প্রাথমিক বস্ত্র খাত হুমকির মুখে
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রপ্তানিতে অগ্রাধিকার সুবিধা জিএসপির রুলস অব অরিজিন বা পণ্যের উৎসবিধি শিথিল করায় পোশাকশিল্প মালিকেরা সুতা-কাপড় আমদানি দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। এতে হুমকির মধ্যে পড়েছে দেশের প্রাথমিক বস্ত্র খাত।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন গতকাল শনিবার বিটিএমএ এ অভিযোগ করে বলেছে, তাদের মিলগুলোতে ইতিমধ্যেই দুই লাখ টন সুতা মজুদ রয়েছে। যার মূল্য আট হাজার কোটি টাকা।
বিটিএমএ সভাপতি জাহাঙ্গীর আল আমীন বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের ৩০-৪০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কারখানাগুলো সব বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘তাতে আগামীতে বাংলাদেশ বিদেশি সুতা ও কাপড়ের বাজারে পরিণত হবে।’
প্রাথমিক বস্ত্রখাতের বর্তমান সংকট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল শনিবার বিটিএমএ এসব শঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিটিএমএ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারের কাছে নীতি সহায়তা ও শিল্পের সংরক্ষণ দাবি করেছে।
বিটিএমএ আসন্ন বাজেটে বিকল্প নগদ সহায়তা বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণসহ বেশ কয়েকটি দাবি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে জোর অনুরোধ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, আহমেদ আলী, এম এ জাহের, সদস্য মনোয়ারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর আলামীন অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশে ডাম্পিং মূল্যে সুতা ও কাপড় রপ্তানি করছে। তিনি বলেন, চীন ও ভারত এ দেশের বাজারে সুতার মূল্য নিয়ে কারসাজি (ম্যানিপুলেশন) করছে।
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, বিশ্ববাজারে তুলার মূল্য তিন গুণ বেড়েছে। এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি পাউন্ড তুলার দর এক ডলার ৮৫ সেন্ট। দেশে আনা এবং উৎপাদন-প্রক্রিয়ায় কিছু নষ্ট হওয়ার পর প্রতি কেজি সুতায় খরচ পড়ছে চার ডলার ৯২ সেন্ট।
জাহাঙ্গীর আল আমীন আরও জানান, অন্যদিকে ভারত তুলা রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। তারা স্থানীয় বাজারে তুলা বিক্রি করছে প্রতি পাউন্ড এক ডলার ৩০-৩৫ সেন্ট। আর প্রতি কেজি সুতা বাংলাদেশে রপ্তানি করছে চার ডলার ৩০ সেন্ট দরে। তিনি বলেন, ‘এ জন্যই আমরা বলছি ভারত বাংলাদেশে সুতা ডাম্পিং করছে। আর স্থানীয় মিলগুলোয় সুতার পাহাড় জমে যাচ্ছে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য তুলে ধরে বিটিএমএ বলেছে, ২০১০ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ওভেন কাপড় আমদানির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৮০৮ টন। আর চলতি বছরের একই সময়ে আমদানি দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৭৪১ টন। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি বেড়েছে ৮৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
অন্যদিকে, আগের বছরের প্রথম তিন মাসে নিট কাপড় আমদানি হয়েছিল এক হাজার ৭১০ টন। এ বছর হয়েছে দুই হাজার ২৬৩ টন। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বিটিএমএ আরও বলছে, দেশের মিলগুলো বন্ধ হওয়ার পর ভারত থেকে কিন্তু এই সস্তা মূল্যে আর সুতা আনা যাবে না। জাহাঙ্গীর আলামীন বলেন, ভারত ২০১০-১১ অর্থবছরে তুলা ও সুতা রপ্তানি বন্ধ রেখেছিল, এ কথাটি সবার মনে রাখতে হবে।
বিটিএমএ বলেছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে তৈরি পোশাকের বর্তমান রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হুমকির সম্মুখীন হয়ে বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কা, মরিসাস ও মিয়ানমারের মতো হবে।
প্রাথমিক বস্ত্র খাত এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা, বস্ত্র উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর আয়কর ১০ শতাংশ নির্ধারণ এবং কর অবকাশ সুবিধা ২০১৫ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির দাবি করেছে।
তারা একই সঙ্গে পণ্যের বহুমুখীকরণ উৎসাহিত ও তুলার ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের জন্য পলিয়েস্টার ও ভিসকস স্ট্যাপল ফাইবার, অ্যাক্রেলিক টো এবং টপস, পেট-চিপস ও চিপসের শুল্ক ও কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতের অপ্রতুলতার মধ্যে তারা শিল্প উৎপাদন ধরে রেখেছেন। সরকার বস্ত্র খাতকে প্রতিরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন সরকার কি এ খাতকে রাখতে চায় নাকি বিলুপ্ত করতে চায় সেটা ঠিক করতে হবে। আর তা বুঝতে পারলে আমরা আমাদের বিনিয়োগের বিষয়ে ঠিক করতে পারতাম।’
