিক তখনই মেজর আমীনুল হক সার্চিং পার্টি নিয়ে ক্যাপ্টেন আমীনকে দেখতে পান। বললেন, ‘আমীন চিন্তা করো না, আমি আসছি।’ ক্যাপ্টেন আমীন তাড়াতাড়ি বাঁ হাত দিয়ে সাদা রুমাল উড়িয়ে নিজের অবস্থান জাহির করলেন, যাতে তিনি দিকনির্দেশনা ঠিক করতে পারেন। খালি হাতেই মেজর আমীনুল হক ক্রোলিং করতে শুরু করলেন। কী সাংঘাতিক আত্মঘাতী এক প্রয়াস। তাঁকে এগোতে দেখে তাঁর গার্ড (যাঁর কাছে একটি পিস্তল আছে) নায়েক তাহের তাঁর পিছু পিছু ক্রোলিং শুরু করে কমরেডশিপের এক অভূতপূর্ব উদাহরণ সৃষ্টি করলেন। আমীনুল হক ও তাহের ক্যাপ্টেন আমীনের কাছে এসে স্টেনগানটি তাঁর বিক্ষত পায়ের সঙ্গে বেঁধে অনেকটা স্ট্রেচারের মতো করে তাঁকে একটু ওপরের দিকে তুলে আস্তে আস্তে টানতে শুরু করলেন। লে. মুদ্দাচ্ছের দুই দিকে দুই গাছের ওপর দুটি মেশিনগান তাক করে স্থাপন করলেন। গাছ থেকে জওয়ানেরা কেঁদে কেঁদে বলছেন, ‘স্যার, পেছন থেকে ওরা তেড়ে আসছে আপনাদের ধরতে।’ মেজর আমীনুল হক দাঁত খিঁচিয়ে রাগতস্বরে হাতের রুমাল উড়িয়ে বললেন, ‘ব্যাটা, ফায়ার কর।’ সঙ্গে সঙ্গে মেশিনগান গর্জে উঠল। ইতিমধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মেশিনগানের গুলির সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ডভাবে আর্টিলারি শেলভো ফায়ারিং শুরু করল। আমীনুল হক ও তাহের তখন নালাকে আড় করে ধীরে ধীরে এগোতে থাকেন।
একবার ক্যাপ্টেন আমীনকে কাঁধে নিয়ে দৌড়াতে গিয়ে নালায় পড়ে গেলেন আমীনুল হক। ক্যাপ্টেন আমীন তাহেরের দিকে হাত বাড়িয়ে আমীনুল হককে বললেন, ‘স্যার, আপনি পেছনে চলে যান।’ আমীনুল হক বলে উঠলেন, ‘আরে না, আমার কিছু হবে না, তোমাকে ফেলে রেখে যাব না।’ ভারতীয় জেনারেল গুরুবক্স সিং এলেন তাঁর নিজস্ব এলিয়ট-৪ হেলিকপ্টার নিয়ে। ক্যাপ্টেন আমীনকে শুইয়ে দিয়ে পৌঁছালেন গুয়াহাটি সামরিক কমান্ড হাসপাতালে।
সেদিন আমীনুল হকের সাহস ও বিচক্ষণতার কারণে বেঁচে যান ক্যাপ্টেন আমীন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য গোটা জাতি তাঁর কাছে ঋণী। আর ব্যক্তিগতভাবে আমার ঋণ অপরিসীম। কেননা, তাঁর কারণেই আমি সেদিন বেঁচে গিয়েছিলাম।
আমীন আহম্মদ চৌধুরী বীর বিক্রম
১৯৮১ সালে জেনারেল জিয়া নিহত হওয়ার পর হঠাৎ জেনারেল এরশাদ তাঁকে বেআইনিভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। চাকরি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আমীনুল হক। তবু মনোবল হারাননি। মনোবল হারাননি তাঁর স্ত্রী মরিয়ুম হকও। স্বামীর পাশে প্রত্যয়ী মনোবল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমীনুল হকের কথা স্মরণ করতে গিয়ে মনে পড়ে স্বাধীনতা-উত্তর দেশের ক্রান্তিলগ্নের বহু ঘটনা। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাসদের গণবাহিনী যখন সশস্ত্র বাহিনীর ওপর অতর্কিত আঘাত হানছিল, তখন ঢাকা সেনানিবাসে লে. কর্নেল (পরবর্তীকালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) আমীনুল হক বীর উত্তম ছাড়া আর কারোরই তেমন কমান্ড ছিল না। চারদিকে বিশৃঙ্খলা এবং প্রচণ্ড গোলাগুলি। প্রথম ধাক্কায় কর্নেল হুদা ও হায়দর, জেনারেল খালেদ মোশাররফসহ ১২ জন অফিসার (মহিলা সেনা ডাক্তার ও মিসেস ওসমানসহ) নিহত হলেন। নির্ভীক আমীনুল হক একাই তাদের ঠেকালেন। সৈনিকেরা তাঁদের চেনা কমান্ডারের ডাকে সাড়া দিলেন। জেনারেল জিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে এই বীর সৈনিক সেদিন একটি মাত্র ব্যাটালিয়নকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত সৈনিকদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সফল হলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি তখন ৪৬তম (ঢাকা) ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার। তেজগাঁও এয়ারপোর্টে (জাপানি উড়োজাহাজ হাইজ্যাক হওয়াকে কেন্দ্র করে) কর্মরত এয়ারফোর্সের ১১ জন পাইলট অফিসারকে হত্যা করে দ্বিতীয় দফা তথাকথিত অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। সেই সময়েও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমীনুল হক সেনাপ্রধানের প্রতি অবিচল আস্থা ও আনুগত্য প্রদর্শনপূর্বক জেনারেল জিয়ার নির্দেশে ও জেনারেল শওকতের সঙ্গে মিলে কঠোর হাতে বিদ্রোহীদের দমন করেন।
ফিরে যাই ১৯৭১ সালে। এপ্রিল মাসে সহকর্মী সালাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ইউনিটের জিপে করে পালিয়ে ভারতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন আমীনুল হক। এপ্রিল-মে মাসে বিলোনিয়া যুদ্ধে সাহসের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে গড়ে তোলেন এক অপ্রতিরোধ্য ডিফেন্স। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বিলোনিয়া রণাঙ্গন থেকে অষ্টম বেঙ্গল নিয়ে চলে আসেন আসামের মেঘালয়ে। জেড ফোর্সের অধীন থেকে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। একের পর এক তাদের ডিফেন্সের ওপর আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ, রেইড করে তাদের ডিফেন্সকে তছনছ করে ফেলেন। সেপ্টেম্বর মাসে জেড ফোর্সকে সিলেটে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ধলাই বিওপি থেকে শুরু করে শমশেরনগর, আলীনগর, ছাগলনীল, ফুলতলা, ভানুগাছ, কমলগঞ্জ হয়ে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার পর্যন্ত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গলের অপারেশনগুলোর নেতৃত্ব দেন।