মনোয়ারুল হক বলেন, পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ থাকলেও বস্ত্র খাতে কোনো সমস্যা ছিল না। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে বস্ত্র খাতের শিল্পমালিকেরা শিল্প বন্ধ করার পর্যায়ে গেছেন। এতে বেতনভাতা দিতে না পারলে এখানেও শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন গতকাল শনিবার বিটিএমএ এ অভিযোগ করে বলেছে, তাদের মিলগুলোতে ইতিমধ্যেই দুই লাখ টন সুতা মজুদ রয়েছে। যার মূল্য আট হাজার কোটি টাকা।
বিটিএমএ সভাপতি জাহাঙ্গীর আল আমীন বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের ৩০-৪০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কারখানাগুলো সব বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘তাতে আগামীতে বাংলাদেশ বিদেশি সুতা ও কাপড়ের বাজারে পরিণত হবে।’
প্রাথমিক বস্ত্রখাতের বর্তমান সংকট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল শনিবার বিটিএমএ এসব শঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিটিএমএ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারের কাছে নীতি সহায়তা ও শিল্পের সংরক্ষণ দাবি করেছে।
বিটিএমএ আসন্ন বাজেটে বিকল্প নগদ সহায়তা বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণসহ বেশ কয়েকটি দাবি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে জোর অনুরোধ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, আহমেদ আলী, এম এ জাহের, সদস্য মনোয়ারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর আলামীন অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশে ডাম্পিং মূল্যে সুতা ও কাপড় রপ্তানি করছে। তিনি বলেন, চীন ও ভারত এ দেশের বাজারে সুতার মূল্য নিয়ে কারসাজি (ম্যানিপুলেশন) করছে।
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, বিশ্ববাজারে তুলার মূল্য তিন গুণ বেড়েছে। এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি পাউন্ড তুলার দর এক ডলার ৮৫ সেন্ট। দেশে আনা এবং উৎপাদন-প্রক্রিয়ায় কিছু নষ্ট হওয়ার পর প্রতি কেজি সুতায় খরচ পড়ছে চার ডলার ৯২ সেন্ট।
জাহাঙ্গীর আল আমীন আরও জানান, অন্যদিকে ভারত তুলা রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। তারা স্থানীয় বাজারে তুলা বিক্রি করছে প্রতি পাউন্ড এক ডলার ৩০-৩৫ সেন্ট। আর প্রতি কেজি সুতা বাংলাদেশে রপ্তানি করছে চার ডলার ৩০ সেন্ট দরে। তিনি বলেন, ‘এ জন্যই আমরা বলছি ভারত বাংলাদেশে সুতা ডাম্পিং করছে। আর স্থানীয় মিলগুলোয় সুতার পাহাড় জমে যাচ্ছে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য তুলে ধরে বিটিএমএ বলেছে, ২০১০ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ওভেন কাপড় আমদানির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৮০৮ টন। আর চলতি বছরের একই সময়ে আমদানি দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৭৪১ টন। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি বেড়েছে ৮৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
অন্যদিকে, আগের বছরের প্রথম তিন মাসে নিট কাপড় আমদানি হয়েছিল এক হাজার ৭১০ টন। এ বছর হয়েছে দুই হাজার ২৬৩ টন। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বিটিএমএ আরও বলছে, দেশের মিলগুলো বন্ধ হওয়ার পর ভারত থেকে কিন্তু এই সস্তা মূল্যে আর সুতা আনা যাবে না। জাহাঙ্গীর আলামীন বলেন, ভারত ২০১০-১১ অর্থবছরে তুলা ও সুতা রপ্তানি বন্ধ রেখেছিল, এ কথাটি সবার মনে রাখতে হবে।
বিটিএমএ বলেছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে তৈরি পোশাকের বর্তমান রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হুমকির সম্মুখীন হয়ে বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কা, মরিসাস ও মিয়ানমারের মতো হবে।
প্রাথমিক বস্ত্র খাত এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা, বস্ত্র উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর আয়কর ১০ শতাংশ নির্ধারণ এবং কর অবকাশ সুবিধা ২০১৫ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির দাবি করেছে।
তারা একই সঙ্গে পণ্যের বহুমুখীকরণ উৎসাহিত ও তুলার ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের জন্য পলিয়েস্টার ও ভিসকস স্ট্যাপল ফাইবার, অ্যাক্রেলিক টো এবং টপস, পেট-চিপস ও চিপসের শুল্ক ও কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতের অপ্রতুলতার মধ্যে তারা শিল্প উৎপাদন ধরে রেখেছেন। সরকার বস্ত্র খাতকে প্রতিরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন সরকার কি এ খাতকে রাখতে চায় নাকি বিলুপ্ত করতে চায় সেটা ঠিক করতে হবে। আর তা বুঝতে পারলে আমরা আমাদের বিনিয়োগের বিষয়ে ঠিক করতে পারতাম।’
মনোয়ারুল হক বলেন, পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ থাকলেও বস্ত্র খাতে কোনো সমস্যা ছিল না। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে বস্ত্র খাতের শিল্পমালিকেরা শিল্প বন্ধ করার পর্যায়ে গেছেন। এতে বেতনভাতা দিতে না পারলে এখানেও শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।
No comments