তাঁর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে মনে পড়ল জামালপুর সীমান্তে অবস্থিত নকশি বিওপি এলাকার ঘটনা। শালবন ঘেঁষে ভারতীয় সীমান্ত। তার ওপারে নকশি বিওপি। বিওপি আক্রমণ করে শেষে ব্যর্থ হয়ে পিছু হটার সময় ধানখেতের শেষ প্রান্তে এসে কিছুক্ষণ আগে ৩০০ জন সৈনিক সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩১ বেলুচের ডিফেন্স আক্রমণ করতে গিয়ে ঊরুতে শেল, গ্রেনেডের স্প্লিন্টার ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ক্যাপ্টেন আমীন (লেখক) থমকে গেলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মোপিংআপ অপারেশনের সৈনিকেরা খুঁজে বেড়াচ্ছে ক্যাপ্টেন আমীনকে। পেছন থেকে অগ্রসরমাণ পাকিস্তানি মোপিংআপ পার্টি তাঁকে প্রায় ঘিরে ফেলছে। ঠিক তখনই মেজর আমীনুল হক সার্চিং পার্টি নিয়ে ক্যাপ্টেন আমীনকে দেখতে পান। বললেন, ‘আমীন চিন্তা করো না, আমি আসছি।’ ক্যাপ্টেন আমীন তাড়াতাড়ি বাঁ হাত দিয়ে সাদা রুমাল উড়িয়ে নিজের অবস্থান জাহির করলেন, যাতে তিনি দিকনির্দেশনা ঠিক করতে পারেন। খালি হাতেই মেজর আমীনুল হক ক্রোলিং করতে শুরু করলেন। কী সাংঘাতিক আত্মঘাতী এক প্রয়াস। তাঁকে এগোতে দেখে তাঁর গার্ড (যাঁর কাছে একটি পিস্তল আছে) নায়েক তাহের তাঁর পিছু পিছু ক্রোলিং শুরু করে কমরেডশিপের এক অভূতপূর্ব উদাহরণ সৃষ্টি করলেন। আমীনুল হক ও তাহের ক্যাপ্টেন আমীনের কাছে এসে স্টেনগানটি তাঁর বিক্ষত পায়ের সঙ্গে বেঁধে অনেকটা স্ট্রেচারের মতো করে তাঁকে একটু ওপরের দিকে তুলে আস্তে আস্তে টানতে শুরু করলেন। লে. মুদ্দাচ্ছের দুই দিকে দুই গাছের ওপর দুটি মেশিনগান তাক করে স্থাপন করলেন। গাছ থেকে জওয়ানেরা কেঁদে কেঁদে বলছেন, ‘স্যার, পেছন থেকে ওরা তেড়ে আসছে আপনাদের ধরতে।’ মেজর আমীনুল হক দাঁত খিঁচিয়ে রাগতস্বরে হাতের রুমাল উড়িয়ে বললেন, ‘ব্যাটা, ফায়ার কর।’ সঙ্গে সঙ্গে মেশিনগান গর্জে উঠল। ইতিমধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মেশিনগানের গুলির সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ডভাবে আর্টিলারি শেলভো ফায়ারিং শুরু করল। আমীনুল হক ও তাহের তখন নালাকে আড় করে ধীরে ধীরে এগোতে থাকেন।
একবার ক্যাপ্টেন আমীনকে কাঁধে নিয়ে দৌড়াতে গিয়ে নালায় পড়ে গেলেন আমীনুল হক। ক্যাপ্টেন আমীন তাহেরের দিকে হাত বাড়িয়ে আমীনুল হককে বললেন, ‘স্যার, আপনি পেছনে চলে যান।’ আমীনুল হক বলে উঠলেন, ‘আরে না, আমার কিছু হবে না, তোমাকে ফেলে রেখে যাব না।’ ভারতীয় জেনারেল গুরুবক্স সিং এলেন তাঁর নিজস্ব এলিয়ট-৪ হেলিকপ্টার নিয়ে। ক্যাপ্টেন আমীনকে শুইয়ে দিয়ে পৌঁছালেন গুয়াহাটি সামরিক কমান্ড হাসপাতালে।
সেদিন আমীনুল হকের সাহস ও বিচক্ষণতার কারণে বেঁচে যান ক্যাপ্টেন আমীন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য গোটা জাতি তাঁর কাছে ঋণী। আর ব্যক্তিগতভাবে আমার ঋণ অপরিসীম। কেননা, তাঁর কারণেই আমি সেদিন বেঁচে গিয়েছিলাম।
আমীন আহম্মদ চৌধুরী বীর বিক্রম
No comments